একটি অনলাইন সাইটের ভাষ্যের সারসংক্ষেপ
অনুবাদ: এডমিন
وعن أبي جحيفة: “أن عليا رضي الله عنه صعد المنبر، فحمد الله تعالى وأثنى عليه وصلى على النبي صلى الله عليه وسلم وقال: خير هذه الأمة بعد نبيها أبو بكر، والثاني عمر رضي الله عنه، وقال يجعل الله تعالى الخير حيث أحب” رواه الإمام أحمد في مسنده 839، وقال الشيخ شعيب الأرناؤوط: ” إسناده قوي “.
আবূ জুহাইফাহ থেকে বর্ণিত যে, ইমামে আলী (কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু) মিম্বরে আরোহণ করেন এবং আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা করেন, আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি দরূদ প্রেরণ করেন; অতঃপর তিনি বলেন: “নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পর এই উম্মতের মাঝে উত্তম হলেন হযরত আবূ বকর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু); দ্বিতীয় উত্তম ব্যক্তি হলেন হযরত ‘উমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এবং তারপর আল্লাহ যাঁর মঙ্গল চান তিনিই উত্তম। [ইমাম আহমাদ হাম্বল (রহ.) কৃত মুসনাদ, ৮৩৯; শায়খ শুয়াইব আল-আরনাউত (রহ.) বলেছেন, এর সনদ কাওয়ী/শক্তিশালী]
প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এই হাদীস্গুলো এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-বৃন্দের এতদসংক্রান্ত বর্ণনাগুলো সবই আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা-বিশ্বাসের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়, যাঁদের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে, প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পর এই উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এবং তারপর হযরত উমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)। আল্লাহ তায়ালা সকল সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর প্রতি সন্তুষ্ট হোন।
সর্ব-হযরত আবূ বকর ও উমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা) সর্বদা হযরত আলী (কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু)-এর সাথে পরামর্শ করতেন এবং তাঁদের কোনো জ্ঞান ছিল না মর্মে এমন ধারণার বিষয়ে বলবো, এটা কোনো আসর তথা সাহাবী (রা.)-বৃন্দের বাণী বা বক্তব্যে প্রমাণিত নয়। বরং এটা প্রমাণিত যে, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন তাঁর চূড়ান্ত অসুস্থতায় পীড়িত ছিলেন তখন এ মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেনো হযরত আবূ বকর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) মানুষদের নামাযের ইমামতি করেন। নামাযের হুকুম সম্পর্কে জ্ঞানী ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই দায়িত্ব অর্পণ করতেন না। আর এটা প্রমাণিত যে, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিদায় হজ্জের পূর্বে হযরত আবূ বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে হজ্জের ইমামতি করার জন্যেও নিযুক্ত করেছিলেন। নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোনো ব্যক্তিকে এ ধরনের পদে নিযুক্ত করতেন না, যদি না তিনি সাহাবা (রা.)-বৃন্দের মাঝে (হজ্জ) সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী হতেন। প্রকৃতপক্ষে এও বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত আলী (কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু) হযরত আবূ বকর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে কয়েকটি বিষয়ে কিছু হাদীস শিখেছিলেন।
বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত আসমা বিনতে আল-হাকাম আল-ফাযারী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা) বলেন:
(سمعت عليا يقول: إني كنت رجلا إذا سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم حديثا نفعني الله منه بما شاء أن ينفعني به، وإذا حدثني رجل من أصحابه استحلفته فإذا حلف لي صدقته، وإنه حدثني أبو بكر وصدق أبو بكر قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: ما من رجل يذنب ذنبا ثم يقوم فيتطهر ثم يصلي ثم يستغفر الله إلا غفر الله له، ثم قرأ هذه الآية ـ ((وَٱلَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوۤاْ أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسْتَغْفَرُواْ لِذُنُوبِهِمْ)) ـ إلى آخر الآية) رواه الترمذي 406.
আমি হযরত আলী (কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু)-কে বলতে শুনেছি: ‘আমি এমন একজন ব্যক্তি ছিলাম যে, যদি আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে একটি হাদীছ শুনতাম, তবে এর দ্বারা আল্লাহ আমাকে যতোটা উপকার করতে চেয়েছিলেন ততোটা আমাকে উপকৃত করেছেন। যদি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীদের মধ্য থেকে কোনো ব্যক্তি আমার কাছে একটি হাদীছ বর্ণনা করতেন, তাহলে আমি তাঁকে সেটার সত্যতার ব্যাপারে কসম করতে বলতাম; যদি তিনি শপথ করতেন তাহলেই আমি তাঁকে বিশ্বাস করতাম।’ হযরত আলী (কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু) আমাকে (মানে হযরত আসমা বিনতে ফাযারী-কে) বলেন: ’হযরত আবূ বকর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) আমার কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন, এবং হযরত আবূ বকর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) সত্য বলেছেন এ মর্মে যে, “আমি (হযরত আবূ বকর) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, ‘এমন কোনো লোক নেই, যে পাপ করে আর তারপর (রাতে) উঠে নিজেকে পবিত্র করে এবং (নামাযে) প্রার্থনা করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন।’ অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নিম্নের) এই আয়াতটি পাঠ করেন – এবং ওই সব লোক, যখন তারা কোনো অশ্লীলতা কিংবা স্বীয় আত্মার প্রতি যুলম করে, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে স্বীয় গুনাহর ক্ষমা প্রার্থনা করে (সূরাহ আলে ইমরান, ৩:১৩৫; নূরুল ইরফান)।” [আত-তিরমিযী, ৪০৬; এর মান – হাসান]