সন্তানদের বিছানা পৃথক করে দেওয়ার বিধান

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

সন্তানদের বিছানা পৃথক করে দেওয়া প্রসঙ্গে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন—

مروا أولادكم بالصلاة وهم أبناء سبع سنين واضربوهم عليها وهم أبناء عشر وفرقوا بينهم في المضاجع

তোমাদের সন্তানদেরকে নামাযের আদেশ দাও যখন তাদের বয়স সাত বছর হবে। আর দশ বছর বয়স হলে নামাযের জন্য তাদেরকে প্রহার কর এবং তাদের পরস্পরের বিছানা আলাদা করে দাও। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৫)

এ হাদিসে সন্তানের বয়স দশ বছর হলে তার শোয়ার বিছানা পৃথক করার হুকুম এসেছে। অবশ্য একটি বর্ণনায় সাত বছর বয়সেই বিছানা পৃথক করে দেওয়ার কথা এসেছে। (মুসতাদরাকে হাকীম, হাদিস ৭৩৪)

মুহাদ্দিসেনে কেরাম ও ফিকহবিদগণ সুনানে আবু দাউদের উক্ত হাদিসের উপর ভিত্তি করে সন্তানের বয়স দশ বছর হলে তার শোয়ার বিছানা পৃথক করে দেওয়াকে ওয়াজিব বলেছেন।

এ বয়সে ছেলের জন্য মার সাথে এবং মেয়ের জন্য বাবার সাথে একই বিছানায় শোয়া নিষেধ। অবশ্য বাবার সাথে এক ছেলে এবং মায়ের সাথে শুধু এক মেয়ে একই বিছানায় শোয়ার অবকাশ আছে।

বিছানা পৃথক হওয়ার পদ্ধতি:

বিছানা পৃথক হওয়ার অর্থ এই নয় যে, প্রত্যেক সন্তানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রুমের ব্যবস্থা করে দিতে হবে; বরং একই রুমে ভিন্ন খাট, চকি বা ভিন্ন বিছানার ব্যবস্থা করলেও চলবে।

আর যদি তাদের জন্য পৃথক পৃথক বিছানার ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় বরং সকলকে এক বিছানাতেই রাত্রিযাপন করতে হয় সেক্ষেত্রে এ বয়সের সন্তানদের মাঝে কোল বালিশ বা এ ধরনের কোনো কিছু দিয়ে হলেও আড়াল রাখা আবশ্যক।

আর মেয়েদের বিছানা বাবা ও ছেলেদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু কোল বালিশ রাখা যথেষ্ট নয়। (আদ্দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮২)

দুই বোন একই কম্বল নীচে ঘুমানো প্রসঙ্গ

এ প্রসঙ্গে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন—

لاَ ينظرُ الرَّجلُ إلى عورةِ الرَّجلِ ولاَ تنظرُ المرأةُ إلى عورةِ المرأةِ ولاَ يفضى الرَّجلُ إلى الرَّجلِ في الثَّوبِ الواحدِ ولاَ تفضي المرأةُ إلى المرأةِ في الثَّوبِ الواحدِ.

কোন পুরুষ অন্য পুরুষের গুপ্তাঙ্গের দিকে যেন না তাকায়। কোন নারী অন্য নারীর গুপ্তস্থানের দিকে যেন না তাকায়। কোন পুরুষ অন্য পুরুষের সঙ্গে একই কাপড়ে যেন শয়ন না করে। কোন নারী, অন্য নারীর সাথে একই কাপড়ে যেন শয়ন না করে।

মুসলিম ৩৩৮, আহমাদ ১১২০৭

এ হাদিসের ভিত্তিতে স্বামী-স্ত্রী ছাড়া অন্য কারো জন্য একই কম্বল বা লেপের নীচে শয়ন করা জায়েয নেই।

ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়াতে এসেছে—

قریب البلوغ اور بالغ لڑکے لڑکیوں کو ایک بستر اور ایک لحاف میں سونا حدیث شریف کی رو سے مطلقاً منع ہے، صرف زن وشوہر کے لئے اِس کی اِجازت ہے، اور کسی کے لئے اِجازت نہیں ہے۔ (فتاویٰ محمودیہ ۱۹؍۲۱۱ ڈابھیل)

দশ বছরের পর থেকে ছেলে-মেয়েকে একই বিছানায় এবং একই লেপের নীচে শোয়ানোর ব্যাপারে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। কেবলমাত্র স্বামী ও স্ত্রী একই বিছানা ও একই লেপ/কম্বলের নীচে শয়ন করতে পারবে। এ ছাড়া অন্য কারো জন্যে তা বৈধ নয়। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৯/২১১)

তাই দুই ভাই বা দুই বোন একই বিছানায় শয়ন করার ক্ষেত্রে মাঝে কোল বালিশ বা এ ধরনের কোনো কিছু দিয়ে হলেও আড়াল রাখা আবশ্যক। আর প্রত্যেকে পৃথক পৃথক কম্বল বা লেপ গায়ে দিবে। একই লেপ বা কম্বলের নীচে শয়ন করা থেকে বিরত থাকবে।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment