একদা এক বাদশাহ তার উজীরকে বললেন, একটি কথা প্রসিদ্ধ যে, তিনব্যক্তির আবদার রক্ষা করা খুব কঠিন : বাদশাহদের আবদার, নারীদের আবদার এবং শিশুদের আবদার। এদের মধ্যে বাদশাহ ও নারীদের আবদার কঠিন হওয়ার বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো। কারণ, তারা বিবেক- বুদ্ধিসম্পন্ন। তারা এমন কোনো আবদার করে বসতে পারে,
যা রক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে। কিন্তু শিশুদের আবদার রক্ষা করা কঠিন হওয়ার কী আছে!
– উজীর বললেন, বাদশাহ জাঁহাপনা! এটাই তো সবচেয়ে কঠিন আবদার।
– বাদশাহ বললেন, এটা আমার বুঝে আসছে না।
– উজীর বললেন, আচ্ছা, আমি শিশু হয়ে তাদের মতো আবদার করছি, আপনি আমার আবদার রক্ষা করুন!
– বাদশাহ বললেন, ঠিক আছে, তা-ই হবে।
– তখন উজীর কান্না শুরু করে দিলেন।
– তা দেখে বাদশাহ বললেন, কী ব্যাপার, কান্না করছো কেন?
– উজীর বললেন, আমাকে একটি হাতি এনে দিন ।
– বাদশাহ আস্তাবল থেকে একটি হাতি এনে দিলেন।
– উজীর আবার কান্না করতে লাগলেন।
– বাদশাহ বললেন, আবার কী চাও?
– উজীর বললেন, আমাকে একটি কলসি এনে দিন ।
– বাদশাহ একটি কলসি এনে দিলেন।
– উজীর আবার কান্না করতে লাগলেন।
– বাদশাহ বললেন, আবার কী চাও?
– উজীর বললেন, হাতিটা কলসির ভেতরে ঢুকিয়ে দিন।
– এখন বাদশাহ চিন্তায় পড়ে গেলেন, এ আবদার কিভাবে রক্ষা করবেন?
তখন বাদশাহ বললেন, বুঝতে পেরেছি, শিশুদের আবদার রক্ষা করা আসলেই কঠিন।
উপদেশ : নাফরমানরা এ শিশুদের মতোই নির্বোধ। তারা অনবরত আল্লাহর নাফরমানী করে বেড়ায়, আবার বেহেশতেও যেতে চায়। আবার গলদ পথ অবলম্বন করে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশা করে। এসবই আসলে ধোঁকা। সহীহ ঈমান ও সঠিক পন্থায় আল্লাহর ইবাদত- বন্দেগী করা ছাড়া কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করা যাবে না।
[সূত্র : আকবারুল আ‘মাল, পৃষ্ঠা : ১৭]