রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হায়াতুন্নবী
=====================================
ইতোপূর্বে সমস্ত নবিরা জীবিত তা আলোকপাত করা হয়েছে সে হিসেবে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও নিঃসন্দেহ রওজা শরিফে জীবিত।
👉 হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন,
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: حَيَاتِي خَيْرٌ لَكَمْ تُحْدِثُونَ وَيُحَدَثُ لَكَمْ، وَوَفَاتِي خَيْرٌ لَكَمْ تُعْرَضُ عَلَيَّ أَعْمَالُكُمْ، فَمَا رَأَيْتُ مِنْ خَيْرٍ حَمَدَتُ اللَّهَ عَلَيْهِ، وَمَا رَأَيْتُ مِنْ شَرٍّ اسْتَغْفَرْتُ اللَّهَ لَكَمْ. –
অর্থঃ- আমার হায়াত তোমাদের জন্য উত্তম বা রহমত। কেননা আমি তোমাদের সাথে কথা বলি তোমরাও আমার সাথে কথা বলতে পারছ। এমনকি আমার ওফাতও তোমাদের জন্য উত্তম বা নেয়ামত । কেননা তোমাদের আমল আমার নিকট পেশ করা হবে এবং আমি তা দেখবে। যদি তোমাদের কোন ভালো আমল দেখি তাহলে আমি আল্লাহর নিকট প্রশংসা করবো, আর তোমাদের মন্দ কাজ দেখলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য (তোমাদের পক্ষ হতে) ক্ষমা প্রার্থনা করবো।”
রেফারেন্সঃ-
১) ইমাম বাযযার, আল-মুসনাদঃ ৫/৩০৮ পৃষ্ঠা হাদিস নং: ১৯২৫।
২) ইমাম সুয়ুতি, জামিউস সগীর : ১/২৮২পৃ. হাদিস : ৩৭৭০-৭১।
৩) ইবনে কাছির বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ৪/২৫৭ পৃষ্ঠা।
৫) মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১১/৪০৭ পৃষ্ঠা হাদিস ৩১৯০৩।
৬) ইমাম ইবনে জওজী, আল-ওয়াফা বি আহওয়ালি মোস্তফা, ২ / ৮০৯ – ৮১০ পৃষ্ঠা।
৭) আল্লামা ইবনে কাছির, সিরাতে নববিয়্যাহ, ৪/৪৫ পৃষ্ঠা।
উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে ইমাম হাইসামী (রহঃ) বলেন-
رَوَاهُ الْبَزَّارُ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ.
-“উক্ত হাদিসের সমস্ত বর্ণনাকারী সিকাহ বা বিশ্বস্ত ।” রেফারেন্সঃ-
ইমাম হাইছামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ৯/২৪পৃ. হা/১৪২৫০)।
ইমাম সুয়ুতি (রহঃ)ও সহীহ বলেছেন ।
👉 হযরত আবু দারদা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন,
إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ، فَنَبِيُّ اللَّهِ حَيٌّ يُرْزَقُ
অর্থঃ- নিশ্চয় আল্লাহ তা’য়ালা আম্বিয়ায়ে কিরামগণের দেহকে ভক্ষণ করা মাটির উপর হারাম করে দিয়েছেন। সুতরাং আল্লাহর নবীগণ স্বীয় রওজা পাকে জীবিত । তাদেরকে রিযিক দেওয়া হয়।”
রেফারেন্সঃ-
১) ইমাম সুয়ুতি, জামিউস সগীর ১/২৮২পৃ. হাদিস/৩৭৭০-৭১,
২) সুনানে ইবনে মাযাহ, ১/৫২৪পৃ. হা/১৬৩৭।
👉 এ বিষয়ের বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা সম্পর্কে ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী (রহঃ) দীর্ঘ আলোচনার সর্বশেষ বলেন,
حَيَاةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قَبْرِهِ هُوَ وَسَائِرِ الْأَنْبِيَاءِ مَعْلُومَةٌ عِنْدَنَا عِلْمًا قَطْعِيًّا لِمَا قَامَ عِنْدَنَا مِنَ الْأَدِلَّةِ فِي ذَلِكَ وَتَوَاتَرَتْ الْأَخْبَارُ، وَقَدْ أَلَّفَ الْبَيْهَقِيُّ جُزْءًا فِي حَيَاةِ الْأَنْبِيَاءِ فِي قُبُورِهِمْ، فَمِنَ الْأَخْبَارِ الدَّالَّةِ عَلَى ذَلِكَ
অর্থঃ- হায়াতুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তথা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় রওজা মোবারকে জীবিত এবং সমস্ত নবীগণই জীবিত যা অকাট্য জ্ঞান দ্বারা পরিজ্ঞাত । কেননা, এ ব্যাপারে আমাদের নিকট দলীল প্রমাণ অকাট্য এবং এ প্রসঙ্গে অনেক মুতাওয়াতির হাদিস বর্ণিত হয়েছে (আনবিয়াউল আযকিয়া)।
রেফারেন্সঃ-
আল্লামা আব্দুর রহমান জালালুদ্দীন সুয়তী : আল হাভীলিল ফাতাওয়া : ২/১৪৯ পৃষ্ঠা।
সকল উলামাগণ একমত যে (মুতাওয়াতির) এ পর্যায়ের হাদিসকে ইনকার (অস্বীকার) করলে কাফের হয়ে যাবে।
তিনি- হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওফাতের পরেও তেমন; যেমন হায়াতে ছিলেন:
👉 আল্লামা ইমাম ইবনুল হজ্জ (রহঃ) “আল-মাদখাল” গ্রন্থে ও ইমাম শিহাবুদ্দীন কাস্তাল্লানী (রহঃ) তার “মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া” গ্রন্থে “বাবুল জিয়ারাতুল কুবুর শরিফ” শীর্ষক অধ্যায়ে বলেছেন,
وَقَدْ قَالَ عُلَمَاؤُنَا رَحْمَةُ إذْ لَا فَرْقَ بَيْنَ مَوْتِهِ وَحَيَاتِهِ أَعْنِي فِي مُشَاهَدَتِهِ لِأُمَّتِهِ وَمَعْرِفَتِهِ بِأَحْوَالِهِمْ وَنِيَّاتِهِمْ وَعَزَائِمِهِمْ وَخَوَاطِرِهِمْ، وَذَلِكَ عِنْدَهُ جَلِيٌّ لَا خَفَاءَ فِيهِ. ـ
-“আমাদের সুবিখ্যাত উলামায়ে কিরাম বলেন যে, হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবন ও ওফাতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তিনি নিজ উম্মতকে দেখেন, তাদের অবস্থা, নিয়ত, ইচ্ছা ও মনের কথা ইত্যাদি জানেন। এগুলো তার কাছে সম্পূর্ণ রূপে সুস্পষ্ট, বরং এই কথার মধ্যে কোন রূপ অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতার অবকাশ নেই।
রেফারেন্সঃ-
১) ইমাম কুস্তালানী : মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া : দ্বিতীয় পরিচেছদ : ৪/৫৮০ পৃষ্ঠা।
২) আল্লামা ইবনুল হজ্ব : আল মাদখাল : কালাম আলা যিয়ারতে সাইয়্যিদিল মুরসালীন : ১/২৫২পৃষ্ঠা।
৩) আল্লামা ইমাম যুরকানী ; শরহুল মাওয়াহেব : ৪/৩১২ পৃষ্ঠা।