ইমাম শিহাবুদ্দীন কুস্তালানী (رحمة الله) বলেন-
اعلم أن من تمام الإيمان به- صلى الله عليه وسلم- الإيمان بأن الله تعالى جعل خلق بدنه الشريف على وجه لم يظهر قبله ولا بعده خلق آدمى مثله-
-‘‘জেনে রাখুন! রাসূল (ﷺ)‘র প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান হলো- এভাবে ঈমান আনা যে, আল্লাহ তা‘য়ালা তাঁর শরীর মোবারককে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, তাঁর পূর্বে পরে কোন মানুষকে তাঁর মতন করে সৃষ্টি করেননি।’’ ➤কুস্তালানী, মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া, ২/৫ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল তাওফিকহিয়্যাহ, কায়রু, মিশর।
তাই সকলের জানা উচিত মানব জাতির অনুসরণ ও অনুকরণের সুবিধার্থে আল্লাহ তাঁকে বাহ্যিকভাবে মানবীয় আকৃতি ও মানবীয় কতেক গুণাবলি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। বিভিন্ন আকায়েদের কিতাবে রয়েছে যে, হুযুরের অনুরূপ হওয়া অসম্ভব। হুযুরের বিশেষ গুণের ক্ষেত্রে কাউকে হুযুরের গুণের মতো বললে, সে কাফির। (আল-মুতামেদ, ১৩৩পৃ. বাহারে শরীয়ত, ১/১৯পৃ.)
সমস্ত মানুষ মাটির তৈরী নয়
অনেক সাধারণ মানুষের ধারণা তারা মাটির তৈরী। অথচ এটি কোরআন বিরোধী কথা। কোরআন সুন্নাহে গবেষণা করে সমস্ত মানুষ পাঁচভাগে সৃষ্টি প্রমাণ পাওয়া যায়।
ক. আদি পিতা আদম (عليه السلام) কে সরাসরি মাটি দিয়ে। ➤সুরা সোয়াদ, আয়াত, ৭১
খ. মা হাওয়া (عليه السلام) কে তাঁর স্বামী তথা আদম (عليه السلام)-এর পাজর থেকে। ➤ এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আপনারা আমার লিখিত ‘‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’’ ১ম খন্ডের ২৪৬-২৪৭ পৃষ্ঠা, দেখুন।
সূরা নিসায় আল্লাহ ইঙ্গিত করেছেন- وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا -‘‘তাঁর থেকে তার সঙ্গীনীকে বানানো হয়েছে। (সুরা নিসা, আয়াত, ১) তার কি থাকে বানানো হয়েছে তা কোরআনে স্পষ্ট নেই। তাই সহিহ বুখারী ও মুসলিমে আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন- فَإِنَّ المَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ، -‘‘নিশ্চয় সকল স্ত্রীদেরকে {আদম (عليه السلام)-এর স্ত্রী হযরত হাওয়া (عليه السلام)ও অন্তর্ভুক্ত} তাঁর স্বামীর পাজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।’’
➤বুখারী, আস-সহিহ, ৪/১৩৩ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৩৩৩১, মুসলিম, আস্-সহিহ, ২/১০৯১ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ১৪৬৮, সুনানে দারেমী, ৩/১৪২৫ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ২২৬৭, হাকিম নিশাপুরী, আল-মুস্তাদরাক, ৪/১৯২ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ৭৩৩৩, ও ৭৩৩৪, ইবনে হিব্বান, আস্-সহিহ, হাদিস নং ৪১৭০
গ. ঈসা (عليه السلام) কে শুধু মাত্র জিবরাঈল (عليه السلام)‘র ফুঁ থেকে। ➤সূরা মারিয়াম, আয়াত, ১৭-১৯
ঘ. আমরা সাধারণ মানুষদেরকে মা-বাবার নুতফা বা বীর্য থেকে।
এ বিষয়ে কোরআনের মোট ১১টি স্থানে মহান রব ইরশাদ করেছেন। তাকে কেউ হেয় করলে কাফির হয়ে যাবেন। যেমন- {দেখুন- সূরা ফোরকান, আয়াত, ৫৪, সূরা ত্বারেক, ৫, সূরা দাহর/ইনসান, ৩৭-৩৯, সূরা মুরছালাত, ২০-২১, সূরা সাজদা, আয়াত, ৭-৮, সূরা ইয়াছিন, ৭৭, সূরা নাজাম, ৪৫-৪৬, সূরা আবাসা, ১৮-১৯, সূরা আলাক্ব, ২, সূরা নাহল, ৪, সূরা কিয়ামা, আয়াত, ৩৬-৩৮, এ মোট ১১ স্থানে কোরআনে রয়েছে মানুষ নুতফার বা মা-বাবার বীর্যের তৈরী। আর আমাদের দেশের কাটমোল্লারা কোরআনের বিরুদ্ধে ফাতওয়া দিচ্ছেন।}
ঙ. রাসূল (ﷺ) কে আল্লাহর নূরের তাজাল্লী হতে।
➤সুরা মায়িদা, ১৫, সূরা নূর, ৩৫, সূরা তাওবা,