রমযান মাসের ফজিলত……
- রমজান মাসই হলো সে মাস যে মাসে অবর্তীণ হয়েছে কুরআন যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবঙ সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পত নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী । কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাখবে । (সুরা বাক্বারাহ্-১৮৫)
- হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন রমজান মাসের প্রথম রাত্রি এসে উপস্থিত হয় তখন শয়তানও অবাধ্য জ্বিনসমূহকে বন্দী করে রাখা হয় । দোযখের সমস্ত দ্বার রুদ্ধ করে দেয়া হয় আর বেহেশতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় । (আহমাদ ও নাসায়ী)
রোযার ফজিলত………..
- হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর রোযা অবধারিত করা হয়েছে, যেমন অবধারিত করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতগণের উপর যেন তোমার তাকওয়াহ অর্জন করতে পার । (সূরা বাক্বারাহ্-১৮৩)
- হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমানের দাবীতে এবং সওয়াবের প্রত্যাশায় রমজানের রোযা রাখবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)
- হযরত সাহল ইবনে সা’দ (রা:) বলেন : রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: বেহেশতের আটটি দরজা রয়েছে তন্মধ্যে একটি দরজার নাম রাইয়্যান । রোযাদার ব্যতীত ঐ দরজা দিয়ে কেউই প্রবেশ করতে পারবে না । (সহীত বুখারী ও মুসলিম)
ইফতারের ফজিলত :
- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলে রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ইফতারের সময় রোযাদারের একটি দু’আ থাকে যা প্রত্যাখান করা হয় না । (বাইহাক্বী)
তারাবীহ নামাযের ফজীলত :
- হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমানের দাবীতে এবং সওয়াবের আশায় রমজানের (অর্থাৎ তারাবীহ্ নামায আদায়) করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে । (সহীহ বোখারী ও মুসলিম)
সাহরীর ফজিলত:
- হযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত । রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা সাহ্রী খাও । কেননা, এতে বরকত রয়েছে । (সহীহ্ বুখারী)
লাইলাতুল ক্বদরের ফজিলত :
নিশ্চয় আমি একে (আল কুরআন) অবতীর্ণ করেছি ক্বদরের রাতে । ক্বদরের রাত সম্পর্কে আপনি কি জানেন?
ক্বদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ । এ রাতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ ও রূহ (জিব্রাইল) অবতীর্ণত হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে । এটা নিরাপত্তা যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে । (সূরা ক্বদর)
ইতিক্বাফের ফজিলত :
- আলী ইবনে হুসাইন সূত্রে তার পিতা থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি রমজানের (শেষ) দশ দিন ইতিক্বাফ করবে সে যেন দুটি হজ্ব ও দুটি উমরা করল (বাইহাক্বী)
রোযার প্রকারভেদ :
- ফরয রোযা :
যেমন : রমজান মাসের রোযা - ওয়াজিব রোযা :
যেমন-মানতের রোযা - নফল রোযা :
নিষিদ্ধ পাৎচদিন ব্যতীত বছরের যে কোন দিন আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জনের নিমিত্তে রোযা রাখা । বিশেষ করে শাওয়ালের ছয় রোযা । - আশুরার রোযা তথা মুহররম মাসের নয় ও দশ তারিখের রোযা
- প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা ইত্যাদি ।
- মাকরূহ রোযা : যেমন – সন্দেহের দিন রোযা রাখা
- হারাম রোযা : যেমন ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও ঈদুল আযহার পরের ৩দিনে রোযা রাখা । আইয়া তাশরীক ।
রোযা ভঙ্গের কারণ
-ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো খাদ্য বস্তু পানাহার করলে ।
-রাত মনে করে সুবহি সাদিকের পর সাহ্রী খেলে
-সূর্যাস্তের পূর্বে ইফতার করলে
-ভুলে আহার করত: রোযা ভেঙ্গে গেছে ধারণায় পুনরায় খেলে
-নাকে-কানে এমনভাবে ঔষধ ব্যবহার করলে যাতে পেটে বা মাথায় পৌছে যায় ।
-পেশাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে ঔষধ বা অন্য কিছু ব্যবহার করলে
-স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক করলে ।
যেসব কারণে রোযা মাকরূহ হয় ;
-নিষিদ্ধ কোনো জিনিস চিবালে বা চেখে দেখলে
-কোন দ্রব্য মুখে দিয়ে রাখলে ।
-গরগরা করে কুলি করলে বা নাকের ভিতর পানি টেনে নিলে ।
-ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে থুথু জমা করে গলধকরণ করলে
-মিথ্যা কথা বললে
-গীবত করলে ।
-রোযার কারণে অস্থিরত প্রকাশ করলে
-গালাগালি ও ঝগড়া ফাসাদ করলে
-সমস্থ দিন নাপাক অবস্থায় থাকলে
-কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডার, পেষ্ট, মাজন ইত্যাদি দিয়ে দাত মাজলে ।
যে সব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না…..
-অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভিতর ধূলা-বালি, ধোয়া বা মশা-মাছি প্রবশে করলে ।
-সুগন্ধি ব্যবহার করলে বা অন্যকিছু ঘ্রাণ নিলে ।
-অনিচ্ছাকৃতভাবে কানে পানি প্রবেশ করলে
-অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে
-চোখে সুরমা ব্যবহার করলে
-নিজ মুখের থুথু কফ ইত্যাদি গলধকরণ করলে ।
-শরীর ও মাথায় তেল ব্যবহার করলে
-গরমের কারনে ঠান্ডা অনুভবের জন্য গোসল করলে
-মিসওয়াক করলে
-স্বপ্নদোষ হলে ।