যে কাজ মুসলমানগণ ভাল মনে করে তা আল্লাহর নিকটও ভাল” – হাদিস পাক পর্যালোচনা।

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

যে কাজ মুসলমানগণ ভাল মনে করে তা আল্লাহর নিকটও ভাল” – হাদিস পাক পর্যালোচনা।
🖋শহিদুল্লাহ বাহাদুর

❏ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

عن عاصم،  عن أبي وائل ، عن عبدالله، قال<<ان الله عز وجل نظر في قلوب العباد فاختار محمدا فبعثه برسالاته وانتخبه بعلمه ثم نظر في قلوب الناس بعده فاختار له اصحابه فجعلهم انصار دينه ووزراء نبيه صلى الله عليه وسلم فما رآه المؤمنون حسناً فهو عند الله حسن وما رآه المؤمنون قبيحا فهو عند الله قبيح>>–

আল্লাহ্ তায়ালা বান্দাদের কলবগুলো দেখলেন, এতে তিনি হযরত মুহাম্মদ صلى الله عليه وسلم   এর কলবকে বান্দাগণের কলবের মধ্যে উত্তম কলব হিসেবে পেলেন, অতঃপর তাকে নিজের দ্বীন প্রচারের জন্য রিসালাত দিয়ে প্রেরণ করলেন, অতঃপর বাকী বান্দার কলবগুলোর দিকে আবার তাকালেন, তখন আল্লাহ্ নবীর সাহাবীগণের কলবগুলোকে বান্দাদের কলবের মধ্যে উত্তম কলব হিসেবে পেলেন, অতঃপর তাঁদেরকে নবীজী صلى الله عليه وسلم এঁর সঙ্গী বানালেন। তাঁরা আল্লাহর দ্বীনের উপর সাহায্যকারী হলেন।

সুতরাং মুুসলমানগণ যা ভাল মনে করেন তা আল্লাহর নিকটও ভাল, আর যা মন্দ মনে করেন তা আল্লাহর নিকটও মন্দ।

তথ্যসূত্রঃ

১/ ইমাম আবু দাউদ তায়লসীঃ আল মুসনাদঃ ১/১৩০ হাদিস ২৪৬;

২/ ইমাম আহমদ ইবন হাম্বলঃ আল মুসনাদঃ ১/৩৭৯ হাদিস ৩৬০০ এবং ১৭০২;

৩/ ইমাম আবু নুঈম ইস্ফাহানীঃ হুলিয়াতুল আউলিয়াঃ ১/৩৭৫ পৃঃ;

৪/ ইমাম তাবরানীঃ মুজামুল আওসাতঃ ৪/৫৮পৃঃ হাদিস ৩৬০২;

৫/ ইবন হাযার হায়সামীঃ মাযমাউদ যাওয়াইদঃ ১/১৭৭-১৭৮ পৃঃ;

৬/ ইবনে কাসীরঃ বেদায়া ওয়ান নেহায়াঃ ১০/৩২৭, হাদিস ৪০২;

৭/ আযলূনীঃ কাশফুল খাফাঃ ২/২৪৫ পৃঃ, হাদিস ২২১৪;

৮/ বাযযারঃ আল মুসনাদঃ ৫/২১২ পৃঃ, হাদিস ১৮১৬;

৯/ বায়হাক্কীঃ আল ই’তিক্বাদঃ ১/৩২২ পৃঃ;

১০/ খতীব বাগদাদীঃ তারিখে বাগদাদঃ ৪৪৬ পৃঃ;

১১/ বগভীঃ শরহে সুন্নাহ্ঃ ১/১০৫ পৃঃ;

১২/ ইমাম আহমদঃ আল মুসনাদঃ ১/৩৬৭ হাদিস ৫৪১;

১৩/ হাকেম নিশাপুরীঃ আল মুস্তাদরাকঃ ৩/৮৩ পৃঃ, হাদিস ৪৪৬৫, তিনি বলেন হাদিসের সনদটি সহীহ্, আর  তাঁর সাথে যাহাবী একমত পোষন করেছেন।

১৪/ তাবরানীঃ মু’জামুল কবীরঃ ৭/১১২-১১৫, হাদিস ৮৫৮২, ৮৫৯৩;

১৫/ ইবন রযবঃ জামিউল উলূমঃ ১/২৫৪ পৃঃ;

১৬/ সাখাভীঃ আল মাকাসিদুল হাসানাঃ ৪২২পৃঃ, হাদিস ৯৫৭।

১৭/ মোল্লা আলী ক্বারীঃ মওদ্বুআতুল কাবীরঃ ৩২পৃঃ, নূর মুহাম্মদ কারখানা, করাচি;

১৮/ মোল্লা আলী ক্বারীঃ মিরকাতঃ ৩/২৫৪পৃঃ;

১৯/ ইমাম আহমদঃ ফাদ্বায়েলুল সাহাবাঃ ১/৩৬৭পৃঃ, হাদিস ৫৪১;

২০/ আবু সাঈদ ইবন আরাবী (ওফাত ৩৪০হি.) মু’জামে ইবনে আরাবীঃ ২/৪৪৩পৃঃ, হাদিস ৮৬১; তিনি হাদিসটি উক্ত সাহাবীর দুইজন ছাত্রের দ্বারা দু’টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

২১/ যায়লাঈঃ নাসবুর রায়্যাহঃ ৪/১৩৩পৃঃ, তিনি হাকেম নিশাপুরীর রায়কে গ্রহণ করেছেন, তিনি তাঁর কিতাবের অন্যত্র বাবুল ইসতিহাসানেও বর্ণনা করেছেন।

২২/ ইবনে কাসীরঃ তুহফাতুল ত্বালেব বি মা’রিফাতু আহাদিস, ১/৩৯১পৃঃ, হাদিস ৩৩৪, তিনি বলেন, হাদিসটির সনদ শক্তিশালী।

২৩/ হায়সামীঃ গায়াতুল মাকসুদ ফি যাওয়াইদুল মুসনাদ, ১/১১১পৃঃ, হাদিস ২৪৬; বৈরুত, লেবানান।

২৪/ ইবন হাজার আসকালানীঃ ইত্তেহাফুল মুহরাতঃ ১০/১৯৬পৃঃ, হাদিস ১২৫৬৮;

২৫/ ইবন হাজারঃ দিরায়া ফী তাখরীজে হেদায়া, অধ্যায় কিতাবুল ইজারা: ২/১৮৭পৃঃ, হাদিস ৮৬৩; তিনি বলেন, হাদিসটি হাসান।

২৬/ সুয়ূতিঃ আদ দুররুল মুনতাসিরা ফি আহাদিসুল মুসতাহিরাহ, ১/১৮৮পৃঃ, হাদিস ৪০১, জামিয়াতুল মুলকে সুউদ, রিয়াদ, সৌদিআরব।

২৭/ দরবেশ হুতঃ আস্ সুনানিল মুত্তালিব, ১/২৪৭পৃঃ, হাদিস ১২৫৭, বৈরুত, তিনি ইবনে আব্বাস থেকে হাদিসটির আরেকটি সূত্র আছে বলে উল্লেখ করেছেন।

২৮/ ছুহাইব আব্দুল জাব্বারঃ জামেউল সহিহ লিল সুনান ওয়াল মাসানিদ, ৩/১১২পৃঃ, ৩/৪৩৮পৃঃ;

২৯/ দারে কুতনীঃ আল ইল্ললঃ ৫/৬৬পৃঃ, হাদিস ৭১১, তিনি তাঁর এ গ্রন্থে উক্ত সাহাবীর অনেক ছাত্রের সূত্রের দ্বারা হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।

৩০/ তাহের পাটনীঃ তাযকিরাতুল মুওদ্বুআত, ১/৯১পৃঃ, তিনি বলেন, হাদিসটি হাসান।

৩১/ মোল্লা আলী ক্বারীঃ আসরারুল মারফূআহঃ ১/১০৬পৃঃ, হাদিস ৫৫, তিনি এ সাহাবী থেকে মারফূ ও মওকুফ উভয় সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

৩২/ হাসকাফীঃ দুররুল মুখতার ওয়া হাশিয়ায়ে ইবন আবেদীনঃ ২/২৩৭পৃঃ, মায়্যেতের দাফন অধ্যায়, ৪/৩৬৪পৃঃ, কিতাবুল ওয়াক্ফ অধ্যায়।

হাদিসের মান নির্ণয়ঃ

❏ উক্ত হাদিসটি সম্পর্কে মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন,

صح عن ابن مسعود مرفوعا وموقو فا ما رآه المُسلمون حسنا فهو عند الله حسن–

–“সহিহ সূত্রে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে দুইভাবে মারফূ এবং মওকুফ রেওয়ায়েত আছে, “যে কাজ মুসলমানগণ ভাল মনে করে তা আল্লাহর নিকটও ভাল”।

তথ্যসূত্রঃ

[মোল্লা আলী ক্বারীঃ মওদ্বুআতুল কবীর, পৃঃ ৩২]

❏ উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করে ইবন হাজার হায়সামী রঃ বলেন,

رواه احمد والبزار والطبراني في الكبير ورجاله موثوق –

– উক্ত হাদিসটি ইমাম আহমদ তার ‘মুসনাদ’, ইমাম তাবরানী তাঁর ‘মুজামুল কবীর”, ইমাম বাযযার তাঁর “মুসনাদ” গ্রন্থে বর্ণনা করেন, উক্ত হাদিসের সবগুলো রাবী বিশ্বস্ত।

তথ্যসূত্রঃ

[ইবন হাযার হায়সামীঃ মাযমাউদ যাওয়াইদঃ ১/১৭৭-১৭৮ পৃঃ]

❏ ইমাম সাখাভী রঃ ও আল্লামা আযলূনী (رحمة الله) বলেন,

هذا حديث هو موقف حسن-

– উক্ত হাদিসটি এই সনদে মওক্বুফ ও “হাসান” হাদিস।

তথ্যসূত্রঃ

১.ইবন হাযার হায়সামীঃ মাযমাউদ যাওয়াইদঃ ১/১৭৭-১৭৮ পৃঃ;

২.সাখাভীঃ আল মাকাসিদুল হাসানাঃ ৪২২পৃঃ, হাদিস ৯৫৭।

❏ মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) আরও উল্লেখ করেন,

قد صح قال ابن مسعود ما رأه المسلمون حسنا فهو عند الله حسن-

-যেমন সহিহ সূত্রে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে, যে কাজকে উত্তম মুসলমানগণ ভাল মনে করেন, তা আল্লাহর নিকট ভাল হিসেবে গণ্য।

তথ্যসূত্রঃ

মোল্লা আলী ক্বারীঃ মিরকাতুল মাফাতীহঃ ৩/২৫৪পৃঃ।

উক্ত হাদিসটি বিভিন্ন বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাবেও বর্ণিত হয়েছে।

❏ মারফূ তথা রাসূল صلى الله عليه وسلم এর হাদিস হিসেবে ফতোয়ায়ে শামীতে আছে,

وقال-  صلى الله عليه وسلم – << ما رآه المسلمون حسناً فهو عند الله حسن >>

– রাসূলে কারিম صلى الله عليه وسلم ইরশাদ ফরমান, যে কাজকে মু’মিনগণ ভাল মনে করেন, তা আল্লাহ্ তায়ালার নিকট ভাল হিসেবে গণ্য।

তথ্যসূত্রঃ

ইবন আবেদীন শামীঃ ফতোয়ায়ে শামীঃ ২/২৩৭, কিতাবুয যানায়েয অধ্যায়, বাবুত দাফন।

❏ শুধু তাই নয় মারফূ হাদিস হিসেবে ইমাম শামী (رحمة الله) ফতোয়ায়ে শামীতে বর্ণনা করেছেন।

(ইবন আবেদীন শামীঃ ফতোয়ায়ে শামীঃ ৪/৩৬৪; কিতাবুয ওয়াকফ অধ্যায়)

❏ একই কিতাবের অন্যত্র তিনি বলেন,

وقال صلى الله عليه وسلم ما رأه المؤمنين حسنا فهو عند الله الحسن-

– রাসূলে কারিম صلى الله عليه وسلم বলেন, মু’মিনগণ যে কাজ ভাল মনে করেন সে কাজ আল্লাহর নিকটও ভাল।

তথ্যসূত্রঃ

ইবন আবেদীন শামীঃ ফতোয়ায়ে শামীঃ ২/২৩৭; কিতাবুল ওয়াকফ অধ্যায়।

❏ “দুররুল মুখতার” প্রনেতা আল্লামা আলাউদ্দিন হাসকাফী (رحمة الله) উক্ত গ্রন্থের ৫ম খন্ডের কিতাবুল ইজারাতে উল্লেখ করেন,

وجاز إجارة الحمام لانه –  صلى الله عليه وسلم دخل حمام الجحفة << ولاعرف- وقال –  صلى الله عليه وسلم << ما رآه المُسلمون حسنًا فهو عند الله حسن-

– স্নানাগার ভাড়া দেয়া জায়েজ, কেননা হুজুর صلى الله عليه وسلم যুহফা শহরের স্নানাগারে তাশরীফ নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজন্য এটা প্রচলিত হয়ে গেছে। হুজুর صلى الله عليه وسلم ইরশাদ করেন, যে কাজ মুসলমানগণ ভাল মনে করেন, সেটা আল্লাহর কাছেও ভাল।

তথ্যসূত্রঃ

ইবনে আবেদীন শামীঃ ফতোয়ায়ে শামীঃ ৫/৩৫ পৃঃ।

সুপ্রিয় পাঠক, উক্ত ফতোয়ার কিতাবটি সমগ্র বিশ্বে সকল আলেমদের নিকট পরিচিত।

উক্ত ফতোয়ার কিতাব দ্বারা একটি বিষয় প্রমাণিত হল যে হাদিসটি মারফূ (যার সনদ রাসূল  صلى الله عليه وسلم পর্যন্ত পৌঁছেছে তথা প্রসারিত) তাতে কোন সন্দেহ নেই।

তাই সর্বোপরি বলা যায় যে, মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এর বক্তব্য সুস্পষ্ট করে দেয় যে হাদিসটি হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতে মওকুফ সূত্রে এবং মারফূ সূত্রে উভয় সূত্রে হাদিসটি এসেছে।

❏ এ সম্পর্কে আল্লামা আযলূনী (رحمة الله) বলেন,

وقال الحافظ ابن عبد الهادي مرفوعا عن انس باسناد ساقط-

– আল্লামা হাফেজ ইবন আব্দুল হাদী (رحمة الله) তার “আস সারিম” গ্রন্থে হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে মারফূ (যার সনদ রাসূল  صلى الله عليه وسلم পর্যন্ত পৌঁছেছে তথা প্রসারিত) সূত্রে বর্ণনা করেছেন; তারপর উক্ত হাদিসের সনদের ব্যাপারে তিনি নীরব ছিলেন।

অপরদিকে মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) স্বীয় মিরকাত গ্রন্থে “কিতাবুল ই’তিসাম” অধ্যায়ে হাদিসটিকে মারফূ (যার সনদ রাসূল  صلى الله عليه وسلم পর্যন্ত পৌঁছেছে তথা প্রসারিত) রায় দিয়েছেন।

সন্দেহ পোষণঃ

কোন কোন লোক বলিয়া থাকেন মোহাদ্দেসগণ সমস্ত হাদিস লিপিবদ্ধ করে বলেছেন, لا يصح في المرفوع (সহীহ্ মারফূ নহে) সুতরাং জঈফ হাদীস দ্বারা কিরুপে একটি শরয়ী মাসয়ালা প্রমাণিত হতে পারে?

অপনোদনঃ

এই সন্দেহ অপনোদনের জন্য এতটুকু আরয করাই যথেষ্ট মনে করি যে, মোহাদ্দেসীনে কেরামের কোন হাদিস সম্পর্কে এরুপ উক্তি করা যে ”সহীহ্ নহে” ইহার মর্ম এই নহে যে, এই হাদিস ভ্রান্তিমূলক ও বাতিল বরং ইহার মর্ম কথা এই যে, এই হাদীস বিশুদ্ধতায় সেই উচ্চতম স্তরে পৌঁছে নাই যাহাকে মোহাদ্দেসীন আপন পরিভাষায় الصحيح বা বিশুদ্ধতায় উচ্চস্তর রুপে আখ্যায়িত করেছেন।

মনে রাখবেন, মোহাদ্দেসগণের পরিভাষায় হাদিসের উচ্চতম স্তর হচ্ছে সহিহ এবং নিকৃষ্টতম স্তর হল মওজু। এই দুই স্তরের মাঝখানে হাদিসের বহু শ্রেণী বিভাগ রয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে ‘সুবিন্যস্ত’, “সহীহ্” এরপর হাসান এর মর্যাদা।

অতএব কোন হাদীস সহীহ্ নহে বললে হাদিস “হাসান না হওয়া” প্রমাণিত হয় না। অথচ এজমায়ে উম্মতের সিদ্ধান্ত মতে হাদীস জঈফ হলেও আমলের ফজিলতের বেলায় উহা গ্রহণযোগ্য, আর মোহাদ্দেসীনে কেরাম যে ঐ সকল হাদীস সম্পর্কে বলেছেন যে, لا يصح في المرفوع অর্থাৎ এ সকল হাদিসের সূত্র হুজুর  صلى الله عليه وسلم পর্যন্ত মারফূ হিসেবে সহীহ্ প্রমাণিতত হয় নাই, তাদের এহেন উক্তিই প্রমাণ করছে যে, এইসব হাদিস মওকুফ হিসেবে সহীহ্।

মহকুফ হাদীস সম্পর্কে অনুরুপ এক আলোচনায় যেমন “আযানে হুযুর পাকের নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা” বিষয়ে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লহি ‘আলাইহি তাঁর গ্রন্থে ঈমাম সাখাভী রহমাতুল্লহি ‘আলাইহির রায় পেশ করে সমাধানের কথা বলেন যে-

অর্থাৎঃ “আমার কথা হলো হাদিসটির সনদ যেহেতু হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত প্রসারিত (তথা মারফূ হিসেবে প্রমানিত), সেহেতু আমলের জন্যে এতটুকুই যথেষ্ট। কেননা হুজুর (صلى الله عليه و آله وسلم ইরশাদ করেছেন, তোমরা আমার পর আমার সুন্নাত ও আমার খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরো।”

তথ্যসূত্রঃ

১/ ঈমাম আবু দাউদ : আস্ সুনান, হাদিস ৪৬০৭, হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সূত্রে।

২/ ঈমাম তিরমিযী : আস্ সুনান, হাদিস ২৬৭৬।

৩/ ঈমাম ইবনে মাজাহ : আস্ সুনান, হাদিস ৪২।

৪/ ঈমাম ইবনূল বার্ : জামিউল বায়ান ওয়াল ইলমে বি ফাদ্বলিহী, ২/৯০পৃ.।

৫/ ঈমাম আহমদ : আল মুসনাদ, ৪/১২৭পৃ., হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে।

৬/ আল্লামা মোল্লা অালী ক্বারী : মওদ্বুআতুল কাবীর, ৩১৬পৃ., হাদিস ৪৫৩।

৭/ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : আসারুল মারফূ অা, ২১০পৃ., হাদিস ৮২৯।

৮/ আল্লামা আযলূনী : কাশফুল খাফা, ২/২৭০পৃ., হাদিস ২২৯৬।

প্রিয় পাঠক, দেখুন! আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লহি ‘আলাইহি বলেছেন যে, এতটুকুই যথেষ্ট যেহেতু হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমলটি করেছেন এবং হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত সনদটি প্রসারিত, তাই বুঝা গেল মওকুফ হাদিসও সহীহ্; কাজেই যারা মওকুফ হাদিস আমল না করবে এবং আমলটি (আযানে হুযুর পাকের নাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করা বিষয়ে) কে অস্বীকার করে তারা সাহাবীদের বিরোধী হাদিসে পাকে বর্ণিত বাতীল ৭২দলের সদস্য বাতীল ফির্কা হিসেবেই গণ্য।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment