উত্তর: হানাফী মাযহাব মতে মৃত ব্যক্তির খাটিয়া ৪ কোনায়/পায়া ৪ জনে বহন করে পর্যায়ক্রমে ৪০ কদম হাটা সুন্নাত। যেমন-হানাফী মাযহাবের নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে উল্লেখ রয়েছে- سن فى حمل الجنازة اربعة من الرجال كذا فى شرح النقاية للشيخ ابى المكارم اذا حملوه على سرير اخذوه يقوائده الاربع به وردت السنة كذا فى الجوهرة النيرة
অর্থাৎ ৪ জন লোক জানাযার খাট বহন করা সুন্নাত। এটা শায়খ আবিল মাকারীম এর ‘শরহে নেকায়ার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে। যখন মৃত ব্যক্তির জানাযার খাট উঠাবে তখন এটার ৪টি পায়া ধরে উঠানো সুন্নাত। এটা ‘জাওহারাতুন্ নাইয়ারা’ গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। তাই জানাযার খাটের চার পায়া এইভাবে পালা করে ধরবে যে, প্রত্যেক দিক হতে ১০ কদম চলবে। ইমাম কাজী শাওকানী তার কিতাবে উল্লেখ করেছেন-
وروي حمل الجنازة عن جماعةمن الصحابة والتابعين
অর্থাৎ জানাযা তথা লাশ কাঁধে বহন করা অনেক সম্মানিত সাহাবী ও তাবেঈন হতে বর্ণিত আছে। মৃত ব্যক্তি খাটিয়া বহন করা সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেঈগণের সুন্নাত। [কাজী শাওকানীর নাইনুল আওতার, ৪র্থ খন্ড, পৃ. ৮৫] আর জানাযার খাট বহন করার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে পাকে বর্ণনা রয়েছে-
عن ابى هريرة انه قال من حمل الجنازة بجوانبها الاربع فقضى الذى عليه
অর্থাৎ হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তির জানাযার খাটিয়া ৪ দিক থেকে বহন করবে তার উপর (মৃত ব্যক্তির হক্ব) আদায় হয়ে যাবে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-৬৫১৮]
এ বিষয়ে আরেকটি হাদিস বর্ণনা করা হল-
عن ثوبان عن النبى صلى الله عليه وسلم قال من تبع جنازة فاخذ بجوانب السرير الاربع غفرله اربعون ذنبا كلها كبيرةٌ
অর্থাৎ হযরত সাওবান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জানাযা অনুসরণ করবে ও ৪টি খাটিয়া বহন করবে, তার ৪০টি এমন গোনাহ্ মাফ করা হবে যা প্রত্যেকটি কবিরা গুনাহ্। অর্থাৎ ৪০টি কবিরা গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হবে।
[মুসনাদে হারেছ, হাদিস নং-২৭০, বাদরুল মুনীর, ৫ম খন্ড, ২২৪পৃ] সুতরাং মুসলিম নর-নারীর লাশ কাঁধে বহন করা অনেক সওয়াব ও ফজিলতপূর্ণ। সম্ভব হলে খাটিয়ার চতুর্দিক বহন করার চেষ্টা করবে আর মুসল্লিদের ভীড়ে তা সম্ভব না হে ল অন্তত: যে দিকে সম্ভব হবে খাটিয়া বহন করার চেষ্টা করবে।
হাদিস শরীফে আরো বর্ণিত আছে, মৃত ব্যক্তিরা যারা তাদেরকে গোসল দিয়েছে, কাফন পরিয়েছে, লাশ কাঁধে বহন করেছে, তাঁদের নামাযে জানাযায় অংশ গ্রহণ করেছে তাদের জন্য দোয়া করেছে সবাইকে চিনেন ও জানেন। বিধায় এ সব বিষয়ে বিদআত ইত্যাদি বলে সমাজে ফিৎনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা অজ্ঞতা ও মুর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। [শরহুচ সুদুর, কৃত. ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ূতী রহ., আল বাছায়ের, কৃত. হামদুল্লাহ্ দাজভী রহ. আমার রচিত যুগজিজ্ঞাসা এবং গাউসিয়া তারবিয়াতি নেসাব ইত্যাদি]