মৃতের গোসলের বিবরণ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মাইয়্যেতকে একখানা টিন, তক্তা অথবা চৌকির উপরে শোয়াইয়া একখানা কাপড় দ্বারা নাভী পাঁটু পর্যন্ত ঢাকিয়া দিবে। শরীরের অন্যান্য কাপড় চোপড় খুলিয়া লইবে। তারপর বড়ই পাতা এবং কর্পুর মেশানোর গরম পানি বা শুধু কর্পুর মিশানোর গরম পানি দ্বারা গোসল করাতে আরম্ভ করিব। গোসল করাইবার সময় পর্দার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিবে। একটি মশারী খাটাইয়া তার মধ্যে লাশ রাখিয়া সর্ব সাধারণের দৃষ্টির আড়ালে গোসল কারাইবে। মৃতকে গোসলের সময় উত্তর শিয়রি করিয়া লইবে। তারপর গোসল দাতা হাতে একখানা নেকড়া জড়াইয়া সর্ব প্রথম মৃতের গুপ্তস্থানসমূহ ধৌত করাইবে এবং আস্তে আস্তে পেট মর্দ্দন করিবে। ইহাতে নাভী হইতে বা মল মুত্র পথে কোন নাপাক বস্তু বাহির হইলে তাহা ধুইয়া ফেলিবে। তারপর মৃতকে অযু করাইবে (মৃত পাগল বা নাবালেগ হইলে অযু করাইতে হয় না)। অযুতে কুলি করাইতে বা নাকের মধ্যে পানি পৌঁছাতে হয় না। তার পরিবর্তে ভিজা নেকড়া দ্বারা মুখ ও নাসিকার অভ্যন্তর মুছিয়া ফেলিবে। তারপর লাশকে বামদিকের কাত করিয়া প্রথমে ডান দিক ধৌত করিবে। তারপর ডানদিকে কাত করিয়া বাম দিক ধুইয়া ফেলিবে। গোসল শেষ করিযা শুস্ক কাপড় দ্বারা সর্ব শরীর ভালরূপে মুছিয়া দিবে।

মাইয়্যেতের গোসল সম্পর্কীয় নিম্নোক্ত মাছআলাসমূহ অবশ্যই মনে রাখা উচিত।
১) যে ব্যক্তি মাইয়্যেতকে গোসল করাইবে তাহার নিজের ও গোসলের পূর্বে অযু করিয়া লওয়া এবং গোসল করানোর পরে গোসল করা উচিত।
২) মৃত ব্যক্তি পুরুষ হইলে তাহাকে পুরুষ এবং স্ত্রী হইলে তাহাকে স্ত্রী লোকে গোসল করাইবে ।
৩) গোসল করতে পুরুষের জন্য পুরুষ লোক এবং স্ত্রীলোকের জন্য স্ত্রীলোক না পাওয়া গেলে মাহরুম লোক (জীতিতাবস্তায় যাহার সাথে বিবাহ জায়েয ছিল না) মাইয়্যেতকে তৈয়ম্মুম করাইয়া দিবে, গোসলের প্রয়োজন হইবে না।
৪) মাহরুম লোকের অভাব হইলে অন্য কোন ব্যক্তির হাতে কাপড় পেঁচাইয়া তৈয়ম্মুম করাইয়া দিবে।
৫) লোকাভাবে স্ত্রী স্বামীকে গোসল করাইতে পারিবে, কিন্তু স্বামী স্ত্রীলোকে গোসল করাতে পারবে না।
৬) অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক বালিকাদিগকে স্ত্রী-পুরুষ যে কেহ গোসল করাইতে পারে।
৭) সন্তান ভুমিষ্ট হইয়া মূহুর্তমাত্র জীবিত থাকিয়া মরিয়া গেলে তাহাকেও গোসল করাইতে হইবে, অবশ্য অজু করাইতে হইবে না। আর মাতৃগর্ভ হইতে মৃত ভুমিষ্ট হইলে তাহাকে গোসল করাইতে হইবে না।
৮) কেহ পানিতে ডুবিয়া মরিলে তাহাকেও গোসল করাইতে হইবে। অবশ্য পানি হইতে উঠাইবার সময় গোসলের নিয়তে তিন বার নাড়িয়া চাড়িয়া উঠাইলে গোসল আদায় হইয়া যায়।
৯) ধর্ম যুদ্ধে শহীদ ব্যক্তিকে গোসল করাইতে হয় না।
১০) সমস্ত শরীর একবারে পানি বহাইয়া গোসল করান ওয়াজিব, কিন্তু তিন তিনবার করিয়া সমস্ত শরীরে পানি ঢালিয়া ধৌত করা মুস্তাহাব।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment