মুজতাহেদীন, মনীষীগণ কর্তৃক মিলাদুন্নবী (দঃ) পালন

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল আলী কাদেরী

কামিল (হাদিস, ফিক্হ) বি.এ (অর্নাস)

১। ইমাম শাফেয়ী রাদিয়াল্লাহুতা’য়ালা আনহু কর্তৃক মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন, তিনি বলেন:
من جمع لمولد النبى صلى الله عليه وسلم اخوانا وهيا طعاما واخلى مكانا وعمل احسانا وصار سببا لقراته بعثه الله يوم القيامة مع الصديقين والشهداء والصالحين ويكون فى الجنة النعيم-
অর্থ: যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্য কিছু ঈমানদার ভাইদের একত্রিত করে এবং মিলাদের জন্য কিছু তাবারকের ব্যবস্থা করে, আল্লাহ তাঁকে সিদ্দিকীন, শোহাদা-সালেহীনদের সাথে জান্নাতুন নাঈমে থাকার ব্যবস্থা করবেন।
২। আল্লামা জালাল উদ্দীন সুয়ূতী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন
يستحب لنا اظهار الشكر لمولده عليه السلام
অর্থ: আমাদের জন্য হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তে শোকরিয়া আদায় করা মুস্তাহাব। (তাফসীরে রুহুল বয়ান- ৯/৫৬-৫৭ পৃষ্ঠা)
৪। আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি আল্লামা সাখাবী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি‘র উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন :
كنت ممن تشرف بادراك المولد فى مكة المشرفة عدة سنين وتعرف مااشتمل عليه من البركة المشار لبعضه-
অর্থ: যারা কয়েক বৎসর ব্যাপী মক্কা শরীফে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম র মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তম্মধ্যস্থ বরকতের পরিচয় লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন আমি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। (রিসালাতিল মাওরুদুর রাবী ফি মাওলিদীন নবী ৮৫পৃঃ)
৫। বিখ্যাত সূফী ও ফকিহ সাইয়্যেদ আহমদ আবেদীন রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি ইমাম ইবনে হাজর রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি‘র ‘আলা মাওলুদুল কবির’ কিতাবের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাঁর বিরচিত ‘নে‘মাতুল কুবরা’ গ্রন্থে লেখেন :
فينبغى لكل صادق فى حبه صلى الله عليه وسلم ان يستبشر بهذا الشهر السار وينعقد فيه محفلا- يقرأ فيه ماصح فى مولده صلى الله عليه وسلم من لاثار فعسى ان يدخل الجنة مع الابرار-
অর্থ: যারা আল্লাহ র হাবিবের প্রতি প্রকৃত মহব্বত রাখেন তাদের উচিত এই রবিউল আওয়াল মাসের আগমনে আনন্দিত হওয়া এবং মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহফিলের অনুষ্ঠান করা সেই মাহফিলে রাসুলুসাল্লামহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’র জন্ম সম্বন্ধীয় সহীহ হাদিসসমূহ পাঠ করা। আশা করা যায় ও প্রকার লোকেরা আল্লাহ পাকের নেক বান্দাগণের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
৬। আল্লামা ইবনুল জাওজী রহমাতুসাল্লামহি আলাইহি বলেন:
ومن خواصه انه امان فى ذالك العام وبشرى عاجلة بنيل المرام-
অর্থ: মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুষ্ঠান দ্বারা যে সব উপকার লাভ হয়ে থাকে তন্মধ্যে ইহা অন্যতম ও পরীক্ষিত যে, সে বৎসর বিপদাপদ হতে নিরাপদ থাকা যায় এবং নিজের ন্যায় সঙ্গত আকাক্সক্ষাপূর্ণ হয়ে থাকে।
৭। আল্লামা ইবনুল জাযরী রহমাতুসাল্লামহি আলাইহি বলেন :
ولم يكن فى ذالك الا ارعام الشيطان وسرور- اهل الايمان-
অর্থ: এ মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র অনুষ্ঠান দ্বারা শয়তানের পিঠে কষাঘাত পড়ে। আর ঈমানদারগণের হৃদয়ে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। (সিরতুশ সামিয়া)
৮। ইমাম নববীর ওস্তাদ ইমাম আবু শামা রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
وَ مِنْ اَحْسَنِ مَا ابْتَدَعَ فِىْ زَمَانِنَا مِنْ هَذَا الْقَبِيْلِ مَاكَانَ يَفْعَلُ بِمَدِيْنَةِ اَرْبَلِ جَبَرَهَا اللهُ تَعَالَى كُلُّ عَامَ فِى الْيَوْمِ الْمُوَافِقِ لِيَوْمِ مَوْلِدِ النَّبِى صِلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الصَّدَقَاتِ وَالْمَعْرُوْفِ وَاَظْهَارِ الزِّيْنَةِ وَالسُّرُوْرِ فَاِنَّ ذّاِلكَ مَعَ مَافِيْهِ مِنَ الْاَحْسَانِ اِلَى الْفُقَرَاءِ بِمَحَبَّةِ النَّبِى صِلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَعْظِيْمِهِ وَجَلَالَةِ فِى قَلْبِ فَاعِلِهِ وَشْكُرِ اللهِ عَلَى اِيْجَادِ رَسُوْلِهِ الَّذِى اَرْسَلَهُ رَحْمَةُ لِلْعَالَمِيْنَ صِلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: আমাদের জামানায় আরবাল শহরে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র বেলাদতের দিন যে সব দান-খয়রাত সৌন্দর্য এবং আনন্দ প্রকাশের জন্য করা হয়, তা বিদআতে হাসানারই অন্তর্ভুক্ত। কেননা এর মাধ্যমে ফকীরদের প্রতি এহসান করা ছাড়াও আরো রয়েছে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুহাব্বত, মর্যাদা এবং তা‘জিম করার বহিঃপ্রকাশ। আর আল্লাহ তা‘য়ালা রহমাতুল্লিল আলামিন রূপে যে নেয়ামত দান করেছেন, তজ্জন্য শোকরিয়া প্রকাশ করার বিষয় নিহিত রয়েছে।
৯। ইমাম কুস্তুলানী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
لازال اهل الاسلام يحتفلون بشهر مولده عليه السلام ويعلمون الولائم ويتصدقون فى لياليه انواع الصدقات يظهرون السرور ويزيدون فى المبرات ويعتنون بقراة مولجه الكريم يظهر عليهم من بركاته كل فضل عظيم ومما جرب من خواصه انه امان فى ذالك العام وبشرى عاجله بنيل البغية والمرام فصح الله امرا اتخذ ليالى شهر مولده المبارك اعياد اليكون اشد علة من فى قلبه مرض-(المواهب الدنية)
অর্থ:রবিউল আওয়াল যেহেতু হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বেলাদতের মাস। সেহেতু অত্র মাসে তামাম মুসলমান সবসময় মিলাদ শরীফের খুশিতে মাহফিলের আয়োজন করে আসছে। তারা রাতে দান-সদকা করে থাকে, আর সৎ আমল সম্পাদন করে থাকে। বিশেষত, এসব মাহফিলে বরকত যে পাওয়া যায়, তা পরীক্ষিত; এ মাহফিলের জন্য ঐ বছর নিরাপদে অতিবাহিত হবে। আর স্বীয় উদ্দেশ্য ও হাজত পূর্ণ হওয়ার দ্রুত সুসংবাদ লাভ করবে। যে ব্যক্তি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিলাদের মাসের রাত্রসমূহে ঈদ পালন করবে, যাতে করে যাদের অন্তঃকরণে ব্যধি আছে, তাঁদেরকে যন্ত্রনা দেওয়া হয়, তাহলে আল্লাহ তা‘য়ালা স্বীয় করুণা ও অনুগ্রহ দান করবেন।
১০। ইমামুল হাফেজ সাখাভী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
لازال اهل الاسلام فى سائر الاقطار والمدن يحتفلون فى شهى مولده صِلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بعمل الولائم البديعة المشتملة على الامور البهجة الرفيعة ويتصجقون فى لياليه بانواع الصدقات ويظهرون السرور ويزيدون فى المبرات ويعتنون بقرثة مولده الكريم ويظهر عليهم من بركاته كل فضل عميم-( سبل الهدى)
অর্থ: বিশ্বের চতুর্দিকে ও শহরগুলোতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের মাসে মুসলমানরা বড় বড় আনন্দ অনুষ্ঠান করে থাকে। এ মাসের রাত্রসমূহে প্রাণ খুলে সদকা করা হয়, আনন্দ প্রকাশ করা হয়, বেশি বেশি নেক আমল করা হয় এবং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের ঘটনাবলি পড়ে পড়ে আনুগত্য প্রকাশ করা হয়। ফলে তাদের উপর রাশি রাশি বরকত থেকে বিপুল পরিমাণ করুণা বর্ষিত হয়।
১১। হাফেজ আবু জুরআ ইরাকী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
وسئل عن فعل المولد امستحب او مكروه وهل ورد فيه شئ او فعله من يقتدى به قال اطعام مستحب فى كل وقت فكيف اذا انضم ذالك من السلف والايلزم من بدعة كونه مكروها فكم من بدعة مستحبه بل واجبه-(تشنيف الاذان)
অর্থ: মাহফিলে মিলাদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হল, এটি কি মুস্তাহাব না কি মাকরুহ? এ সম্বন্ধে কোন কিছু ওয়ারেদ হয়েছে কি না কিংবা যাকে এক্তেদা করা যায়, এমন কেউ এটা করেছেন কিনা? তিনি বলেন, সবসময় আহার করানো মুস্তাহাব। তাহলে খাওয়ানোর আনন্দটা যদি এ সম্মানিত মাসে নূরে নবূয়তের হুজর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যুক্ত হয়, তাহলে এর মর্যাদা কিরূপ হবে? আমরা জানি না এটি সলফে সালেহীন করেছেন কি না, কিন্তু পূর্বযুগে না হওয়াতে তা মাকরুহ হওয়া আবশ্যক নয়। কেননা এমন অনেক বিদআত আছে, যা সলফে সালেহীন কৃত না হওয়া সত্ত্বেও মুস্তাহাব এমনকি ওয়াজিব বটে।
১২। ইমাম ইবনে হাজর মক্কী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
الموالد والاذكار التى تفعل عندنا اكثرها مشتمل على خيى كصدقة وذكر وصلاة وسلام على رسول الله صلى الله عليه وسلم-( فتاوى حديثة)
অর্থ: আমাদের এখানে মিলাদ মাহফিল জিকির-আজকার যা কিছু অনুষ্ঠিত হয়, তার অধিকাংশই ভাল কাজের অন্তর্ভুক্ত। যেমন :সদকা করা, জিকির করা, দরূদ পড়া ও রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর সালাম পেশ করা।
১৩। হযরত ইসমাইল হাক্কী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
ومن تعظيمه عمل المولد اذالم فيه منكر–
অর্থ: রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘র মিলাদ শরীফ অনুষ্ঠান করাও তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি দিক, যদি তাতে গর্হিত কোন কাজ না হয়। (রুহুল বয়ান ৭/৬৬১)
১৪। ভারত উপমহাশের খ্যাতনামা আলেম ও পীর মাশায়েখগণের পীর হযরত হাজী এমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:
مشرب فقير كايه هى كه محفل مولد مين شريك هوتا هون بلكه ذريعه بركات سجى كر هرسال منعقد كرتا هون اور قيام مين لطف ولذت پاتاهون-
অর্থ: এ ফকিরের নিয়ম হল আমি মিলাদ মাহফিলে অংশ গ্রহণ করে থাকি বরং মিলাদ অনুষ্ঠানকে বরকত লাভের অছিলা মনে করে প্রত্যেক বৎসরই মিলাদের মজলিস করে থাকি এবং অনুষ্ঠানে কিয়ামের সময় অশেষ আনন্দ ও আরাম উপভোগ করি। (হাফতে মাসয়ালা- ১৫ পৃষ্ঠা)।
১৫। হযরত শাহ ওলীউসাল্লামহ মুহাদ্দেসে দেহলভী রহমাতুসাল্লামহি আলাইহি বলেন :
اخبرنى سيدى الوالد قال كنت اصنع فى ايام المولد طعاما صلة بالنبى صلى الله عليه وسلم فلم فعتح لى فى سنة من السنين شئى اصنع به طعاما فلم اجد الاحمصا مقليا فقسمته بين الناس فرايته صلى الله عليه وسلم وبين يديه هذا الحمص-( الانتباه في سلاسل اولياء الله)
অর্থ: আমার মুহতারাম পিতা বলেন, আমি রাসুলুসাল্লামহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’র বেলাদত দিবসসমূহে তাঁর আন্তরিক সম্পর্ক প্রদর্শনার্থে ভোজের ব্যবস্থা করতাম। এক বৎসর এমন হল যে, এ অনুষ্ঠানের জন্য একমাত্র ছোলা ভাজা ব্যতীত অন্য কিছুরই সংস্থান হল না। অগত্যা তা-ই লোকদের মধ্যে বিতরণ করে দিলাম। পরে যখন রাসুলুসাল্লামহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখতে পেলাম যে, ঐ ছোলা ভাজা তাঁর সম্মুখে রক্ষিত।
১৭। হযরত শাহ আব্দুল আজিজ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন :অর্থ: দ্বিতীয়টি হল মিলাদ মজলিস। এতে রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে পূর্ব নিয়মানুযায়ী সব লোকজন সমবেত হয়ে দরূদ পাঠে মনোনিবেশ করে এরপর এই ফকির (আমি নিজে) উক্ত মজলিসে উপস্থিত হয়।
১৮। “ফয়জুল হারামাঈন” পৃ. ৮০ কিতাবে বলেন,
وكنت قبل ذلك بمكة المعظمة فى مولد النبى صلى الله عليه وسلم فى يوم ولادته والناس يصلون على النبى صلى الله عليه وسلم ويذكرون ارهاصاته التى ظهرت فى وقت ولادته ومشاهده قبل بعثته فرأيت انوارا-
শাহ ওলী উসাল্লামহ মোহাদ্দিস দেহলভী (রাহঃ) বলেন-আমি প্রথমে মক্কা মোয়াজ্জামায় অবস্থানকালে মিলাদুন্নবী দিবসে উপস্থিত ছিলাম এবং লোকেরা নবীজির উপর দরূদ শরীফ পাঠ করতে ছিলেন এবং তাঁর নূরানী মো’জেযা সমূহ নিয়ে আলাপচারিতায় ছিলেন। বিশেষত সমস্ত মো’জেযা শুভ জন্মদিবসে এবং জন্মের পূর্ব মুহূর্তে যে সকল ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল সেসব উল্লেখ করে ছিলেন। এমতাবস্থায় আমি কতগুলো নূর হঠাৎ প্রকাশ হতে দেখলাম! আল্লাহ ভাল জানেন, আমি চর্ম চোখে দেখা নূর এবং রূহানী চোখে নূরের দৃশ্য বর্ণনা করতে পারব না। তারপর আমি ঐ নূরগুলো সম্পর্কে চিন্তা করে বুঝলাম যে, ফেরশতাগণ এ প্রকার ঘটনাবলি ও মজলিসমূহের জন্য নিয়োজিত হয়েছেন। এগুলো ফেরেশতাদের নূর, আরো দেখতে পেলাম যে, ফেরেশতাগনের নূরের সাথে আল্লাহর রহমতের নূরগুলো মিলিত হচ্ছে (ফুইউজুল হারামাইন পৃঃ৮০)।
(১৯) শাহআবদুল হক মোহাদ্দিস দেহলভী (রাহঃ) অন্য কিতাবে বলেন-আমি মিলাদ শরীফের অনুষ্ঠানে দরূদ শরীফ এবং দাঁড়িয়ে সালাম পাঠ করে থাকি (আখবারুল আখ্য়ার, পৃঃ৬২৪)।
২০। ইমামে রাব্বানী সাইয়েদ মুজাদ্দিদে আলফে সানী (রাহ.) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন,
ديگر در باب مولود خوانى اندراج يافته بوددر نفس قرآن خواندن بصوت حسن ودرقصائد نعت ومنقبت خواندن چہ مضائقہ است-
অর্থাৎ- আপনার চিঠিতে মৌলুদখানি সম্পর্কে উল্লেখ ছিল। মধুর কণ্ঠে কোরআন পাকের তেলাওয়াত ও নবী পাক সাসাল্লামাসাল্লামহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে আক্বদাসে ক্বাসিদাসমূহ, নাত, জীবন বৃত্তান্ত পাঠে ক্ষতি কি? (অর্থাৎ কোন ক্ষতি নেই)। মুজাদ্দিদে আলফে সানী: মাকতুবাত শরীফ: পৃ. ১৫৭, মাকতুবাত নং ৭২ ।
২১। হযরত শাহ আব্দুল হক মোহাদ্দেসে দেহলভী ( রাহমাতুল্লাহি আলাই) এর রচিত মাসামাতে বিস সুন্নাহ নামক কিতাবে ৭৮পৃষ্ঠাতেউল্লেখ আছে।যে রাত্রে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুভাগমন করেছেন সেই রাত্রি নিঃসন্দেহে শবে কদরের রাত্র হতে শ্রেষ্ঠ। কেননা মহান আল্লাহ ্ তাঁর প্রিয় হাবীব রাহমাতুল্লিল আলামীনকে সে রাত্রে প্রেরন করেছেন।
ইমাম নববী রহ্মাতুল্লাহি আলাইহিÑএর ওস্তাদ আল্লামা আবুশামাহ্ রহ্মাতুল্লাহি আলাইহি الباعث على البدع والحوادث কিতাবে লিখেছেন,
মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাহফিলে ভাল কাজ করা মোস্তাহাব। আল হাভী লিল ফতওয়া, কৃত: আল্লামা জালাল উদ্দীন সুয়ূতী (রহ:)।
২২। মোল্লা আলী ক্বারী রাহ্মাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সব দেশের ওলামা-মাশায়েখ মাহফিলে মিলাদে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উহার সমাবেশকে এতই তা’জিম করেন যে, কেহই অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করেন না। এতে শরীক হওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই মোবারক মাহফিলের বরকত হাসিল করা।. আনওয়ারে ছাতেয়া, পৃষ্ঠা ১৪৪।

মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল আলী কাদেরী

কামিল (হাদিস, ফিক্হ) বি.এ (অর্নাস)

সহ -সুপার, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া কামিল মাদরাসা (মহিলা শাখা)

মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment