কৃত- মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান (মাঃ জিঃ আঃ)
মহা-পরিচালকঃ আন্জুমান রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম।
আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমান-
[ وَاِذَا اَخَذَ اللّٰہُ مِیْثَاقَ النَّبِیِّیْنَ لَمَا اٰتَیْتُکُمْ مِنْ کِتٰبٍ وَّحِکْمَۃٍ ثُمَّ جَآءَ کُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَکُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِہٖ وَلَتَنْصُرَنَّہٗ ط قَالَ اَاَقْرَرْتُمْ وَاَخَذْتُمْ عَلٰی ذٰلِکُمْ اِصْرِیْ ط قَالُوْا اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْہَدُوْا وَاَنَا مَعَکُمْ مِّنَ الشَّاہِدِیْنَ o فَمَنْ تَوَلّٰی بَعْدَ ذٰلِکَ فَاُولٓءِکَ ہُمُ الْفَاسِقُوْنَ o]
অর্থাৎ ‘‘হে প্রিয় রাসূল! আপনি স্মরণ করুন ওই দিনের কথা, যখন আল্লাহ্ তা‘আলা সমস্ত নবী থেকে অঙ্গিকার নিয়েছিলেন এ কথার উপর যে, যখন আমি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত দিয়ে দুনিয়ায় প্রেরণ করবো, অতঃপর তোমাদের কাছে আমার মহান রসূল তাশরীফ নিয়ে যাবেন এবং তোমাদের নুবূয়ত ও কিতাবের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করবেন, তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং অবশ্যই তাঁকে সাহায্য করবে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা কি এসব কথার উপর অঙ্গিকার করছো এবং এ শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহণ করে নিয়েছ?’ (তখন) তাঁরা সকলেই সমস্বরে বলেছিলেন, ‘আমরা অঙ্গিকার করছি।’ আল্লাহ্ বলেন, ‘তাহলে তোমরা পরস্পর সাক্ষী হয়ে থাকো। আর আমিও তোমাদের সাথে মহাসাক্ষী রইলাম। অতঃপর যে কোন লোক এ অঙ্গিকার থেকে ফিরে যাবে, সে হবে ফাসিক্ব (কাফির)।’ [সূরা আল-ই ইমরান: আয়াত: ৮১-৮২]
উপরিউক্ত দু’টি আয়াতের মধ্যে নবী করীম [ﷺ]-এর ব্যাপারে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে-
১. রূহানী জগতে মীলাদুন্নবীর আলোচনার জন্য নবীগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে; কারণ তিনি ওই সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
২. আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যান্য নবীগণ থেকে নবী করীমের শানে অঙ্গিকার আদায় করেছেন।
৩. নবীগণের জীবদ্দশায় এ মহান নবীর আগমন হলে তাঁদেরকে তাঁর উপর ঈমান আনতে হবে।
৪. তাঁর আগমন হবে অন্যান্য নবীগণের সত্যতার দলীল স্বরূপ।
৫. নবী করীমের পবিত্র জীবদ্দশায় কোন নবী জীবদ্দশায় থাকলে তাঁকে তাঁর শরীয়ত স্থগিত রেখে নবী করীমের উপর ঈমান আনতে হবে ও তাঁর উম্মতের মধ্যে শামিল হতে হবে।
৬. নবী করীম [ﷺ]’কে সর্বাবস্থায় পূর্ণ সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার আদায় করা হয়েছে, এমনকি জীবনের বিনিময়ে ওই সাহায্য হতে হবে নিঃশর্তভাবে।
৭. নবীগণও স্বীকারুক্তি প্রদান করেছেন।
৮. তাঁরা পরস্পর সাক্ষী হয়েছেন।
৯. সকলের উপর মহা সাক্ষী হয়েছেন খোদ্ মহান আল্লাহ্।
১০. এ ওয়াদা ভঙ্গকারীকে ফাসিক্ব তথা কাফির সাব্যস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এতে নবীগণের উম্মত তথা ইহুদী ও খ্রিস্টানদের পরিণতির দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা, নবীগণের অঙ্গিকার ভঙ্গের প্রশ্নই উঠে না। বস্তুতঃ অস্বীকার ও অঙ্গিকার ভঙ্গ করেছে ইহুদী ও খ্রিস্টানগণ। সুতরাং তারাই ফাসিক্ব ও কাফির।
এখানে আরো লক্ষণীয় যে, উপরিউক্ত আয়াত দু’টিতে রাসূলে পাকের রিসালতের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করেছেন, যা উপরে বর্ণিত হয়েছে; কিন্তু আল্লাহ্’র তাওহীদের ব্যাপারে মাত্র একবার ওয়াদা নিয়েছিলেন রোজে আযলে। সেখানে কোন তাকিদমূলক অঙ্গিকারও ছিলোনা এবং সাক্ষীও করা হয়নি। যেমন, আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন-اَلَسْتُ بِرَبِّکُمْ আমি কি তোমাদের রব নই? সমস্ত বনী আদম তখন উত্তরে বলেছে- بَلٰی হ্যাঁ অবশ্যই। কেন নন?
তাওহীদের ক্ষেত্রে একবার অঙ্গিকার গ্রহণ আর রিসালতের ক্ষেত্রে বার বার অঙ্গিকার একথারই ইঙ্গিত বহন করে যে, তাওহীদের ক্ষেত্রে তেমন বিরোধ সৃষ্টি হবে না; কিন্তু রিসালতের ক্ষেত্রে বিরাট মতবিরোধ দেখা দেবে। কেউ মানবে, কেউ মানবে না। কারণ, নবী তো মানবীয় সূরতে যাবেন। তাঁর খাওয়া-দাওয়া চলাফেরা, উঠা-বসা, জাগতিক লেন-দেন মানুষের মতই হবে। এগুলো দেখে তাঁর নুবূয়ত ও রিসালত এবং তাঁর বিশেষ মর্যাদার কথা খুব কম মানুষই অনুধাবন করতে পারবে। তাই তাঁর সাথে অশালীন আচরণ করবে। এজন্যই নবী করীমের নুবূয়ত ও রিসালত সম্পর্কে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও তাঁর সমর্থন উল্লেখ করে আল্লাহ্ তা‘আলা দুনিয়াবাসীকে নবী করীমের শান-মান ও আগমনের গুরুত্ব উপলব্ধি করার প্রতি তাকিদ দিয়েছেন। মীলাদুন্নবীর মূল আলোচ্য বিষয় উক্ত আয়াতে আল্লাহ্ পাক নিজেই বর্ণনা করে দিয়েছেন। আল্লাহর রবূবিয়াত অস্বীকারকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ্ এখানে নিজে কোন ফাতওয়া দেননি; কিন্তু নবী করীমের রিসালত ও শান-মান অস্বীকারকারীকে কাফির বলেছেন।
❏ মীলাদ মাহফিলে ক্বিয়ামঃ
_____________________MustShAre
নামাযের মধ্যে আল্লাহর জন্য ক্বিয়াম করা ফরয এবং মীলাদ মাহফিলে নবী করীমের সম্মানে ক্বিয়াম করা মুস্তাহাব। মীলাদ শরীফে যখন নবী করীম [ﷺ]-এর পবিত্র বেলাদত বা দুনিয়াতে শুভ পদার্পণের বর্ণনা করা হয়, তখন দাঁড়িয়ে নবী করীমের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা মুস্তাহাব। ক্বিয়াম মুস্তাহাব বা সুন্নাত হওয়ার ব্যাপারে পর্যাপ্ত দলীল ক্বোরআন, সুন্নাহ্ ও মুজতাহিদগণের ফাত্ওয়াগ্রন্থাবলীতে পাওয়া যায়। অনেক ফাতওয়া ক্বিয়ামের পক্ষে লেখা হয়েছে। নবীর দুশমন ইবনে তাইমিয়া ও তার অনুসারীরাই কেবল ক্বিয়ামের বিরোধিতা করে থাকে এবং ক্বোরআন-সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করে খোঁড়া যুক্তিপ্রমাণ পেশ করার অপপ্রয়াস চালায়।
ইতোপূর্বে মীলাদুন্নবী উদ্যাপনের পক্ষে উপস্থাপিত প্রমাণাদির অনেকখানিতে ক্বিয়ামের পক্ষে প্রমাণ আনুষঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- সূরা আল-ই ইমরানের ৮১-৮২ আয়াতের বর্ণনা ও তাফসীর অনুযায়ী আল্লাহ পাক স্বয়ং সম্মানিত নবীগণকে নিয়ে রোযে আযলে মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়ামের আয়োজন করেছিলেন। সেদিন সমস্ত সম্মানিত নবী ও রসূলকে একত্রিত করে (সম্মেলন করে) ওই সম্মেলনেই আল্লাহ্ পাক আখেরী নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা [ﷺ]-এর দুনিয়াতে শুভাগমন করার কথা ঘোষণা করেন এবং তাঁদের নুবূয়তের ঘোষণাও করেন ওই সময়েই। আম্বিয়া-ই কেরাম আল্লাহর দরবারে সেদিন ক্বিয়াম করে নবী করীমের আগমন বার্তা শুনেন এবং তাঁকে বরণ করে নেয়ার অঙ্গীকার করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বারবার তাদেরকে অঙ্গীকার করান এবং নবী করীমের আগমনের সাথে সাথে তাঁদের শরীয়তের বিলুপ্তির কথাও ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, সেদিনের মীলাদুন্নবীর ঘোষণা ও বর্ণনাকারী ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ্ তা‘আলা। তিনি মাহফিল করেছিলেন নবীগণকে নিয়ে। নবীগণ আল্লাহর দরবারে মীলাদ মাহফিলে দণ্ডায়মান অবস্থায় নবী করীমের শুভাগমনের সুসংবাদ শ্রবণ করেন এবং তাঁকে বরণ করে নেয়ার অঙ্গীকার করেন।
সূরা আল-ই ইমরানের ৮১-৮২ আয়াতে চার(০৪)টি বিষয়েরই উল্লেখ আছে চারভাবে। যথা-
১. ‘ইবারাতুন্ নাস’ দ্বারা অঙ্গীকার,
২. ‘দালালাতুন্ নাস’ দ্বারা মাহফিল,
৩. ‘ইশারাতুন নাস’ দ্বারা মীলাদ মাহফিল এবং
৪. ‘ইক্বতিদ্বাউন নাস’ দ্বারা ক্বিয়াম।
উসূলে ফিক্বাহ্-এর কিতাব ‘নুরুল আনওয়ার’-এ চার(০৪) প্রকারের নাসের কথা উল্লেখ করেছেন মোল্লা জীবন [رحمه الله عليه]।
সূরা আল-ই ইমরানের ৮১-৮২ নং আয়াত-
وَاِذْ اَخَذَ اللّٰہُ مِیْثَاقَ النَّبِیّیْنَ لَمَآ اٰتَیْتُکُمْ مِّنْ کِتٰبٍ وَّ حِکْمَۃٍ ثُمَّ جَآءَ کُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَکُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِہٖ وَلَتَنْصُرُنَّہٗ ط قَالَ اَأَقْرَرْتُمْ وَاَخَذْتُمْ عَلٰی ذٰلِکُمْ اِصْرِیْ ط قَالُوْا اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْہَدُوْا وَاَنَا مَعَکُمْ مِّنَ الشَّاہِدِیْنَ o فَمَنْ تَوَلّٰی بَعْدَ ذٰلِکَ فَاُوْلٰءِکَ ہُمُ الْفَسِقُوْنَ o
তরজমা: হে প্রিয় হাবীব! আপনি স্মরণ করুন ওই দিনের ঘটনা (রোজে আযল) যখন আল্লাহ্ তা‘আলা নবীগণের নিকট থেকে এ মর্মে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, ‘যখন আমি তোমাদেরকে কিতাব এবং হিকমত (অর্থাৎ নুবূয়ত) দান করবো, অতঃপর তোমাদের কাছে এক মহান রাসূলের শুভাগমন হবে, যিনি তোমাদের প্রত্যেকের নুবূয়তের সত্যায়ন করবেন, তখন তোমরা সকলে অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং সর্বোতভাবে তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে। তোমরা কি এ কথা স্বীকার করলে? এবং এ অঙ্গীকারে কি অটল থাকবে? তাঁরা (নবীগণ) বললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করলাম।’ আল্লাহ্ বললেন, ‘তোমরা পরস্পর সাক্ষী থাকো এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।’ এরপর যে কেউ পিছপা হয়ে যাবে, তারা হবে ফাসিক্ব তথা কাফির।’ [সূরা আল-ই ইমরান, আয়াত ৮১-৮২]
এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয়গুলো হলোঃ
১. আয়াতের ‘ইবারাতুন নাস’ (বচনগুলো) দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, অন্যান্য নবীগণ থেকে আল্লাহ্ তা‘আলা অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন।
২. ‘দালালাতুন্ নাস’ (মর্মার্থ) দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, সমস্ত নবী সেদিন মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন,
৩. ‘ইশারাতুন নাস’ (ইঙ্গিত) দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মূলতঃ এ মাহফিল ছিলো নবী করীমের শুভাগমন বা মীলাদ শরীফের সু-সংবাদের মাহফিল এবং
৪. ইক্বতিদ্বাউন নাস (দলীলের দাবী) দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, ওই সময় নবীগণ ক্বিয়ামরত অবস্থায় ছিলেন। কারণ ওই দরবারে বসার কোন অবকাশ নেই এবং পরিবেশটিও ছিল আদবের।
সুতরাং মীলাদ ও ক্বিয়াম অত্র আয়াত দু’টি দ্বারাই প্রমাণিত হচ্ছে। শুধু ‘ইবারত মান্য করে অন্য তিন(০৩)টি অমান্য করা বৈধ নয়। কারণ চার(০৪) প্রকারেই ক্বোরআন থেকে হুকুম-আহকাম বের হয়; শুধু ‘ইবারত দ্বারা আসল জিনিস প্রমাণ করা যায় না। এর উদাহরণ হলো- আল্লাহ্ তা‘আলা হযরত আদম [عليه السلام] ও বিবি হাওয়াকে শুধু গাছের নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু দালালাত ও ইশারা দ্বারা হযরত আদম [عليه السلام] বুঝে নিয়েছিলেন যে, মূলতঃ ফল খেতেই নিষেধ করা হয়েছে। নিষেধের দাবীও ছিলো তাই।
তাছাড়া, হুযূর পুরনূর নবী করীম [ﷺ]-এর জন্মের চার হাজার(৪,০০০) বছর পূর্বে হযরত ইব্রাহীম [عليه السلام] মীলাদ ও ক্বিয়াম করেছেন মর্মে প্রমাণ মিলেঃ
যেমন, ইবনে কাসীর ‘আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া’ গ্রন্থের ২য় খণ্ড ২৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন যে, নবী করীম [ﷺ]-এর জন্মের চার হাজার বছর পূর্বে মীলাদ ও ক্বিয়াম করেছিলেন হযরত ইবরাহীম [عليه السلام] ও হযরত ইসমাঈল [عليه السلام]। তাঁরা পিতা-পুত্র দু’জন মিলে এক মাসে খানা-ই কা’বা তৈরী করে উদ্বোধন করার সময় রাসূলুল্লাহ্ [ﷺ]-এর মীলাদ সংক্রান্ত আয়াত তিলাওয়াত করেন দাঁড়িয়ে। তা হচ্ছে ক্বোরআন মজীদের সূরা বাক্বারার ১২৯নং আয়াতঃ
رَبَّنَا وَابْعَثْ فِیْہِمْ رَسُوْلاً مِّنْہُمْ یَتْلُوْ عَلَیْہِمْ اٰیٰتِکَ وَیُعَلِّمُہُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِکْمَۃَ وَیُزَکِّیْہِمْ ط اِنَّکَ اَنْتَ الْعَزِیْزُ الْحَکِیْمُ o
অর্থাৎ (হযরত ইব্রাহীম বললেন,) ‘হে আমাদের রব! তুমি এ আরব দেশে আমার পুত্র ইসমাঈলের বংশে তোমার প্রতিশ্রুত ওই মহান রাসূলকে প্রেরণ করো, যিনি তোমার আয়াতসমূহ তাদেরকে পাঠ করে শুনাবেন, তাদেরকে কিতাব ও সুন্নাহর বিশুদ্ধ জ্ঞান শিক্ষা দেবেন এবং বাহ্যিক ও আত্মিক অপবিত্রতা থেকে তাদেরকে পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই তুমি মহা প্রতাপশালী, মহা জ্ঞানের আধার।’ [সূরা বাক্বারা, আয়াত- ১২৯]
ইবনে কাসীর এ আয়াতের পটভূমি বা শানে নুযূল ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, এ দো‘আ-অনুষ্ঠান ছিলো কা’বা ঘরের উদ্বোধন উপলক্ষে মীলাদ ও ক্বিয়ামের মাধ্যমে। এ অনুষ্ঠানে পিতা-পুত্র উভয়ইে ক্বিয়ামরত অবস্থায় ছিলেন। ‘আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া’ গ্রন্থের ইবারত হচ্ছে-دَعَا اِبْرَاہِیْمُ عَلَیْہِ السَّلَامُ وَہُوَ قَاءِمٌ
অর্থাৎ হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালাম দো‘আ করেছেন এমতাবস্থায় যে, তিনি দণ্ডায়মান ছিলেন।
[আল বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া: ২য় খণ্ড, পৃ. ২৬১ঃ হযরত ইবরাহীম আলায়হিস্ সালাম শীর্ষক অধ্যায়]
ইবনে কাসীর ক্বিয়াম বিরোধীদের নিকট অতি শ্রদ্ধেয়। কেননা, তিনি ছিলেন ইবনে তাইমিয়ার শাগরিদ, তবে কিছুটা উদারপন্থী। তিনিও মীলাদ-ক্বিয়ামের পক্ষে উক্ত মন্তব্য করেছেন। তাই ক্বিয়াম বিরোধী লোকেরা তাঁর উদ্ধৃতি গ্রহণ করতে পারেন।
এতে একটি বিষয় প্রমাণিত হলো যে, কোন শুভ কাজের শুরুতে বা সমাপ্তিতে বিশেষতঃ উদ্বোধনীতে মীলাদ ও ক্বিয়াম করা হযরত ইবরাহীম [عليه السلام]-এরই সুন্নাত। তিনি আমাদের ধর্মীয় পিতা। তাঁর অনেক সুন্নাতই ইসলামে বহাল রাখা হয়েছে। যেমন- দাঁড়ি রাখা, গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা, ওযূতে নাকে পানি দেওয়া, গরগরা করা এবং খত্না করা ইত্যাদি।
হুযূর করীমের শুভ জন্মের ৫৭০ বছর পূর্বে হযরত ঈসা [عليه السلام] মীলাদ ও ক্বিয়াম করেছিলেন বলে ইতোপূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন-হুযূর করীমের শুভাগমনের বর্ণনা করেছিলেন হযরত ঈসা [عليه السلام]। ওই সময়ে তিনি ও তাঁর উম্মত হাওয়ারী সকলেই তা’যীমী ক্বিয়াম করেছিলেন। এ ঘটনা অর্থাৎ মীলাদ-ক্বিয়ামের অনুষ্ঠানটি হয়েছিলো নবী করীমের শুভাগমনের ৫৭০ বছর পূর্বে। সুতরাং মীলাদ-ক্বিয়ামের নিয়ম নবী করীমের পবিত্র জন্মের পরে নয়, বরং ৫৭০ বছর পূর্বে হযরত ঈসা [عليه السلام]’র যুগে। এরও সাড়ে তিন হাজার(৩,৫০০) বছর পূর্বে মীলাদ-ক্বিয়ামের প্রমাণ পাওয়া যায় হযরত ইব্রাহীম [عليه السلام]’র যুগে। সুতরাং মীলাদ-ক্বিয়াম বিদ্‘আত নয় বরং প্রাচীন সুন্নাত। তাও আবার সাধারণ মানুষের সুন্নাত নয়, বরং নবীগণের সুন্নাত। হযরত ঈসা [عليه السلام]-এর ক্বিয়ামের প্রমাণ ইবনে কাসীর কর্তৃক লিখিত ১৬ খণ্ডে ‘আল বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া’ গ্রন্থের ২য় খণ্ড ২৬৩ পৃষ্ঠায় হযরত ঈসা [عليه السلام] শীর্ষক অধ্যায়ে লিখিত আছে। ইবনে কাসীর প্রথমে হযরত ঈসা [عليه السلام] কর্তৃক নবী করীম [ﷺ]-এর শুভাগমন বা মীলাদ শরীফের বর্ণনা ক্বোরআন মজিদ থেকে এভাবে উদ্ধৃত করেছেন-
وَاِذْ قَالَ عِیْسَی بْنُ مَرْیَمَ یٰبَنِی اِسْرَآءِیْلَ اِنِّیْ رَسُوْلُ اللّٰہِ اِلَیْکُمْ مُّصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوْرَاۃِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُوْلٍ یَّأْتِیْ مِنْ بَعْدِی اسْمُہٗ اَحْمَدَ ط
অর্থাৎ হে হাবীব! স্মরণ করুন। যখন ঈসা [عليه السلام] এভাবে ভাষণ দিয়েছিলেন, ‘‘হে বনী ইসরাঈল! আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র প্রেরিত রাসূল। আমি আমার পূর্ববর্তী তাওরীত কিতাবের সত্যায়ন করছি এবং আমার পরে একজন মহান রাসূলের শুভাগমনের সুসংবাদ দিচ্ছি, যাঁর পবিত্র নাম হবে ‘আহমদ’। [সূরা আস্সফ, আয়াত-৬]
হযরত ঈসা [عليه السلام]’র উক্ত ঘোষণার পরিবেশ বা অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে ইবনে কাসীর তাঁর কিতাবে নিম্নোক্ত বক্তব্য পেশ করেছেন- وَخَاطَبَ عِیْسٰی عَلَیْہِ السَّلاَمُ اُمَّتَہُ الْحَوَارِیِّیْنَ قَآءِمًا
অর্থাৎ হযরত ঈসা [عليه السلام] তাঁর উম্মত হাওয়ারীকে সম্বোধন করে মীলাদুন্নবীর যে বয়ান দিয়েছিলেন, তা ছিলো ক্বিয়ামরত অবস্থায়।
এতে পরিস্কার হয়ে গেলো যে, রাসূলুল্লাহ্ [ﷺ]-এর তাওয়াল্লুদ শরীফের বর্ণনাকালীন সময়ে ক্বিয়াম করা হযরত ঈসা [عليه السلام]’র সুন্নাত। ওই সময়ে শুধু শুভাগমনের সংবাদ ছিল যার সম্মানে তিনি ক্বিয়াম করেছিলেন। বুঝা গেলো যে, নবী করীমের বাহ্যিক উপস্থিতি ক্বিয়ামের জন্য পূর্বশর্ত নয়। যারা বলে, ‘যার জন্য ক্বিয়াম করছেন, তিনি কি সশরীরে হাযির হয়েছেন?’ তাদের এরূপ তর্ক করা নিরর্থক এবং নবী-দুশমনীর পরিচায়ক। ক্বিয়াম বিরোধীদের ইমাম ইবনে কাসীর যেখানে ক্বিয়ামের সমর্থক এবং ৫৭০ বছর পূর্বেকার ক্বিয়ামের ইতিহাস বর্ণনাকারী ও ক্বিয়ামের দলীল উপস্থাপক, সেখানে তাঁর এ উক্তির মূল্যায়ন করা উচিৎ। তিনি ৭৭৪ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেছেন। নজদী-ওহাবী ও তার অনুসারী ওহাবী সম্প্রদায় ওই যুগকে সম্মান করে এবং ওই যুগের মনীষীদের মতামতকেও গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আশা করি, তারা এ মাসআলায়ও এর ব্যতিক্রম করবে না।
যে কোন উত্তম কাজে দাঁড়ানোর নির্দেশ পালন করার বিধান রয়েছে পবিত্র ক্বোরআনে
আল্লাহ্ তা‘আলা ক্বোরআন মজীদের ২৮ নং পারাতে সূরা মুজাদালায় এরশাদ করেন-
یَآاَیُّہَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْآ اِذَا قِیْلَ لَکُمْ تَفَسَّحُوْا فِی الْمَجَالِسِ فَافْسَحُوْا یَفْسَحِ اللّٰہُ لَکُمْ ج وَاِذَا قِیْلَ انْشُزُوْا فَانْشُزُوْا
অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদেরকে বলা হয়, ‘মজলিসের মধ্যে জায়গা প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা জায়গা প্রশস্ত করে দাও। ফলে আল্লাহ্ তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দেবেন। আর যখন বলা হয়, ‘দাঁড়িয়ে যাও, তখন দাঁড়িয়ে যাও।’ [সূরা মুজাদালাহ্ঃ আয়াত-১১]
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতি [رحمه الله عليه] তাফসীরে জালালাইনে বলেন-
যখন তোমাদেরকে নবী করীমের মজলিসে অথবা অন্য কোন যিকরের মজলিসে জায়গা প্রশস্ত করার জন্য বলা হয়, যাতে আগত লোকেরাও তোমাদের সাথে বসতে পারে, তাহলে তোমরা তাদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়ে আরো প্রশস্ত করে দাও। আর যদি বলা হয়, ‘নামায বা অন্য কোন নেক কাজের জন্য দাঁড়িয়ে যাও’, তাহলে তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে যাবে।
এ ব্যাখ্যা দ্বারাও প্রমাণিত হয় যে, কোন নেক কাজে বা ভাল কাজে দাঁড়ানোর কথা বললে দাঁড়িয়ে যাওয়া আল্লাহর নির্দেশ। মীলাদ মাহফিলে ‘যিকরে বেলাদত’ বা হুযূর করীম [ﷺ-এর দুনিয়াতে শুভ আগমনের কথা শোনামাত্র নবী করীমের সম্মানার্থে ক্বিয়াম করা আল্লাহর এ নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত এবং ফিক্বহের ফাত্ওয়া অনুসারে মুস্তাহ্সান। আল্লামা সুয়ূত্বীর এ নীতিমালা মান্য করা প্রত্যেক আলিমের উচিৎ। ‘তাফসীরে সাভী আলাল জালালাইন’-এ হযরত আহমদ সাভী উক্ত আয়াত নাযিলের পটভূমি (শানে নুযূল) এভাবে বর্ণনা করেছেন-
‘নবী করীম [ﷺ] বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীদেরকে অতিমাত্রায় সম্মান দিতেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন সাহাবী নবী করীম [ﷺ]-এর খিদমতে একদিন উপস্থিত হলেন এবং মজলিসের সম্মুখভাগে চলে আসলেন। তাঁরা হুযূর করীম [ﷺ]-এর আশে পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন এবং হুযূরকে সালাম দিলেন। হুযূর করীম [ﷺ] সালামের জবাব দিলেন। অতঃপর তাঁরা উপস্থিত অন্যান্য সকল সাহাবীকেও সালাম দিলেন। তাঁরাও সালামের জবাব দিলেন; কিন্তু বসার জন্য স্থান করে দিলেন না। বদরী সাহাবীগণ দাঁড়িয়ে রইলেন এবং বসার স্থানের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন; কিন্তু কোন সাহাবী তাঁদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়ে হুযূরের নিকট থেকে দূরে সরে যেতে রাজী হলেন না।
এ পরিস্থিতি হুযূরের জন্য খুবই পীড়াদায়ক ঠেকলো। অতঃপর হুযূর করীম [ﷺ] নিজেই তাঁদেরকে সরে যেতে বললেন এবং সম্মানিত বদরী সাহাবীদের জন্য জায়গা প্রশস্ত করে দিতে নির্দেশ দিলেন। হুযূর করীম [ﷺ] একজন একজন করে নাম ধরে বললেন, ‘‘তুমি দাঁড়াও এবং বদরী সাহাবীর জন্য জায়গা করে দাও।’’ এভাবে যতজন বদরী সাহাবী দাঁড়ানো ছিলেন, ততজনকে তুলে দিয়ে সে স্থানে আগতদের জায়গা করে দিলেন। এতে ওই সব সাহাবী মনে কষ্ট পেলেন। কেননা, তাঁদেরও ইচ্ছা ছিলো হুযূরের নিকটবর্তী হয়ে বসার। নবী করীম [ﷺ] তাঁদের মনবেদনা সম্পর্কে জানতেন। নবী করীম [ﷺ]-এর নির্দেশ মেনে নিয়ে সম্মানিত সাহাবীদের জন্য সম্মান প্রদর্শন করার বিনিময়ে আল্লাহ্ তা‘আলা উক্ত আয়াত শরীফ নাযিল করে এরশাদ করলেন, ‘তোমরা নবী করীমের নির্দেশে তোমাদের সম্মানিত বদরী সাহাবীদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়েছো। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য বেহেস্তের মধ্যে এর চেয়েও প্রশস্ত জায়গা ছেড়ে দেবেন।’ সুবহানাল্লাহ্।
আল্লামা সাভী মন্তব্য করেন, ‘‘আয়াতখানা যদিও কতিপয় সাহাবীর শানে নাযিল হয়েছে, কিন্তু এটা দ্বারা সমস্ত উম্মতকেই শিক্ষা দেয়া হয়েছে।’’ শানে নুযূল খাস হলেও হুকুম ছিল আম বা ব্যাপক। সুতরাং ইলমের মজলিস, যিকরের মজলিস, নামাযের জামা‘আত, যুদ্ধক্ষেত্র ও অন্যান্য নেক কাজের সমস্ত মজলিস অত্র আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। যে কোন ভাল মজলিসে দাঁড়াতে বললে তা মেনে নিয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।’ [সাভী]
মীলাদ মাহফিলও তদ্রুপ একটি উত্তম মাহফিল। এখানেও হুযূরের আগমনের বয়ান শোনার পর সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এটাই আয়াতের দাবী। সুতরাং ক্বোরআনের আয়াত দ্বারাও ক্বিয়াম করা উত্তম বলে প্রমাণিত হলো।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কোন মজলিসে পূর্ব হতে কোন লোক বসা থাকলে তাকে তুলে দিয়ে ওই স্থানে পরে আগত কোন লোককে বসানো মাকরূহ। এটাও হাদীস শরীফে উল্লেখ আছে। যেমন- হুযূর করীম [ﷺ] এরশাদ করেছেন-
لاَ یُقِیْمَنَّ اَحَدُکُمُ الرَّجُلَ مِنْ مَّجْلِسِہٖ ثُمَّ یَجْلِسُ فِیْہِ وَلٰکِنْ تَفَسَّحُوْا وَتَوَسَّعُوْا وَلاَ یُقِیْمَنَّ اَحَدُکُمْ اَخَاہُ یَوْمَ الْجُمُعَۃِ وَلٰکِنْ لِّیَقُلْ اِفْسَحُوْا (تفسیر صاوی سورۃ مجادلۃ صفحہ ‘ ۲۳۵ المشکوٰۃ باب القیام صفحہ ۳249۴ عن عمرو اخرجہ البخاری ومسلم)
অর্থাৎ নবী করীম [ﷺ] এরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যেন অন্য লোককে তার বসার স্থান থেকে তুলে না দেয় এবং নিজে ওই স্থান দখল না করে; বরং তোমরা নিজেরা স্বেচ্ছায় আগতদের জন্য জায়গা প্রশস্ত করে দিও। আর জুমার দিনে তোমাদের কেউ যেন আপন ভাইকে তার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে নিজে সেখানে না বসে; বরং সে যেন বলে- দয়া করে একটু জায়গা করে দিন!
[মিশকাত বাবুল ক্বিয়াম, তাফসীরে সাভী: সূরা মুজাদালাহ্র উল্লিখিত আয়াত]
আল্লামা সাভী এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, এতে বুঝা গেলো যে, আগত ব্যক্তি উপস্থিত ব্যক্তিকে জোর করে উঠিয়ে দিতে পারবে না। তবে একটু জায়গা করে দিতে অনুরোধ করতে পারবে; কিন্তু উপবিষ্ট ব্যক্তি যদি কোন বুযুর্গ বা গণ্যমান্য বা বয়সে বড় কোন লোকের বসার জন্য স্বেচ্ছায় জায়গা ছেড়ে দেয় অথবা মজলিসের মুরুব্বীদের মধ্যে যদি কেউ কোন মহৎ কারণে কাউকে তুলে দিয়ে অন্যকে সে জায়গায় বসায়, তাহলে কোন ক্ষতি নেই। এটা অবস্থার উপর নির্ভরশীল। দেখুন, নবী করীম [ﷺ] পরে আগত বদরী সাহাবীদের সম্মানে অন্যকে উঠিয়ে দিয়ে সে জায়গায় তাঁদেরকে বসতে দিয়েছিলেন। অবস্থা অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দূষণীয় নয়।
আল্লামা সাভী তারপর বলেন, তোমাদেরকে দাঁড়িয়ে যেতে বললে তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে যাবে। আল্লাহর এ নির্দেশ নামায এবং অন্যান্য ধর্মীয় নেক কাজের ক্ষেত্রে সমভাবে সর্বত্র প্রযোজ্য। যেমন- জিহাদ ও অন্যান্য নেক কাজ। উক্ত আয়াতের আরো একটি ব্যাখ্যা হলো- যখন তোমাদেরকে বলা হবে- ‘সরে গিয়ে জায়গা করে দাও’, তখন তোমরা আসন বা জায়গা ছেড়ে দিয়ে আগত ভাইদের জায়গা করে দেবে। [সাভী]
এতেও প্রমাণিত হয় যে, মীলাদ শরীফে ক্বিয়ামের জন্য ইঙ্গিত দেওয়া মাত্র দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এটাই ক্বোরআনের হুকুম ও নির্দেশ। এরূপ ক্বিয়াম মুস্তাহ্সান (উত্তম কাজ)।
কৃত- মাওলানা আব্দুল মান্নান (মাঃ জিঃ আঃ)
মহা-পরিচালক: আনজুমান রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম।