মিলাদ ও কিয়াম

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মিলাদ ও কিয়াম

মিলাদ ও কিয়াম

প্রমাণ নং ০১

পবিত্র মিলাদুন্নবীর ইতিহাস অতি প্রাচীন |মিলাদুন্নবীর সুচনা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন | রোজে আজলে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামেকে নিয়ে আল্লাহ এই মিলাদের আয়োজন করেছিলেন | নবী গনের মহাসম্মেলন ডেকে মিলাদুন্নবী আয়োজক স্বয়ং আল্লাহ তিনি নিজে ছিলেন মীরে মাজলিস বা সভাপতি | সকল নবীগন ছিলেন শ্রোতা | ঐ মজলিসের উদ্দেশ্য ছিল হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের বিলাদত , শান ও মান অন্যান্য নবীগনের সামনে তুলে ধরা এবং তাঁদের থেকে তাঁর উপর ঈমান আনয়ন ও সাহায্য সমর্থনের প্রতিশ্রুতি আদায় করা | 

★কোরআন মজিদের ৩য় পারা সুরা আলে এমরানে ৮১-৮২ নং আয়াতে মধ্যে আল্লাহতায়ালা ঐ মিলাদুন্নবী মাহফিলের কথা উল্লেখ করেছেন | নবীজীর সম্মানে এটাই ছিল প্রথম মিলাদ মাহফিল এবং মিলাদ মাহফিলের উদ্যোগ্ক্তা ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা | সুতরাং মিলাদে মাহফিল আনুষ্ঠান হচ্ছে আল্লাহর সুন্নত বা তরিকা |

ঐ মজলিসে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরাম ও উপস্থিত ছিলেন | ঐ মজলিসে স্বয়ং আল্লাহ নবীজীর শুধু আবির্ভাব বা মিলাদের উপরই গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন | সিরাতুন্নবীর উপর কোন আলোচনা সে দিন হয়নি | সমস্ত নবীগন খোদার দরবারে দন্ডায় মান থেকে মিলাদ শুনেছেন এবং কিয়াম করেছেন | কেননা খোদার দরবারে বসার কোন অবকাশ নেই ,পরিবেশটি ছিল আদবের | মিলাদ পাঠকারী ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ এবং কিয়ম কারীগন ছিলেন আমবিয়ায়ে কেরাম |এই মিলাদ ও কিয়াম কোরআনের ” ইকতেদো উন নস ”  দ্বারা প্রমানিত হলো : উল্লেখ্য যে কোরআনে মজিদের “নস” চার প্রকার যথা :

১/ইবারত , ২/দালালত , ৩/ ইশারা ও ৪/ইক্কতিজা | উক্ত চার প্রকার দ্বারাই দলিল সাবেত হয় | ( নুরূল আনওয়ার দেখুন ) নিম্নে উল্লেখিত আয়াতের মধ্যে ইবারতের দ্বারা প্রমানিত হয়েছে অঙ্গীকার / দালালাতের দ্বারা নবীগনের মাহফিল , ইশারার দ্বারা মিলাদের বা আবির্ভাবের এবং ইকতিজার দ্বারা কিয়ামের প্রমানিত হয়েছে | সুতরং মিলাদুন্নবী মহফিল কেয়াম নবীগনের সম্মিলিত সুন্নাত ও ইজামায়ে আম্বিয়া দ্বারা প্রতিষ্ঠিত |

★কোরআন মজিদে আলে এমরানের আয়াত ৮১-৮২ উল্লেখ করা হলো :

আল্লাহ বলেন ( ৮১ ) ” হে প্রিয় রাসুল ! আপনি স্মরণ করূন ঐ দিনের কথা , যখন আল্লাহ তায়ালা সমস্ত নবীগন থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন এ কথার উপর যে , যখন আমি তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত দিয়ে দুনিয়ায় প্রেরন করবো ; তারপর তোমাদের কাছে আমার মহান রাসুল যাবেন এবং তোমাদের নবুয়্যাত ও কিতাবের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করবেন , তখন তোমরা অবশ্য অবশ্যই তাঁর উপর ঈমান আনবে এবং অবশ্যই তাঁকে সাহায্য করবে ” আল্লাহ বলেন : ” তোমরা কি এ সব কথার উপর অঙ্গীকার করছো এবং এই শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহন করে নিয়েছো ( তখন ) তাঁরা সকলেই সমস্বরে বলেছিলেন, আমরা অঙ্গিকার করছি | আল্লাহ বলেন : “তাহলে তোমরা পরস্পর সাক্ষি থাক | আর আমি ও তোমাদের সাথে মহাসাক্ষী রইলাম “|

( ৮২ ) ” অত:পর যে কোন লোক এই অঙ্গীকার থেকে ফিরে যাবে- সেই নফরমান ” (কাফের ) | ( আলে এমরান আয়াত ৮১/৮২ ) |

উক্ত দুটি আয়াতে মধ্যে নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম –এর ব্যাপারে ১০ টি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে । যথা :

১ । এই ঐতিহসিক মিলাদ সম্মেলনের ঘটনাবলীর প্রতি রাসুলে কারিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর দৃষ্টি আকর্ষণ | যেহেতু নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ সময়ে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন |

২। আল্লাহ কর্তৃক অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরামের নিকট থেকে নবীজীর শানে অঙ্গীকার আদায় |

৩। নবীগনের রমরমা রাজত্বকালে এই মহান নবীর আগমন হলে তাঁর উপর ঈমান আনতে হবে |

৪। তাঁর আগমন হবে অন্যান্য নবীগনেরর সত্যতর দলীল স্বরূপ |

৫। ঐ সময়ে নবীগনের নবুয়ত স্থগিত রেখে-নবীজীর উপর ঈমান আনয়ন করতে হবে |

৬। নবীজীকে সর্বাবস্থায় পুর্ন সাহায্য সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার আদায় | জীবনের বিনিময়ে এই সাহায্য হতে হবে নি:শর্তভাবে |

৭। নবীগনের স্বীকৃতি প্রদান |

৮। পরস্পর সাক্ষী হওয়া |

৯। সকলের উপরে আল্লাহ মহাসাক্ষী |

১০। ওয়াদা ভঙ্গের পরিনাম – নাফরমান ও কাফের |

১১. নং দফায় নবীগনের উম্মত তথা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদের পরিনতির দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে | কেননা নবীগগনের অস্বীকারের প্রশ্নই উঠে না | অস্বীকার করেছেন ইয়াহুদী ও নাসারাগন | সুতরাং তারাই কাফের” | 

বর্তমানে আমাদের সমাজে একদল রাসুল (সাঃ) বিদ্বেষী একদল মুনাফেক মুসলমানের আবির্ভাব ঘটেছে। কোরআন হাদিসের জ্ঞানশুন্য মুর্খ থেকে শুরু করে লেবাসধারী আলেম উলামা পীর মাসায়াখেরা পর্যন্ত বলে এবং বেদাতের ফতুয়াবাজি করে যে, মহাপবিত্র ঈদুল আজম “ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম” নাকি কোরআন হাদিসে নাই ? মুর্খ মুনাফেকদের এই মিথ্যাচারের দাতভাঙ্গা জবাব হিসেবে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ থেকেই পবিত্র মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দলিল আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করছি |

★পবিত্র কুরআনুল কারীমের সুরা আলে ইমরানের ১০৩ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এরশাদ করেন,

” ﺍﺫﻛﺮﻭﺍ ﻧﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻜﻢ ” অর্থাৎ তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেওয়া হয়েছে তার জিকির কর এবং খুশি কর|

★আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের সুরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতে এরশাদ করেন,

 ” ﻗﺎﻝ ﺑﻔﻀﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﺑﺮﺣﻤﺘﻪ ﻓﺒﺬﺍﻟﻚ
ﻓﻠﻴﻔﺮﺣﻮﺍ ﻫﻮ ﺧﻴﺮﻣﻤﺎ ﻳﺠﻤﻌﻮﻥ
অর্থাৎ হে রাসুল আপনি বলুন আল্লাহর দয়া ও রহমতকে কেন্দ্র করে তারা যেন আনন্দ করে এবং এটা হবে তাদের অর্জিত সকল কর্মফলের চেয়েও
অধিক শ্রেষ্ঠ |

এ পৃথিবীতে যত নেয়ামত রয়েছে বা এসেছে এর চেয়ে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম | আল্লাহর এই নেয়ামত ও অনুগ্রহকে কেন্দ্র করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও আনন্দ উদযাপন করার নির্দেশ স্বয়ং রাব্বুল আলামিন দিয়েছেন যার প্রমান উপরোক্ত পবিত্র কোরআনের আয়াত |অতএব নবীজির শুভাগমনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত আর কি হতে পারে ?

★আবার আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনের সুরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে দয়াল নবীজির শ্রেষ্টত্ব প্রকাশ করার জন্য ঘোষণা করেন,

” ﻭﻣﺎ ﺍﺭﺳﻠﻨﻚ ﺇﻻ ﺭﺣﻤﺔ ﻟﻠﻌﺎﻟﻤﻴﻦ “
অর্থাৎ নিশ্চয় আমি আপনাকে জগতসমূহের রহমত করেই প্রেরণ করেছি |

★আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনের ১১৪ নং আয়াতে এরশাদ করেন ,

ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﻧﺰﻝ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﻣﺎﺀﺩﺓ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺗﻜﻮﻥ ﻟﻨﺎ ﻋﻴﺪﺍ ﻻﻭﻟﻨﺎﻭﺍﺧﺮﻧﺎ
অর্থাৎ ঈসা ইবনে মারিয়াম ( আ ) দুয়া করলেন , হে আল্লাহ ! হে আমাদের প্রভু আমাদের প্রতি আকাশ হতে খাদ্য অবতীর্ণ করুন যেন সেটা আমাদের জন্য অর্থাৎ আমাদের মধ্যে যারা প্রথমে ( বর্তমানে আছে ) এবং যারা পরে , সকলের জন্য আনন্দের বিষয় হয় এবং আপনার পক্ষ হতে এক নিদর্শন হয় ( ঈদের দিন ) | আর আপনি আমাদেরকে রিজিক প্রদান করুন বস্তুত আপনিই সর্বোত্তম রিজিক প্রদানকারী |

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে খাদ্য ভর্তি পেলে তা যদি ঈসা ( আঃ ) এর ভাষায় সৃষ্ঠির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত আনন্দ উত্সবের কারণ হয় তবে রাহমাতুল্লিল আলামিন নবীজির মত মহান নেয়ামতের শুভাগমনের দিনটি কতই না গুরুত্বপূর্ণ , মর্যাদাপূর্ণ ও আনন্দের তা সহজেই অনুমান করা যায় |

★তাছাড়া সুরা আজহাবের ৫৬ নং আয়াতে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন ,
“তোমরা আমার হাবিবের প্রতি দুরুদ সালাম প্রেরণ কর” |
অর্থাৎ আল্লাহ আমাদেরকে স্পষ্ট এখানে নির্দেশ করেছেন উনার হাবিবের প্রতি দুরুদ সালাম জানানোর জন্য | আল্লাহর নির্দেশ বিবেচনায় যা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ ( অর্থাৎ নবীজিকে তাজিম করা , সম্মান করা , নবীজিকে দিয়ে ভালো মনোভাব পোষণ করা ) |

এখন যারা মিলাদুন্নবীর বিপক্ষে কথা বলে , পাইকারী ফতুয়াবাজি করে এবং কোরআনে নেই বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালায় তারা মূলত পবিত্র
কুরআনকে অস্বীকার করার মাধ্যমে যে কাফেরে পরিনত হয়ে যাচ্ছে সেই খবর কি ওদের আছে ?
অতএব পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের উক্ত আয়াতগুলো থেকে সুস্পষ্ট প্রমান হয়ে যায় ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুশি মনে পালন করা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য ঈমানী দায়িত্ব এবং এই দিনের চেয়ে নিয়ামতপূর্ণ দিন আর হতেই পারেনা !

প্রমাণ নং-০২

মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষে শত শত সহি হাদিস শরীফ থেকে কিছু হাদিস শরীফ আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করছি |
রাহমাতুল্লিল আলামিন হুজুর পুর নূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই নিজের মিলাদ পালন করেছেন |
★এই প্রসঙ্গে পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে ,
 ” ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﻗَﺘَﺪَﺓَ ﺍﻻَﻧْﺼﺎَﺭِﻯ ﺭَﺿِﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻨﻪُ ﺍَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺱﺀﻝ ﻋَﻦْ ﺻَﻮْﻡِ ﻳَﻮْﻡ ﺍﻻِﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻗَﻞَ ﺫَﺍﻙَ ﻳَﻮْﻡٌ ﻭُﻟِﺪْﺕُ ﻓِﻴْﻪِ ﺑُﻌِﺜْﺖُ ﺍَﻭْﺍُﻧْﺰِﻝَ ﻋَﻠَﻰَّ ﻓِﻴْﻪِ –
অর্থাৎ হজরত আবু কাতাদা ( রা ) হতে বর্ণিত , একজন সাহাবী হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আরজ করলেন ই রাসুলাল্লাহ , ইয়া হাবিবাল্লাহ আমার মাতা পিতা আপনার নূরের পাক কদমে কুরবান হোক | আপনি প্রতি সোমবার রোজা পালন করেন কেন ? জবাবে সরকারে দুজাহান নূরে মুজাস্সাম হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন , এই দিনে আমার জন্ম হয়েছে , এই দিনে আমি প্রেরিত হয়েছি এবং পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এই দিনেই আমার উপর নাজিল হয়েছে | (সহীহ মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড, ৮১৯ পৃষ্ঠা, বায়হাকী: আহসানুল কুবরা, ৪র্থ খন্ড ২৮৬ পৃ: মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল ৫ম খন্ড ২৯৭ পৃ: মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৪র্থ খন্ড ২৯৬পৃ: হিলিয়াতুল আউলিয়া ৯ম খন্ড ৫২ পৃ:)
বুখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকারী আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী , ইমাম বদরুদ্দিন আইনি বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় লিখেন ,
ﻭﺫﻛﺮ ﺍﻟﺴﻬﻴﻠﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﺎ ﻣﺎﺕ ﺍﺑﻮ ﻟﻬﺐ ﺭﺍﻳﺘﻪ ﻓﻲ
ﻣﻨﺎﻣﻲ ﺑﻌﺪ ﺣﻮﻝ ﻓﻲ ﺷﺮ ﺣﺎﻝ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎ ﻟﻘﻴﺖ ﺑﻌﺪ
ﻛﻢ ﺭﺍﺣﺔ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ﻳﺨﻔﻒ ﻋﻨﻲ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﺛﻨﻴﻦ ﻭﺫﻟﻚ ﺍﻥ
ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﻟﺪ ﻳﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻭﻛﺎﻧﺖ ﺛﻮﻳﺒﺔ
ﺑﺸﺮﺕ ﺍﺑﺎ ﻟﻬﺐ ﺑﻤﻮﻟﺪﻩ ﻓﺎﻋﺘﻘﻬﺎ
অর্থাৎ হজরত আব্বাস ( রা ) বর্ণনা করেন , ” আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর আমি তাকে স্বপ্নে দেখি | সে আমাকে বলে ভাই আব্বাস আমার মৃত্যুর পর থেকে কবরের জিন্দেগীতে আমি শান্তিতে নেই | কিন্তু প্রতি সোমবার এলেই আমার শাস্থি লাগব করে দেওয়া হয় | এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে হজরত আব্বাস ( রা ) বলেন আবু লাহাবের এই সোমবারের শাস্তি লাগবের কারণ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ উপলক্ষে হুজুর যেদিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন নবীজির শুভাগমনে খুশি হয়ে হজরত সুয়াইবা ( রা ) আজাদ করে ছিলেন | (ফাতহুল বারি সরহে সহীহুল বুখারী , অম্দাতুল কারী শরহে সহীহুল বুখারী )|
এখন কথা হলো আবু লাহাবের মত কাট্টা কাফের যদি নবীজির একদিনের বেলাদত শরীফে খুশি হয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রতি সোমবার তার জাহান্নামের আজাব লাগব হয়ে যায় , আমরা যারা মুমিন মুসলমান তারা জীবনে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কতগুলা বেলাদত শরীফ খুশি মনে পালন করে তার বিনিময়ে কি জান্নাত পেতে পারিনা ?
★এই প্রসঙ্গে উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ অলিয়ে কামেল শায়খ আব্দুল হক মহাদ্দেসে দেহলভী ( রহ ) বলেন ,
ﻣﻦ ﻋﻈﻢ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺑﻤﺎ ﺍﻣﻜﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻌﻈﻴﻢ ﻭﺍﻻﻛﺮﺍﻡ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ
ﺍﻟﻔﺎﺀﺯﻳﻦ ﺑﺪﺍﺭ ﺍﻟﺴﻼﻡ
অর্থাৎ যারা হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফকে সম্মান ও তাজিম করবে এবং খুশি মনে পালন করবে সে চির শান্তির জায়গা জান্নাতের অধিকারী হবে |
(মাছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খন্ড, খুত্বায়ে ইবনে নাবাতা) |
অতএব হাদিস শরিফ থেকে মহা পবিত্র ঈদ উল আজম ঈদ ই মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বৈধতা স্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো , এরপরও যদি কেউ পবিত্র মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিপক্ষে কথা বলে , বেদাতের ফতুয়া দেয় বুঝতে হবে সে হয়তো অন্ধ , মুর্খ নতুবা মুনাফেক রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাত শত্রু | কেননা অন্ধ আর মূর্খর পক্ষে হাদিস পড়া সম্ভব না আর মুনাফেক ছাড়া কেউ রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শান মান তথাপি উনার পবিত্রজন্মদিনকে অস্বীকার করতে পারেনা !
হযরত আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ুতী রাহিমামুল্লাহ আলাইহি যার সনদ সহ প্রায় ২ লক্ষ হাদিস শরীফ মুখস্থ ছিল সেই তাজুল মুফাস্সিরীন মোহাদ্দেস মুসান্নিফ সুয়ুতি রাহিমামুল্লাহ আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব ” সুবলুল হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা আলাইহি ওয়া সাল্লাম “” এ দুই খানা সহি হাদিস শরীফ বর্ণনা করেছেন |
পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে “
ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﺍﻟﺪَّﺭْﺩَﺍﺀِ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﺍَﻧَّﻪﻣَﺮَّ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻟٰﻰﺑَﻴْﺖِ ﻋَﺎﻣِﺮِ ﺍﻻَﻧْﺼَﺎﺭِﻯِّ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌَﻠِّﻢُ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻻَﺑْﻨَﺎﺋِﻪﻭَﻋَﺸﻪِﺗَﺮْﻴِ ﻭَﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻓَﻘَﺎﻝَ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓَﺘَﺢَﻟَﻚَ ﺍَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻼﺋِﻜَﺔُ
ﻛُﻠُّﻬُﻢْﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭْﻥَ ﻟَﻚَ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ
ﻓِﻌْﻠَﻚَ ﻧَﺠٰﻰﻧَﺠٰﺘَﻚ
অর্থাৎ হজরত আবু দ্বারদা ( রা ) হতে বর্ণিত , হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন হজরত আমির আনসারী ( রা ) এর গৃহে গেলেন এবং হুজুর দেখতে পেলেন আমির আনসারী ( রা ) উনার পরিবার পরিজন ও আত্বীয় স্বজনদের নিয়ে একত্রিত হয়ে খুশি মনে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছেন | অর্থাৎ নবীজি এইদিনে পৃথিবীতে আসছেন , পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মাখলুক আনন্দিত হয়ে ইত্যাদি | এই ঘটনা শ্রবণ করে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত অনদিত হয়ে হজরত আমির আনসারীকে বললেন ,আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার রহমতের দরজা প্রশস্থ করেছেন এবং সমস্থ ফেরেস্থাগন আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন | যে আপনার জন্য এইরূপ কাজ করবে সেও আপনার মত নাজাত ( ফজিলত ) লাভ করবে | ( সুবহান আল্লাহ )
পবিত্র হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে “
ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﺍَﻧَّﻪٗﻛَﺎﻥَ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ
ﻓِﻰْ ﺑَﻴْﺘِﻪٖ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗٖﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭْﻥَ
ﻭَﻳُﺤَﻤِّﺪُﻭْﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺎِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﻠَّﺖْﻟَﻜُﻢْ ﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻰْ
অর্থাৎ হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ( রা ) নিজেই বর্ণনা করেন , একদা তিনি উনার গৃহে সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে একত্রিত হয়ে হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছিলেন |( এই দিনে হুজুর পৃথিবীতে আসছেন , স্বয়ং আল্লাহ উনার হাবিবের উপর দুরুদ সালাম দিয়েছেন ) শ্রবন্কারীরাও তা শুনে আনন্দ পাচ্ছিলেন | ঠিক ওই সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হয়ে বললেন , তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে “|
এই হাদিসটি বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থে এসেছে যেমন : মাওলুদুল কবীর , আত তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযার , হকিকতে মোহাম্মদী ( মিলাদ অধ্যায় ), দুররুল মুনাজ্জাম , ইশবাউল কালাম |
অতএব উপরোক্ত সহি হাদিসের মাধ্যমে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বৈধতা প্রমানিত হলো , এরপরও যদি কেউ পবিত্র মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিপক্ষে কথা বলে , বেদাতের ফতুয়া দেয় বুঝতে হবে সে হয়তো অন্ধ , মুর্খ নতুবা মুনাফেক রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাত শত্রু | কেননা অন্ধ আর মূর্খর পক্ষে হাদিস পড়া সম্ভব না আর মুনাফেক ছাড়া কেউ রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শান মান তথাপি উনার পবিত্র জন্মদিনকে অস্বীকার করতে পারেনা !

প্রমাণ নং-০৩

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের মিলাদ নিজেই পাঠ করেছেন |

একদিন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বারে দড়িয়ে সমবেত সাহাবীগনকে লক্ষ্য করে বললেন : তোমরা বল – আমি কে ? সাহাবায়ে কেরাম বললেন আপনি আল্লাহর রাসুল | হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন :

★আমি আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ , আব্দুল মোত্তালিবের নাতী, হাশেমের প্রপৌত্র এবং মানাফের পুত্রের প্রপৌত্র | এই হাদিসের গুরুত্ব মতেই ইমামগন চার কুরছিকে ফরজ বলেছেন |

★হুজুরে আকরাম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও এরশাদ করেন: আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে আমার একটি বিশেষ মর্যাদা এই যে ,”আমি খতনা অবস্থায় ভুমিষ্ট হয়েছি এবং আমার লজ্জাস্থান কেউ দেখেনি” | [তাবরানী, জুরকানী ]

অন্যান্য রেওয়ায়াতে পবিত্র ,নাভি কর্টকৃত ,সুরমা পরিহিত , বেহেস্তি লেবাস পরিহিত অবস্থা ভুমিষ্ট হওয়ার বর্ননা এসেছে | [মাদারেঝুন্নবুয়াত]

এছাড়া ও জঙ্গে হোনায়নেরর যুদ্ধে যখন হাওয়াজিনের তীর নিক্ষেপে মুসলিম সৈন্যগন ছত্রভঙ্গ হয়ে পরেছিলেন , তখনও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একা যুদ্ধ ময়দানে দাড়িয়ে বলেছিলেন ” আনা নাবিয়ু লা কাযেব + আনা ইবনে আব্দুল মুত্তালিব  ” অর্থাৎ আমি আল্লাহর নবী , আমি মিথ্যাবাদী নই ,আমি আব্দুল মোত্তালিবের বংশধর | উপরোক্ত প্রথম ঘটনা টি দাঁড়িয়ে বলা এবং বর্ননা করার নামই মিলাদ ও কেয়াম । সুতরাং মিলাদ ও কেয়াম স্বয়ং রাসুল পাকের সুন্নত ।

দ্বিতীয় বর্ননায় ” ওয়ালাদাত ” শব্দটি এসেছে | এর অর্থ হলো আমি জন্ম গ্রহন করেছি – ভুমিষ্ট হয়েছি -আবির্ভুত হয়েছি | সব বর্ননাই নবী করীম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেয়াম অবস্থায় ছিলেন | তিনি নিজেই কেয়াম করেছেন সুতরাং বেলাদতের বর্ণনাকালে কিয়াম করা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরই সুন্নত | সাহাবা যুগে মিলাদুন্নবী মাহফিলের

প্রমান:হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের উপস্থিতিতে সাহাবায়ে কেরাম মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠান করেছেন |

নিম্নে কয়েকটি প্রমান :

১। হযরত দারদা রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু হতে বর্নিত আছে – তিনি বলেন আমি নবী করিম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে মদিনার আবু আমের আনসারির গৃহে গমন করে দেখি- তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্বয়- স্বজনকে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর জন্ম বৃত্তান্ত শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং বলছিলেন আজই সেই দিন | ইহা দেখে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করলেন : নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা তোমার উপর রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন এবং আল্লাহর ফেরেস্তাগনও তোমাদের সকলের জন্য মাগফিরাত কামনা করছেন |   [ দুররে মুনাজ্জাম আব্দুল হক এলাহাবাদি ]

২।ইবনে আব্বাস রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্নিত আছে একদিন তিনি ( ইবনে আব্বাস ) কিছু লোক নিয়ে নিজগৃহে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনা করে আনন্দ উৎসব করছিলেন এবং তাঁর প্রসংসাবলী আলোচনা সহ দুরুদ ও সালাম পেশ করেছিলেন | এমন সময় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হয়ে এ অবস্থা দেখে বললেন : তোমাদের সকলের জন্য আমার সাফায়াত অবধারিত হয়ে গেল ” |   [ ইবনে দাহইয়ার আত-তানভির ৬০৪ হিজরি ]

সুতরাং প্রমাণীত হলো যে নবী পাকের মিলাদ শরিফ পাঠে রাসুলে পাকের সাফায়াত নসীব হবে।

৩| হযরত হাসসান বিন সাবিত রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু মিম্বারে দাঁড়িয়ে কবিতার মাধ্যমে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করেছেন ,

দীর্ঘ কবিতার একাংশ নিম্ন উদ্ধৃত করা হলো ; অর্থাৎ,

ইয়া রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !

আপনি সর্ব দোষত্রুটি হতে মুক্ত হয়ে জন্ম হয়েই জন্ম গ্রহন করেছেন |

আপনার এই বর্তমান সুরত মনে হয় আপনার ইচ্ছা অনুযাযী সৃষ্টি হয়েছে |

আল্লাহ তার প্রিয় নবীর নামে আযানে নিজের নামের সাথে সংযুক্ত করেছেন |

এর প্রমান যখন মুয়াজ্জিন পাঞ্জেগানা নামাজের জন্য “

আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ “বলে আজান দেয় |

আল্লাহ তায়ালা আপন নামের অংশ দিয়ে নবীজীর নাম রেখেছেন-তাঁকে অধিক মর্যাদাশীল করার লক্ষ্যে |

এর প্রমান হচ্ছে আরসের অধিপতির নাম হচ্ছে “মাহমুদ” এবং আপনার নাম হলো”মুহাম্মদ “| [ দিওয়ানে হাসসান ]

( বিঃ দ্রঃ ) আরবীতে মাহমুদ লিখতে পাঁচ হরফ যেমন মিম- হা -মিম – ওয়াও – দাল এবং মুহাম্মদ লিখতে যেমন মিম-হা- মিম -দাল ব্যবহৃত হয় | ব্যবধান মাত্র এক হরফের বিষয়টি খুবই ইঙ্গীতপুর্ন | মাত্র ওয়াও হরফের ব্যবধান |

উক্ত মিলাদী কাসিদায় হযরত হাসসানের কয়েকটি আকিদা প্রমানীত হয়েছে যেমন :

১|রাসুল (সা) এর উপস্থিতিতে এই প্রশংসাসুচক কাসিদা পাঠ |

২| মিম্বারে দাঁড়িয়ে ( কিয়াম ) অবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্ম বৃত্তান্ত ও গুনাবলী বর্ননা করা |

৩| হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্ব প্রকার ত্রুটি হতে মুক্ত |

৪| আজানের মত গুরুত্ব পুর্ন ইবাদতে আল্লাহর নামের পাশে নবীজীর নামে আল্লাহ কর্তৃক সংযোজন |

৫| হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুহাম্মদ নামের উৎস হচ্ছে আল্লাহর সিফতী নাম মাহমুদ |

★হযরত হাসসান বিন সাবিত রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু এর কন্ঠে মিলাদ পাঠ শুনে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন ” আল্লাহুম্মা আইয়িদ বি রূহিল কুদ্দুস “

অর্থাৎ “হে আল্লাহ ! তুমি তাকে জিবরাইল মারফত সাহায্য করো ” তাফসীরে খাজাইনুল ইরফান এ উল্লেখ আছে যারা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রশংসাগীতি করে , তাদের পিছনে জিবরাইল আলাইহিস সালাম এর গায়েবী মদদ থাকে [সুরা মূজাদালাহ ]

প্রমাণ নং-০৪

নবীগনের যুগে মিলাদুন্নবী:

★১। হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর যুগে মিলাদ প্রত্যেক নবী নিজ নিজ যুগে আমাদের প্রিয়নবী ও আল্লাহর প্রিয় হাবিব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আবির্ভাবের সুসংবাদ দিয়ে গেছেন | হযরত আদম আলাইহিস সালাম তাঁর প্রিয় পুত্র ও প্রতিনিধি হযরত শীস আলাইহিস সালাম কে নুরে মুহাম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তাজিম করার জন্য নিম্ন অসিয়ত করে গেছেন |

★★অনুবাদ অংশ টি নিম্নে বর্ননা করা হলোঃ

[” আদম আলাইহিস সালাম আপন পুত্র হযরত শীস আলাইহিস সালাম কে লক্ষ্য করে বললেন : হে প্রিয় বৎস , আমার পরে তুমি আমার খলিফা | সুতরাং এই খেলাফত কে তাকওয়ার তাজ ও দৃঢ় একিনের দ্বারা মজবুত করে ধরে রেখো | আর যখনই আল্লাহর নাম ঝিকির (উল্লেখ) করবে তাঁর সাথেই মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামও উল্লেখ করবে | তাঁর কারন এই : আমি রূহ ও মাটির মধ্যবর্তী থাকা অবস্থায়ই তাঁর পবিত্র নাম আরশের পায়ায় (আল্লাহর নামের সাথে ) লিখিত দেখেছি | এরপর আমি সমস্ত আকাশ ভ্রমন করেছি | আকাশের এমন কোন স্থান ছিলনা যেখানে মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম অন্কিত পাইনি? আমার রব আমাকে বেহেস্তে বসবাস করতে দিলেন | বেহেস্তের এমন কোন প্রাসাদ ও কামরা পাইনাই যেখানে মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম ছিলনা ? আমি মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম আরোও লিখিত দেখেছি সমস্ত হয়রদের স্কন্ধ দেশে , বেহেস্তের সমস্ত বৃক্ষের পাতায় , বিশেষ করে তুলা বৃক্ষের পাতায় পাতায় , পর্দার কিনারায় এবং ফেরেসতাগনের চোখের মনিতে ঐ নাম অঙ্কিত দেখেছি | সুতরাং হে শীস ! তুমি এই নাম বেশী বেশী করে জপতে থাক | কেননা ,ফেরেস্তাগন পুর্ব হতেই এই নাম জপনে মশগুল রয়েছেন ” [ জুরকানি শরীফ ] |

উল্লেখ্য যে সর্ব প্রথম দুনিয়াতে ইহাই ছিল জিকরে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম |

হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এর মিলাদ পাঠ ও কেয়াম :

হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম যখন আল্লাহর ঘর  তৈরী করছিলেন , তখন ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম উক্ত ঘরের নির্মাণ কাজ কবুল করার জন্য নিজের ভবিষ্যৎ সন্তানাদিদের মুসলমান হয়ে থাকার জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করার পর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বা কেয়াম করে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আবির্ভাব আরবে ও হযরত ইসমাইলের বংশে হওয়ার জন্য এভাবে দোয়া করেছেন |

অর্থাৎ হে আমার রব ! তুমি এই আরব ভুমিতে আমার ইসমাইলের বংশের মধ্যে তাদের মধ্যে হতেই সেই মহান রাসুলকে প্রেরণ করো- যিনি তোমার আয়াত সমুহ তাদের কাছে পাঠ করে শুনাবেন , তাদেরকে কোরআন সুন্নাহর বিশুদ্ধ জ্ঞান শিক্ষা দেবেন এবং বাহ্যিক ও আত্বিক অপবিত্রতা থেকে তাদের পবিত্র করবেন | [সুরাহ আল বাকারা ১২৯ আয়াত ]

এখানে দেখা যায় হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৪০০০ বৎসর পুর্বেই মুনাজাত আকারে তাঁর আবির্ভাব , তাঁর সারা জিন্দেগীর কর্ম চাঞ্চল্য ও মাণুষের আত্বার পরিশুদ্ধির ক্ষমতা বর্ননা করে হুজুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর মিলাদের সারাংশ পাঠ করেছেন এবং এই মুনাজাত বা মিলাদ দন্ডায়মান অবস্থাই করেছেন যা পুর্বের দুটি আয়াতের মর্মে বুঝা যায় |

ইবনে কাছির তাঁর আল্ বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থে ২য় খন্ডে ২৬১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন ” দোয়া ইব্রাহিমু আলাইহি ওয়া সাল্লামু ওয়াহুয়া কায়েমুন

“অর্থাৎ উক্ত দোয়া করার সময় ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম দন্ডায়মান ছিলেন | নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেণ ” আনা দুয়াওতু ইব্রাহীমা ” আমি হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর দোয়ার ফসল |” হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহর নিকট থেকে চেয়ে আমাদের প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে আরবের ইসমাইল আলাইহিস সালাম এর বংশে নিয়ে এসেছেন | এটা উপলব্ধির বিষয় | আশেক ছাড়া এ মর্ম অন্য কেউ বুঝবে না | বর্তমান মিলাদ শরীফে রাসুলে পাঁকের আবির্ভাবের যে বর্ননা দেয়া হয় তা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর দোয়ার তুলনায় সামান্যতম অংশ মাত্র | সুতরাং আমাদের মিলাদ শরিফ পাঠ ও কেয়াম হযরত ইব্রাহীম আলাহিস সালামেরই সুন্নাত । [ বেদায়া ও নেহায়া ২য় খন্ড ২৬১পৃষ্ঠ ]

হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম নবী করীম (সা) এর মিলাদ পাঠ ও কেয়াম:

নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ৫৭০ বৎসর পুর্বে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আবির্ভাব | তিনি তাঁর উম্মত হাওয়ারী ( বনি ইসরাইল ) কে নিয়ে নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মিলাদ শরীফ পাঠ করেছেন | উম্মতের কাছে তিনি আখেরী জামানার পয়গম্বর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম ও সানা সিফাত এবং আগমন বার্তা এভাবে বর্নণা করেছেন : অর্থাৎ “

হে আমার প্রিয় রাসুল ! আপনি স্বরণ করে দেখুন ঐ সময়ের কথা যখন মরিয়মেম তনয়া ঈসা আলাইহিস সালাম বলেছেন :

হে বনী ইসরাইল , আমি তোমাদের কাছে নবী হয়ে প্রেরিত হয়েছি |

আমি আমার পুর্ববর্তী তওরাত কিতাবের সত্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছি এবং এমন এক মহান রাসুলের সুসংবাদ দিচ্ছি

যিনি আমার পরে আগমন করবেন এবং তাঁর নাম হবে আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম [ সুরা আছ- ছফ ৬ আয়াত ]

হযরত ঈসা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ভাষন সাধারনত দন্ডায়মান হতো আর এটাই ভাষনের সাধারন রীতি ও বতে | ইবনে কাছির- আল বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ডে ২৬১ পৃষ্ঠায়

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন : ” আখাতোবা ঈসা আলাইহেস সালামু উম্মাতাহুল হাওয়ারিইনা কায়েমা”

” অর্থ্যাৎ হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দন্ডায়মান (কেয়াম) অবস্থায় তাঁর উম্মৎ হাওয়ারীদেরকে নবীজীর আগমনের সুসংবাদ দিয়ে বক্তৃতা করেছেন ” |

সুতরাং মিলাদ ও কিয়াম হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর সুন্নাত এবং নবীযুগের ৫৭০ বৎসর পুর্ব হতেই |     [ আল বেদায়া ও নেহায়া ]

প্রমাণ নং-০৫

সাহাবায়ে কেরাম হলেন সত্যের মাপকাঠি , ঈমানের মানদন্ড | উম্মতে মোহাম্মদীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী হলেন সাহাবায়ে কেরামগণ | তারা আল্লাহকে রাজি করিয়েছেন এবং

আল্লাহও তাদের প্রতি খুশি হয়েছেন তাইতো তাদের পদবী রাদি আল্লাহু তাআলা আনহু | দয়াল নবীজি বলেছেন আমার একেকজন সাহাবী আকাশের উজ্জল নক্ষত্রের মত |

সাহাবায়ে কেরামদেরকে অবশ্যই অনুসরণ করা আমাদের জন্য ওয়াজিব |

আমাদের মধ্যে বাতিলপন্থী মুসলমানেরা বলে থাকে সাহাবায়ে কেরামরা নাকি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেন নি !

এটা তাদের সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা |

পূর্বে আমরা হজরত আব্বাস রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু ও হজরত দ্বারদা রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু হতে বর্ণিত

হাদিসে মিলাদুন্নবী পালন ও এর ফজিলত দেখেছি | এবার সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ৪ সাহাবী অর্থাৎ খোলাফায়ে রাশেদীনের পবিত্র জবান থেকে মিলাদুন্নবী পালনের ফজিলত শুনবো |

★★ইসলামের প্রথম খলিফা ,

সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে সর্ব উচ্চ মর্যাদা লাভকারী সাহাবী হজরত আবু বকর রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু বলেন ,

ﻣَﻦْ ﺍَﻧْﻔَﻖَ ﺩِﺭْﻫَﻤًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻗِﺮﺍ ﺓَ ﻣَﻮْ ﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒﻰُ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ

ﻛَﺎﻥ ﺭﻓﻴﻘﻲ ﻓﻰِ ﺍﻟﺠَﻨّﺔِ

অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে | [ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭ ]

★★ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা

হজরত উমররাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু বর্ণনা করেন ,

ﻣَﻦْ ﻋَﻈَّﻢَ ﻣَﻮْﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺪْ َﺍﺣﻴﺎ ﺍﻻﺳْﺎﻻَﻡُ

অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্মান করলো, সে অবশ্যই ইসলামকে জীবিত করলো | [ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম,পৃষ্ঠা নং-৭ ]

★★ইসলামের তৃতীয় খলিফা

হজরত উসমান গনি রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু বলেন ,

ﻣَﻦْ ﺍَﻧْﻔَﻖَ ﺩِﺭْﻫَﻤًﺎ ﻋَﻠَﻰ ﻗﺮﺃﺓ ﻣَﻮْﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰُ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢْ ﻓَﻜَﺎ

ﻧَّﻤَﺎ ﺛَﻬِﻴﺪ ﻏَﺰُﻭَﺓِ ﺑَﺪَﺭ َﻭﺣُﻨَﻴْﻦُ

অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাঠ করার জন্য এক দিরহাম খরচ করল- সে যেন বদর ও হুনাইন জিহাদে শরীক হলো | [ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৮ ]

★★ইসলামের চতুর্থ খলিফা

হজরত আলী রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু বলেন ,

ﻣَﻦْ ﻋَﻈَّﻢَ ﻣَﻮْ ﻟِﺪِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰ ﺻَﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَ ﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺳَﺒَﺒَﺎ ﻟِﻘﺮﺍ ﺗﻪ ﻻ

ﻳَﺨﺮﺝ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺍِﻻ َّﺑِﺎﻻِ ﻳْﻤَﺎﻥِ ﻭَﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟﺠَﻨَّﻪَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏ

অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সম্মান করবে হবে সে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে | [ আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং- ৮ ]

অতএব উপরোক্ত হাদিস গুলো থেকে এটা স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে সাহাবায়ে কেরাম তথা খোলাফায়ে রাশেদীন উনারা মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন বিধায় এর ফজিলত বর্ণনা করেছেন ,

যদি উনারা মিলাদুন্নবী পালন না করতেন তাহলে এর ফজিলত বর্ণনার কোন প্রশ্নই আসেনা !

সুতরাং যারা বলে সাহাবায়ে কেরাম মিলাদুন্নবী পালন করেন নি তাদের চেয়ে বড় মিথ্যুক আর হতেই পারেনা !

মিলাদ পালনের ফজিলত

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের মধ্যে যে কত ফজিলত রয়েছে তা যদি কোন মুসলমান জানতো তাহলে জীবন দিয়ে হলেও এই পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পালন করতো |

যারা পবিত্র মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুশি মনে উদযাপন করবে তাদের জন্য আমার নূর নবীজি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

আজ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে এমন এক সুসংবাদ দান করেছেন যা শুনলে প্রত্যেক মুসলমানের হৃদয়ে প্রশান্তি চলে আসবে ,

আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে যাবে | আর এই সুসংবাদটি হলো যারা এই দিনকে উদযাপন করবে তারা হাসরের ময়দানে নাজাত পেয়ে যাবে , এই দিনটি তাদের নাজাতের উসিলা হয়ে যাবে , তাদের উপর আল্লাহর

রহমত বর্ষিত হবে , এদের মাগফিরাতের জন্য ফেরেস্তারা পর্যন্ত দোয়া করবে |

পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে “

ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻰ ﺍﻟﺪَّﺭْﺩَﺍﺀِ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﺍَﻧَّﻪﻣَﺮَّ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ

ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍِﻟٰﻰﺑَﻴْﺖِ ﻋَﺎﻣِﺮِ ﺍﻻَﻧْﺼَﺎﺭِﻯِّ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌَﻠِّﻢُ ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗﻪِ ﺻَﻠَّﻰ

ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻻَﺑْﻨَﺎﺋِﻪﻭَﻋَﺸﻪِﺗَﺮْﻴِ ﻭَﻳَﻘُﻮْﻝُ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﻫٰﺬَﺍ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻓَﻘَﺎﻝَ

ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓُ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡُ ﺍِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓَﺘَﺢَﻟَﻚَ ﺍَﺑْﻮَﺍﺏَ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻼﺋِﻜَﺔُ

ﻛُﻠُّﻬُﻢْﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭْﻥَ ﻟَﻚَ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ

ﻓِﻌْﻠَﻚَ ﻧَﺠٰﻰﻧَﺠٰﺘَﻚ

অর্থাৎ হজরত আবু দ্বারদা ( রা ) হতে বর্ণিত ,হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন হজরত আমির আনসারী ( রা ) এর গৃহে গেলেন এবং হুজুর দেখতে পেলেন আমির আনসারী ( রা ) উনার

পরিবার পরিজন ও আত্বীয় স্বজনদের নিয়ে একত্রিত হয়ে খুশি মনে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছেন | অর্থাৎ

নবীজি এইদিনে পৃথিবীতে আসছেন ,পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মাখলুক আনন্দিত হয়ে ইত্যাদি | এই ঘটনা শ্রবণ করে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত

আনন্দিত হয়ে হজরত আমির আনসারীকে বললেন , আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার রহমতের দরজা প্রশস্থ করেছেন এবং সমস্থ ফেরেস্থাগন আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন |

যে আপনার জন্য এইরূপ কাজ করবে সেও আপনার মত নাজাত ( ফজিলত ) লাভ করবে | ( সুবহান আল্লাহ ) – [ সুবলুল হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ]

বুখারী শরীফের বিখ্যাত

ব্যক্ষাকারী আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী , এমাম বদরুদ্দিন আইনি বুখারী শরীফের ব্যক্ষায় লিখেন ,

ﻭﺫﻛﺮ ﺍﻟﺴﻬﻴﻠﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﺎ ﻣﺎﺕ ﺍﺑﻮ ﻟﻬﺐ ﺭﺍﻳﺘﻪ ﻓﻲ

ﻣﻨﺎﻣﻲ ﺑﻌﺪ ﺣﻮﻝ ﻓﻲ ﺷﺮ ﺣﺎﻝ ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎ ﻟﻘﻴﺖ ﺑﻌﺪ

ﻛﻢ ﺭﺍﺣﺔ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ﻳﺨﻔﻒ ﻋﻨﻲ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻳﻮﻡ ﺍﺛﻨﻴﻦ ﻭﺫﻟﻚ ﺍﻥ

ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﻟﺪ ﻳﻮﻡ ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﻭﻛﺎﻧﺖ ﺛﻮﻳﺒﺔ

ﺑﺸﺮﺕ ﺍﺑﺎ ﻟﻬﺐ ﺑﻤﻮﻟﺪﻩ ﻓﺎﻋﺘﻘﻬﺎ

অর্থাৎ হজরত আব্বাস ( রা ) বর্ণনা করেন , ” আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর আমি তাকে স্বপ্নে দেখি |

সে আমাকে বলে ভাই আব্বাস আমার মৃত্যুর পর থেকে কবরের জিন্দেগীতে আমি শান্তিতে নেই |

কিন্তু প্রতি সোমবার এলেই আমার শাস্থি লাগব করে দেওয়া হয় | এই ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে হজরত আব্বাস ( রা )

বলেন আবু লাহাবের এই সোমবারের শাস্তি লাগবের কারণ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ

উপলক্ষে হুজুর যেদিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন নবীজির শুভাগমনে খুশি হয়ে হজরত সুয়াইবা ( রা ) আজাদ করে ছিলেন | ( ফাতহুল বারি সরহে সহীহুল বুখারী , অম্দাতুলকারী শরহে সহীহুল বুখারী )|

এখন কথা হলো আবু লাহাবের মত কাট্টা কাফের যদি নবীজির একদিনের বেলাদত শরীফে খুশি হয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রতি সোমবার তার জাহান্নামের আজাব লাগব হয়ে যায় ,

আমরা যারা মুমিন মুসলমান তারা জীবনে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কতগুলা বেলাদত শরীফ খুশি মনে পালন করে তার বিনিময়ে কি জান্নাত পেতে পারিনা বা নাজাত পেতে পারিনা ?

এই প্রসঙ্গে উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ অলিয়ে কামেল শায়খ আব্দুল হক মহাদ্দেসে দেহলভী ( রহ ) বলেন ,

ﻣﻦ ﻋﻈﻢ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻮﻟﺪﻩ ﺑﻤﺎ ﺍﻣﻜﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺘﻌﻈﻴﻢ ﻭﺍﻻﻛﺮﺍﻡ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ

ﺍﻟﻔﺎﺀﺯﻳﻦ ﺑﺪﺍﺭ ﺍﻟﺴﻼﻡ

অর্থাৎ যারা হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফকে সম্মান ও তাজিম করবে এবং খুশি মনে পালন করবে সে চির শান্তির জায়গা জান্নাতের অধিকারী হবে | – মাছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খন্ড, খুত্বায়ে ইবনে নাবাতা ]

যেখানে হাদিস শরীফে স্বয়ং আল্লাহর হাবিব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিলাদুন্নবী পালনকারীদেরকে নাজাতের সুসংবাদ দিয়েছেন সেখানে বাতিল পন্থীরা বেদাতের ফতুয়া দিয়ে কি জাহান্নামের রাস্তা তৈরী করছেন 

মুমিন মুসলমানের সকল ঈদের সেরা ঈদ ঈদুল আজম মহা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মর্যাদা , মাহাত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা |

কেউ যদি এই ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উপলক্ষ করে দান খয়রাত করে তার চেয়ে সেরা দান খয়রাত আর কিছুই হতে পারেনা ,

কেউ যদি এই মহা পবিত্র দিনকে উপলক্ষ করে কোন ইবাদত বন্দেগী বা খুশি প্রকাশ করে তার চেয়ে বড় ইবাদত বা খুশি আর কিছুই হতে পারেনা |

এই দিনকে যারা খুশি মনে উদযাপন করবে তাদের জন্য হুজুর পুর নূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আজ থেকে ১৫০০ শত বছর আগেই একটি সুসংবাদ দিয়ে গেছেন ,

আর তা হলো যারা এই দিনে খুশি উদযাপন করবে তার জন্য নবীজি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাফায়েত ওয়াজিব হয়ে যাবে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের নূরের জবান মোবারক দিয়ে ঘোষণা করে গেছেন | পবিত্র হাদিস শরীফে এসেছে ,

পবিত্র হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে

 ” ﻋَﻦْ ﺍِﺑْﻦِ

ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟٰﻰ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﺍَﻧَّﻪٗﻛَﺎﻥَ ﻳُﺤَﺪِّﺙُ ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻓِﻰْ ﺑَﻴْﺘِﻪٖ

ﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗٖﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ، ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭْﻥَ ﻭَﻳُﺤَﻤِّﺪُﻭْﻥَ

ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺎِﺫَﺍ ﺟَﺎﺀَﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ

ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ ﺣَﻠَّﺖْﻟَﻜُﻢْ ﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻰْ

অর্থাৎ হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ( রা ) নিজেই বর্ণনা করেন , একদা তিনি উনার

গৃহে সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে একত্রিত হয়ে হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছিলেন |( এই দিনে হুজুর পৃথিবীতে আসছেন , স্বয়ং আল্লাহ উনার হাবিবের উপর দুরুদ সালাম দিয়েছেন )

শ্রবন্কারীরাও তা শুনে আনন্দ পাচ্ছিলেন | ঠিক ওই সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হয়ে বললেন , তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে “|

এই হাদিসটি বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থে এসেছে যেমন : মাওলুদুল কবীর , আত তানভীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযার , হকিকতে মোহাম্মদী ( মিলাদ অধ্যায় ), দুররুল মুনাজ্জাম , ইশবাউল কালাম |

অতএব উপরোক্ত হাদিস শরীফ থেকে এটা স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনকারীদের জন্য নূর নবীজি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাফায়েত ওয়াজিব হয়ে যাবে |

সুতরাং যারা এই পবিত্র মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিপক্ষে কথা বলে তারা আর যাই তারা মোহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত হতে পারেনা , এরা শয়তানের উম্মত |

মিলাদ সম্পর্কে দেওবন্দি আলেমদের অভিমত

বর্তমানের দেওবন্দীরা যে সত্যিকারের মুর্খ ,পাগল আর বাতিলপন্থী ওহাবী তা তাদের আকীদাগত কার্যকলাপ আর পাইকারী ফতুয়াবাজি থেকে সহজেই অনুধাবন করা যায় | তাদের যদি নুন্যতম কোরআন হাদিসের জ্ঞান

আর তাদের পূর্বসুরী দেওবন্দীদের কিতাব সম্পর্কে সামান্য ধারণা থাকতো তাহলে এরা মিলাদ কিয়ামের বিপক্ষে পাইকারীভাবে শিরক , বেদাত ও কুফরের ফতুয়াবাজি করতো না আর তাদের পূর্বসুরী মুরব্বীদেরকেও কাফের বানিয়ে বাতিলের খাতায় ফেলতো না |

মিলাদ কিয়ামের পক্ষে দেওবন্দী আলেমদের কিতাব হতে কিছু দলিল প্রমান অতি সংক্ষেপে আপনাদের খেদমতে পেশ করছি আর বর্তমান দেওবন্দীদের মুখোশ উন্মোচন করছি |

সমস্থ দেওবন্দী আলেমদের দাদা ওস্তাদ হাজী এম্দাদুল্লাহ মহাজির মক্কী ( রহ ) যাকে ছাড়া দেওবন্দীদের কোনো অস্তিত্ব থাকেনা সেই উনি উনার

ফায়্সালায়ে হাফতে মাসায়ালা কিতাবের ৫ পৃষ্ঠায় বলেন ,

ﻣﻮﻟﻮﺩ ﺷﺮﻳﻒ ﻛﻮ ﺫﺭﻳﻌﻪ ﺑﺮﻛﻠﺖ ﺳﻤﺠﻪ ﻛﺮ ﻫﺮ ﺳﺎﻝ ﻣﻨﻌﻘﺪ

ﻛﺮﺗﺎﻫﻮﻥ ﺍﻭﺭﻗﻴﺎﻡ ﻛﮯ ﻭﻗﺖ ﺑﮯ ﺣﺪ ﻟﻄﻒ ﻭﻟﺬﺕ ﭘﺎﺗﺎﻫﻮﯼ

» ফকিরের ( আমার ) মত এই যে , আমি মৌলুদ শরীফের মাহফিলে শরিক হই | আর ইহাকে বরকতের কারণ মনে করিয়া প্রত্যেক বৎসর অনুষ্ঠান করিয়া থাকি এবং কিয়াম করার সময় খুবই স্বাদ ও আনন্দ উপভোগ করি |”

হাজী এম্দাদুল্লাহ মহাজির মক্কী ( রহ ) উনার শামায়েলে এমদাদীয়া কিতাবের ৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন ,

” আমাদের অনেক দেওবন্দী আলেমগনই মিলাদ শরীফের বিরোধিতা করছে | কিন্তু আমি মিলাদ কিয়াম শরিফ জায়েজপন্থী আলেমগণের পক্ষেই গেলাম | যেহেতু মিলাদ কিয়াম জায়েজ হওয়ার পক্ষে অনেক দলিলই মজুদ আছে তাহলে কেন এতো বাড়াবাড়ি |

আমাদের জন্য তো মক্কা মদিনার অনুকরনই যথেষ্ট | আর যদি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিলাদ শরীফের মাহফিলে হাজির হন এমন বিশ্বাস রাখা হয় তাতে অসুবিধার কিছু নেই |

অতএব মিলাদের মাহফিলে হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষে হাজির হওয়া অসম্ভব নয় |

দেওবন্দীদের আরেক গুরু ওস্তাদ মাওলানা আশরাফ আলী থানবী উনার

এমদাদুল ফতুয়া কিতাবের চতুর্থ খন্ডের ৪২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন ” হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মিলাদ শরীফের মাহফিল সম্পূর্ণ জায়েজ ও মুস্তাহাব | তা হিন্দুস্তানের প্রচলিত বিদাতের অন্তর্ভুক্ত হবেনা

এবং মিলাদ শরীফের কিয়াম কখনো কুফরী হবে না |”

থানভী সাহেব উনার তরীকায়ে মিলাদ কিতাবের ৮ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ করেন ,

” ওই সকল কাজ অর্থাৎ শিরনী বিতরণ , মিলাদের কিয়াম অবশ্যই ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত | এতে ক্ষতির কিছুই নেই এবং মিলাদের কিয়ামের ক্ষেত্রে কোন নিষেধ থাকতে পারেনা |

দেওবন্দীদের আরেক নির্ভরযোগ্য আলেম

মাওলানা সমসুল হক ফরিদপুরী উনার তাসাউফ তত্ত্ব কিতাবের ৩৫ পৃষ্টা – ৪৭ পৃষ্টা পর্যন্ত শুধুই মিলাদের অসংখ্য বাব নিয়ে এসেছেন এবং ৪১ পৃষ্টায় উল্লেখ করেন ” হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের

শানে যে কাসিদা পড়া হয় তাতে মহব্বত বাড়ে আর ওই মহব্বতের জোরে যদি কেউ মিলাদের কিয়ামে দাড়িয়ে যায় তাহলে তাকে বিদাত বলা যাবেনা |

আর হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে বসে বসে সালাম দেওয়া হুজুরের শানে বড়ই বেয়াদবী |”

এখন রায় আপনারাই দিবেন কারা বিদাত করছে , কারা শিরক করছে আর কাদের ফতুয়ায় করা কাফের হচ্ছে ? 

ফেরেশতাদের মিলাদ পালন

ফেরেস্তাগনের কিয়াম : দিবা -রাত্রি ২৪ ঘন্টা :

আল্লাহর ৭০ হাজার ফেরেস্তা সর্বদা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারক দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে নুরের পাখা রওজা মোবারকে সামিয়ানার মত বিস্তার করে দুরূদ ও সালাম পেশ করে থাকেন | অথচ আমরা ফেরেস্তাদের অনুকরনে ৫/১০

মিনিট দাড়িয়ে দুরূদ ও সালাম পেশ করলে বেদাত হয়ে যায় বলে এক শ্রেনীর আলেম ও মুসলমান নামধারী দুশমনে রাসুলরা ফতোয়া দিয় বসে !

ফেরেস্তারাও কি তাহলে বেদাতে লিপ্ত ?

এই প্রসঙ্গে একটি হাদিস শরীফ উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করি |

“হযরত নোবাইহাতা ইবনে ওহাব রাহিমামুল্লাহ আলাইহি তাবেয়ী হতে বর্নিত ; একদিন হযরত কা’ব আহবার ( তাবেয়ী ) হযরত আয়েশা রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহার খেদমতে উপস্থিত হলেন , অতঃপর সাহাবায়ে কেরাম তথা হুজুর

পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানে- মানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতে লাগলেন | হযরত কা’ব বললেন : এমন কোন দিন উদয় হয়না- যে দিনে ৭০ হাজার ফেরেস্তা নাজিল হয়ে রাসুলুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারাক বেষ্টন করে তাঁদের নুরের পাখা বিস্তার করে সন্ধা পর্যন্ত হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দুরুদ ও সালাম পাঠ না করেন |

অতঃপর যখন সন্ধা হয়ে আসে তখন তাঁরা আকাশে আরোহন করেন এবং তাদের অনুরূপ সংখ্যায় (৭০হাজার ) ফেরেস্তা দ্বারা অবতরন করে তাদের মতই দুরুদ ও সালাম পাঠ করতে থাকেন |

আবার কেয়ামতের দিন যখন জমিন (রওজা মোবারক) বিদীর্ন হয়ে যাবে ,

তখন তিনি ৭০ হাজার ফেরেস্তা দ্বারা বেস্টিত হয়ে প্রেমাস্পদের রুপ ধারন করে আসল প্রেমিকের সাথে শীঘ্র মিলিত হবেন |”  – [ দারমী ও মিশকাত বাবুল কারামত হাশিয়াহ ]

উল্লেখিত হাদিসে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপুর্ণ ও প্রণিধানযোগ্য :

১. কা’ব আহবার রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা মোবারকে ৭০ হাজার ফেরেস্তা নাজিল হতে নিজে প্রত্যক্ষ করেছেন | এটি উনার কারামতের প্রমান | – [ লোমআত ]

২.আম্মাজান হযরত আয়েশা রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহার উপস্থিতিতে কা’ব এ সাক্ষ্য দিয়েছেন |

৩. রওজা মোবারাকে দিনে ৭০ হাজার এবং রাত্রে ৭০ হাজার ফেরেস্তা নাজিল হয় এবং তাদের ডিউটি হলো , রওজা মোবারক বেষ্টন করে নুরের পাখা রওজা মোবারকে সামিয়ানা স্বরূপ বিছিয়ে দাঁড়ি্যে দাঁড়িয়ে দুরুদ ও সালাম পাঠ করা |

ইহাই মিলাদ ও কিয়ামের সারাংশ | মুসলমানগন ফেরেস্তাদের অনুকরনে কেয়াম সহকারে দরূদ ও সালাম পড়ে থাকেন | – [ আনওয়ারে আফতাবে সাদাকাত ]

৪. হাদিসে উল্লেখিত ” মিসলাহুম” শব্দ দ্বারা প্রমানিত হলো যে সব সময় নিত্য নতুন অন্য একদল ফেরেস্তা আসেন | জীবনে একবারই তাঁরা এ সুযোগ পেয়ে থাকেন |

৫. উক্ত ফেরেস্তারা অন্য কোন আমল না করে কেয়াম অবস্থায় শুধু দরূদ ও সালাম পড়েন |

৬. রওজা মোবারকে পলা ক্রমে দিন রাত ২৪ ঘন্টাই মিলাদ ও কেয়াম হয় |

৭. মিলাদ মাহফিলে উত্তম ভাবে আলোক সজ্জা করা ও সামিয়ানা টাঙ্গানো বৈধ |

৮. হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়ানোর জন্য চোখের সামনে উপস্থিত থাকা শর্ত নহে | কেননা ,ফেরেস্তাদের চোখের সামনে শুধু রওজা মোবারাক পরিদৃষ্ট ছিল |

৯. কেয়ামতের দিবসে পর্যন্ত কেয়াম সহ দুরুদ ও সালামের এই ধারা অব্যাহত থাকবে | দুশমনেরা তা বন্ধ করতে পারবে না |

১০. কেয়ামতের দিবসে রওজা মোবারক অক্ষত থাকবে ধ্বংস হবে না |

১১. রোজ হাশরে ৭০ হাজার ফেরেস্তা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে পরিবেস্টন করে ও জুলুছ করে খোদার দরবারে নিয়ে যাবে । নবীজির জুলুছ করা ফেরেস্তাগনের ই সুন্নত |

১২. সে দিন আল্লাহ হবেন হাবীব এবং নবী (সা) হবেন তার মাহবূব |

হাদিসে উল্লেখিত ” ইয়ারকাউনা ” শিব্দটি বাবে নাছারা হতে উৎপন্ন ক্রিয়া পদ | মুল ধাতু ” ঝিফাফুন ” অর্থ মিলন | খোদার সাথে সে দিন প্রিয় মাহবুবের মিলন হবে | – [ লোমআত ]

“আমরা মিলাদুন্নবীর মাহফিল জীবন ভর করে যাবো | হে নজদীগন ( আব্দুল ওয়াহাব নজদীর অনুশারীগন ) ! তোমরা জ্বলতে থাক | জ্বলে মরাই তোমাদের কাজ

মিলাদ ১২ই রবিউল আউয়াল নাকি অন্য কোন দিন

আমাদের মধ্যে অনেক বাতিল ফিরকার অনুসারীরা আমরা যারা ১২ই রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করে থাকি তাদেরকে বলে থাকে

রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো ১২ই রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন নি ,তাহলে তোমরা ১২ই রবিউল আউয়াল তা পালন করো কেন ?

আমরাও মানি রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ নিয়ে মতানৈক্য আছে , কিন্তু উলামায়ে কেরাম এবং উম্মতে মোহাম্মদীর সিংহভাগই ১২ই রবিউল আউয়াল এর পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন

এবং সহীহ হাদিস শরীফ থেকেও এটা নিশ্চিত প্রমানিত হয় |

হাফিজে হাদীস হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা রহমাতুল্লাহি আলাইহি যেটা বিশুদ্ধ

সনদে হাদীস শরীফে বর্ননা করেন-

ﻋﻦ ﻋﻔﺎﻥ ﻋﻦ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﻣﻴﻦ ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﻭﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ

ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﻭﻟﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻋﺎﻡ ﺍﻟﻔﻴﻞ ﻳﻮﻡ

ﺍﻻﺛﻨﻴﻦ ﺍﻟﺜﺎﻧﻲ ﻋﺸﺮ ﻣﻦ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻻﻭﻝ

অর্থ : হযরত আফফান রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্নিত,তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ননা করেছেন যে, হযরত জাবির ও হযরত ইবনে আব্বাস

রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ হস্তি বাহীনি বর্ষের ১২ই রবীউল আউয়াল সোমবার শরীফ হয়েছিল |

” [ মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ,বুলুগুল আমানী শরহিল ফতহুর রব্বানী ,আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ]

ইবনু হিশাম বলেন, আল্লামা তাবারী ও ইবনু খালদূনও বলেন ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার দিনে রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জন্মগ্রহণ করেন | [ তাহযীবু সীরাতে ইবনু হিশাম ৩৬ পৃঃ ,তারিখুল উমাম অলমুলক ১ম খন্ড, ৫৭১ পৃঃ]

অতএব উপরোক্ত সহীহ হাদিস শরীফের আলোকে এটা স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে , রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১২ই রবিউল আউয়াল সোমবার দিনে বিলাদত শরীফ লাভ করেন | 

১২ই রবিউল আউয়াল কেন শোকের দিন নয় আমরা কেন শোক পালন করিনা

আমরা মদিনাওয়ালার আশেক পাগল গোলামেরা ১২ ই রবিউল আউয়াল রাহমাতুল্লিল আলামিন নবীজির শুভাগমনে খুশি হয়ে জসনে জুলুস ও ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে থাকি |

কিন্তু রাসুল বিদ্বেষী একদল মুনাফেক মুসলমান বলে থাকে ১২ ই রবিউল আউয়াল তারিখেতো রাসুল মারা গেছেন ! ( নাউজুবিল্লাহ ) তাহলে খুশি প্রকাশ কর কেন ?

এই দিন শোক প্রকাশ করনা কেন ? এটা একটা শয়তানী যুক্তি মাত্র | তাদের এই শয়তানী যুক্তির জবাব আমরা কোরআন সুন্নাহর দলিল দিয়েই দেবো ইন শাহ আল্লাহুল আজিজ |

কেউ যদি বলে নবীজি মারা গেছেন এটা নবীজির শানে চরম বেয়াদবী এবং জঘন্য কুফরী | কেননা নবীজি হলেন হায়াতুন্নাবী |

আজ থেকে ১৫০০ বছর পূর্বে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু সময়ের জন্য মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেছিলেন মাত্র কিন্তু আমাদের মত মারা যাননি | মারা যাওয়ার অর্থ হলো দেহ

থেকে রূহ স্থায়ীভাবে পৃথক হয়ে যাওয়া | কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রূহ সাময়িক সময়ের জন্য পৃথক হয়েছিল মাত্র |

হাদিসে কুদসীতে এসেছে ” সুম্মা রাদ্দাল্লাহু রুহুয়াহু সুবা রুহুয়াহু অর্থাৎ নবীজির মৃত্যুর পর উনার রূহ মোবারক সাথে সাথে আল্লাহ উনার দেহ মুবারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন ” |

আবু দাউদের হাদিস হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা ২ য় খন্ডের ৭৭ পৃষ্ঠায় এসেছে ” আল্লাহর হাবিব এরশাদ করেন এই প্রথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যখনি কোন লোক আমাকে সালাম দেয় আল্লাহ

আমার রুহ আমি নবীর দেহে ফিরায়া দেন আমি রাসুল নিজের মুখে আমার উম্মতের সালামের জবাব দেই |

সুনান বাগজারে সহি সনদে বর্ণিত হাদিস আল্লাহর হাবিব এরশাদ করেন উনার সাহাবিদেরকে , আমার ওফাতের পর তোমরা বিলাপ করে কেদোনা |

কেননা আমি রাসুল সবার মত মারা যাবোনা | আমি রাসুল রওজা শরিফ হতে তোমাদের আমল দেখতে পাবো |

যখন দেখব তোমরা ভালো কাজ করছো তখন আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবো আর যখন দেখবো তোমরা খারাপ কাজ করছো তখন আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবো |

ﻭَﻻَ ﺗَﻘُﻮﻟُﻮﺍْ ﻟِﻤَﻦْ ﻳُﻘْﺘَﻞُ ﻓِﻲ ﺳَﺒﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺃَﻣْﻮَﺍﺕٌ ﺑَﻞْ ﺃَﺣْﻴَﺎﺀ

ﻭَﻟَﻜِﻦ ﻻَّ ﺗَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ ‏( ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ 154 – )

আল্লাহর পথে যারা শহীদ হয় তাদের তোমরা মৃত বল না | বরং তারা জীবিত | তবে তা তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না | {সূরা বাকারা-১৫৪}

উক্ত আয়াতের স্পষ্ট ভাষ্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, শহীদগণ কবরে জীবিত |

আর ইংগিতের সাথে একথাও বুঝাচ্ছে যে, নবীগণও কবরে জীবিত | কেননা নবীগণের মর্যাদা শহীদদের তুলনায় অনেক উর্দ্বে |

সুতরাং শহীদগণ যদি কবরে জীবিত থাকেন, তাহলে নবীগণ কেন হবেন মৃত?

তারা অবশ্যই জীবিত |

ﻋَﻦ ﺃَﻧَﺲ ؛ ﺃَﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ :

ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ ﺃﺣﻴﺎﺀ ﻓﻲ ﻗﺒﻮﺭﻫﻢ ﻳﺼﻠﻮﻥ ‏( ﻣﺴﻨﺪ ﺍﻟﺒﺰﺍﺭ – ﻣﺴﻨﺪ

ﺃﺑﻲ ﺣﻤﺰﺓ ﺃﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন নবীরা কবরে জীবিত | আর তারা সেখানে নামায পড়েন |

{মুসনাদুল বাজ্জার,হাদীস নং-৬৮৮৮, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৩৪২৫,সহীহ কুনুযুস সুন্নাতির নববিয়্যাহ, হাদীস }

হায়াতুন্নাব্বী প্রসঙ্গে কোরআন হাদিসে শত শত দলিল রয়েছে | অতএব রাসুল মারা গেছেন বলা মানে কোরআন হাদিস অস্বীকার করা আর কোরআন হাদিস অস্বীকার করা মানে কাফের হয়ে যাওয়া |

হযরত আবু সাঈদ আল খুদুরী রাদ্বি আল্লাহু তালা বর্ণনা করেন , আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন আমরা কোন ওফাত প্রাপ্তের উপর তিনদিনের পর আর শোক প্রকাশ না করি,

কিন্তু স্বামীর জন্য ৪ মাস দশ দিন পর্যন্ত স্ত্রী শোক প্রকাশ করতে পারে | [বোখারীঃ ২য় খন্ড, ৮০৪ পৃঃ, মুসলীম শরীফঃ ১ম খন্ড, ৮৮৬-৮৮৮ পৃঃ, তিরমিযি, আবু দাউদ ইত্যাদি]

এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিন দিনের পর ওফাতের শোক প্রকাশ করা বৈধ নয় |

অতএব কোরআন হাদিস প্রমান করে আমার নবীজি হায়াতুন্নাবী তাই উনাকে আমরা মৃত ভাবি না | আর উনাকে যারা মৃত ভাবে বা মৃত বলে তারা চরম পর্যায়ের গাফেল বেয়াদব এবং আকিদাগতভাবে কুফরী করে |

আর তাদের কথায় তারাই মুর্খ তা প্রমান করে | কেননা এরা হাদিস পড়েনি আর মিথ্যা ফতুয়াবাজি করে |

আর নবীজি বলছেন উনার জন্য শোক প্রকাশ না করার জন্য এবং যেকোনো মৃতের জন্য ৩ দিনের বেশি শোক প্রকাশ না করার জন্য | সুতরাং আমরা রাসুলের হাদিস মানি বলেই এই দিন শোক প্রকাশ করিনা |

এখন যারা রাসুলকে মৃত বলে বা এইদিন শোক প্রকাশ করে তারা কি মুমিন হতে পারে ?

এরা কি হাদিস শরীফের অনুসরণ করে ?

এরা কি মুর্খ মুনাফেক নয় ? 

সুতরাং

ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় শয়তান ও তার সহযোগীরা ছাড়া সবাই দিনটিকে উদযাপন করেন,

কেননা শয়তান চার বার উচ্চস্বরে কেঁদেছিল

প্রথমবার যখন আল্লাহতা’লা তাকে অভিশপ্ত আখ্যা দেন;

দ্বিতীয়বার যখন তাকে বেহেশ্ত থেকে বের করে দেয়া হয়;

তৃতীয়বার যখন মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বেলাদত তথা ধরাধামে শুভাগমন হয়;

এবং চতুর্থবার যখন সূরা ফাতেহা নাযেল তথা অবতীর্ণ হয় – [ইবনে কাসীর কৃত আল-বেদায়া ওয়ান্ নেহায়া, ২য় খণ্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠা] |

এ পৃথিবীতে যত নেয়ামত রয়েছে বা এসেছে এর চেয়ে সবচেয়ে বড় নেয়ামত হচ্ছে হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম |

আল্লাহর এই নেয়ামত ও অনুগ্রহকে কেন্দ্র করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও আনন্দ উদযাপন করার নির্দেশ স্বয়ং রাব্বুল আলামিন দিয়েছেন যার প্রমান উপরোক্ত পবিত্র কোরআনের আয়াত |

অতএব নবীজির শুভাগমনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত আর কি হতে পারে ? আবার আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনের সুরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে দয়াল নবীজির শ্রেষ্টত্ব প্রকাশ করার জন্য ঘোষণা করেন

” ﻭﻣﺎ ﺍﺭﺳﻠﻨﻚ ﺇﻻ ﺭﺣﻤﺔ ﻟﻠﻌﺎﻟﻤﻴﻦ “

অর্থাৎ নিশ্চয় আমি আপনাকে জগতসমূহের রহমত করেই প্রেরণ করেছি |

হযরত দারদা রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু হতে বর্নিত আছে – তিনি বলেন আমি নবী করিম হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে মদিনার আবু আমের আনসারির গৃহে গমন করে দেখি-

তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্বয়- স্বজনকে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর জন্ম বৃত্তান্ত শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং বলছিলেন আজই সেই দিন |

ইহা দেখে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করলেন : নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা তোমার উপর রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন এবং আল্লাহর ফেরেস্তাগনও

তোমাদের সকলের জন্য মাগফিরাত কামনা করছেন | – [ দুররে মুনাজ্জাম আব্দুল হক এলাহাবাদি ]

২।ইবনে আব্বাস রাদ্বি আল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্নিত আছে একদিন তিনি ( ইবনে আব্বাস ) কিছু লোক নিয়ে নিজগৃহে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম বৃত্তান্ত

আলোচনা করে আনন্দ উৎসব করছিলেন এবং তাঁর প্রশংসাবলী আলোচনা সহ দুরুদ ও সালাম পেশ করেছিলেন | এমন সময় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হয়ে এ

অবস্থা দেখে বললেন : তোমাদের সকলের জণ্য আমার সাফায়াত অবধারিত হয়ে গেল ” | – [ ইবনে দাহইয়ার আত-তানভির ৬০৪ হিজরি ]

সুতরাং প্রমানীত হলো যে নবী পাকের মিলাদ শরিফ পাঠে রাসুলে পাকের সাফায়াত নসীব হবে |

অতএব কোরআন ও হাদিস শরীফ অনুসারে এটাই স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে যারা পবিত্র

ঈদে মিলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় খুশি উদযাপন করেনা , মনকে নারাজ রাখে , বেদাতের ফতুয়া দিয়ে মানুষকে আটকিয়ে রাখতে চায় ,

এই পবিত্র দিনের বিপক্ষে কথা বলে এরা হলো প্রকৃত শয়তানের অনুসারী তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না | 

মিলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ সম্পর্কে মক্কা শরীফ-মদিনা শরীফ-এর মুফতীগণের প্রাচিন ফতোয়ার কালেকশন

আল্লামা আব্দুর রহীম তুর্কমানী (রহঃ) ১২৮৮ হিজরী সনে মক্কা ও মদিনা এবং জেদ্দাহ ও হাদিদার উলামায়ে কেরামের দ্বারা মিলাদ ও কিয়াম সম্পর্কে একটি ফতোয়া লিখিয়ে হিন্দুস্তানে নিয়ে আসেন এবং নিজ গ্রন্থ ” রাওয়াতুন নাঈম ” -এর শেষাংশে ছেপে প্রকাশ করেন । ( আনওয়ারে ছাতেয়া দেখুন )

প্রশ্নঃ আল্লাহ তায়ালা অসীম রহমত আপনার উপর বর্ষিত হোক । নিম্নে বর্নিত বিষয়ে আপনার অভিমত ও ফতোয়া কি ?

” মিলাদ শরীফ পাঠ করা – বিশেষ করে নবী করিম সাল্লাল্লাহয় আলাইহে ওয়াসাল্লামের পবিত্র জন্ম বৃত্তান্ত পাঠকালে কিয়াম করে সম্মান প্রদর্শন করা , মিলাদের জন্য দিন তারিখ নিদিষ্ট করা , মিলাদ মজলিস কে সাজানো , আতর গোলাপ ও খুশবু ব্যাভার করা। কুরআন শরীফ হতে সুরা ক্বেরাত পাঠ করা এবং মুসলমানদের জন্য খানাপিনা (তাবারুক) তৈরি করা – এই ভাবে অনুষ্ঠান করা জায়েয কিনা এবং অনুষ্ঠানকারীগন এতো সাওয়াবের অধিকারী হবেন কিনা ? বর্ণনা করে আল্লাহর পক্ষ হতে পুরস্কৃত হোন ।
– আব্দুর রহীম তুর্কমানী – হিন্দুস্তান ,১২৮৮ হিজরি ।

 

মক্কা শরীফের ফতোয়াদাতাগনের জবাব  ফতোয়া 

অনুবাদঃ ” জেনে নিন – উপরে বর্নিত নিয়মে (কিয়াম) মিলাদ শরীফের অনুষ্ঠান করা মোস্তাহসান ও মুস্তাহাব । আল্লাহ ও সমস্ত মুসলমানের নিকট ইহা উত্তম । ইহার অস্বীকারকারীগন বিদআতপন্থী ও গোমরাহ্‌ ।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্নিত হুজুর (দঃ) -এর হাদিস আছে -” মুসলমান যে কাজকে পছন্দনীয় বলে বিবেচনা করেন -তা আল্লাহর নিকট ও পছন্দনীয় “। ( মুসলিম )।

এখানে মুসলমান বলতে ঐ সমস্ত মুসলমানকে বুঝায়-যারা কামেল মুসলমান । যেমন পরিপুর্ন আমলকারী উলামা , বিশেষ করে আরবেরদেশ , মিশর , সিরিয়া ,তুরস্ক ও স্পেন-ইত্যাদি দেশের উলামাগন সলফে সালেহীনদের যুগ থেকে অদ্যবধি (১২৮৮ হিঃ)
সকলেই মিলাদ কেয়াম কে মুস্তাহসান, উত্তম ও পছন্দনীয় বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন । সর্বযুগের উলামাগনের স্বীকৃতির কারনে মিলাদও কিয়ামের বিষয় বরহক ।
উহা গোমরাহী হতে পারে না । নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন । ” আমার উম্মত গোমরাহ বিষয়ে একমত হতে পারে না ” ( আল হাদিস )
সুতরাং যারা মিলাদ ও কিয়াম কে অস্বিকার করবে-শরিয়তের বিচারকের উপর তাদের যথাযথ শাস্তি প্রদান করা ওয়াজিব । ( ফতুয়া সমাপ্ত )

মক্কা শরিফের ফতোয়াদাতা মুফতীগনের স্বাক্ষর  সিলমোহর
 আল্লামা আব্দুর রহমান সিরাজ 
আল্লামা আহনদ দাহলান 
আল্লামা হাসান 
 আল্লামা আব্দুর রহমান জামাল 
 আল্লামা হাসান তৈয়ব
আল্লামা সোলায়মান ঈছা 
 আল্লামা আহমদ দাগেস্তানী 
 আল্লামা আব্ডুল কাদের সামস 
 আল্লামা আব্দুর রহমান আফেন্দী 
১০ আল্লামা আব্দুল কাদের সানখিনী
১১ আল্লামা মুহাম্মদ শারকী 
১২  আল্লামা আব্দুল কাদের খোকীর 
১৩ আল্লামা ইবরাহিম আলফিতান
১৪ আল্লামা মুহাম্মদ জারুল্লাহ 
১৫ আল্লামা আব্দুল মুত্তালিব 
১৬ আললামা কামাল আহমেদ 
১৭ আল্লামা মুহাম্মাদ ছায়ীদ আলআদাবি 
১৮ আল্লামা আলি জাওহাদ 
১৯ আল্লামা সৈয়দ আব্দুল্লাহ কোশাক
২০ আল্লামা হোসাইন আরব
২১  আল্লামা ইব্রাহিম নওমুছি
২২ আল্লামা আহমদ আমিন
২৩ আল্লামা শেখ ফারূক 
২৪ আল্লামা আব্দুর রহমান আযমী 
২৫ আল্লামা আব্দুল্লাহ মাশশাত 
২৬ আল্লামা আব্দুল্লাহ কুম্মাশী
২৮ আল্লামা মুহাম্মদ বাবাসীল
২৯ আল্লামা মুহাম্মদ সিয়ুনী
৩০ আল্লামা মুহাম্মদ সালেহ জাওয়ারী
৩১ আল্লামা আব্দুল্লাহ জাওয়ারী
৩২ আল্লামা মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ 
৩৩ আল্লামা আহমদ আল মিনহিরাভী 
৩৪  আল্লামা সোলাইমান উকবা 
৩৫ আল্লামা সৈয়দ শাত্বী ওমর 
৩৬ আল্লামা আব্দুল হামিদ দাগেস্তানী 
৩৭ আল্লামা মুস্তফা আফীফী 
৩৮ আল্লামা মানসুর
৩৯  আল্লামা মিনশাবী 
৪০ আল্লামা মুহাম্মদ রাযী 

(১২৮৮ হিজরী

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment