মিলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে আবু লাহাবের আযাব লাঘবের ঘটনা শরীয়তের দলিল হতে পারে কি?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ড. এ. এস. এম. ইউসুফ জিলানী

——————————————-

আবু লাহাব ছিলো প্রিয় নবী (দ.)’র আত্মীয় ও চাচা। সে প্রিয় নবীর বেলাদতে খুশি হয়েছিলো এবং তার দাসী সুয়াইবা তাকে নবীজির বেলাদতের সুসংবাদ দেয়ার কারণে আবু লাহাব তাকে মুক্তি দিয়েছিলো। আর সে কারণে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে তার কবর আযাব হাল্কা করা হয়। এ ঘটনা থেকে ইমামগণ মিলাদুন নবী (দ.) উপলক্ষে খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করা জায়েজ এবং মুমিনের জন্য নাজাতের উসিলা বলে দলিল গ্রহণ করেছেন এবং তা অবশ্যই শরীয়তের দলিল।

হযরত উরওয়া ইবনে জুবায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত,

قَالَ عُرْوَةُ وثُوَيْبَةُ مَوْلاَةٌ لِأَبِي لَهَبٍ كَانَ أَبُو لَهَبٍ أَعْتَقَهَا فَأَرْضَعَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا مَاتَ أَبُو لَهَبٍ أُرِيَه“ بَعْضُ أَهْلِه„ بِشَرِّ حِيبَةٍ قَالَ لَه“ مَاذَا لَقِيتَ قَالَ أَبُو لَهَبٍ لَمْ أَلْقَ بَعْدَكُمْ غَيْرَ أَنِّي سُقِيتُ فِي هٰذِه„ بِعَتَاقَتِي ثُوَيْبَةَ

‘উরওয়া (রাঃ) বর্ণনা করেন, সুওয়াইবা ছিল আবূ লাহাবের দাসী এবং সে তাকে আযাদ করে দিয়েছিল। এরপর সে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে দুধ পান করায়। আবূ লাহাব যখন মারা গেল, তার একজন আত্মীয় তাকে স্বপ্নে দেখল যে, সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে নিপতিত আছে। তাকে জিজ্ঞেস করল, তোমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হয়েছে। আবূ লাহাব বলল, যখন থেকে তোমাদের হতে দূরে আছি, তখন থেকেই ভীষণ কষ্টে আছি। কিন্তু সুওয়াইবাকে আযাদ করার কারণে কিছু পানি পান করতে পারছি।

(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫১০১)

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

ইমাম বুখারী ছাড়াও উক্ত ঘটনাটি অনেক ওলামায়ে কেরাম বর্ণনা করেছেন। যেসকল ইমাম এ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন তাদের কয়েকজন হলেন-

❏ ইমাম শামসুদ্দিন দিমিস্কি

❏ বিখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা ইয়াকুব

❏ ইমাম ইবনে জাওযী

❏ ইমাম ইবনে দাহইয়া

❏ ইমাম সুহাইলী

❏ ইমাম ইবনে কাছির

❏ ইমাম ইবনে হজর আসকালানী

❏ ইমাম কুস্তালানী

❏ ইমাম জালালুদ্দিন মুয়ূতী

❏ ইমাম জামাল উদ্দিন আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল মালিক আল কাতানী

❏ ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী সহ আরো অনেকে বর্ণনা করেছেন।

মিলদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে আবু লাহাবের আযাব লাঘব উক্ত ঘটনা সমর্থনে মুহাদ্দিসে কেরামের বিবৃতি তুলে ধরা হলঃ

ইমাম শামসুদ্দিন দামিস্কি বলেনঃ

قد صح أن أبا لهب يخفف عنه عذاب النار في مثل يوم الاثنين لإعتاقه ثويبة سرورا بميلاد النبي صلى الله عليه وسلم ثم أنشد:

إذا كان هذا كافرا جاء ذمه – وتبت يداه في الجحيم مخلدا-

أتى أنه في يوم الاثنين دائما – يخفف عنه للسرور بأحمدا-

فما الظن بالعبد الذي طول عمره – بأحمد مسرورا ومات موحدا

এটি প্রমাণিত যে আবু লাহাবের (পারলৌকিক) আগুনে জ্বলবার শাস্তি প্রতি সোমবার লাঘব করা হয়, কেননা সে মহানবী (ﷺ)-এর বেলাদতে খুশি হয়েছিল এবং তার দাসী সোয়াইবিয়াকে মুক্ত করে দিয়েছিল (বেলাদতের সুসংবাদ দেয়ার জন্যে)। আবু লাহাবের মতো অবিশ্বাসী, যার চিরস্থায়ী আবাস দোযখ এবং যার জন্যে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়েছে, সে যদি আযাব থেকে তাখফিফ (নিষ্কৃতি) পায় প্রতি সোমবার, তাহলে ভাবুন সেই মো’মেন ব্যক্তির কী শান যিনি সারা জীবন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বেলাদতে খুশি প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস নিয়ে ইন্তেকাল করেছেন।

(ইমাম দামেশকী কৃত ‘মওরিদ আস-সাফা ফী মওলিদ আল-হাদী’।

ইমাম সৈয়ুতী প্রণীত ‘হুসনুল মাকসাদ ফী আমলিল মওলিদ’, ৬৬ পৃষ্ঠা।)

বিখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা ইয়াকুব তাঁর কিতাবে লিখেন-

قال النبي صلي الله عليه و سلم رايت ابا لهب في النار يصيح العطش العطش فيسقي من الماء في نقر ابهامه فقلت بم هذا فقال بعتقي ثويبة لانها ارضعتك

অর্থ : নবীয়ে আকরাম (ﷺ) বলেন, আমি আবু লাহাবকে দেখেছি জাহান্নামের আগুনে নিমজ্জিত অবস্থায় চিৎকার করে বলছে, পানি দাও ! পানি দাও ! অতঃপর তার বৃদ্ধাঙুলীর গিরা দিয়ে পানি পান করানো হচ্ছে | আমি বললাম, কি কারনে এ পানি দেয়া পাচ্ছো ? আবু লাহাব বললো, আপনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে হযরত সুয়াইবা (রা.) উনাকে মুক্ত করার কারনে এই ফায়দা পাচ্ছি ! কেননা তিনি আপনাকে দুগ্ধ মুবারক পান করিয়েছেন !”

[তারীখে ইয়াকুবী ১:৩৬২ ]

ইমাম সুহাইলী লিখেন :

وذكر السهيلي ان العباس قال لما مات ابو لهب رايته في منامي بعد حول في شر حال فقال ما لقيت بعد كم راحة الا ان العذاب يخفف عني في كل يوم اثنين وذلك ان النبي صلي الله عليه و سلم ولد يوم الاثنين وكانت ثويبة بشرت ابا لهب بمولده فاعتقها

অর্থ: হযরত ইমাম সুহাইলী উল্লেখ করেন যে, হযরত আব্বাস (র) বলেন, আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর তাকে আমি স্বপ্নে দেখি যে, সে অত্যন্ত দুরবস্থায় রয়েছে ! সে বললো, [হে ভাই হযরত আব্বাস] আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর আমি কোন শান্তির মুখ দেখি নাই।

তবে হ্যাঁ, প্রতি সোমবার যখন আগমন করে তখন আমার থেকে সমস্ত আযাব লাঘব করা হয়, আমি শান্তিতে থাকি। হযরত আব্বাস (র.)বলেন, আবু লাহাবের এ আযাব লাঘব হয়ে শান্তিতে থাকার কারণ হচ্ছে, হুজুর পাক (ﷺ) এর বিলাদত শরীফ এর দিন ছিলো সোমবার ! সেই সোমবারে প্রিয় নবী (ﷺ)-এর বিলাদতের সুসংবাদ নিয়ে আবু লাহাবের বাঁদী সুয়াইবা (রা.)। তিনি আবু লাহাবকে খবরটি জানালেন তখন আবু লাহাব মিলাদুন্নবীর সংবাদ শুনে খুশি হয়ে হযরত সুয়াইবা (রা.)-কে তৎক্ষণাৎ আযাদ করে দেয় !”

(ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী : ফতহুল বারী শরহে বুখারী, ৯: ১১৮, ইমাম বদরুদ্দিন আঈনীঃ ওমদাতুল কারী শরহে বুখারী, ২: ২৯৯, ইমাম কাস্তালানী : মাওয়াহেবুল লাদুননিয়াহ ১ম খন্ড ! ইমাম যুরকারীঃ জুরকানী শরহে মাওয়াহেব, ১: ২৬০।)

❏ ইমাম ইবনুজ জাওযী বলেন-

ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺠﺰﺭﻯ ﻓﺎﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻫﺬﺍ ﺍﺑﻮﺍﻟﻬﺐ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ ﺍﻟﺬﻯ ﻧﺰﻝ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﺑﺬﻣﻪ ﺟﻮﺯﻯ ﻓﻰ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺑﻔﺮﺣﻪ ﻟﻴﻠﺔ ﻣﻮﻟﺪﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺑﻪ ﻓﻤﺎ ﺣﺎﻝ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﺍﻟﻤﺆﺣﺪ ﻣﻦ ﺍﻣﺘﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺍﻟﺬﻯ ﻳﺴﺮ ﺑﻤﻮﻟﺪﻩﻭﻳﺒﺬﻝﻣﺎﺗﺼﻞ ﺍﻟﻴﻪ ﻗﺪﺭﺗﻪ ﻓﻰ ﻣﺤﺒﺘﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻌﻤﺮﻯ ﺍﻧﻤﺎ ﻳﻜﻮﻥ ﺟﺰﺍﺅﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻜﺮﻳﻢ ﺍﻥ ﻳﺪﺧﻠﻪﺑﻔﻀﻠﻪ ﺍﻟﻌﻤﻴﻢ ﺟﻨﺎﺕ ﺍﻟﻨﻌﻴﻢ ০ ( ﻣﻮﺍﻫﺐ ﺍﻟﻠﺪﻧﻴﻪ ﺝ ১ ০ ﺹ২৭ ﺯﺭﻗﺎﻧﻰ ﺝ ০১ ﺹ১৩৯ )

“যে কাফের আবু লাহাবের বিরোদ্ধে আল-কুরআন নাজিল হয়েছে এবং যার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত, সে আবু লাহাবও যদি হুজুর (ﷺ) এর মিলাদুন্নবী উপলক্ষে খুশি হওয়াতে সুফল পায়, তাহলে তাঁর উম্মতের মধ্যে যে একত্ববাদী মুসলমান এবং তাঁর মিলাদুন্নবীতে (ﷺ) আনন্দিত হয় তাঁর মহব্বতে যথাসাধ্য দান করে,

তার অবস্থা কী হবে? আমি কসম করে বলছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’য়ালার পক্ষ হতে তার বিনিময় এ হবে যে, তিনি সর্বব্যাপী অনুগ্রহ দ্বারা তাকে জান্নাতুন নাঈমে প্রবেশ করাবেন।’

(ইবনে জাওজী, বয়ানুল মিলাদুন্নবী ইমাম কুস্তালানীঃ মাওয়াহিবে লাদুনিয়া ১:২৭, যুরকানীঃ যুরকানী আলাল মাওয়াহেব, ১: ১৩৭)

͏❏ ইবনে কাছির উপরোক্ত হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, “এমন জঘন্য কাফের যার দোষ বর্ণনায়(আল-কুরআনে) এসেছে যে, তার হাত ধ্বংস হয়েছে, তার স্থায়ী নিবাস চির জাহান্নাম। আহমদ (ﷺ) এর আবির্ভাবে খুশী হয়ে সর্বদা সোমবার আসলে তার (মত কাফির) থেকে (যদি) আজাব হালকা করা হয়, তবে কিরূপ ধারণা হতে পারে সে ব্যক্তির ব্যাপারে, যার জীবন আহমদ (ﷺ) বিষয়ে আনন্দিত ছিল এবং তাওহীদবাদী হয়ে ইন্তেকাল করেছেন?

❏ ইমাম শিহাব উদ্দিন আহমদ কাস্তালানী বর্ণনা করেন, আবু লাহাবের আযাদকৃত দাসী সুয়াইবাহ তাকে (হুযুর ﷺ)-কে দুধ পান করিয়েছেন। যাকে আবু লাহাব তখনই আযাদ করেছিলো তখন তিনি তাকে হুযুর (ﷺ) এর বেলাদত শরীফের শুভ সংবাদ শুনিয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে, একদা আবু লাহাবকে তার মৃত্যুর পর স্বপ্নে দেখা গিয়েছিলো। [হযরত আব্বাস (রা.) এক বছর পর স্বপ্ন দেখেছিলেন] তখন তাকে বলা হলো “তোমার কি অবস্থা?” সে বলল, দোজখেই আছি। তবে প্রতি সোমবার রাতে আমার শাস্তি কিছুটা শিথিল করা হয়; আর আমি আমার এ আঙ্গুল দুটির মধ্যে চুষে পানি পানের সুযোগ পাই। আর তখন সে তার আঙ্গুলের মাথা দিয়ে ইশারা করলো। আর বলল, আমার শাস্তির শিথিলতা এ জন্য যে, সুয়াইবা (রা.) যখন আমাকে নবী (ﷺ) এর বেলাদতের সুসংবাদ দিয়েছিলো, তখন তাকে আমি আযাদ করে দিয়েছিলাম এবং তিনি হুযুর (ﷺ) কে দুগ্ধপান করিয়েছেন।

❏ ইমাম শিহাব উদ্দিন আহমদ কাস্তালানী আরো বলেন-

এতদভিত্তিতে, আল্লামা মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে জাযরী বলেন, যখন ঐ আবু লাহাব কাফির, যার তিরস্কারে কোরআনের সূরা নাযিল হয়েছে। মিলাদুন্নবী (ﷺ) এ আনন্দ প্রকাশের কারণে জাহান্নামে পুরস্কৃত হয়েছে। এখন উম্মতে মুহাম্মদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ঐ একত্ববাদী মুসলমানের কি অবস্থা? যে নবী করীম (ﷺ) এর বেলাদতে খুশি হয় এবং হুযুর (ﷺ) এর ভালবাসায় তার সাধ্যনুযায়ী খরচ করে। তিনি জবাবে বলেন- আমার জীবনের শপথ! নিশ্চয়ই পরম করুণাময় আল্লাহ তাকে আপন ব্যাপক করুণায় নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

(কুস্তালানী, মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়াঃ হুযুর (ﷺ) এর “দুগ্ধপান শীর্ষক অধ্যায়”, যুরকানী, ১:২৫৮-২৬২)

শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন,

ﺟﻨﺎﻧﺠﻪ ﺩﺭ ﺣﺪﻳﺚ ﺍﻣﺪﻩ ﺍﺳﺖ ﻭﺩﺭﻳﻨﺠﺎ ﺳﻨﺪﺍﺳﺖ ﻣﺮﺍﻫﻞ ﻣﻮﺍﻟﻴﺪ ﺭﺍﻛﻪ ﺩﺭﺷﺐ ﻣﻴﻼﺩ ﺍﻧﺤﻀﺮﺕ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪﻭﺳﻠﻢ ﺳﺮﻭﺭ ﻛﻨﻨﺪ ﻭﺑﺬﻝ ﺍﻣﻮﺍﻝ ﻧﻤﺎﻳﻨﺪ ﻳﻌﻨﻰ ﺍﺑﻮﻟﻬﺐ ﻛﻪ ﻛﺎﻓﺮ ﺑﻮﺩ ﻭﻗﺮﺍﻥ ﺑﻤﺬﻣﺖ ﻭﻯ ﻧﺎﺯﻝ ﺷﺪﻩ ﺟﻮﻥﺑﺴﺮﻭﺭ ﺑﻤﻴﻼﺩ ﺍﻧﺤﻀﺮﺕ ﻭ ﺑﺬﻝ ﺷﻴﺮ ﺟﺎﺭﻳﻪ

ﻭﻯ ﺑﺠﻬﺔ ﺍﻧﺤﻀﺮﺕ ﺟﺰﺍ ﺩﺍﺩﻩ ﺷﺪ ﺗﺎﺣﺎﻝ ﻣﺴﻠﻤﺎﻥ ﻛﻪ ﻣﻤﻠﻮﺳﺖ ﺑﻤﺤﺒﺖ ﻭﺳﺮﻭﺭ ﻭﺑﺬﻝ ﻣﺎﻝ ﺩﺭ ﻃﺮﻳﻖﻭﻯﺟﻪ ﺑﺎﺷﺪ ﻭﻟﻴﻜﻦ ﺑﺎﻳﺪﻛﻪ ﺍﺯ ﺑﺪﻋﺘﻬﺎ ﻛﻪ ﻋﻮﺍﻡ ﺍﺣﺪﺍﺙ ﻛﺮﺩﻩ ﺍﻧﺪﺍﺯ ﺗﻐﻨﻰ ﻭﺍﻻﺕ ﻣﺤﺮﻣﻪ ﻭ ﻣﻨﻜﺮﺍﺕ ﺧﺎﻟﻰﺑﺎﺷﺪ ০ ( ﻣﺪﺍﺭﺝ ﺍﻟﻨﺒﻮﺕ ﺝ ২ ০ ﺹ২৬ )

“উক্ত ঘটনা মিলাদ শরীফ পাঠকারীদের জন্য একটি বৃহত্তম দলিল, যারা মিলাদুন্নবীর রাতে আনন্দ উৎসব ও দান খয়ারাত করে থাকেন। আবু লাহাব কাফের এবং তার বিরোদ্ধে কোরআন নাজিল হওয়া সত্বেও নবী পাক (ﷺ) জন্মের সুসংবাদে আনন্দিত হয়ে নূরবীকে দুধপান করানোর নিমিত্তে বাদী [হযরত সুয়াইবাহ (رضي الله عنه) কে] আজাদ করে দেয়, সে কারণে তাকে পুরস্কার স্বরূপ প্রতি সোমবারে তার আজাব নিরসন করা হল। এখন যারা ঈমানদার নবীপ্রেমিক আনন্দ উৎসব ও দান খয়রাত করেন তাঁদের পুরস্কার কীরূপ হবে? অবশ্য সে মিলাদকে শরীফে গান ও হারাম বাদ্যযন্ত্র হতে পবিত্র রাখতে হবে।

[শায়খ আব্দুল হক দেহলভী, মাদারিজুন নবুয়ত ২: ২৬ পৃঃ]

ইমাম জামাল উদ্দিন আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল মালিক আল কাতানী (رحمة الله) পবিত্র মিলাদ সম্পর্কে লিখেন,

রাসূল (ﷺ) এর জন্ম দিন উপলক্ষে (প্রভুর শুকর আদায় স্বরূপ) যারা আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করে তাদের পরকালে শাস্তি হালকা ও কম হওয়ার কারণে পরিণত হয়।

(সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফী সীরাতি খাইরিল ইবাদ-১:৩৬৪)

ইমাম ইবনে হজর আসকালানী ফতহুল বারী শরহে বুখারী শরীফের মধ্যে এ মাসআলা নিয়ে বিশদ আলোচনা করে তিনি বলেনঃ

ﻓﻴﺤﺘﻤﻞ ﺍﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻣﺎﻳﺘﻌﻠﻖ ﺑﺎﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﺨﺼﻮﺻﺎ ﻣﻦ ﺫﺍﻟﻚ ﺑﺪﻟﻴﻞ ﻗﺼﺔ ﺍﺑﻰ ﻃﺎﻟﺐ ﻛﻤﺎﺗﻘﺪﻡ ﺍﻧﻪ ﺧﻔﻒ ﻋﻨﻪ ০

“যদিও কোন স্বপ্ন শরিয়তের দলিলরূপে গণ্য হয় না, কিন্তু এখানে হযরত আব্বাস (রা.) এর স্বপ্ন আবু লাহাবের আজাব লাঘব হওয়ার ব্যাপারে কেবলমাত্র নবী করিম (ﷺ) সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ার দরুণ দলিলরূপে গণ্য হতে পারে।

(আসকালানী, ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ৯:১৫৪)।

বিস্তারিত আমার রচিত জশনে ঈদে মিলাদুন নবী (দ.)

ড. এ. এস. এম. ইউসুফ জিলানী, চট্টগ্রাম।

২২/০৯/২০২৩ ইং

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment