মিলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপনের ফজিলত :
🖋কৃতঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
👉 ইমাম হযরত হাসান বছরী (রহঃ)
[বিশিষ্ট তাবিয়ী, যিনি শতাধিক সাহাবায়ে কিরাম (রা) গণের সাক্ষাত লাভ করেছিলেন] তিনি বলেন-
قال الحسن البصرى رحمة الله عليه وَدِدْتُّ لَوْ كَانَ لِىْ مِثْلُ جَبَلِ اُحُدٍ ذَهْبًا فَاَنْفَقْتُهٗ عَلٰى قِرَاءَةِ مَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: ‘আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকতো তাহলে তা পবিত্র মীলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে ব্যয় করতাম।’সুবহানাল্লাহ!
[আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা]
👉 ইমাম হযরত ইমাম শাফিয়ী (রহ) বলেন-
قَالَ اَلاِمَامُ الشَّافِعِىُّ رَحِمَهُ اللهُ مَنْ جَمَعَ لِمَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ اِخْوَانًا وَهَيَّاَ طَعَامًا وَاَخْلٰى مَكَانًا وَعَمَلَ اِحْسَانًا وَصَارَ سَبَبًا لِقِرَائَتِهٖ بَعَثَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَيَكُوْنُ فِىْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ.
অর্থ: ‘যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপন উপলক্ষে :
– লোকজন একত্রিত করলো,
– খানাপিনার ব্যবস্থা করলো,
– জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং
– এ জন্য উত্তমভাবে তথা সুন্নাহ ভিত্তিক আমল করলো
– তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ ছলিহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং উনার ঠিকানা হবে জান্নাতে নায়ীমে।’ সুবহানাল্লাহ!
[আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা]
👉 হযরত জুনাইদ বাগদাদী (রহ) বলেন-
قال جنيد البغدادى رحمة الله عليه مَنْ حَضَرَ مَوْلِدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَظَّمَ قَدَرَهٗ فَقَدْ فَازَ بِالاِيْمَانِ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন্নবী (ﷺ) এর আয়োজনে উপস্থিত হবে এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করবে সে বেহেশ্তী হবে।” সুবহানাল্লাহ!
[আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা]
👉 বিখ্যাত ইমাম হযরত ইমাম মারূফ কারখী (রহ) বলেন-
قال المعروف الكرخى رحمة الله عليه مَنْ هَيَّأَ طَعَامًا لاَجْلِ قِرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَمَعَ اِخْوَانًا وَاَوْقَدَ سِرَاجًا وَلبِسَ جَدِيْدًا وَتَبَخَّرَ وَتَعَطَّرَ تَعْظِيْمًا لِمَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَشَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الْفِرْقَةِ الاُوْلٰى مِنَ النَّبِيّنَ وَكَانَ فِىْ اَعْلٰى عِلِّيِّيْن.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিসে আলোর ব্যবস্থা করে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন পোশাক পরিধান করে, সুঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে, আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস সালামগণের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাক্বামে অধিষ্ঠিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ্!
[আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৮ পৃষ্ঠা]
👉 ইমাম ফখরুদ্দিন রাজি (রহ) বলেন-
مَا مِنْ شَخْصٍ قَرَاَ مَوْلِدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى مِلْحٍ اَوْ بُرٍّ اَوْشَىء اٰخَرَ مِنَ الْمَأكُوْلاتِ اِلا ظَهَرَتْ فِيْهِ الْبَركَةُ فِىْ كُلِّ شَىء. وَصَلَ اِِلَيْهِ مِنْ ذٰلِكَ الْمَأكُوْلِ فَاِنَّهٗ يَضْطَرِبُ وَلا يَسْتَقِرُّ حَتى يَغْفِرَ اللهُ لاٰكِلِهٖ.
অর্থ: যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন নবী (ﷺ) উদযাপন করে লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্য দ্রব্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন, তাতে বরকত হবেই। উক্ত খাদ্য-দ্রব্য মীলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয় না।” সুবহানাল্লাহ!
[আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ৯ পৃষ্ঠা]
👉 হযরত ইমাম সাররী সাকতী (রহ) বলেন-
قال السر سقتى رحمة الله عليه مَنْ قَصَدَ مَوْضعًا يُقْرَأُ فِيْهِ مَوْلِِدُ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ قَصَدَ رَوْضَةً مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ لاَنَّهٗ مَا قَصَدَ ذٰلِكَ الْمَوْضعَ اِلا لِمُحَبَّةِ النَّبِىِّ صَلّٰى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করলো সে যেন নিজের জন্য জান্নাতে একটি বাগান নির্দিষ্ট করলো। কেননা সে তা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (ﷺ) উনার মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ্!
[আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা]
👉 ইমাম ইবন কাসির (রহঃ) তার বিখ্যাত সীরাত গ্রন্থে লিখেন :
ইবলিশ শয়তান জীবনে ঠিক এই সময়টাতেই খুব বেশি কেঁদেছে বা আফসোস করেছে।
أن إبليس رن أربع رنات حين لعن وحين أهبط وحين ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم وحين أنزلت الفاتحة
১. আল্লাহ যখন তাকে অভিশপ্ত হিসেবে ঘোষণা দিলেন,
২. যখন তাকে বেহেস্ত থেকে বিতাড়িত করা হল,
৩. নূর নবীজীর (ﷺ) দুনিয়াতে আগমনের সময় এবং
৪. সূরা ফাতিহা নাযিল হবার সময়
[সূত্রঃ ইবন কাসির, আল আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা – ১৬৬]
👉 হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহ) তিনি বলেন-
قَالَ سُلْطَانُ الْعَارِفِيْنَ الْاِمَامُ جَلالُ الدِّيْنِ السُّيُوْطِىُّ قَدَّسَ اللهُ سِرَّهٗ وَنَوَّرَ ضَرِيْحَهُ فِىْ كِتَابِهِ الُمُسَمّٰى الْوَسَائِلِ فِىْ شَرْحِ الشَّمَائِلِ” مَا مِنْ بَيْتٍ اَوْ مَسْجِدٍ اَوْ مَحَلَّةٍ قُرِئَ فِيْهِ مَوْلِدُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلا حَفَّتِ الْمَلٰئِكَةُ ذٰلِكَ الْبَيْتَ اَوِ الْمَسْجِدَ اَوِ الْمَحَلًّةَ صَلَّتِ الْمَلٰئِكَةُ عَلٰى اَهْلِ ذٰلِكَ الْمَكَانِ وَعَمَّهُمُ اللهُ تَعَالٰى بِالرَّحْمَةِ وَالرِّضْوَانِ واَمَّا الْمُطَوَقُّوْنَ بِالنُّوْرِ يَعْنِىْ جِبْرَائيلَ وَمِيْكَائِيْلَ وَاِسْرَافِيْلَ وَعَزْرَائِيْلَ عَلَيْهِمُ السَّلامُ فَاِنَّهُمْ يُصَلُّوْنَ عَلٰى مَنْ كَانَ سَبَبًا لِقَرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاِذَا مَاتَ هَوَّنَ اللهُ عَلَيْهِ جَوَابَ مُنْكِرٍ وَنَكِيْرٍ وَيَكُوْنُ فِىْ مَقْعَدِ صِدْقٍ عِنْدَ مَلِيْكٍ مُّقْتَدِرٍ.
অর্থ: “যে কোন ঘরে অথবা মসজিদে অথবা মহল্লায় পবিত্র মীলাদুন নবী (ﷺ) উদযাপন করা হয় সেখানে অবশ্যই আল্লাহ পাকের ফেরেশতাগণ বেষ্টন করে নেন। আর তারা সে স্থানের অধিবাসীগণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন। আর আল্লাহ পাক তাদেরকে [উক্ত লোকসকলকে] স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন। আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান ৪ ফেরেশতা অর্থাৎ হযরত জিবরায়ীল, মীকায়ীল, ইসরাফীল ও আযরায়ীল আলাইহিমুস সালামগণ মীলাদুন্নবী (ﷺ) উদযাপনকারীগণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করেন। যখন তারা [উদযাপনকারীগণ] ইনতিকাল করেন তখন আল্লাহ পাক তাদের জন্য মুনকার-নাকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ করে দেন। আর তাদের অবস্থান হয় আল্লাহ পাকের সন্নিধ্যে সিদ্দিকীনদের মাক্বামে।” সুবহানাল্লাহ্!
[ওয়াসিল ফি শরহে শামায়িল, আন নিয়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম ১০ পৃষ্ঠা]
👉 ইমাম কসতলানী (রহ) আরও বলেন: ”যাদের অন্তর রোগ-ব্যাধি দ্বারা পূর্ণ, তাদের কষ্ট লাঘবের জন্যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর মীলাদের মাস (রবিউল আউয়ালের) প্রতিটি রাতকে যাঁরা উদযাপন করেন তাঁদের প্রতি আল্লাহতা’লা দয়াপরবশ হোন!”
[আল-মাওয়া আল-লাদুন্নিয়া, ১ম খন্ড]
👉 ইমাম সুলতান মোল্লা আলী কারী (রহ)
[মুহাদ্দিস ও হানাফী ফেকাহবিদ] তিনি বলেন:
আল্লাহতা’লা এরশাদ ফরমান, ‘নিশ্চয় তোমাদের কাছে তাশরীফ এনেছেন তোমাদের মধ্য থেকে ওই রাসূল (সূরা তাওবা, ১২৮ আয়াত)