মানুষরুপি দুমুখী সাপ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

হযরত হাম্মাদ ইবনে আলমাহ (রহঃ) বলেন যে, এক ব্যক্তি তার গোলাম বিক্রি করল এবং খরীদদারকে জানিয়ে দিল যে, এ গোলামের মধ্যে চুগলখোরীর দোষ আছে।

ক্রেতা এটাকে সামান্য কিছু মনে করে ক্রয় করে নিল।
কয়েক দিন যেতে না যেতেই সে গোলাম মনীবের স্ত্রীকে বললঃ আপনার স্বামী আপনাকে ভালবাসে না, দ্বিতীয় বিবাহ করার প্ল্যান-প্রোগ্রাম করছে। স্ত্রী ঘাবড়িয়ে গিয়ে বলল, হ্যাঁ, এটা কী বলছ? গোলাম বলল, সম্পূর্ণ সত্য বলছি। তবে আমার কাছে এটার তদবীর আছে যেন আপনার স্বামী আপনাকেই ভালবাসে। স্ত্রী বলল, তাহলে তা এক্ষুনিই বল।
বলল: রাত্রে যখন তোমার স্বামী ঘুমাবে,তখন ক্ষুর দিয়ে তার দাঁড়ির নীচের চুল গুলো মন্ডন করে দেবে। এটা খুবই কার্যকর ও পরিক্ষীত প্রেসক্রিপশান। এদিকে সে স্বামীর কাছে এসে বলল, অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, আপনার স্ত্রী অন্য কারো সাথে সম্পর্ক করছে এবং আপনাকে হত্যা করার সুযোগের অপেক্ষায় আছে, স্বামী আশ্চর্য হয়ে বলল, এটা কি করে সম্ভব? তা কি হতে পারে?
গোলাম বলল, আপনি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, রাত্রে ঘুমের ভান করে শূয়ে থাকেন, তার পর দেখেন যে কী হয়! সুতরাং স্বামী তাই করল, যখন রাত এল, ঘুমের ভান করে শুয়ে গেল, স্ত্রী সুযোগ বুঝে ক্ষুর হাতে মকছুদ পূরণে এগিয়ে এল, সেই মাত্র দাঁড়ির দিকে হাত বাড়াল, তখনি স্বামী তার হাত ধরে ফেলে এবং সেই ক্ষুর দিয়েই তাকে যবেহ করে ফেলে, কেননা সে গোলামের কথা সত্য পেল। অতঃপর স্ত্রীর আত্নীয়-স্বজনেরা খবর পেল এবং প্রতি শোধে স্বামীকে হত্যা করে ফেলল, তার পর উভয় খান্দানে হানাহানির বিস্তৃতি ঘটে গেল।
এ প্রসঙ্গে আমার জানা একটি ঘটনা উপস্থাপন করছি-
এক দ্বীন-দার কৃষক ছিল, ভিক্ষুককে খালী হাতে ফিরিয়ে না দেয়াই তার অভ্যাস ছিল। তাঁর বাড়ী থেকে কোন ভিক্ষুক খালী হাতে ফিরে গেলে তাঁর মনে খুবই বাঁধত। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ছিল বিক্ষুক বিদ্বেষী। একদিন সে বাড়ীর আঙ্গিনায় হাল চাষ করছে, এমন সময় এক ভিক্ষুক তার বাড়ীতে ঢুকেছে। ভিক্ষুককে দেখে তার স্ত্রী দয়ার ভান করে বলল, বাবা ভিক্ষুক! আফছোছ, তোমার জন্যে; তুমি এমন বাড়ীতে ভিক্ষা করতে এসেছ, যে বাড়ীর মালিক ভিক্ষুক বিদ্বেষী।  ঐ যে দেখ! হাল চাষ করছে যদি তোমায় দেখতে পায়, তাহলে তার বলদ পেটানোর শলায় তেল মাখিয়ে তোমার পীঠের চামড়া তুলে নেবে। ভিক্ষুক ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। মালিক এ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে মনে অশান্তি বোধ করল, তাই হালটাকে দাঁড় করিয়ে বাড়ী এসে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করল, কি হে! ভিক্ষুক এসে কিছু না নিয়েই যে চলে গেল? কিছু দিলে না কেন? স্ত্রী রাগান্নীত স্বরে বলল, কি করব? ভিক্ষুক যা চায়, তা আমি কোত্থেকে দেব? জিজ্ঞেস করল, কি চেয়েছিল? বলল, চেয়েছিল আমার তেলের শিশি, আর তোমার হালের শলা।
কৃষক বলল, তাহলে আমাকে ডাক দিলেই তো হত। স্ত্রী বলল, তাহলে এই নাও, আমার তেলের শিশি, এখন তোমার হালের শলা সহ দিয়ে এস।
বেচারা মালিক, তেলের শিশি এবং হালের শলা হাতে ভিক্ষুকের পিছনে পিছনে ছুটছে। আর ডাকছে “এই ভিক্ষুক, নিয়ে যাও” ভিক্ষুক, পিছনে ফিরে তেলের শিশি এবং হালের শলা হাতে দেখে মহিলার কথা বিশ্বাস করে আরো প্রাণ পনে ছুটে যায়। মালিক দেবার জন্যে যতই দৌড়ে, ভিক্ষুক আরো প্রাণ বেগে ছুটে। তথা উভয়ে মহিলার দু’মুখী কথার শিকার হয়ে অশান্তিতে পতিত হলো।
চুগলখোর যাদুকর ও শয়তান থেকেও মারাত্নক
কথিত আছে যে, চুগলখোর যাদুকর ও শয়তান থেকেও মারাত্নক ও ভয়ানক। যে কাজ যাদুকররা এক সপ্তাহে করতে পারে, সে কাজ চুগলখোর এক মিনিটেই করে নিতে পারে।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment