মসজিদে নববীর সবুজ গম্বুজ ও রওজা শরীফ – কাঠামোর বিবরণঃ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

আপনি জানেন কি?

🕌 মসজিদে নববীর সবুজ গম্বুজ ও রওজা শরীফ – কাঠামোর বিবরণঃ

শীর্ষ অংশ–

الهلال الذهبي

সোনার চাঁদ

القبة الخارجية الخضراء

বাইরের সবুজ গম্বুজ

القبة الداخلية البيضاء مع فتحات تهوية –

বায়ু চলাচলের ছিদ্রসহ ভেতরের সাদা গম্বুজ, গম্বুজের নিচের অংশ

شبكة فولاذية وعزل

ইস্পাতের জাল ও নিরোধক (ইনসুলেশন)

الجداد المثمن

অষ্টভুজাকার দেয়াল

سقف مسطح

সমতল ছাদ।

রওজা মুবারক (হুজরা শরীফ):

الحجرة الشريفة (٥×٤,٥ متر) —

পবিত্র হুজরা শরীফ (আকার: ৫ × ৪.৫ মিটার)।

قبر النبي محمد ﷺ

নবী করীম ﷺ এর রওজা মুবারক

قبر أبي بكر رضي الله عنه

আবু বকর (রাঃ)-এর কবর

قبر عمر رضي الله عنه

উমর (রাঃ)-এর কবর।

নিচের অংশঃ

خندق الرصاص (عمق ٦ أمتار)

সীসা-ভর্তি খন্দক (গভীরতা ৬ মিটার)

خندق الرصاص

সীসার খন্দক সবচেয়ে নিচে:

المدينة المنورة — تاريخ وأمجاد

➡️ মদীনা মুনাওয়ারা — ইতিহাস ও গৌরবঃ

🕌 হুজরা শরীফ ও সবুজ গম্বুজের বিস্তারিত ইতিহাস (From 1st Hijri to Modern Era)

⏳ ১ম ধাপ: হুজরা শরীফের সূচনা (১–১১ হিজরি)

১️⃣ মূল ঘর — আয়েশা (রাঃ)-এর কক্ষ

যে স্থানে আজ হুজরা শরীফ রয়েছে, সেটা মূলত ছিল— উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ)-এর ঘর।

এটি ছিল: কাঁচা ইট,

পামের ডাল (খেজুর গাছের),

খেজুর কাঠ

সাধারণ ছাদ

একটি খুব সরল ঘর।

🌙 ২️⃣ রসূল ﷺ–এর দাফন মোবারক (১১ হিজরি)

রসূল ﷺ বলেছেন:

> “যেখানে ওফাত হবে, সেখানেই নবীদের দাফন করা হয়।”

তাই তাঁর দেহ মোবারক দাফন করা হয় তাঁর প্রিয়তম স্ত্রী আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরেই। এটাই আজকের রওজা মুবারক।

🕌 ৩️⃣ আবু বকর রাঃ ও উমর রাঃ দাফন (১৩ ও ২৩ হিজরি)

আবু বকর (রাঃ) — রসূল ﷺ–এর মাথা মোবারকের দিক বরাবর পাশে উমর (রাঃ) — আবু বকর (রাঃ)-এর পাশে

দাফন করা হয়।

🧱 ৪️⃣ প্রথম বেষ্টনী নির্মাণ — উমাইয়া যুগ (৮৮ হিজরি)-

উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবনে আবদুল মালিক আদেশ দেন— মসজিদে নববীর সম্প্রসারণের সময় হুজরা শরীফের চারপাশে পাথরের দেয়াল তৈরি করা হয়।

এটা ছিল:

মোটা,মসজিদের সাথে সংযুক্ত, অত্যন্ত সুরক্ষিত দেয়াল।

🧱 ৫️⃣ দ্বিতীয় বেষ্টনী — আব্বাসীয় যুগ

আব্বাসীয়রা আশঙ্কা করতেন— কেউ যেন কবরস্থানে হাত দিতে না পারে।

তাই তারা: দ্বিতীয় দেয়াল,উঁচু বেষ্টনী তৈরি করেন।

⚰️ ৬️⃣ ইতিহাসের ভয়াবহ ঘটনা — রওজা মুবারক সরানোর ষড়যন্ত্র (৫৫৭ হিজরি)

ক্রুসেডাররা ছদ্মবেশে এসে কবর মুবারক খুঁড়তে চেষ্টা করে। সুলতান নূরুদ্দীন মাহমুদ জাঙ্গী স্বপ্নে খবর পান এবং মদীনায় ছুটে যান।

তিনি: দুষ্কৃতকারীদের ধরে শাস্তি দেন এবং প্রথমবার তৈরি করেন সীসায় ভরা গভীর খন্দক (Lead Trench)।

যা ছবিতে خندق الرصاص নামে দেখানো।

এর উদ্দেশ্য: ✔ কেউ যেন ভূগর্ভ দিয়ে কবর পর্যন্ত যেতে না পারে।

🧱 ৭️⃣ তৃতীয় ও চতুর্থ দেয়াল:

পরবর্তী শতাব্দীতে আরও সুরক্ষা যোগ করা হয়—চারপাশে বহুস্তরীয় দেয়াল গোলাকার বন্ধ কাঠামো শক্ত বুরুজ এগুলো আজও রয়েছে।

🟢 ৮️⃣ সবুজ গম্বুজের ইতিহাস মূলত গম্বুজ সবুজ ছিল না! ১ম গম্বুজ — ১২৭৯ খ্রিঃ মামলুক সুলতান কালাউনের আমলে প্রথম একটি গম্বুজ নির্মাণ হয়— কাঠ ও সীসার আবরণ দিয়ে। রং ছিল কাঠের স্বাভাবিক রং।

২য় মেরামত — ১৫শ শতাব্দী

রং করা হয় সাদা।

৩য় পরিবর্তন — ১৬শ শতাব্দী (ওসমানীয় শাসন) রং করা হয় গাঢ় নীল।

⭐ বিখ্যাত সবুজ রং — ১৮৩৭ খ্রিঃ

ওসমানীয় সুলতান মাহমুদ II

গম্বুজটিকে রং করেন সবুজ,যা তখন থেকে আজ পর্যন্ত একই রয়েছে।

এটাই পরিচিত—

القبة الخضراء — সবুজ গম্বুজ

🏛️ ৯️⃣ ভেতরের সাদা গম্বুজ (আভ্যন্তরীণ গম্বুজ) সবুজ গম্বুজের ভেতরে রয়েছে একটি সাদা অভ্যন্তরীণ গম্বুজ, যা মূল কাঠামোর ছাদ।

এর উদ্দেশ্য:

বাতাস চলাচলের ছিদ্র

তাপ নিয়ন্ত্রণ

শব্দ শোষণ

ওসমানীয় স্থাপত্যের সৌন্দর্য রক্ষা

🛡️🔟 সুরক্ষা কাঠামো

আজ রওজা শরীফ বহুমাত্রিক সুরক্ষায় আবৃত:

✔ চারস্তরীয় দেয়াল

✔ মোটা সীসা খন্দক

✔ ইস্পাত জাল (ঈক্ষেত—Steel Mesh)

✔ দ্বিস্তরীয় গম্বুজ

✔ বাহিরে আট বোঝাই দেয়াল

এটি পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত কবরস্থান।

🕌 ১১️⃣ বর্তমান অবস্থা (Saudi Era)-

( যুগ/সময়কাল)

মসজিদ সম্প্রসারণ

ভেতরের কাঠামো সংরক্ষণ

সবুজ গম্বুজের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ

কোনো পরিবর্তন করা হয় না, শুধু সংরক্ষণ, রওজা শরীফ সম্পূর্ণ সংরক্ষিত এবং অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে।

📌 সারসংক্ষেপ (এক নজরে)পর্যায় ঘটনা

১১ হিজরি রসূল ﷺ দাফন মোবারক।

১৩, ২৩ হিজরি আবু বকর ও উমর রাঃ দাফন

৮৮ হিজরি প্রথম দেয়াল

৫৫৭ হিজরি সীসা খন্দক ডালাই

১২৭৯ খ্রিঃ প্রথম গম্বুজ

১৮৩৭ খ্রিঃ গম্বুজ সবুজ করা

বর্তমান অত্যন্ত সুরক্ষিত বহুস্তরীয় কাঠামো।

🎆ইমেজ কার্টেসিঃ “শালবি”

নোট: ইসলামের ইতিহাসে সুরক্ষা কাঠামো, দাওয়াহ ও রাষ্ট্রগঠনে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন সুন্নি সুফিপন্থী নেতারা—সুলতান নূরুদ্দীন মাহমুদ জাঙ্গী (রহ.) ও ওসমানীয় সুলতান মাহমুদ (রহ.)। এছাড়া বহু অন্য সুন্নি সুফি শাসক ইসলামের বিস্তার ও সমাজগঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইসলামের মূল ধারায় সুফিয়াদের অবদানই প্রধান। অন্য কোনো মতাদলের (ওহাবি) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ইতিহাসে তেমন পাওয়া যায় না।

✍️লিখা: ইমেজ দিয়ে “এ আই” থেকে।

আমি লেখাটি সংশোধন, পরিমার্জন এবং আদব বজায় রেখে সুন্দরভাবে সাজিয়েছি।

কপিকৃত ।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment