মওলিদুন্নবী (ﷺ) (২য় খন্ড)-[পর্ব ১]

মওলিদুন্নবী (ﷺ)  (২য় খন্ড)

মূল: শায়খ ড: তাহিরুল ক্বাদেরী

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

[Bengali translation of Shaykh Dr Tahirul Qadri’s book “Mawlid al-Nabi: Celebration and Permissibility”]

উৎসর্গ: [পীর ও মোর্শেদ হযরতুল আল্লামা সৈয়দ এ, জেড, এম, সেহাবউদ্দীন খালেদ আল–কাদেরী আল–চিশ্তী (رحمة الله)-এর পুণ্যস্মৃতিতে…]

সপ্তম অধ্যায়

যে কারণে প্রথম মুসলমান প্রজন্ম মওলিদ পালন করেননি

৭.১ আসহাব (رضي الله عنه)-বৃন্দের জন্যে মহানবী (ﷺ)-এর বেসাল শরীফ ছিল চরম বেদনাময়

৭.১.১ দুঃখের সময় প্রকাশ্যে আনন্দ উদযাপনের অনুমতি দেয় না মানব-স্বভাব

৭.২ প্রথম প্রজন্মের খুশি প্রকাশে এই মহাশোক ছিল বড় বাধা

৭.২.১ মহানবী (ﷺ) হতে বিচ্ছেদ: হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه)-এর বেসালের কারণ

৭.২.২ মহানবী (ﷺ)-এর বেসালে হযরত উমর (رضي الله عنه)-এর প্রতিক্রিয়া

৭.২.৩ হযরত ফাতেমাতুয্ যাহরা (رضي الله عنه)-এর শোক

৭.২.৪ হযরত আনাস বিন মালেক (رضي الله عنه)-এর শোক

৭.২.৫ হযরত বিলাল বিন রাবাহ (رضي الله عنه)-এর শোক

৭.২.৬ হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর (رضي الله عنه)-এর শোক

৭.২.৭ হযরত আবদুল্লাহ বিন যায়দ (رضي الله عنه)-এর শোক ও তাঁর দৃষ্টিশক্তি লোপ

৭.২.৮ আসহাব (رضي الله عنه)-বৃন্দের শোকের আরো বর্ণনা

৭.২.৯ মহানবী (ﷺ)-কে সেবাদানকারী প্রাণিদের শোক

৭.৩ রবিউল আউয়াল মাসে খুশি ও শোক সমানভাবে অনুভূত

৭.৪ সময়ের পরিক্রমণে শোকের ওপর খুশির প্রাধান্য বিস্তার

৭.৫ মহানবী (ﷺ)-এর বেলাদত ও বেসাল উভয়ই রহমতস্বরূপ

৭.৬ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বেসাল তাঁর উম্মতের জন্যে সুপারিশের এক উৎসস্বরূপ

৭.৭ কোনো খোদায়ী আশীর্বাদপ্রাপ্তিতে খুশি হওয়া আল্লাহ তা’য়ালারই বিধান

৭.৮ আমরা তাঁর রহমত পেয়েছি, তবে কেন এই দুঃখ?

৭.৯ শেষ বিচার দিবস অবধি মহানবী (ﷺ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী প্রতিষ্ঠিত

৭.১০ খুশি প্রকাশ কোনো বেদআত নয়: এটা মানবপ্রকৃতি

৭.১১ কোনো ঘটনা/অনুষ্ঠান পালন প্রথম প্রজন্মের সংস্কৃতি ছিল না

৭.১১,১ মদীনায় হিজরত

৭.১১.২ মদীনা সনদ

৭.১১.৩ বদর দিবস

৭.১১.৪ মক্কা বিজয়

৭.১১.৫ শবে কদর: কুরআন নাযেলের রাত

৭.১১.৬ নবযুগে নতুন প্রয়োজন

অষ্টম অধ্যায়

মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর গঠনাত্মক উপাদান

পরিচ্ছেদ – ১ 

মাহফিল ও অনুষ্ঠানের আয়োজন

৮.১ মহানবী (ﷺ) কর্তৃক তাঁরই সৃষ্টির ঘটনা উল্লেখ যা বেলাদতের আগে ঘটেছিল

৮.২ মহানবী (ﷺ) কর্তৃক তাঁর বেলাদতের স্মরণে সমাবেশের আয়োজন

৮.৩ মহানবী (ﷺ)-এর গুণ/বৈশিষ্ট্য ও মাহাত্ম্যের স্মরণে বিশেষ মজলিশের আয়োজন

পরিচ্ছেদ – ২

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জীবনী ও গুণাবলী আলোচনা

৮.৪ শরয়ী বিধানের উল্লেখ

৮.৫ নবী পাক (ﷺ)-এর সহজাত প্রতিভা ও সদাচরণ

৮.৬ মহানবী (ﷺ)-এর শারীরিক বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ

৮.৭ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর চমৎকার গুণাবলী ও অসাধারণত্বের বর্ণনা

৮.৮ তাঁর পবিত্র বেলাদতের বিবরণ ও সেসময় সংঘটিত মহান আধ্যাত্মিক নিদর্শনের উল্লেখ

পরিচ্ছেদ – ৩ 

মহানবী (ﷺ)-এর প্রশংসায় না’ত/কসীদা/শে’র/পদ্যের আবৃত্তি

৮.৯ কুরআন মজীদে নিহিত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাব্যিক প্রশংসা

৮.১০ হুযূর পাক (ﷺ) নিজেই নিজের প্রশংসাসূচক কবিতা শুনেছেন

৮.১০.১ হযরত হাসান বিন সাবেত (رضي الله عنه) হতে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ

৮.১০.২ হযরত আল-আসওয়াদ বিন সারী’ (رضي الله عنه) হতে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ

৮.১০.৩ হযরত আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা (رضي الله عنه) হতে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ

৮.১০.৪ হযরত আমির বিন আকওয়া (رضي الله عنه) হতে প্রকাশ্য সমাবেশে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ

৮.১০.৫ হযরত আব্বাস বিন আব্দিল মুত্তালিব (رضي الله عنه) হতে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ

৮.১০.৬ হযরত কা’আব (رضي الله عنه) হতে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ ও তাঁকে আলখাল্লা দান

৮.১০.৭ হযরত নাবিগা আল-জা’দী (رضي الله عنه) হতে প্রশংসাসূচক কবিতা শ্রবণ

৮.১০.৮ মদীনাবাসী মেয়েদের দফ (ঢোল)-সহ প্রশংসাসূচক না’ত পরিবেশন

৮.১০.৯ ইমাম বুসিরী (رحمة الله)-এর আরোগ্য লাভ ও রাসূল (ﷺ) হতে উপহারস্বরূপ তাঁরই জুব্বাপ্রাপ্তি

৮.১১. মহানবী (ﷺ)-এর সম্মানে বন্দনামূলক কাব্য আবৃত্তিকারী সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দের তালিকা

পরিচ্ছেদ – ৪

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর প্রতি সালাত–সালাম পাঠ

৮.১২ মহানবী (ﷺ)-এর প্রতি সালাওয়াত পাঠ আল্লাহরই সুন্নাহ ও বিধান

৮.১৩ সালাত-সালাম প্রেরণের তাৎপর্য

৮.১৪ সালাত-সালামের অনন্ত স্বতন্ত্র মর্যাদা

৮.১৪.১ রাসূল (ﷺ)-এর প্রতি সালাত-সালামের মাধ্যমেই আল্লাহর কাছে কারো দোয়া কবূল হয়

৮.১৪.২ (নামাযের) তাশাহহুদে সালাত-সালাম

৮.১৪.৩ নামাযের পরে সালাত-সালাম প্রেরণের পক্ষে রাসূল (ﷺ)-এর নির্দেশ

৮.১৫ সালাওয়াত হুযূর পাক (ﷺ)-এর কাছে পৌঁছে

৮.১৫.১ সালাত-সালাম হুযূর পাক (ﷺ)-এর কাছে সরাসরি পৌঁছে

৮.১৫.২ মহানবী (ﷺ) সরাসরি সালাত-সালাত শোনেন

৮.১৫.৩ হুযূর পাক (ﷺ) সালাওয়াতের জবাব দেন

৮.১৫.৪ মহানবী (ﷺ)-এর প্রতি ফেরেশতাবৃন্দ সালাত-সালাম পাঠ করেন

পরিচ্ছেদ – ৫

ক্বিয়াম (দাঁড়াবার রীতি)

৮.১৬ ক্বিয়াম বা দাঁড়াবার রীতি কি শুধু আল্লাহরই জন্যে খাস (সুনির্দিষ্ট)?

৮.১৬,১ নামাযের দাঁড়ানো ও বসা অবস্থাগুলো খোদ এবাদত নয়

৮.১৬.২ দাঁড়ানো অবস্থা যদি এবাদত হয়, তাহলে অন্যান্য অবস্থাগুলো কী হবে?

৮.১৬.৩ নামাযের দাঁড়ানো প্রথা এবাদত হয় কোন্ উপায়ে?

৮.১৭  ক্বিয়াম (প্রথাগত দাঁড়ানো) সুন্নাহ’র আলোকে অনুমতিপ্রাপ্ত

৮.১৮ ক্বিয়ামের শ্রেণিকরণ

৮.১৮.১ ক্বিয়াম লিল্ এসতেক্ববাল বা কাউকে স্বাগত জানাতে দাঁড়ানো

৮.১৮.২ ক্বিয়াম লিল্ মুহাব্বাহ বা ভালোবাসা প্রকাশার্থে দাঁড়ানো

৮.১৮.৩ ক্বিয়াম লিল্ ফারহা বা আনন্দ প্রকাশার্থে দাঁড়ানো

৮.১৮.৪ ক্বিয়াম লিত্ তা’যিম বা সম্মানার্থে দাঁড়ানো

৮.১৮.৪.১ ক্বিয়াম লিল্ এসতেক্ববাল ও ক্বিয়াম লিত্ তা’যিমের মধ্যকার পার্থক্য

৮.১৮.৪.২ মহানবী (ﷺ)-এর সম্মানার্থে সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দের চর্চিত দাঁড়ানোর প্রথা

৮.১৮.৪.৩ নামায আল্লাহরই জন্যে; এক্বামত রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জন্যে

৮.১৮.৫ মানুষের মর্যাদার জন্যে দাঁড়ানো (ক্বিয়াম লিল্ একরাম আল-ইনসানি)

৮.১৮.৬ যিকর বা স্মরণের জন্যে দাঁড়ানো (ক্বিয়াম লিয্ যিকর)

৮.১৮.৬.১ মহানবী (ﷺ)-এর যিকর বা স্মরণ হচ্ছে মহান আল্লাহতা’রই যিকর

৮.১৮.৭ শান্তি ও আশীর্বাদ প্রেরণ করতে দাঁড়ানো (ক্বিয়াম লিস্ সালাত ওয়াস্ সালাম)

৮.১৮.৭.১ সালাতের অর্থ: শান্তি ও আশীর্বাদ বর্ষণ/প্রেরণের প্রার্থনা

৮.১৮.৭.২ সালাত শব্দটির আক্ষরিক/আভিধানিক অর্থ

৮,১৮.৭.৩ সালাত শব্দটির আক্ষরিক অর্থের প্রয়োগ

৮.১৮.৮ মহানবী (ﷺ)-কে অভ্যর্থনা জানাতে মওলিদে দাঁড়ানো হয় না

৮.১৮.৯ মওলিদে দাঁড়ানোর প্রথা মূলতঃ খুশি প্রকাশের উদ্দেশ্যে

৮.১৮.১০ ক্বিয়ামের প্রতি নিষেধাজ্ঞা: এর কারণসমূহ

পরিচ্ছেদ – ৬

আলোকসজ্জার আয়োজন

৮.১৯ তারকারাজি আতশবাজির মতো নেমে এসেছিল

৮.২০ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর বেলাদত উপলক্ষে মক্কা মুয়াযযমায় মোমবাতি জ্বালানো

পরিচ্ছেদ – ৭

খাবার বণ্টন

৮.২১ মানুষদেরকে খাওয়ানোর চমৎকার গুণ সম্পর্কে কুরআন মজীদের বর্ণনা

৮.২২ অন্যদেরকে খাওয়ানোর জন্যে হাদীসে প্রদত্ত উৎসাহ

পরিচ্ছেদ – ৮

মওলিদের জুলূস্ বা মিছিল

পরিচ্ছেদ – ৯

মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর বিভিন্ন দিক: একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা

৯.১ শরীয়তের দিক

৯.১.১ আল্লাহ’র বর্ষিত রহমত-বরকতের স্মরণ

৯.১.২ খাদ্য-ভর্তি খাঞ্চা অবতীর্ণ হওয়ার দিনটিকে ঈদ হিসেবে উদযাপন

৯.২ ঐতিহাসিক দিক

৯.৩ সাংস্কৃতিক দিক

৯.৪ নির্দেশনামূলক দিক

৯.৪.১ পিতামাতার মৌলিক দায়িত্ব ও কর্তব্য

৯.৪.২ চিন্তার খোরাক

৯.৪.৩ ঈমান হেফাযত বা রক্ষার কৌশল

৯.৫ দা’ওয়া বা ধর্মপ্রচারের দিক

৯.৬ উদ্বুদ্ধকরণের দিক

৯.৬.১ আমল বা ধর্ম অনুশীলনের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ বিশেষ দিকসমূহ

৯.৬.২ পুণ্যদায়ক আমলের সারাংশ বা নির্যাস হচ্ছে নবী পাক (ﷺ)-এর প্রতি ভালোবাসা

৯.৭ আধ্যাত্মিক দিক

দশম অধ্যায়

মওলিদুন্নবী (ﷺ) উদযাপন কি বেদআত?

১০.১ বেদআতের আক্ষরিক অর্থ

১০.১.১ আল-কুরআন হতে এর অর্থ নিশ্চিতকরণ

১০.২ বেদআতের প্রায়োগিক অর্থ

১০.৩ স্থানীয় (লোকজ) সংস্কৃতির প্রতিটি দিক-ই কি বেদআত?

১০.৩.১ আসহাব (رضي الله عنه)-বৃন্দের সাংস্কৃতিক আচার ও প্রথা

১০.৩.২ মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর সাংস্কৃতিক বহিঃপ্রকাশ

১০.৩.২.১ মীলাদুন্নবী (ﷺ)-এর জুলূস সংস্কৃতির আওতাধীন

১০.৩.২.২ মহানবী (ﷺ)-এর প্রতি দাঁড়িয়ে সালাত-সালাম পেশ সংস্কৃতির আওতাধীন

১০.৩.২.৩ মওলিদে সাজানো সংস্কৃতির আওতাধীন

১০.৪ বেদআতের প্রকৃত অর্থ

১০.৪.১ ভ্রান্ত ধারণার অপনোদন এবং ‘ফাহুয়া রাদ্দ’ বাক্যটির সঠিক উপলব্ধি

১০.৫ ধর্মে নতুন বিষয়ের প্রবর্তন: রাসূল (ﷺ)-এর যুগে এর উদ্দিষ্ট অর্থ

১০.৬ খুলাফায়ে রাশেদীনের যুগে উদ্ভূত ’মুহদাসাত আল-উমূর’ (নতুন বিষয়াদি)

১০.৬.১ মিথ্যে নুবুওয়্যত আরোপের সীমা লঙ্ঘনকে বেদআত ঘোষণা করা হয়

১০.৬.২ রিদ্দাহ’র (ধর্মত্যাগের) সীমা লঙ্ঘনকে বেদআত ঘোষণা করা হয়

১০.৬.৩ যাকাত দানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারীদের সীমা লঙ্ঘনকে বেদআত ঘোষণা করা হয়

১০.৬.৪ খাওয়ারিজদের (খারেজী গোষ্ঠীর) সীমা লঙ্ঘনকে বেদআত ঘোষণা করা হয়

১০.৬.৪.১ আমাদের যুগে কোনো কিছুকে ’নতুন প্রবর্তিত বিষয়’ (মুহদাসাত আল-উমূর) বলার সঠিক পদ্ধতি কী?

১০.৭ সাহাবা (رضي الله عنه)-বৃন্দের বর্ণনার আলোকে বেদআতের সংজ্ঞা (ধারণা)

১০.৭.১ আল-কুরআনের সংকলন ও শায়খাইন (প্রথম দুই খলীফা)-এর আচরিত প্রথা

১০.৭.২ জামা’আতে তারাবীহ’র নামায আদায়ের প্রবর্তন

১০.৭.৩ শুক্রবারের জুমু’আর নামাযের আগে দ্বিতীয় আযান

১০.৮ বেদআতের ধারণা এবং কতিপয় সাম্প্রতিককালের উদাহরণ

১০.৮.১ ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন (বা প্রতিষ্ঠা)

১০.৮.২ মসজিদ নির্মাণ

১০.৮.৩ কুরআন মজীদের অনুবাদ ও ব্যাখ্যাকরণ

১০.৯ উলামাদের মতানুযায়ী বেদআতের শ্রেণিবিন্যাস

১০.৯.১ ইমাম আল-শাফেঈ (১৫০-২০৪ হিজরী)

১০.৯.২ ইযয আল-দ্বীন বিন আব্দিস্ সালাম (৫৭৭-৬৬০ হিজরী)

১০.৯.৩ মোল্লা আলী ক্বারী আল-হানাফী (ইন্তেক্বাল: ১০১৪ হিজরী)

১০.৯.৩.১ ’প্রত্যেক বেদআত-ই ভ্রান্তি’ – হাদীসটির সঠিক মর্ম উপলব্ধি

১০.১০ বেদআতের শ্রেণিবিভাগ

১০.১০.১ বেদআতে হাসানা (প্রশংসনীয় নতুন প্রথা)-এর উপ-শ্রেণিসমূহ

১০.১০.১.১ আল-বেদআত আল-ওয়াজিবা বা আবশ্যকীয় নতুন প্রথা

১০.১০.১.২ আল-বেদআত আল-মুস্তাহাব্বা/মুস্তাহসানা তথা প্রশংসনীয় নতুন প্রথা

১০.১০.১.৩ আল-বেদআত আল-মুবাহা বা অবস্থাভেদে বৈধ বলে বিবেচিত নতুন প্রথা

১০.১০.২ দূষণীয় বা মন্দ নতুন প্রথার উপ-শ্রেণিসমূহ

১০.১০.২.১ নিষিদ্ধ নতুন প্রথা (আল-বেদআত আল-মুহাররামা)

১০.১০.২.২ অপন্দনীয় নতুন প্রথা (আল-বেদঅাত আল-মাকরুহা)

১০.১০.৩ হাদীসের আলোকে বেদআত শ্রেণিকরণের প্রামাণ্য দলিল

১০.১১ মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর ভিত্তি আল-কুরআন ও হাদীস শরীফেই নিহিত

১০.১২ উম্মতে মুহাম্মদীয়্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কোনো ভ্রান্তিতে ঐকমত্য পোষণ করবেন না

১০.১৩ ধর্মের প্রকৃত মর্মবাণী অনুধাবন করা অত্যাবশ্যক

একাদশতম অধ্যায়

মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর সাথে সংশ্লিষ্ট মতবাদগত বিষয়াদি

১১.১ মওলিদুন্নবী (ﷺ) শব্দটির প্রয়োগ

১১.১.১ আরবী ভাষাতত্ত্বের বইপত্রে মীলাদ শব্দটির ব্যবহার

১১.১.২ হাদীস ও সীরাহ (জীবনী)-গ্রন্থাবলীতে মীলাদ শব্দটির ব্যবহার

১১.১.৩ সাহিত্যকর্মে মীলাদ শব্দটির ব্যবহার

১১.২ মওলিদুন্নবী (ﷺ) খুশির ঈদ, শরীয়তের (বিধি মোতাবেক) ঈদ নয়

১১.৩ মহানবী (ﷺ)-এর গুণাবলী ও মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর বিবরণ প্রদানে মুহাদ্দেসীনবৃন্দের দৃষ্টিভঙ্গি

১১.৩.১ কিতাব আল-মানাক্বিবের অধ্যায়গুলো বিন্যাসে ইমাম তিরমিযীর গৃহীত পদ্ধতি

১১.৪ মহানবী (ﷺ)-এর গুণাবলী ও মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর বিবরণ প্রদানে ইতিহাসবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি

১১.৫ মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর পক্ষে শরীয়তের দলিল দাবি প্রসঙ্গে

১১.৬ মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর উদযাপন তওহীদেরই বহিঃপ্রকাশ

১১.৭ মওলিদুন্নবী (ﷺ) উপলক্ষে অর্থব্যয় করা অপচয় নয়

১১.৮ ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও মাহাত্ম্য প্রকাশের আয়োজনসমূহ

১১.৯ মওলিদুন্নবী (ﷺ)-এর মাহফিল আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা

১১.১০ যেসব দিক সংস্কারের প্রয়োজন

১১.১১ বাড়াবাড়ি এড়িয়ে চলার আবশ্যকতা

লেখক/গ্রন্থ তালিকা

বর্ণনানুক্রমিক তালিকা

কুরআনের আয়াতের তালিকা

হাদীস ও রেওয়ায়াতের তালিকা

সাধারণ তালিকা

সপ্তম অধ্যায়

যে কারণে প্রথম মুসলমান প্রজন্ম মওলিদ পালন করেননি

আল্লাহ তা’য়ালার প্রিয় মাহবূব (ﷺ)’এর বেলাদত তথা ধরাধামে শুভাগমন দিবস (মওলিদ) উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা এবং এই দিনটির উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা একজন ঈমানদার মুসলমানের জন্যে সর্বোচ্চ সম্মানের ব্যাপার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ এমন কিছু লোক আছে যারা মওলিদ’কে শরীয়তবিরোধী বিবেচনা করে এবং তা ঘোষণাও করে থাকে। তাদের এই ধারণার সমর্থনে তারা অপযুক্তি পেশ করে যে মহান সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه)’এর যুগে কোনো মওলিদ উদযাপনের রীতি চালু ছিলো না; বরঞ্চ এটা বহু প্রজন্ম পরে অস্তিত্ব পেয়েছে। তাই এ ব্যাপারে নিচে অনুসন্ধান চালানো হবে এই মর্মে যে, সবচেয়ে সম্মানিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের বেসাল শরীফ (পরলোকে খোদার সাথে মিলনপ্রাপ্তি)-এর পরে মহান সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه) কেন মওলিদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম’কে উদযাপনের প্রথা হিসেবে গ্রহণ করেননি। এর কারণগুলো ওই সময়কার প্রেক্ষাপট ও ঘটনাবলীকে বিবেচনায় নিয়েই ব্যাখ্যা করা হবে।

৭.১ আসহাব (رضي الله عنه)-বৃন্দের জন্যে মহানবী (ﷺ)-এর বেসাল শরীফ ছিল চরম বেদনাময়

সারা জাহানের জন্যে খোদাতা’লার করুণা, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের ধরণীতলে আশীর্বাদময় শুভাগমন মুসলমান সম্প্রদায়ের কাছে দুনিয়ার সমস্ত আনন্দ-ফুর্তি ও সুখ-শান্তির চেয়ে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলমান প্রথম প্রজন্মের জন্যে আম/সাধারণভাবে এবং আশীর্বাদধন্য সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه)’এর জন্যে খাস/বিশেষভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)’এর এই নশ্বর পৃথিবীতে শুভাগমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আর কী হতে পারতো? এই সর্বশ্রেষ্ঠ নেআমত (খোদায়ী অনুগ্রহ/দান) সম্পর্কে মহান সাহাবাবৃন্দের (رضي الله عنه) চেয়ে বেশি আর কে মূল্যায়ন করতে পারতেন? সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه)’এর অনুভূত অপরিমাপযোগ্য খুশি ও সুখ আজকের মুসলমান সমাজ এমন কী অনুধাবন করতেও একদম অক্ষম।

প্রিয়নবী (ﷺ)’র বেসাল শরীফের পরে সাহাবা-মণ্ডলী (رضي الله عنه) যদি ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে মওলিদ উদযাপন না করে থাকেন, তবে তার পেছনে একটি ঐকান্তিক কারণ ছিলো। এটা সবার জানা যে তাঁর বেলাদত শরীফের তারিখ আবার তাঁর বেসাল শরীফেরও তারিখ। রবীউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ এলে প্রিয়নবী (ﷺ)’র জিসমানী বিয়োগে ভগ্নহৃদয় সাহাবাবৃন্দকে (رضي الله عنه) দিনটি তাঁর বেসাল শরীফের কথাও স্মরণ করিয়ে দিতো; আর এরই ফলশ্রুতিতে খুশি ও সুখের যে কোনো অনুভূতির ওপর দুঃখ-বেদনার অনুভূতি আধিপত্য বিস্তার করতো। অাশীর্বাদধন্য সাহাবাবৃন্দ (رضي الله عنه) প্রিয়নবী (ﷺ)’র সাথে (সোহবতে) কাটানো তাঁদের সময়গুলোর কথা স্মরণ করতেন এবং এর সাথে সাথে তাঁর বেসাল শরীফের কথাও তাঁদের মনে পড়ে যেতো; যার দরুন তাঁদের মাঝে আনন্দ ও বেদনার এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিতো। তাই তাঁরা তাঁর বেসাল শরীফের প্রতি দুঃখভার ও শোকের অনুভূতি ব্যক্ত করতেন।

৭.১.১ দুঃখের সময় প্রকাশ্যে আনন্দ উদযাপনের অনুমতি দেয় না মানব–স্বভাব

নিত্যদিনের অভিজ্ঞতা আমাদের বলে যে কেউ যখন-ই ইন্তেক্বাল করেন, তৎক্ষণাৎ শোকের অনুভূতি দেখা দেয়। এ রকম শোক-সন্তপ্ত পরিবারে যদি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের পূর্ব-নির্ধারিত কর্মসূচি থাকতো, তাহলে নিশ্চিতভাবে তা বাতিল করা হতো। আর তারিখ যদি পেছানোই না যেতো, তাহলে মরহূমের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনার্থে বিয়ের আয়োজন সবচেয়ে অনাড়ম্বর পন্থায় করা হতো।

অতঃপর একই পরিবারে পাঁচ বা দশ বছর পরে যদি কোনো বিয়ের আয়োজন চলে, তাহলে তা প্রচলিত প্রথা ও সংস্কৃতি অনুসারে মহা ধুমধামের সাথে সম্পন্ন হবে। ওই বিয়েতে মুক্ত হস্তে ব্যয় করে তাঁদের মরহূম আত্মীয়ের ইন্তেক্বালের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের অভিযোগ কেউই তাঁদের বিরুদ্ধে উত্থাপন করবেন না। এটা এ কারণে যে (ওই রকম পরিস্থিতিতে) মানুষের মনের ওপর দুঃখ-বেদনার অনুভূতি প্রাকৃতিকভাবেই প্রাধান্য বিস্তার করে; আর সময় অতিক্রান্ত হলে শোকের প্রভাব ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় এবং দুঃখের ঘটনা যতোই বিয়োগান্ত হোক না কেন, তা অতীতে পরিণত হয়।

৭.২ প্রথম প্রজন্মের খুশি প্রকাশে এই মহাশোক ছিলো বড় বাধা

মানবপ্রকৃতি অনুযায়ী মাহবূব (ﷺ)’এর জিসমানী বিয়োগের শোক মহান সাহাবাবৃন্দের (রা) ওপর ভারী প্রভাব ফেলেছিলো। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের বেলাদত ও বেসাল শরীফ একই দিনে হওয়ার কারণে সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه)’এর অনুভূত শোক খুশির অনুভূতির তুলনায় বেশি ছিলো। সাহাবা-মণ্ডলী (رضي الله عنه) ছিলেন নিঃস্বার্থপরতা ও ত্যাগের জীবন্ত দৃষ্টান্ত/প্রতীক। তাঁরা মহানবী (ﷺ)’র ভ্রুকুঞ্চনেও নিজেদের জীবন খুশি মনে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিলেন। তাঁর প্রতি তাঁদের গভীর ভালোবাসা-ই ছিলো তাঁদের মধ্যকার ঈমানের প্রধানতম মাপকাঠি।

প্রিয়নবী (ﷺ)’র বেসাল শরীফের মতো এতোটা আঘাত আর কোনো কিছুতে সাহাবাবৃন্দ (رضي الله عنه) পাননি। এই সংবাদে তাঁরা একেবারেই হতবিহ্বল হয়ে পড়েন; তাঁদের দুনিয়া যেনো ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে এমনটা-ই তাঁরা অনুভব করেছিলেন। এই ভক্ত-অনুরক্ত খেদমতগারবৃন্দ প্রিয়নবী (ﷺ)‘র বেসালপ্রাপ্তির সংবাদটি কীভাবে নিয়েছিলেন, তা কল্পনা করাটাও প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। তাঁরা এক মুহূর্তের তরেও তাঁর (সোহবত হতে) বিচ্ছেদকে পছন্দ করতেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম যখন এই নশ্বর জগৎ ত্যাগ করেন, তখন এমন কী সিংহ-হৃদয়ের হযরত উমর ফারূক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-ও নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি; এমতাবস্থায় অন্যান্য সাহাবা-মণ্ডলী (رضي الله عنه) কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন, তা ভাবাটা বেশ কঠিন।

মহানবী (ﷺ)’র আহলে বায়ত (رضي الله عنه) ও আসহাব (رضي الله عنه)’এর জন্যে এই সংবাদটি ছিলো চরম আঘাত; কেননা তাতে বোঝা গিয়েছিলো তাঁদের মাহবূব (ﷺ) বেসালপ্রাপ্ত হয়েছেন; এটা তাঁদের কাছে মোটেও সহনীয় ছিলো না। তাই তাঁদের ওই প্রতিক্রিয়া ছিলো স্বাভাবিক। কেননা তাঁরা প্রিয়নবী (ﷺ)’র সাথে থাকার জন্যে নিজেদের দেশ, পরিবার ও মালামাল, বস্তুতঃ সর্বস্ব ত্যাগ করেছিলেন। অতএব, মাহবূব (ﷺ) আর তাঁদের পাশে নেই, এমন পরিস্থিতির মোকাবেলা করার কথা তাঁরা ইতিপূর্বে ভাবেননি। এটা তাঁদের কাছে কল্পনারও অতীত ছিলো। নিচের অনুচ্ছেদে মহানবী (ﷺ)’র বেসাল শরীফের সংবাদে সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله عنه)’এর আবেগময় প্রতিক্রিয়া এক নজরে আলোকপাত করা হবে: