ব্রিটেনে মাটির নিচে গোপন মাদ্রাসা।

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ব্রিটেনে মাটির নিচে গোপন মাদ্রাসা।

নওয়াব ছাতারী আলিগড়ের জমিদার ছিলেন। তিনি মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের বিরোধী এবং ভারতে ব্রিটিশ প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠায় ইংরেজদের সার্বিক সহযোগী ছিলেন।

আনুগত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ইংরেজ সরকার কর্তৃক নওয়াব ছাতারী উত্তর প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন। (মতবাদের মিল থাকার কারণে) যে সব ইংরেজ কালেক্টর পোস্টিং নিয়ে আলীগড়ে আসতেন নবাবের সাথে তাদের মধুর ও গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠতো।

একবার ব্রিটিশ সরকার ভারতের সকল গভর্নরকে বৃটেনে ডাকেন। নওয়াব ছাতারীও তখন বৃটেনে যান। ঐ সময় বৃটেনে অবস্থানকারী পুরাতন বন্ধু অনেক অবসরপ্রাপ্ত কালেক্টর ও কমিশনার গভর্নর ছাতারীর সাথে সাক্ষাত করেন। কালেক্টরদের মধ্যে একজন ছিলেন নবাব সাহেবের ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার অনেক কাছের ব্যক্তি। ঘনিষ্ঠতম কালেক্টর, যাদুঘর ও হাজার বছরের পুরাতন অত্যাশ্চর্য দর্শনীয় বস্তু যা নওয়াব কখনো চোখে দেখেনি বা কানে শুনেনি, তা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেন। নবাব সাহেব বলেন ‘ঐগুলো আমি আগে দেখেছি, তাই আপনি আমাকে এমন কোন বস্তু দেখাতে পারেন যা কোন ভিনদেশী আগে দেখেনি’।

কালেক্টর সাহেব বললেন ‘নবাব সাহেব এমন কি বস্তু হতে পারে যা কোন ভিনদেশী আগে দেখেনি? যাক আমি ভেবে-চিন্তে পরে বলবো’।

দু’দিন পর কালেক্টর সাহেব বললেন ‘নবাব সাহেব আমি ইতোমধ্যে খোঁজ-খবর নিয়েছি। আপনাকে এমন জিনিস দেখাবো যা কোন ভিনদেশী কখনো দেখেনি’।

দু’দিন পর কালেক্টর সাহেব সরকারের লিখিত অনুমতিসহ নবাব সাহেবের অতিথিশালায় পৌঁছে অত্যাশ্চর্য বস্তু দেখার কর্মসুচী তৈরি করেন। কালেক্টর সাহেব বললেন ‘আমার ব্যক্তিগত গাড়িতে যেতে হবে। এই ভ্রমণে সরকারী গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না’।

পরের দিন তারা দু’জন অত্যাশ্চর্য বস্তু দেখতে বের হলেন। শহর-নগর পেরিয়ে ছোট একটি সড়ক দিয়ে গাড়ি যতো এগোতে থাকলো ততো গভীর অরণ্য। কোন যাত্রী বা পথিক চোখে পড়ে না। এভাবে আধা ঘন্টার বেশি সময় চলার পর একটি বিরাট গেটের সামনে তারা গাড়ি থেকে নামেন।
উভয় পাশে সশস্ত্র সৈন্যের সতর্ক প্রহরা দেখা গেল। কালেক্টর গাড়ি থেকে নেমে পাসপোর্ট ও সরকারি অনুমতিপত্র গেটে জমা দিয়ে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি লাভ করেন।
কর্মকর্তারা বলে দিলেন এখন নিজেদের গাড়ি রেখে তাদের গাড়ি ব্যবহার করতে হবে। দু’দেয়ালের মধ্যদিয়ে গাড়ি চলতে লাগলো। সুনিবিড় জঙ্গল আর বৃক্ষলতা ভিন্ন আর কিছু দেখা যায় না। এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর সামনে একটি প্রাসাদ দেখা গেল।

কালেক্টর সাহেব বললেন, ‘প্রাসাদে প্রবেশের পর থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত আপনি আমাকে কোন প্রশ্ন করবেন না। একেবারে চুপচাপ থাকবেন। আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে বাসায় ফিরে উত্তর দেব’।
প্রাসাদের কিছু দূরে গাড়ি রেখে তারা পায়ে হেঁটে চললেন।

বিপুল সংখ্যক কক্ষ সম্পন্ন প্রাসাদটি গগনচুম্বী ও অতিকায়। কালেক্টর সাহেব নবাব সাহেবকে একটি কক্ষের সামনে দাঁড় করালেন যেখানে আরবী পোশাক পরিহিত বিপুল ছাত্র মাটির বিছানায় বসে সবক নিচ্ছে। যেমন আমাদের দেশের মাদ্রাসা ছাত্ররা নেয়। ছাত্ররা আরবী ও ইংরেজী ভাষায় উস্তাদের নিকট প্রশ্ন করছে। আর উস্তাদ সুন্দর ও সাবলীল ভঙ্গিতে ঐ প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে।

কালেক্টর সাহেব এভাবে নবাব সাহেবকে প্রতিটি কক্ষ এবং সেখানে যে সকল বিষয়ে শিক্ষা ও বাস্তব ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে তা ঘুরে ঘুরে দেখান।
নবাব সাহেব এভাবে অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করেন যে- কোন কক্ষে কিরায়াত শিখানো হচ্ছে, কোথাও কুরআনুল কারীমের অর্থ ও তাফসীর শিখানো হচ্ছে, কোথাও বুখারী ও মুসলিম শরীফের সবক চলছে, কোথাও মাসয়ালা নিয়ে বিশদ আলোচনা চলছে, কোথাও হচ্ছে ইসলামী পরিভাষার উপর বিশেষ অনুশীলন, একটি কক্ষে দেখা গেলো ধর্মীয়তত্ব নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে রীতিমত আনুষ্ঠানিক বিতর্ক চলছে।

নবাব সাহেব এসব দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন এবং একজন ছাত্রের সাথে কথা বলতে চাইলেন। কিন্তু কালেক্টর সাহেব তাকে ইশারা করে চুপ থাকতে বললেন।

বাসায় ফিরে নবাব সাহেব বললেন, এতবড় দ্বীনি মাদ্রাসা যেখানে দ্বীনের প্রতিটি বিষয় উন্নত পদ্ধতিতে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে এবং ইসলামের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয় নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা হচ্ছে, দেখে ভালো লেগেছে। কিন্তু এসব মুসলিম ছাত্রকে এই দূরবর্তী জায়গায় বন্দী করে কেন রাখা হয়েছে?
কালেক্টর সাহেব উত্তর দিলেন, ‘এসব ছাত্ররা একজনও মুসলিম নয়। সব খৃস্টান মিশনারী’।
নবাব সাহেব আরো আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এর কারণ কি?’
কালেক্টর সাহেব উত্তর দিলেন, ‘সুড়ঙ্গ পথে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠান থেকে লিখাপড়া শেষ করে ছাত্রদের মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়। (গোয়েন্দা আলিমদের বিশেষকরে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানোর কারণ হলো- মধ্যপ্রাচ্য হলো ইসলামের উৎস। তাই মধ্যপ্রাচ্য থেকে কোন বিশেষজ্ঞ ইসলামের কোন কথা বললে তা সারা মুসলিম বিশ্বে সহজে গ্রহণযোগ্য হয়ে যায়)। সেখানে তারা নানান ছলে বলে কৌশলে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, ছোট বাচ্চাদের কুরআনের গৃহ শিক্ষক, মাদ্রাসার মুহাদ্দীস বা মুফতি হিসেবে ঢুকে পড়ে। যেহেতু তারা আরবী সাহিত্য ও ইসলামী বিষয়ে পারদর্শী তাই তাদের নিয়োগ পেতে অসুবিধা হয় না। অনেক সময় ধোঁকা দেয়ার জন্য তারা বলে, আমরা ইংরেজ এবং ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত আলিম। আমাদের অনেকে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভ করা। নিজ দেশে দ্বীনি পরিবেশ, বড় মাদ্রাসা এবং পর্যাপ্ত মসজিদ না থাকায় আমরা এখানে এসেছি। শুধু দু’মুঠো ভাত ও মাথা গোঁজার একটি ঠাঁই পেলেই চলবে। আমরা আল্লাহর দ্বীনের জন্য সবকিছু কোরবান করতে প্রস্তুত।’
এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঢুকে গিয়ে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়।
বিভিন্ন পদ্ধতিতে (বিশেষ করে ইসলামের জ্ঞানের মধ্যে ভুল ঢুকিয়ে) বিভেদ এবং অনৈক্য সৃষ্টির জন্য তারা অত্যন্ত তৎপর থাকে।
একবার বিভেদের বীজ বপন করতে পারলে, ইন্ধন যুগিয়ে তারা মুসলমানদের বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত করে রক্তপাতও ঘটায়। সামান্য একটি ইসলামী বিষয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্টি করে দেয় দাঙ্গা হাঙ্গামার।
[সূত্রঃ প্রতিবেদনটি ভারতের উর্দু পাক্ষিক সাময়িকী ‘তামির-ই-হায়াত’ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের অনুবাদ। প্রতিবেদনটির বিষয়বস্তু হলো – ভারতের নওয়াব ছাতারীর দেখা এক স্থাপনা এবং তার কার্যক্রম। প্রতিবেদনটি মূল বক্তব্য গুছিয়ে দৈনিক ইনকিলাবে ০২.০৪.৯৮ ইং তারিখে ‘বৃটেনের মাটির তলায় খৃস্টানদের গোপন মাদ্রাসা’ শিরোনামে প্রকাশ হয়।]

উপরের ঘটনাটি আজ থেকে শত বর্ষ আগের।
কাফিররা অনেক আগে থেকে মুসলমানদের দ্বীন ধ্বংসের চক্রান্ত শুরু করে।
আজকাল দেখবেন, হঠাৎ নতুন নতুন অনেক কথিত আলেম তথা ইসলামী স্কলার গজিয়ে যায়। তারা এমন সব কথা বলে, এমন সব বিষয়ে অভিজ্ঞতা দেখায়, যা সাধারণ আলেমরা পারে না। তারা এমন সব নতুন নতুন তত্ত্ব দেয়, যা কুরআন-হাদীসের কোথাও খুজে পাওয়া যায় না।
যেমনঃ একজন বলেছে, আল্লাহ্ ছাড়া কাউকে মাওলানা সম্বোধন করা শির্ক। অথচ কোরআনের অায়াতে কারিম থেকে মাওলানা সম্বোধন শির্ক না হওয়া প্রমানিত হয়।

আরেক জন বলেছে, কালিমায়ে তৈয়্যিবা لا إله إلا الله محمد رسول اللّه صلى الله عليه و آله وسلم এভাবে লিখা শির্ক। অথচ তা মোটেই শির্ক নয়।

আরেকজন টাই পড়া কোরআনে পায়; যা কোরআনের সুস্পষ্ট অপব্যাখ্যা।

আরেক জন সনাতন ধর্মের দেবতা রাম-কৃষ্ণদের নবী-রাসূল হতে পারে বলে সম্ভাবনার ঘোষণা দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির পায়তারা করেছে।
…..তাদের ইত্যাকার নিত্য-নতুন আবিষ্কারের ইয়াত্তা নেই।

তারা ইসলামী লেবাস পরে থাকে, কিন্তু কথায় কথায় নবীজিকে, নবীজির পরিবারকে, সাহাবীগণ ও আউলিয়াগণকে কটাক্ষ করে। শ্রোতাদের মাঝে নিজেদের ব্যাপারে কট্টর ধার্মিকতার বিশ্বাস তৈরী করে ইনিয়ে-বিনিয়ে নতুন নতুন কথা বলে মানুষকে নতুন পথে পরিচালিত করতে চায়। কিন্তু সে সকল মওলানা, আলেম কিংবা ইসলামী স্কলারগুলো কোথা থেকে আসলো? তারা কি সত্যিই মুসলমান? নাকি ব্রিটেনের ঐ গোপন মাদ্রাসা থেকে ট্রেনিংপ্রাপ্ত খ্রিস্টান। কুরআন হাদীস দিয়ে যাচাই করে, আপনাকে দেখতে হবে।
কেননা হাদিসে রাসূলের যে কিতাব আপনার ঈমান আমলের সূত্র (References) তার সংকলক ঈমামদের ঈমানের প্রতি তারা কুফরী, মুশরিকী ফতোয়া আরোপ করেছে। যেমন নাসিরুদ্দিন আলবানী ঈমাম বুখারী রহিমাহুল্লহর ব্যাপারে কুফরী ফতোয়া দিয়েছে।
সেই একই ব্যক্তি মহান আল্লাহ্ পাকের সিদ্ধান্তের প্রতিও বিরুপ মন্তব্য করেছে।
এই লোকটি দালিলীক কিতাবাদির উপর অন্যায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ইসলামের প্রভূত ক্ষতি সাধনে দালালী করেছে।

আজ থেকে শত বছর আগে তারা তাদের কার্যক্রম মাটির নিচে গোপন মাদ্রাসা স্থাপন করে বিভেদ সৃষ্টির মিশন শুরু করলেও বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে মাটির উপরেই অনুরুপ মাদ্রাসা স্থাপন করে কার্যক্রম চালানোর সম্ভাবনাকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

কাজেই দ্বীন চর্চায় যার কাছ থেকে ইলম অর্জন করবেন সর্বোচ্চ সাবধানতা ছাড়া কেবল ক্বুরআ’ন ও হাদিসের আলোচনা বলেই গ্রহন করা উচিত হবে না।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment