বুরাক মিরাজে গিয়েছিলো— তার প্রমাণ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

নাস্তিকদের সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে আমাদেরই একভাই স্বতন্ত্রভাবে বোরাক মিরাজে যাবার হাদীসগুলো অস্বীকার করেছেন।আমি জানিনা কেনো তারা এমন করেন,আল্লাহ উনাদের হেদায়েত দান করুন।

 সর্বপ্রথম সীরাতে ইবন হিশামের হাদীস দ্বারা দলিল দিয়েছেন,এব্যাপারে একটু বলতে চাই।

➤➤আবু সাইদ খুদরী রাঃ এর হাদীস—

قال ابن إسحاق: وحدثني من لا أتهم عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه أنه قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: لما فرغت مما كان في بيت المقدس، أتى المعراج، ولم أر شيئا قط أحسن منه. وهو الذي يمد إليه ميتكم عينيه إذا حضر، فأصعدني صاحبي فيه، حتى انتهى بي إلى باب من أبواب السماء، يقال له: باب الحفظة……..

—আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে বলতে শুনেছি যে, বাইতুল মুকাদ্দাসের কাজ শেষ হবার পর আমার সামনে একটি সিঁড়ি (মি’রাজ) উপস্থিত করা হল। আমি এমন সুন্দর জিনিস আর কখনো দেখিনি। এটাই সে বস্তু যার দিকে তোমাদের মত ব্যক্তিরা মৃত্যুকালে বিস্ফোরিত নেত্রে তাঁকিয়ে থাকে। আমার সঙ্গী [জিব্রাঈল(আ)] আমাকে তার উপর সওয়ার করালেন। সেটি আমাকে নিয়ে আকাশের একটি দরজায় উপনিত হল যার নাম বাবুল হাফাযা অর্থাৎ প্রহরীদের ফটক। …….

হাদীসটি সম্পর্কে ইমাম ইবনে কাসীর রহ: উনার ‘সীরাতে নববীয়্যাহ’ কিতাবের ২য় খন্ডের ৯৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন—

 فإنه من غرائب الاحاديث وفى إسناده ضعف

— নিশ্চয়ই হাদীসটি গারীব হাদীসগুলোর মধ্যে অন্যতম।এবং এর সনদ দ্বইফ/দূর্বল।

➤ড. মাজদী মুহাম্মাদ আস সুরুর এর ‘নাফাহাতুল মিম্বারিল মাক্কী’ কিতাবের ১ম খন্ডের ৩০৯ পৃষ্ঠায় হাদীসটি উল্লেখ আছে,যা দারুল কুতুব ইলমিয়াহ হতে প্রকাশিত,

এর মুহাক্কিকদ্বয় তাহক্বিক করে বলেছেন এ হাদীসের উপর,ইবনে ইসহাকের বর্ণিত সূত্রটি দ্বইফ বা দূর্বল।

➤➤কেনো দূর্বল তার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা যাক:

মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক এর সমালোচনাঃ—

ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী বলেন—

إمام المغازي صدوق يدلس ورمي بالتشيع والقد

— যুদ্ধাভিযান বিষয়ক বর্ণনায় তিনি (ইবনে ইসহাক) ছিলেন বর্ণনাকারীদের ইমাম বা শীর্ষস্থানীয় বর্ণনাকারী।সত্যবাদী ছিলেন তবে ‘তাদলীস’ (হাদীসের দোষত্রুটি গোপন রাখা) করতেন।তার উপর শিয়া এবং ক্বদরীয়া হবার অভিযোগ আছে।

[মুখতাসারুল রউদ্বুল উনুফ,৩৮১ পৃষ্ঠা]

ইমাম ওয়ালীউদ্দিন ইরাকী ‘আল মুদাল্লিসীন‘ কিতাবে মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক এর জীবনীতে উল্লেখ করেন—

محمد بن إسحاق بن يسار ممن أكثر من التدليس خصوصاً عن الضعفاء

— মুহাম্মাদ বিন ইসহাক দূর্বল রাবীদের হতে বর্ণনাকালে অধিক ‘তাদলীস’ করতেন। 

‘তাহযীবুত তাহযিবে’র ৯ম খন্ডের ৪৩ পৃষ্ঠায় ইমাম আসকালানী উল্লেখ করেন—

وقال أبو داود وسمعت أحمد ذكر محمد بن إسحاق فقال كان رجلا يشتهي الحديث فيأخذ كتب الناس فيضعها في كتبه

—ইমাম আবু দাউদ বলেন,আমি ইমাম আহমদ কে ইবনে ইসহাক সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছি,সে নিজের থেকে শব্দ দিয়ে হাদীস বলতো,মানুষের কাছ থেকে কিতাব এনে নিজের কিতাবাদির সাথে মিলিয়ে দিতো (অর্থাৎ নিজের কাছেই রেখে দিতো,ফেরৎ দিতো না)।

✪ইমাম মালেক বিন আনাস রাঃ বলেছেন—

هو دجال من الدجاجلة نحن أخرجناه من المدينة

— সে দাজ্জালদের মধ্যে একজন দাজ্জাল (মানে হাদীস বর্ণনাকারীদের মধ্যে নিম্নমানের)।আমরা তাকে মদীনা হতে বের করে দিয়েছি (তার থেকে হাদীস নিই না)। 

[আল ওয়াফি বিল ওয়াফিয়াহ,২/১৩৩,আল্লামা সাদাফী]

✔ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বলেন—

حسن الحديث، وليس بحجة

—তিনি হাদীস বর্ণনায় হাসান পর্যায়ের রাবী,কিন্তু তার হাদীস ‘হুজ্জাত’ বা দলিল নয়।

[আহাসিনুল আখবার ফি মাহাসিনিস সাবআতি ওয়াল আখইয়ার,১৩২পৃষ্ঠা,আল্লামা আব্দুল ওয়াহহাব আল মিয্যি হানাফি(৭৬৮হি)]

✔ইমাম হায়সামী ‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’ এর ১/৭৮পৃষ্ঠার প্রথম হাদীসে ইবনে ইসহাক কে মুদাল্লিস বলেছেন।

মোটকথা,ঐ হাদীসে মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক থাকা এবং উনার পূর্বের রাবীর নাম উল্লেখ না থাকাটা এই হাদীসের সনদের দূর্বলতা প্রকাশক এবং তা হুজ্জাত বা দলিল হবার যোগ্য নয়।

আহলে সুন্নত ওয়াল জামআতের একদল আলেম অবশ্যই সিঁড়িতে করে বা উর্ধ্বগামী সোপানে করে যাবার মতামত তুলে ধরেছেন।দূর্বল এবং দ্বইফ হাদীসও ফাদ্বায়েলে আমল এর জন্য গ্রহণযোগ্য।কিন্তু সেই দ্বইফের উপর ভিত্তি করে তার চেয়ে উচু মানের হাদীসের বিরোধীতা করা বা ‘স্পেসিফিক শব্দ’ অনুল্লেখ থাকার কারণে সেখান থেকে ‘নাফি’ বা না বোধকতার দলিল গ্রহণ করা কোনো উসুলে হতে পারেনা।

ঐ হাদীসের আরো ব্যাখ্যা:—

➤ইমাম বায়হাক্বীর ‘দালায়েলুন নবুয়্যত‘ এর ২য় খন্ডের ৩৯০ পৃষ্ঠা হতে হাদীসটি শুরু হয়, যার সনদে ‘আবু হারুন আবাদী’ তথা ‘উমারাহ বিন জুওয়াইন‘ নামক একজন রাবী আছেন।এর সম্পর্কে—

✔ ইমাম বুখারী বলেন,ইমাম ইয়াহইয়া আল কাত্তান তাকে পরিত্যাগ করেছেন।হাদীসের ক্ষেত্রে সে আমার মতে সত্যবাদী নয়।

✔ইমাম আবি যুরআ এবং ইমাম ইবনে আবী হাতেম তাকে যইফ বলেছেন।

✔ইমাম আহমদ বলেছেন,সে কোনো কিছুই নয়

✔ইমাম নাসায়ী এবং ইমাম হাকেম নিশাপুরী তাকে মাতরূকুল হাদীস বা তার হাদীস পরিত্যাক্ত বলেছেন।ইমাম নাসায়ী বলেছেন,শেষের দিকে মওদ্বু/জাল হাদীস বানাতো।এবং সে ছিকাহ নয়।(তাহযিব)

✔ইমাম জাওযজানী তাকে কায্যাব বা মিথ্যাবাদী বলেছেন।

✔ইমাম ইবনে শাহীন বলেন,ইমাম উসমান বিন আবি শায়বা বলেছেন সে কায্যাব বা মিথ্যাবাদী।

এ তথ্যগুলো ইমাম উকায়লীর ‘আদ-দ্বুয়াফাইল কাবীর’ ৩/৩১৩(দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ),ইমাম ইবনে হিব্বান এর ‘আল-মাজরুহীন’ এর ২/১৭৭পৃষ্ঠায়, ‘তাহযীবুত তাহযিব’ ৭/৪১২ পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে বলে মুহাক্কিক উল্লেখ করেছেন।

ইমাম ইবনে হাজার ‘তাক্বরীবুত তাহযিব’ এর মধ্যে তাকে মাতরূক ও কায্যাব বলেন,ইমাম যাহাবী ‘আল কাশেফ’ এর মধ্যে কায্যাব বলে ঘোষণা করেছেন। 

➤তফসিরে তাবারীতে ১৫/১০পৃ. এবং তফসিরে ইবনে কাসীরে আরো দুইটি সনদের কথা উল্লেখ আছে,যেখানে আবু সাইদ খুদরী রাঃ হতে কেবল ঐ রাবীই বর্ণনা করেছেন

সীরাতে ইবনে হিশামে নাম অনুল্লেখ থাকা রাবীটির সন্ধান হয়তো আমরা পেয়ে গেছি।ইমাম ইবনে কাসীর নিজে উল্লেখ করেন সনদটি—

من حديث محمد بن إسحاق : حدثني روح بن القاسم، عن أبي هارون، به نحو سياقه المتقدم

— এখানে ‘রূহ বিন কাসেম’ একজন সত্যবাদী রাবী।(তাক্বরীব,১৯৭০নং রাবী)।কিন্তু তার আগে ‘মাতরুক’ হারুন আবাদী এবং পরে স্বয়ং ইবনে ইসহাক।

এই সমস্ত সনদ পর্যালোচনা করে দেখা যায়,আবু সাঈদ খুদরী রাঃ এর ‘সিড়ি’র হাদীস নির্ভরযোগ্য সনদ দ্বারা বর্ণিত নয়।এমনকি ইমাম হায়সামী ‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’ এর প্রথম খন্ডের ৮০ পৃষ্ঠায় এই হাদীসের কিয়দংশ ‘মুজামুস সাগীর লিত তাবারানি’ এর রেফারেন্সে উপস্থাপন করেন,যেখানে ফেরেশতা ইসমাইল কে দেখার বর্ণনা সন্নিবেশিত ছিল।হাদীসটি বর্ণনা করে হায়সামী বলেন,আবু হারুন আবাদী ‘দ্বইফ—জিদ্দান’।

হুযায়ফা ইবনু ইয়ামান এর বুরাকের হাদীস:—

তিরমিযী ৩১৪৭:—

حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ أَبِي النَّجُودِ، عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ، قَالَ قُلْتُ لِحُذَيْفَةَ بْنِ الْيَمَانِ أَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ…………..قَالَ حُذَيْفَةُ قَدْ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِدَابَّةٍ طَوِيلَةِ الظَّهْرِ مَمْدُودَةٍ هَكَذَا خَطْوُهُ مَدُّ بَصَرِهِ فَمَا زَايَلاَ ظَهْرَ الْبُرَاقِ حَتَّى رَأَيَا الْجَنَّةَ وَالنَّارَ وَوَعْدَ الآخِرَةِ أَجْمَعَ….(الى اخر الحديث)

— যির ইবনু হুবাইশ (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রাযিঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, রাসূলুল্লাহ ﷺ কি বাইতুল মাকদিসে নামায আদায় করেছেন? তিনি বললেন, না।……….তারা দু’জন (নবী ﷺ ও জিবরীল) জান্নাত, জাহান্নাম এবং আখিরাতের প্রতিশ্রুত বিষয়সমূহ দেখার পূর্ব পর্যন্ত বোরাকের পিঠ হতে নামেননি। তারপর তারা দু’জন প্রত্যাবর্তন করেন। তারা যেভাবে গিয়েছিলেন অনুরূপভাবেই ফিরে আসেন (অর্থাৎ সওয়ারী অবস্থায়ই ফিরে আসেন)।(ইলা আখের)

➤ইমাম তিরমিযী বলেন,হাদীসটি দুর্লভ এবং হাসান সাহীহ।

সহিহ ইবনে হিব্বানে ‘আসেম বিন আবিন নাজুদ’ পর্যন্ত অক্ষত এবং পরবর্তী ভিন্ন রাবী দ্বারা হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।(৪৫নং হাদীস)

সুনানু কুবরা লিন নাসায়ীতে সংক্ষিপ্তভাবে ১১২৮০ নং হাদীসে সংক আছে।

➤ইমাম আহমদ বিন হাম্বল স্বীয় ‘মুসনাদ’ এ ২৩২৮৫ নং হাদীসে উল্লেখ করেছেন।এছাড়াও ২৩৩২০ এ সুফিয়ানের সূত্রে,২৩৩৩২, ২৩৩৩৩ এবং ২৩৩৪৩ নং হাদীসে হাম্মাদ বিন সালামাহর সূত্রে বর্ণিত আছে।

ইমাম নাসায়ীর স্বীয় তাফসিরে সুরাতুল ইসরার ব্যাখ্যায় ৩০০ নং হাদীসে সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণিত আছে।

➤ইমাম আবু দাউদ তিয়লীসি হযরত হাম্মাদ বিন সালামাহ রাঃ এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।(৫৫ পৃষ্ঠা,৪১১নং হাদীস)

ইমাম বায্যার স্বীয় মুসনাদে ২৯১৫ নং হাদীসে উল্লেখ করেছেন।

ইবনে আবি শায়বা স্বীয় ‘মুসান্নাফ‘ গ্রন্থে ফযিলতের অধ্যায়ে,১১/৪৬০-৪৬১ তে এবং মাগাযী অধ্যায়ে ১৪/৩০৬-৩০৭ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

তাফসীরে তাবারী,১৫/১৩,সুফিয়ান হয়ে আসেমের সূত্রে বর্ণিত আছে

➤ইমাম হাকিম নিশাপুরী ‘মুস্তাদরাক আলাস সহিহাইন’ এর ২/৩৫৯পৃষ্ঠায় আবু বকর বিন আইয়্যাশ হয়ে আসেমের সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন,হাদীসটির সনদ সহীহ কিন্তু শায়খাইন তা (স্বীয় কিতাব্দ্বয়ে) উল্লেখ করেন নি।

হুযায়ফার হাদীসে দিকে প্রশ্ন:—

হুযায়ফা ইবনু ইয়ামান রাঃ এই হাদীসে নবীজী কর্তৃক সালাত আদায় করার কথা অস্বীকার করেছেন।তাহলে এই হাদীস কি প্রকারে হুজ্জাত বা দলিল হতে পারে?

এর উত্তরে বলা যাবে দুইভাবে,হুযায়ফা রাঃ তার স্বীয় কথার মধ্যেই হয়ত লুকিয়ে

 রেখেছেন রহস্য,তিনি বলেন— 

“সেখানে যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ নামায আদায় করতেন, তাহলে তোমাদের উপরও সেখানে নামায আদায় করা বাধ্যতামূলক হত, যেমন মাসজিদুল হারামে নামায আদায় করা তোমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।”

 অর্থাৎ নবীজীর সালাত আদায় করার কারণেও উম্মতের জন্য তা ওয়াজীব হলো না,এমনটা বুঝা যেতে পারে।কিন্তু হুযায়ফা —”তারা দু’জন জান্নাত, জাহান্নাম এবং আখিরাতের প্রতিশ্রুত বিষয়সমূহ দেখার পূর্ব পর্যন্ত বোরাকের পিঠ হতে নামেননি।”—দ্বারা পরিষ্কার বুঝালেন যে তিনি নবীজী হতে বুরাক বাঁধা বা নামার বর্ণনা শুনেন নি।

এখন হুযায়ফার হাদীসের সেই অংশের দিকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে,যেখানে তিনি সালাত আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন,যেমনটা ইমাম ইবনে কাসীর স্বীয় তাফসিরে, ইমাম ত্বাহাবী শরহে মুশকিলুল আছার এর ১২/৫৪৪ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন।দুজনের প্রশ্ন কিন্তু ”সালাত আদায় করা না করার” উপর,বোরাক ব্যবহারের উপর নয়!

এখানেই সুক্ষ্ম পার্থক্যটা বোঝা উচিত।সমগ্র হাদীসটি বাত্বিল বা অগ্রহণযোগ্য নয়,কেননা এটা একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়ে গেছে।স্বয়ং আলবানী এটার হাসান হবার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এই হাদীসের “সালাত আদায় না করার” পক্ষে কথাগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।কিন্তু,”তারা দু’জন (নবী ﷺ ও জিবরীল) জান্নাত, জাহান্নাম এবং আখিরাতের প্রতিশ্রুত বিষয়সমূহ দেখার পূর্ব পর্যন্ত বোরাকের পিঠ হতে নামেননি”— বাক্য দ্বারা বোরাক জান্নাত জাহান্নাম দেখাকালে বোরাক ব্যবহার না করার যুক্তি প্রতিষ্ঠিত হয় না,বরং হুযায়ফা স্বীয় দাবিতে (নামাজ আদায় না করা) অটল থাকার যুক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। নবীজী বুরাকে গিয়েছেন এবং ফেরত এসেছেন কথাটা,وَوَعْدَ الآخِرَةِ أَجْمَعَ বা “তারা যেভাবে গিয়েছিলেন অনুরূপভাবেই ফিরে আসেন” (তথা বুরাকে গিয়েছিলেন বুরাকেই ফিরে এসেছিলেন) — এমন তথ্যের পক্ষে জোরালো আবেদন প্রতিষ্ঠিত হয়।আমরা যেহেতু বুরাক উপরে যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে কথা বলছি!তাই বলবো,এই বাক্যটির উপর কোনো ইমাম আপত্তি তোলেন নি বা এটার দ্বারা নামাজ পড়া না পড়ার পক্ষীয় কথাবার্তা সাব্যস্ত হয়না,বরঙ এটা বুঝা যায় যে,নবীজী বুরাকে করে গিয়েছিলেন এবং ফেরৎ এসেছিলেন বুরাকে করেই।

এখন প্রশ্ন হলো,বুরাক যদি বাঁধা অবস্থাতেই রেখে কেবল সোপান ব্যবহার করা হতো,তাহলে সেই বোরাক পরদিন কোথায় গেলো?অথবা কোনো ফেরেস্তা এসে বোরাককে নিয়ে গিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ নেই!আবার যদি এরকম ধরা হয়,বুরাক বাঁধাই ছিলো,নবীজী ফেরার পথে বোরাকে পুনরায় চড়েছিলেন।কিন্তু নবীজী দ্বিতীয়বার বায়তুল মুকাদ্দাসে নামেন বলে কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।তথাপি,একমাত্র সম্ভাবনা এটাই যে,বোরাক ছিলো নবীজীর সাথে,এবং বুরাক—সোপান দুটোর কম্বিনেশন করে নবীজীকে অত্যন্ত আযমত এর সাথে নেয়া হয়েছিলো মিরাজে।আমরা সমন্বয়ের ব্যাপারে কিছু ইমামদের ক্বওলও দেখাবো।

তার আগে বুরাক ব্যবহার হওয়ার পক্ষীয় হাদীস দেখে নেয়া যাক।

➤➤বুখারী ৩৮৮৭ নং হাদীসে উল্লেখ আছে—

…..ثُمَّ أُتِيْتُ بِدَابَّةٍ دُوْنَ الْبَغْلِ وَفَوْقَ الْحِمَارِ أَبْيَضَ فَقَالَ لَهُ الْجَارُوْدُ هُوَ الْبُرَاقُ يَا أَبَا حَمْزَةَ قَالَ أَنَسٌ نَعَمْ يَضَعُ خَطْوَهُ عِنْدَ أَقْصَى طَرْفِهِ فَحُمِلْتُ عَلَيْهِ فَانْطَلَقَ بِيْ جِبْرِيْلُ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الدُّنْيَا فَاسْتَفْتَحَ فَقِيْلَ مَنْ هَذَا…….(الى اخر الحديث)

…..

নবীজী ﷺ বলেন,«তারপর সাদা রং এর একটি জন্তু আমার নিকট আনা হল। যা আকারে খচ্চর হতে ছোট ও গাধা হতে বড় ছিল।»জারুদ তাকে(আনাসকে) বলেন, হে আবূ হামযা, এটাই কি বুরাক? আনাস (রাঃ) বললেন, হাঁ। সে একেক কদম রাখে দৃষ্টির শেষ সীমায়।(নবীজী বলেন)«আমাকে তার উপর সাওয়ার করানো হল।আমাকে নিয়ে জিবরাঈল (আঃ) চললেন।প্রথম আসমানে নিয়ে এসে দরজা খোলে দিতে বললেন, জিজ্ঞেস করা হল, ইনি কে?»…….

এখানে যতটুকু উল্লেখ করা হয়েছে তারমধ্যে লক্ষ করুন, প্রত্যেকটা ঘটনা ‘ছুম্মা(ثُمَّ)’/অতঃপর দ্বারা আলাদা।কিন্তু ‘বুরাক আনা হলো’, ‘আমাকে সওয়ার করানো হল’,’আমাকে নিয়ে জিব্রাইল চললেন’ এবং ‘প্রথম আসমানে নিয়ে এসে…..’ এই কথাগুলোর মধ্যে কোনো ‘ছুম্মা’ নেই।মাঝে কেবল আনাস এর সাগরেদ এর প্রশ্ন আছে। বাক্যের এই স্ট্রাকচার প্রমাণ করে, ‘ছুম্মা’ দ্বারা আলাদাকৃত ঘটনাগুলো পরপর সংগঠিত হয়েছিলো এবং বোরাকে উঠেই প্রথম আসমানে যাওয়াটা পরপর সংগঠিত হয় নি।অর্থাৎ এই হাদীসটা বায়তুল মাকদাসে যাবার বিরোধীতা করেনা। বরং মাঝের কোনো ঘটনা থাকলেও থাকতে পারে এমন বুঝায়।

তথাপি,”ছুম্মা” দ্বারা ঘটনাগুলোকে আলাদা করা হলেও এখানে বোরাকে চড়ার পর আসমানে যাবার ঘটনাকে আলাদা না করার (বাক্যের) স্ট্রাকচার মূলত বোরাকে চড়া+আসমানে যাওয়া ঘটনা দ্বয়কে জুড়ে দেয়।অর্থাৎ বোরাক দ্বারাই আসমানে যাওয়াটা সাব্যস্ত হয়।

কথার সত্যতা দেখুন হাদীসে,বুরাক সহকারের ঘটনাগুলো কোনো ‘ছুম্মা’ ছাড়া বর্ণিত হচ্ছে,

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ أُتِيتُ بِالْبُرَاقِ وَهُوَ دَابَّةٌ أَبْيَضُ طَوِيلٌ فَوْقَ الْحِمَارِ وَدُونَ الْبَغْلِ يَضَعُ حَافِرَهُ عِنْدَ مُنْتَهَى طَرْفِهِ قَالَ فَرَكِبْتُهُ حَتَّى أَتَيْتُ بَيْتَ الْمَقْدِسِ………….(الى اخر الحديث)

—আনাস ইবনু মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ আমার জন্য বুরাক পাঠানো হল। বুরাক গাধা থেকে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট একটি সাদা রঙের জন্তু। যতদূর দৃষ্টি যায় এক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ আমি এতে আরোহণ করলাম এবং বাইতুল মাকদাস পর্যন্ত এসে পৌছলাম।…….(সহিহ মুসলিম,৩০০ নং,হাদীস একাডেমি)

➤➤ইবনে কাসীর নিজে উল্লেখ করেছেন—

ثم إنه ركب البراق وكر راجعاً إلى مكة

—অতঃপর তিনি বোরাকে সওয়ার হয়ে মক্কায় প্রত্যাবর্তন করলেন!

[তাফসিরে ইবনে কাসীর,৫/৩১,দার আত-তাইয়্যেবা]

➤➤তফসিরে ইবনে কাসীরেই উল্লেখ আছে—[প্রাগুক্ত,১২পৃষ্ঠা]

ابن أبي حاتم: حدثني أبي، حدثنا هشام بن عمار، حدثنا خالد بن يزيد بن أبي مالك، عن أبيه، عن أنس بن رضي الله عنه، قال: لما كان ليلة أسرى برسول الله ﷺ إلى بيت المقدس……….قال : ثم ركب منصرفاً، فبينا هو في بعض طريقه مر بعير لقريش تحمل طعاما، منها جمل عليه غرارتان : غرارة سوداء، وغرارة بيضاء، فلما حاذى بالعير نفرت منه واستدارت، وصرع ذلك البعير وانكسر . ثم إنه مضى فأصبح………..(الى اخر الحديث)

—রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেন, অতঃপর আমরা ফেরার জন্য জন্য সওয়ারীর উপর আরোহণ করলাম। ফেরার পথে কুরাইশদের একটি কাফেলা দেখলাম যারা খাদ্যদ্রব্য বোঝাই করে যাচ্ছিল। তাদের মধ্যে একটি উট এমন ছিল যার উপর দুইটি বোঝা ছিল যার একটি সাদা ও একটি কাল। যখন আমরা তার কাছ দিয়ে অতিক্রম করলাম তখন উটটি চমকে উঠল, মুচড়ে গিয়ে পড়ল।………

সনদ যাচাই:

ইমাম দারাকুতনী বলেন

خالد بن يزيد بن أبي مالك، شامي، عن أبيه، وأبوه من الثقات

—খালেদ বিন ইয়াযিদ বিন আবি মালিক,শামের অধিবাসী।তার পিতা সিকাহ রাবীদের অন্তর্ভুক্ত। 

[আদ দুয়াফা ওয়াল মাতরুকীন,১৯৯ নং রাবী,ইমাম দারাকুতনী]

এর মাঝে খালেদ বিন ইয়াযীদকে কেউ কেউ

দ্বইফ বললেও কায্যাব-মাতরূক কেউই বলেন নি।তবে তার প্রশংসা বহু ইমাম করেছেন।

روى ابْن شاهين أَن أَحْمد بن صَالح وَثَّقَهُ

— ইমাম ইবনে শাহীন বর্ণনা করেন,খালেদ বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে ইমাম আহমদ বিন সালেহ সিকাহ বা বিশ্বস্ত হবার পক্ষে রায় দিয়েছেন।

وَعَن أَحْمد بن حَنْبَل أَنه قَالَ خَالِد بن يزِيد ثِقَة

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল হতে বর্ণিত,উনি খালেদ বিন ইয়াজিদের সম্পর্কে বলেন,(তিনি) সিকাহ বা বিশ্বস্ত

[উপরের ক্বওলদ্বয় যিকরি মিন ইখতিলাফিল উলামাই ওয়ান নাকদিল হাদীস,৮৪ পৃ,ইমাম ইবনে শাহীন,মাক্তাবাতুত তারবিয়াতিল ইসলামিয়া লিইহইয়াইত তুরাছিল ইসলামী হতে প্রকাশিত] 

ইমাম ইবনে হাব্বান বলেন—

وقال ابن حبان هو من فقهاء الشام كان صدوقا في الرواية

—ইমাম ইবনে হিব্বান বলেন,তিনি(ইয়াযিদ) ছিলেন শামের ফকিহ এবং বর্ণনার ব্যাপারে সত্যবাদী ছিলেন।

وقال أبو زرعة الدمشقي وأحمد بن صالح المصري ثقة 

—ইমাম আবি যুরআ দামেশকি এবং ইমাম আহমাদ বিন সালেহ বলেন,তিনি ছিকাহ বা বিশস্ত রাবী।

[এগুলো তাহযীবুত তাহযিব,৩/১২৭,ইমাম ইবনে হাজার, হতে নেয়া]

সর্বশেষ হিসেবে ইমাম শাহীন তার পূর্বোল্লিখিত কিতাবে উল্লেখ করেন—

وَهَذَا الْكَلَام فِي خَالِد بن أبي مَالك يُوجب التَّوَقُّف فِيهِ لِأَن أَحْمد بن حَنْبَل وَأحمد بن صَالح إِذا اجْتمعَا على مدح رجل لم يجز أَن يذم بِضعْف

—«ইমাম আবু হাফস বলেছেন,খালেদের ব্যাপারে কথাগুলোর ব্যাপারে তাওয়াক্ক্বুফ বা ওয়াকফ করা বা কথা বলা বন্ধ করা (বেশি বলাবলি করা stop করা উচিত)। কেননা,ইমাম আহমদ বিন হাম্বল এবং ইমাম আহমদ বিন্ সালিহ যখন ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তার বিশস্ত হবার পক্ষে) তখন তাকে দূর্বল (বলার মাধ্যমে তার হাদীসগুলোকে দূর্বল/ভিত্তিহীন) বলা বৈধ হবেনা।»

 ইমাম ইবনে কাসীর এই হাদীসের সনদ নিয়ে কিছু বলেননি,বরং বলেছেন এতে আশ্চর্যজনক এবং দূর্লভ তথ্য বিদ্যমান।এবং সামগ্রিক হাদীসটি হাসান পর্যায়ের হতে কোনো প্রতিবন্ধকতা রাখে না।

সুতরাং বোরাক নিয়ে ফেরৎ আসা, বা বোরাক উপরে উঠা এগুলোর কোনোটাতে ‘নাফী’ বা না বোধকতা প্রকাশ পায়না বলে বোরাক উর্ধ্বে যাওয়াটা অবান্তর কিছু নয়।বোরাক শব্দটির মূল শব্দ ‘বরক্ব’ হতে নির্গত,যার অর্থ বিদ্যুৎ।যে বোরাক জান্নাত হতে নিচে নামতে পারে,সে বোরাকের উপরে যাওয়াটা আশ্চর্যের কিছুই নয়।

বোরাক-সোপানের সমন্বয়সমূহ:—

১।শায়খ মুহাক্কিক আলাল ইত্বলাক্ব শাহ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ: যিনি উপমাহাদেশে সর্বপ্রথম হাদীস শরীফের দরস দেন,সর্বজন-সর্বমহল মাননীয় আলেম,তিনি বিখ্যাত মাদারেজুন নবুয়্যত কিতাবে যা উল্লেখ করেন —

«নবী করীম ﷺ বলেছেন, আমাকে সওয়ার করানো হয়েছিলো এবং হজরত জিব্রাইল আ. আমাকে আকাশের উপর নিয়ে গিয়েছিলেন। হাদীছের বাহ্যিক অর্থ এরকম- তিনি আসমান পর্যন্ত বোরাকের উপর ছিলেন। আর বোরাকটি যমীনের উপর যেমন চলছিলো শূন্যমণ্ডলেও চলছিলো তেমনই। এটাও স্বাভাবিকতার ঊর্ধ্বে, কেনোনা কোনো মানুষ বা জন্তু হাওয়ার উপর ভর করে চলতে পারে না। কিন্তু এসব যে আল্লাহ্তায়ালার কুদরত। আল্লাহ্তায়ালার কুদরত তো স্বাভাবিকতার সীমায় সীমিত নয়। কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, বোরাকের দুটি পাখা, যার মাধ্যমে সে আকাশে ওড়ে। আবার কেউ কেউ বলেন, আরোহী বোরাকের উপরে ছিলেন মসজিদে আকসা পর্যন্ত। এরপর একখানা মেরাজ অর্থাৎ সোপান লাগানো হয়েছিলো, যার মাধ্যমে নবী করীম স.কে উপরের দিকে ওঠানো হয়েছিলো। দু’টি বর্ণনার মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান এরূপে হতে পারে, কোনো কোনো বর্ণনাকারী মেরাজের ঘটনার বিস্তারিত আলোচনা করেননি, কেউ কেউ করেছেন। প্রথম বর্ণনাকারীরা মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণের বর্ণনা করেছেন স্পষ্টভাবে। কিন্তু এরপর আসমানে ভ্রমণের আলোচনা করেননি। আবার দ্বিতীয় বর্ণনাকারীগণ আসমানে আরোহণের বর্ণনা করেছেন। এখানে এরকমও হতে পারে যে, তখনকার ভ্রমণটি বেসওয়ারী অবস্থায় ছিলো। ওয়াল্লাহু আ’লাম।

নবী করীম ﷺ কে বহন করার জন্য বোরাক প্রেরণের মধ্যে হেকমত হচ্ছে, সাইয়্যেদ মাহবুবে রব্বুল আলামীন ﷺ এর প্রতি সম্মান প্রদর্শন। যেমন কোনো বন্ধু তার বন্ধুকে বহন করে আনার জন্য ঘোড়া প্রেরণ করে থাকে। আবার এমনও দেখা যায়, বিশেষ ব্যক্তিকে আনার জন্য পাইক পেয়াদাও পাঠিয়ে দেয়া হয়। রাত্রিবেলায় মেরাজ সংঘটিত হওয়ার মধ্যেও হেকমত রয়েছে। রাতের মুহূর্তগুলো হচ্ছে একান্ত অভিসারের মুহূর্ত। অন্যান্যের দৃষ্টি থেকে আড়ালে রেখে প্রেমিক তার প্রেমাষ্পদকে একান্ত নিভৃতে নিয়ে আসবে, এটাই তো প্রকৃত প্রেমের নিয়ম। ‘আল্লাহ্তায়ালার জন্য রয়েছে সর্বোচ্চ উপমা।” খচ্চরের চেয়ে নীচু আর গাধার চেয়ে উঁচু ঘোড়ার আকৃতিবিশিষ্ট বোরাক পাঠানোর মধ্যে হেকমত এই যে, এই নিয়মের মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তার ইঙ্গিত আছে। হুবহু ঘোড়া পাঠানো হয়নি। কেনোনা ঘোড়া যুদ্ধবিগ্রহ ও ভীতিশংকুলতার প্রতীক। বোরাক ঘোড়ার আকৃতিতে ছিলো, কিন্তু ঘোড়ার মতো স্বাভাবিক গতিসম্পন্ন ছিলো না। তার গতি ছিলো অস্বাভাবিক, যা মোজেজা প্রকাশের উদ্দেশ্যেই তাকে দেয়া হয়েছিলো। শায়েখ আবদুল হক মোহাদ্দিস দেহলভী বলেন, এর নাম ঘোড়াও নয়, খচ্চরও নয়। বোরাক আরবী শব্দ বারকুন থেকে এসেছে, যার অর্থ বিদ্যুৎ। তাই তার গতিও ছিলো বিদ্যুৎসম।»

[মাদারেজুন নবুয়্যত,১/২১৩—২১৪(উর্দু অনুবাদ আল্লামা মুফতি সৈয়্যদ গোলাম মুইনউদ্দীন নঈমী রহ.),মাক্তাবায়ে আশরাফিয়া]

২।দেওবন্দি আলেম মওলানা আশরাফ আলী থানভীর সমন্বয়—

৩।গাজ্জালীয়ে জামান আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ সাঈদ শাহ কাযেমী রহিমাহুল্লাহর সমন্বয়।

আমরা এখানে যুগের বিদগ্ধ আলেমদের মতামত তুলে ধরলাম এবং দেখালাম যে মিরাজে বুরাক যাওয়াটা প্রমাণিত এবং বোরাক—সোপান সমন্বয় করেই সিদ্ধান্ত নেয়াটা নিরাপদজনক হবে।ওয়াসসালাম।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment