বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?বিষয় নং-৯: ছহীহ্ হাদিস কি শুধু বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ?

আমাদেরসাধারণ শিক্ষিত কতিপয় লোক কখনো বলে থাকেন ছহীহ্ হাদিস শুধু ছহীহ্ বুখারী মুসলিমেই সীমাবদ্ধ। নাউযুবিল্লাহ!

আবার তাদের কোনো হযরতগণ বলে থাকেন যে না সিহাহ সিত্তাহ (তাদের দৃষ্টিতে কুতুবে সিত্তাহ) হলো নির্ভরযোগ্য হাদিস গ্রন্থ, এছাড়া আর কোনো অনুসরণযোগ্য হাদিস গ্রন্থ নেই। হাদিস শাস্ত্রের পান্ডিত্য অর্জনকারীদের নিকট তাদের এ কথাগুলো হাসির খোরাক। তাদের হাসার কারণ হলো এ ধরনের বক্তব্য আহলে হাদিসদের কোনো শায়খ অর্থাৎ ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কাইয়্যুম, শাওকানী, আলবানী, ইবনে বায, শায়খ উছাইমীনসহ প্রমুখ কেউই প্রদান করেননি যে, বুখারী ও মুসলিমেই শুধু ছহীহ্ হাদিস সীমাবদ্ধ বা ৬টি প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থ ব্যতিত আর কোনো ছহীহ্ হাদিসের গ্রন্থ নেই। আলবানী পর্যন্ত ‘সুনানে আরবাআ’ প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থের বাইরে অনেক গ্রন্থের ছহীহ্ দ্বায়িফ নির্ণয় করেছেন বা টীকা করেছেন, অথচ তাদের আলবানীর এ তাহকীককৃত কিতাবগুলো দেখলেই এ বাতিল চিন্তাভাবনা দূর হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কোনো হাদিস বিশেষজ্ঞ (মুহাদ্দিছ) আলিমের পক্ষে পৃথিবীর সমস্ত হাদিস সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, এটা একটা সাধারণ কথা। পৃথিবীতে যত হাফেযুদ্দুনিয়া ছিলেন তারাও এ দাবী করেনি যে, আমরা একক পৃথিবীর সকল ছহীহ্ হাদিস সংগ্রহ করে ফেলেছি। এ সম্পর্কে আহলে হাদিসদের ইমাম হাফিজ ইবনে তাইমিয়া লিখেন,

 لَوْ فُرِضَ انْحِصَارُ حَدِيثِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فيها, فَلَيْسَ كُلُّ مَا فِي الْكُتُبِ يَعْلَمُهُ الْعَالِمُ, وَلَا يَكَادُ ذَلِكَ يَحْصُلُ لِأَحَدِ, بَلْ قَدْ يَكُونُ عِنْدَ الرَّجُلِ الدَّوَاوِينُ الْكَثِيرَةُ وَهُوَ لَا يُحِيطُ بِمَا فِيهَا. بَلْ الَّذِينَ كَانُوا قَبْلَ جَمْعِ هَذِهِ الدَّوَاوِينِ كانوا أَعْلَمَ بِالسُّنَّةِ مِنْ الْمُتَأَخِّرِينَ بِكَثِيرِ؛ لِأَنَّ كَثِيرًا مِمَّا بَلَغَهُمْ وَصَحَّ عِنْدَهُمْ قَدْ لَا يَبْلُغُنَا إلَّا عَنْ مَجْهُولٍ؛ أَوْ بِإِسْنَادِ مُنْقَطِعٍ؛ أَوْ لَا يَبْلُغُنَا بِالْكُلِّيَّةِ فَكَانَتْ دَوَاوِينُهُمْ صُدُورَهُمْ الَّتِي تَحْوِي أَضْعَافَ مَا فِي الدَّوَاوِينِ, وَهَذَا أَمْرٌ لَا يَشُكُّ فِيهِ مَنْ عَلِمَ الْقَضِيَّةَ.

-“যদি ধরে নেয়া হয় যে, রাসূল (ﷺ)-এর সমস্ত হাদীসের কিতাবসমূহে সংকলন করা হয়েছে এবং রাসূল (ﷺ)-এর হাদিস এর মাঝেই সীমাবদ্ধ, তবে কোনো আলেম হাদীসের কিতাবের সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করবে, এটি সম্ভব নয়। আর কারও পক্ষে এটি ঘটেও না। বরং কারও নিকট সংকলিত অনেক হাদীসের কিতাব থাকতে পারে, কিন্তু সে এ সমস্ত কিতাবের সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে সামর্থ হয় না। প্রকৃতপক্ষে এ সমস্ত কিতাব সংকলনের পূর্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সুন্নাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ছিলেন। তাঁদের কিতাব ছিল-তাঁদের অন্তর; যাতে সংরক্ষিত ছিল এ সমস্ত সংকলিত কিতাব থেকে কয়েক গুণ বেশি হাদিস। আর এ বিষয়ে জ্ঞান রাখে, এমন কেউই বিষয়টির ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে না।” ১৩৮৩৮  . ইবনে তাইমিয়া, রফউল মালাম আনিল আইয়্যামাতুল আ‘লাম, ১/১৭পৃ.

ইবনে তাইমিয়ার বক্তব্য থেকে এ ব্যাপারে কারও দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ থাকে না যে, হাদীসের বিষয়ে কিতাবসমূহ সংকলিত হওয়ার পূর্বে একেক মুহাদ্দিছ ও ফকীহ সংকলিত হাদীসের কিতাবসমূহের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হাদিস জানতেন। আর সমস্ত ছহীহ্ হাদিস কোনো মুহাদ্দিসের আয়ত্ত করাও সম্ভব নয়। অপরদিকে মনে রাখতে হবে যে, ইমামগণ অনেক ছহীহ্ হাদিস জানা সত্ত্বেও তা লিপিবদ্ধ করে যেতে পারেননি। তার মানে এই নয় যে, তারা যেসব হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন কেবল তাই ছহীহ্, দুনিয়াতে আর কোনো ছহীহ্ হাদিস নেই। এবার আমার এ বক্তব্যের বাস্তবতা প্রমাণের জন্য কয়েকজন ইমামের দৃষ্টান্ত তুলে ধরছি। 

১. ইমাম বুখারী: আল্লামা ইবনুস সালাহ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) (ওফাত. ৬৪৩ হি.) বর্ণনা করেন-

وَقَدْ قَالَ الْبُخَارِيُّ:  أَحْفَظُ مِائَةَ أَلْفِ حَدِيثٍ صَحِيحٍ، وَمِائَتَيْ أَلْفِ حَدِيثٍ غَيْرِ صَحِيحٍ

-“ইমাম বুখারী (رضي الله عنه) বলেন, আমি এক লক্ষ ছহীহ্ হাদিস এবং ছহীহ্ নয়, এমন দুই লক্ষ হাদিস জানি।” ১৩৯৩৯  . মুকাদ্দামাতু ইবনিস সালাহ, পৃষ্ঠা-২০, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, আদি, আল-কামিল, মুকাদ্দামা, ১/১২৬পৃ. খতিবে বাগদাদী, তারিখে বাগদাদী, ২/২৫পৃ.

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! ইমাম বুখারী (رضي الله عنه) সুনিশ্চিতভাবে এক লক্ষ ছহীহ্ হাদিস মুখস্ত জানেন বলে নিজের মত প্রকাশ করেছেন, আজ দুনিয়ায় লিপিবদ্ধ আকারে হাদিসের যে কিতাবগুলো রয়েছে তাকরার হাদিস (একই হাদিস বারংবার উল্লেখ) ব্যতিত এক লক্ষ শুধু ছহীহ্ হাদিস পাওয়া দুষ্কর; কিন্তু একপ্রকার মূর্খ-জাহেলদের জন্য পরিতাপের বিষয় হলো যে, তারা বলে বেড়ায় কেবল বুখারী-মুসলিমেই ছহীহ্ হাদিস সীমাবদ্ধ!

২. ইমাম আহমদ: ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (رضي الله عنه) সাড়ে সাত লক্ষ হাদীসের হাফেজ ছিলেন।  ১৪০৪০  ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ১ম খন্ড;

হাদিস বিশেষজ্ঞগণ জানেন যে ইমাম আবূ যারওয়া (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাফেযুদ্দীনিয়ার একজন। এ বিষয়ে ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-

قَالَ ابْنُ أَبِي حَاتِمٍ: قَالَ سَعِيْدُ بنُ عَمْرٍو: يَا أَبَا زُرْعَةَ، أَنتَ أَحْفَظُ، أَمْ أَحْمَدُ؟ قَالَ: بَلْ أَحْمَدُ.

-“ইমাম ইবনে আবি হাতেম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, মুহাদ্দিছ সাঈদ ইবনে আমর (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাফেযুদ দুনিয়া ইমাম আবু যারওয়া (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে লক্ষ্য করে বলেন, হে আবু যারওয়া! আপনি বড় হাফিজুল হাদিস নাকি ইমাম আহমদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বড় হাফিজুল হাদিস? তিনি বললেন, না, বরং ইমাম আহমদই সবচেয়ে বড় হাফিজুল হাদিস।” ১৪১৪১  . যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১১/১৮৭ পৃ.

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম জাওযী লিখেন-

قَالَ أَبُو الْحُسَيْنِ: وَسَأَلْت جَدِّي مُحَمَّدَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ، قُلْت: فَكَمْ كَانَ يَحْفَظُ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ؟ قَالَ: أَخَذَ عَنْ سِتِّمِائَةِ أَلْفٍ.

-“শায়খ আবুল হুসাইন তিনি তার দাদা মুহাম্মদ ইবনে উবায়দুল্লাহ জিজ্ঞেস করলাম যে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কত হাদিস হেফয করেছেন? তিনি ৬ লক্ষ হাদিস থেকে মুসনাদ সংকলন করেছেন।” ১৪২৪২  . ইবনুল কাইয়্যুম, ইলামুল মুয়াককিন, ১/৩৬ পৃ.

উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর নবী (ﷺ)’র অনেক হাদিসই লিপিবদ্ধ হয়নি, যা মুহাদ্দিছগণ মুখস্ত করেছিলেন।

৩. ইমাম মুসলিম: ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-

-وَقَالَ الحُسَيْنُ بنُ مُحَمَّدٍ المَاسَرْجِسِي: سَمِعْتُ أَبِي يَقُوْلُ: سَمِعْتُ مسلماً يَقُوْلُ: صنَّفْتُ هَذَا (المُسْنَد الصَّحِيْح) مِنْ ثَلاَث مائَة أَلْف حَدِيْث مَسْمُوْعَة

“মুহাদ্দিছ হুসাইন বিন মুহাম্মদ মাসারজীসি (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আমি আমার সম্মানিত পিতা থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি ইমাম মুসলিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে বলতে শুনেছি, আমি তিন লক্ষ হাদিস থেকে (বাছাই করে) মুসলিম শরীফ সংকলন করেছি।” ১৪৩৪৩  . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১২/৫৬৫ পৃ. ক্রমিক. ২১৭

উপরের আলোচনা থেকে প্রমাণিত হল যে আল্লাহর নবী (ﷺ)’র অনেক ছহীহ্ হাদিসই ইমাম মুসলিম (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিপিবদ্ধ করেননি, যা তাঁর হিফ্য বা মুখস্ত ছিল।

৪. ইমাম আবু দাউদ: ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-

وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ بنُ دَاسَةَ: سَمِعْتُ أَبَا دَاوُدَ يَقُوْلُ: كَتَبْتُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ -صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ- خَمْسَ مائَةَ أَلْفِ حَدِيْثٍ، انْتَخَبْتُ مِنْهَا مَا ضَمَّنْتُهُ هَذَا الكِتَابَ -يَعْنِي: كِتَابَ (السُّنَنِ)- جمعتُ فِيْهِ أَرْبَعَةَ آلاَفِ حَدِيْثٍ وثمَانِي مائَةِ حَدِيْثٍ، ذَكَرْتُ الصَّحِيْحَ ، وَمَا يُشْبِهُهُ وَيُقَارِبُهُ

-“মুহাদ্দিছ আবু বকর ইবনে দাসাহ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, আমি ইমাম আবু দাউদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি পাঁচ লক্ষ হাদিস থেকে বাছাই করে চার হাজার আটশত হাদিস কিতাবুস-সুনানে সন্নিবেশ করেছি। আমি ছহীহ্, ছহীহ্র সাথে সাদৃশ্যযুক্ত এবং তার কাছাকাছি হাদিস এতে উল্লেখ করেছি।” ১৪৪৪৪  . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১৩/২১০ পৃ. ক্রমিক. ১১৭

উপরের বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হল যে, আল্লাহর নবী (ঐ)’র অনেক হাদিসই ইমাম আবূ দাউদ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎)’র মুখস্ত ছিল, তিনি তা জানা সত্ত্বেও সব হাদিস লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি বিভিন্ন কারণে।

৫. ইমাম আবু যুরআ‘: ইমাম আবু যুরআ’ (رَحْمَةُ الله عليه) সাত লক্ষ হাদীসের হাফেয ছিলেন। এজন্য তিনি হাফেযুদ্দুনীয়ার একজন। ইমাম যাহাবী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন-

وَقَالَ مُحَمَّدُ بنُ بَشَّارٍ: حُفَّاظُ الدُّنْيَا أَرْبَعَةٌ: أَبُو زُرْعَةَ بِالرَّيِّ، وَمُسْلِمٌ بِنَيْسَابُوْرَ، وَعَبْدُ اللهِ بنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بِسَمَرْقَنْدَ، وَمُحَمَّدُ بنُ إِسْمَاعِيْلَ بِبُخَارَى.

-“মুহাদ্দিছ মুহাম্মদ বিন বাশ্শার (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, পৃথিবীর মধ্যে হাফেযুদ্দুনিয়া  ফিল হাদিস চারজন, ক. রায়-এ আবূ যুরআ‘, খ. সমরকন্দে দারিমী, গ. বুখারায় মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল এবং ঘ. নাইশাপুরে মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ।” ১৪৫৪৫ . ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১২/২২৬ পৃ. ক্রমিক. ৭৮

ইসলামের ইতিহাসে অসংখ্য হাফেযে হাদিসের জন্ম হয়েছে। আমরা জানি হাফেজে হাদিস বলা হয় সেই মুহাদ্দিছকে, যিনি ন্যূনতম এক লক্ষ হাদিস সনদ ও মতনসহ হিফ্য করেছেন এবং সেটি আয়ত্তে রেখেছেন। ইমাম যাহাবীর ‘তাযকিরাতুল হুফফায’ নামক কিতাবে হাফেজে হাদিসদের জীবনী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক মুহাদ্দিছ হাফিজুল হাদিসদের জীবনী নিয়ে গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ সমস্ত হাফিজুল হাদিস লক্ষলক্ষ হাদিস মুখস্থ করা সত্ত্বেও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার এবং আল্লাহর নবীর সকল ছহীহ্ হাদিস তাঁরা সংগ্রহ করতে পেরেছেন বলে দাবি করেননি; কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বর্তমান সময়ে কতিপয় লোক বিশুদ্ধভাবে একটি হাদিসও পাঠ করার যোগ্যতা রাখে না, এ সমস্ত ব্যক্তিদের নিকট যখন ছহীহ্ বুখারী মুসলিম ব্যতিত অন্য কোনো কিতাব থেকে কোনো হাদিস তেলাওয়াত করা হয় তখন সে মুজতাহিদ তবকার হাফেজুল হাদিসদের ন্যায় ভাব নিয়ে বলেন, হাদিসটি কি ছহীহ্ বুখারী মুসলিমে আছে! যদি বলা হয়, না, তখন সে বলে দেন এটি ছহীহ্ নয়। অথচ হাদিস ছহীহ্ হওয়ার জন্য হাদিসের সনদ ছহীহ্ হওয়া শর্ত, কোনো কিতাব নয়। আল্লাহ পাক আমাদেরকে এ সমস্ত ফিতনাবাজ লোকদের থেকে হেফাজত করুন, আমিন।

উপরের আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, ছহীহ্ হাদিস নির্ধারিত কতিপয় গ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়, যে লিখকের কিতাবেই হাদিস সংকলিত হোক না কেনো তিনি এবং তার সংকলিত সনদ যদি ছহীহ্ বা নির্ভরযোগ্য হয় তাহলেই সে হাদিসকে ছহীহ্ বলে স্বীকৃতি দিতে হবে, যদি সে নিজেক রাসূল (ﷺ)-এর উম্মত বলে দাবী করে থাকেন। পৃথিবীর সকল মুহাদ্দিছ হাদিস ছহীহ্ হওয়ার জন্য হাদিসের সনদ ছহীহ্ হওয়া শর্তারোপ করেছেন, তাই বলে তারা শুধু মুষ্টিমেয় কতিপয় ছহীহ্ হাদিসের কিতাবকে ছহীহ্ হাদিসের সীমাবদ্ধতা আরোপ করেননি।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment