ইতিপূর্বে জানা গেছে যে, বিদআত দু’রকম- বিদআতে হাসানা ও বিদআতে সাইয়া। এখন স্মরণ রাখতে হবে যে, বিদআতে হাসানা তিন প্রকার- জায়েয, মুস্তাহাব ও ওয়াজিব এবং বিদআতে সাইয়া দু’রকম- মাকরূহ ও হারাম। এ প্রকারভেদের প্রমাণ দেখুন । মিরকাত গ্রন্থ الاعتصام بالكتات والسنة অধ্যায়ে আছে।
বিদআত হয়তো ওয়াজিব, যেমন:- আরবী ব্যাকরণ শিখা এবং ফিকহ শাস্ত্রের মূলনীতিসমূহকে একত্রিত করা; অথবা হারাম, যেমন জবরীয়া সম্প্রদায় বা মুস্তাহাব, যেমন:- মুসাফিরখানা ও মাদরাসা সমূহ তৈরী করা এবং প্রত্যেক ভাল কাজ, যা আগের যুগে ছিল না, যেমন:- জামাআত সহকারে তারাবীর নামায পড়া অথবা মাকরূহ, যেমন :- মসজিদসমূহে গৌরব বোধক কারুকার্জ করা, অথবা জায়েয, যেমন:- ফজরের নামাযের পর মুসাফাহা করা ও ভাল খানাপিনার ব্যাপারে উদারতা দেখানো।
ফতওয়ায়ে শামীর প্রথম খন্ড কিতাবুস সালাতের الامامت অধ্যায়ে উল্লেখিত আছে।
“হারাম বিদআতীর পিছনে নামায পড়া মাকরূহ। অন্যথায় কোন কোন বিদআত ওয়াজিবে পরিণত হয়, যেমন:- প্রমানাদি উত্থাপন, ইলমে নাহু (আরবী ব্যাকরণ) শিখা, কোন কোন সময় মুস্তাহাব, যথা :- মুসাফিরখানা, মাদরাসা এবং সে সব ভাল কাজ, যা আগের যুগে ছিল না, প্রচলন করা, আবার কোন সময় মাকরূহ, যেমন:- মসজিদ সমূহে গৌরববোধক কারুকার্য করা এবং কোন সময় মুবাহ, যেমন:- ভাল খানা-পিনা ও পোশাক পরিচ্ছদের ব্যাপারে উদারতা প্রদর্শন করা। ‘জামেসগীর’ গ্রন্থের ব্যাখ্যায়ও অনুরূপ উল্লেখিত আছে”।
উপরোক্ত ভাষ্য থেকে সুস্পষ্টভাবে পাঁচ প্রকার বিদআতের পরিচয় পাওয়া গেল। সুতরাং, বোঝা গেল যে, প্রত্যেক বিদআত হারাম নয় বরং কতেক বিদআত অত্যাবশ্যকও হয়ে থাকে, যেমন:- ফিকহ, উসূলে ফিকহ, কুরআন কারীমকে একত্রিত করা বা কুরআনে এরাব (যবর, যের, পেশ ইত্যাদি) দেয়া, আধুনিক পদ্ধতিতে কুরআন ছাপানো এবং মাদরাসায় শিক্ষা দেয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি প্রণয়ন। -সুত্রঃ জা’আল হক ২য় খন্ড-