বিদআতের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে নতুন জিনিস। যেমন: কুরআনে কারীমে এরশাদ ফরমান- قُلْ مَاكُنْتُ بِدْعًا مِّنْ الرَّسُلِ (বলে দিন, আমি নতুন রসুল নই) অন্যত্র ইরশাদ করেন- بَدِيع السَّموَاتِ وَالْاَرْضِ (আসমান ও যমীন সমূহের সৃষ্টিকর্তা) আর এক জায়গায় ইরশাদ করা হচ্ছে- – وَرُهبَانِيَّةَ اِبْتَدَعُوْاهَا مَاكَتَبْنَا عَلَيْهِمْ “সন্নাসবাদ তারা নিজেরাই প্রবর্তন করেছিল, আমি তাদেরকে এর হুকুম দেইনি”)
উপরোক্ত আয়াত সমূহে ‘বিদআত’ শব্দকে শাব্দিক অর্থে -অর্থ্যাৎ নতুন কিছু তৈরী করা ইত্যাদি অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যাগন্থে মিরকাতে الاعتصام بالكتاب والسنة শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লেখিত আছে –
قَالَ النُّوَوِىُّ اَلْبِدْعَةُ كُلُّ شَيْئٍ عَمِلَ عَلى غَيْرِ مِثَالٍ سَبَقَ
বিদআত সে কাজকে বলা হয়, যা বিগত কোন কিছুর অনুকরণ ছাড়া করা হয়। বিদআত তিন অর্থে ব্যবহার হয়। (১) নতুন কাজ, যা হুযুর পাক (স:) এর পরে সূচিত হয়েছে: (২) সুন্নাতের বিপরীত কাজ, যা সুন্নাতকে বিলুপ্ত করে এবং (৩) সে সব বদআকিদা, যা পরবর্তীকালে সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম অর্থে ব্যবহৃত বিদআত মাত্রই সাইয়া (মন্দ)। যে সব বুযুর্গানে কিরাম প্রত্যেক বিদআতকে সাইয়্যা (মন্দ) বলেছেন, তারা তা দ্বিতীয় অর্থের বেলায় বলেছেন এবং হাদীসের মধ্যে যে আছে- প্রত্যেক বিদআদ গুমরাহী, তা দিয়ে তৃতীয় অর্থের বিদআত বোঝানো হয়েছে। সুতরাং, হাদীস সমূহ ও উলামায়ে কিরামের উক্তি সমূহের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।
শরীয়তের পরিভাষায় বিদআত বলতে সে সব আকীদা ও আমলকে বলা হয়, যা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাহেরী জিন্দেগীকালে ছিল না। পরে প্রচলন হয়েছে। এ সংজ্ঞা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিদআতে শারেয়ী দু’রকম বিদআতে ইতিকাদী ও বিদআতে আমলী। বিদআতে ইতিকাদ সে সব মন্দ আকীদাকে বলা হয়, যা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে ইসলাম ধর্মে সূচিত হয়েছে। ঈসায়ী, ইহুদী, মজুসী এবং মুশরিকদের আকীদা সমূহ বিদআতে ইতিকাদী নয়। কেননা এরা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জিন্দেগীতে বিদ্যমান ছিল। অধিকন্তু সেসব আকীদাকে ঈসায়ী ও অন্যান্যগণ ইসলামী আকাইদ বলে না। জবরীয়া, কদরিয়া, মরজিয়া, ছকড়ালবী, লা-মাযহাবী ও দেওবন্দীদের আকীদা হচ্ছে বিদআতে ইতিকাদী । কেননা এসব ফিরকা পরে আবির্ভূত হয়েছে এবং এরা তাদের আকীদাকে ইসলামী আকীদা মনে করে থাকে। যেমন:- দেওবন্দীরা বলে, আল্লাহ মিথ্যে বলার ক্ষমতা রাখেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানে না। নামাযে হুযুরের স্বরণ গরু গাধার স্বরণ থেকে খারাপ। এসব নাপাক আকীদা ১২০০ হিজরীর আবিস্কার। আমি এ কিতাবের শুরুতে ফতওয়ায়ে শামীর উদ্ধৃতি দিয়ে এর প্রমান দিয়েছি।
এখন বিদআতে হাসানার প্রমান নিন আল্লাহ তায়ালা ফরমান
وَجَعَلْنَا فِىْ قُلُوْبِ الَّذِيْنَ اتَّبَعُوْاهُ رَافَةً وَّرَحْمَةً وَّرَهْبَانِيَّةٍ اِبْتَدَعُوْاهَا مَا كَتَبْنَا هَاعَلَيْهِمُ اِلّابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللهِ
“আমি তাদের আত্মায়, যারা তাঁর অনুসরণ করেছেন, আরাম ও রহমত দান করেছি সন্ন্যাসবাদ তারাই প্রবর্তন করেছিল; আমি তাদেরকে এর হুকুম দিইনি। আল্লাহর রেজামন্দির উদ্দেশ্যে এর সূচনা করেছিল” পুনরায় ইরশাদ করেন- فَاَتْيَنَا الَّذِيْنَ امَنُوْا مِنْهُمْ اَجْرَهُمْ “তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে, আমি ওদেরকে পুরস্কার দিয়েছি”
এ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, ঈসায়ীগণ বিদআতে হাসানাহ অর্থাৎ সংসার ত্যাগী হওয়াটা আবিস্কার করলো, আল্লাহ তায়ালা এর প্রশংসা করলেন এবং এর জন্য পুরস্কারও দিলেন। তবে হ্যাঁ, যারা একে চালু রাখতে পারেনি, তাদের নিন্দা করা হয়েছে। বলা হয়েছে- فَمَارَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا “এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি”। লক্ষ্য করুন এখানে বিদআতের জন্য নিন্দা করা হয়নি বরং এটা চালু না রাখায় নিন্দা করা হয়েছে। তাই প্রমানিত হলো যে, বিদআতে হাসানা ভাল ও ছাওয়াবের কাজ। কিন্তু যথাযথ পালন না করা পাপ। خَيْرُ الْاُمُوْرِ اَدوْمُهَا “ সবচেয়ে ভাল কাজ হচ্ছে ওটার উপর অটল থাকা”। সুতরাং মুসলমানগণ যেন যথাযথভাবে মীলাদ মাহফিল ইত্যাদি উদযাপন করেন। মিশকাত শরীফের الاعتصام অধ্যায়ের প্রথম হাদীসে আছে।
مَنْ اَحْدَثَ فِىْ اَمْرِنَا هذَا مَالَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَد
(যে ব্যক্তি আমার এ ধর্মে ওই ধরনের আকীদার প্রচলন করে, যা ধর্মের বিপরীত, সে অভিশপ্ত।) আমি উপরোক্ত হাদীসে শব্দের অর্থ আকীদা এজন্য করেছিল যে ধর্ম হচ্ছে আকীদার অপর নাম। গৌণ আমল সমূহের ক্ষেত্রে, যেমন:- বেনামাযী গুনাহগার বটে, কিন্তু বেদীন বা কাফির নয়, অথচ মন্দ আকীদা পোষণকারী হয়তো গোমরা, না হয় কাফির। এ প্রসংগে ‘মিরকাত’ গ্রন্থে বর্ণিত আছে।
وَالْمَعْنى اَنَّ مَنْ اَحْدَثَ فِى الْاِسْلَامِ رَايًا فَهُوَ مَرْدُوْد عَلَيْهِ اَقُوْلُ فِىْ وَصْفِ هَذَا الْاَمْرِ اِشَارَة اِلى اَنَّ اَمْرَ الْاِسْلَامِ كَمَلَ
( যে কেউ ইসলামে এ ধরণের আকীদা প্রচলন করে, যা ধর্মের পরিপন্থী সে মরদুদ। আমি বলতে চাই যে هذالامر দ্বারা ওদিকে ইংগিত করা হয়েছে যে ইসলামের ব্যাপারটা পরিপূর্ণ হয়েছে।
প্রমাণিত হলো বিদআত আকীদাকে বলা হয়েছে। মিশকাত الايمان بالقدرঅধ্যায়ে উল্লেখিত আছে হযরত ইবনে উমর (রা:) কে কেউ বললেন অমুক ব্যক্তি আপনাকে সালাম দিয়েছেন। তখন তিনি বললেন-
بَلَغَنِىْ اَنَّهُ قَدْ اَحْدَثَ فَاِنْ كَانَ اَحْدَثَ فَلَا تُقْرِئَه مِنِّى السَّلَامَ
(আমি জানতে পারলাম যে, সে বিদআতী হয়ে গেছে। তা যদি হয়, তাকে আমার সালাম বলবেন না।) জিজ্ঞাসা করা হলো বিদআতী কিভাবে হতে পারে? ফরমালেন
يَقُوْلُ يَكُوْنُ فِىْ اُمَّتِىْ خَسْفٌ وَمَسْخٌ اَوْقَذْفٌ فِىْ اَهْلِ الْقَدْرِ
(হুযুর আলাইহিসসালাম ইরশাদ ফরমাতেন যে, আমার উম্মতের মধ্যে কদরীয়া সম্প্রদায়ের বেলায় ভূমি ধ্বসে যাবে, চেহারা বিকৃত হবে, অথবা পাথর বর্ষিত হবে।)
প্রতিভাত হলো যে, কদরীয়া ফিরকাকে অর্থাৎ যারা তকদীরকে অস্বীকার করতো তাদেরকে বিদআতী বলা হয়েছে। দুররুল মুখতারের কিতাবুল সালাত الامت শীর্ষক অধ্যায়ে বর্নিত আছে।
وَمَبْتَدَعٍ اَىْ صَاحِبِ بِدْعَةٍ وَهِىْ اِعْتِقَادُ خِلَافِ الْمَعْرُوْفِ عَنِ الرَّسُوْلِ
(বিদআতী ইমামের পিছনে নামায পড়া মাকরূহ। বিদআত হচ্ছে সেই আকীদার বিপরীত আকীদা পোষন করা যা হুজুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম থেকে প্রসিদ্ধ লাভ করেছেন।
উপরোক্ত ভাষ্য থেকে বোঝা গেল, বিদআত নতুন ও মন্দ আকীদাকে বলা হয়। হাদীস সমূহে বিদআত ও বিদআতী সম্পর্কে যে কঠিন হুমকি দেয়া হেয়েছে, এর দ্বারা আকীদাগত বিদআতকে বোঝানো হয়েছে। হাদীস শরীফে আছে যে, বিদআতীর (আকীদাগত) সম্মান করলো সে যেন ইসলামকে ধবংশ করার ব্যাপারে সাহায্য করলো। ফাতওয়ায়ে রশীদিয়া প্রথম খন্ড কিতাবুল বিদআতের ৯০ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আছে- যে, বিদআতের ব্যপারে কঠিন হুমকি দেয়া হয়েছে, তা হচ্ছে আকীদাগত বিদআত যেমন :- রাপেজী ও খারেজীদের বিদআত।
আমলী বিদআত সেসব কার্যবলীকে বলা হয়, যা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র যুগের পরে, দুনিয়াবী বা ধর্মীয় হোক সাহাবায়ে কিরামের যুগে বা এর পরে আবিস্কৃত হয়েছে। ‘মিরকাত’ الاعتصام অধ্যায়ে উল্লেখিত আছে।
وَفِى الشَّرْعِ اِحْدَاثُ مَالَمْ يَكُنْ فِىْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
বিদআত হচ্ছে শরীয়তে ওই ধরনের কাজের সূচনা করা, যা হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের যুগে ছিল না। আশআতুল লুমআতে সেই একই অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-
“যে কাজ হুযুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের পরে সূচিত হয়েছে, তা বিদআত”
উপরোক্ত ইবারতদ্বয়ে দীনের কাজের শর্তও নেই আর সাহাবায়ে কিরামের যুগের কথাও উল্লেখ নেই, যে কোন কাজ দুনিয়াবী হোক বা ধর্মীয়, যা হুজুর আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামের পরে যে কোন সময়ে সাহাবায়ে কিরামের যুগে বা এর পরে চালু হয়েছে, তা বিদআত হিসেবে গণ্য। তবে প্রচলিত ভাষায় সাহাবায়ে কিরামের আবিষ্কারকে সুন্নাতে সাহাবা বলা হয় বিদআত বলা হয় না। এটা প্রচলন মাত্র, না হয় হযরত ফারুকে আযম (রা:) তারাবীর নামাযে নিয়মিত জামআতের প্রবর্তন করে বলতেন না- نِعْمَةُ الْبِدْ عَةُ هذِه “এতো খুবই উত্তম বিদআত”
আমলী বিদআত দু প্রকার, বিদআতে হাসানাহ ও বিদআতে সাইয়া। বিদআতে হাসান ওই ধরণের নয়া কাজকে বলা হয়, যা কোন সুন্নাতের বিপরীত নয়। যেমন:- মীলাদ মাহফীল, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ, নিত্য নতুন উন্নতমানের খানাপিনা, ছাপাখানায় কুরআন শরীফ ও ধর্মীয় কিতাব ছাপানো ইত্যাদি এবং বিদআতে সাইয়া ওইসব কাজকে বলা হয়, যা কোন সুন্নাতের বিপরীত বা কোন সুন্নাতকে বিলুপ্তকারী হিসেবে প্রতিভাত হয়। যেমন:- জুমআ ও উভয় ঈদে আরবী বাদ দিয়ে অন্য ভাষায় খুৎবা পাঠ করা বা মাইকের সাহায্যে নামায পড়া বা পড়ানো। কেননা এর ফলে আরবী ভাষায় খুৎবা পাঠ করা এবং তাকবীর দেয়া অর্থাৎ তকবীরের সাহায্যে আওয়াজ পৌছানো যে সুন্নত, তা লুপ্ত হয়ে যায়। বিদআতে হাসানা জায়েয বরং কোন সময় মুস্তাহাব ও ওয়াজিবে পরিণত হয়। আর বিদআতে সাইয়া হচ্ছে মাকরূহ তানযিহী বা মাকরূহ তাহরিমী অথবা হারাম। এ প্রকারভেদকে আমি সামনে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করবো।
বিদআতে হাসানা ও বিদআতে সাইয়ার প্রমাণ শুনুন- আশআতুল লুমআত গ্রন্থের প্রথম খন্ডে الاعتصام হাদীছটি وكل بدعة ضلالة প্রসংগে উল্লেখিত আছে।
যে বিদআত ধর্মের মূলনীতি, নিয়ম কানুন ও সুন্নাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এর সাথে কিয়াস করা হয়েছে, একে বিদআতে হাসানা বলা হয়। আর যা বিপরীত, সেটাকে বিদআতে গুমরাহী বলা হয়।
মিশকাত শরীফের العلم অধ্যায়ে বর্ণিত আছে।
( যে কেউ ইসলামের মধ্যে ভাল রীতি প্রচলন করেন, তিনি এর জন্য ছাওয়াব পাবেন; যারা এর উপর আমল করবেন, এর জন্যও ছাওয়াব পাবেন, তবে তাঁদের ছাওয়াবের মধ্যে কোন কমতি হবে না; এবং যারা ইসলামে মন্দরীতি প্রচলন করে, এর জন্য তাদের পাপ হবে এবং যারা এর উপর আমল করবে, তার জন্যও পাপের ভাগী হবে, তবে ওদের পাপের বেলায় কোন কমতি হবে না।) সুতরাং বোঝা গেল যে, ইসলামে কোন ভাল কাজের প্রচলন করাটা হচ্ছে ছাওয়াবের কাজ আর মন্দ কাজের সূচনা করাটা হচ্ছে পাপের ভাগী হওয়া।
ফাতওয়ায়ে শামীর ভুমিকায় ইমাম আবু হানীফা (রহ:) এর ফযীলত বর্ণনা প্রসংগে উল্লেখিত আছে।
উলামায়ে কিরাম বলেন- এসব হাদীস সমূহ ইসলামের কানুন হিসেবে প্রযোজ্য- যে কেউ ইসলামে কোন মন্দ কাজের সূচনা করলে সে এর উপর সমস্ত আমলকারীদের গুনাহের ভাগী হবে; আর যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজের প্রচলন করেন, তিনি কিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত আমলকারীদের ছওয়াবের ভাগী হবেন।
এর থেকেও প্রমাণিত হলো ভাল বিদআতে ছওয়াব আছে ও মন্দ বিদআতে গুনাহ হয়।
যেটা সুন্নাতের বিপরীত, সেটা হচ্ছে মন্দ বিদআত । এর প্রমাণও প্রত্যক্ষ করুন: মিশকাত শরীফের الاعتصام অধ্যায়ে উল্লেখ আছে-
مَنْ اَحْدَثَ فِىْ اَمْرِنَا هذَا مَاليَسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
“যে ব্যক্তি আমার ধর্মে নতুন এমন কোন কিছু প্রচলন করলো, যা ধর্মের মধ্যে নেই, তাহলে সে মরদুদ হিসেবে গণ্য” ‘ধর্মের মধ্যে নেই’ এর ভাবার্থ হলো ধর্মের বিপরীত। যেমন আশআতুল লুমআতে এ হাদীছের ব্যাখ্যা প্রসংগে বর্ণিত আছে- এর দ্বারা এটাই বোঝানো হয়েছে যা ধর্মের বিপরীত বা ধর্ম পরিবর্তনকারী।
মিশকাত শরীফের সেই একই অধ্যায়ে الاعتصام এর তৃতীয় পরিচ্ছেদে উল্লেখিত আছে।
مَااَحْدَثَ قَوْمٌ بِدْعَةً اِلَّا رُفِعَ مِثْلُهَا مِنْ السُّنَّةِ فَتَمَسُّكٌ بِسُنَّةٍ
“ যে কোন কওম যে পরিমাণ বিদআতের সূচনা করে, সে পরিমান সুন্নাত বিলুপ্ত হয়ে যায়। সুতরাং সুন্নাতকে গ্রহণ করা বিদআতের প্রচলন করা থেকে উত্তম।
এর ব্যাখ্যা প্রসংগে ‘আশআতুল লুমআতে’ উল্লেখিত আছে।
“যেহেতু বিদআতের সূচনা করাটা হচ্ছে সুন্নাত বিলুপ্তির সহায়ক, সেহেতু সুন্নাতের উপর অটল থাকাটা হবে বিদআত প্রতিরোধের সহায়ক।
এ হাদীছ ও এর ব্যাখ্যা থেকে এটা বোঝা গেল যে, বিদআতে সাইয়া অর্থাৎ মন্দ বিদআত হচ্ছে, যার দ্বারা সুন্নাতের বিলুপ্তি ঘটে। ইতিপূর্বে এর উদাহরণসমূহ দেয়া হয়েছে। বিদআতে হাসানা ও বিদআতে সাইয়ার পার্থক্য ভালভাবে স্বরণ রাখা দরকার । কেননা এ ক্ষেত্রে প্রায়শই ধোকা দেয়া হয়। -সূত্রঃ জা’আল হক ২য় খন্ড-