আস্সালামু আলাইকুম ।
সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য এবং দুরুদ ও সালাম ঐ মহান রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি।যার উসিলায় আমার এই তৌফিক।
গত কয়েক দিন আগে আমার এক ছোট ভাই Neaz Ahmead আমাকে আব্দুর রাজ্জাক সাহেবের একটি ভিডিওতে ম্যনসন করে। ভিডিওটি দেখতে নিচের পেজ লিংকে যান। ভিডিওটি দেখলে যে কেউ ক্রাস খাবে। কিন্তু আমি খাইনি কারন আমি জানি এদের পুঁজি হলো চাপাবাজি। তো চলেন রাজ্জাক সাহেবের ভিডিওর প্রথম থেকে অপারেশন শুরু করি।
পয়েন্ট ১: উনি বলেন, সব সময় এক জনের কথা মাথায় রাখবেন তিনি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) ।আমি আপনাকে মাযহাবী হতে নিষেধ করিনি। আপনি হানাফি হন, মালিকি হন। কিন্তু, বিচারের দিন আপনি যখন বলবেন আমার ইমাম আবু হানিফা (রহ) তখন যদি তিনি বলেন না না না আমি কাউকে আমাকে ফলো করতে বলিনি।????
উত্তর: আচ্ছা উনি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর আনীত দ্বীন এবং চার ইমামের তাজদীদকে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম বলার চেষ্টা করছে নাতো?
যদি এমন হয় তবে ঐ ব্যক্তির প্রতি লানত যে এমন মূর্খকেও স্টেজে উঠতে দেয়। কারন, এই চার ইমাম ইসলামের এক একজন গবেষক। আর সকল উম্মত এই চার ইমামের গবেষণার উপর নিজের আমল করাকে নির্ধারিত করে নিয়েছেন। কারন, উনাদের মত গবেষক আর হয়নি এবং আর হবেও না।
দেখুন, আমি যখন কোরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ বুঝার যোগ্যতা রাখি না। কোন মাসআলার দরকার হলে আলেমদের কাছে যেতে হয়। যখন আমাকে তো কাউকে না কাউকে মানতেই হবে। তখন আমি যুগের শ্রেষ্ঠ ইমামকেই মানি নাকি।
এখন প্রশ্ন হল আমি একজনকেই মানতে হবে চার জনকে একসাথে কেন নয়?
এর উত্তর হল চার জনের মধ্যে মাসআলা গত মতবিরোধ আছে তাই সবাইকে এক সাথে ফলো করতে পারি না। কিন্তু তাদের মধ্যে আকিদা গত কোন মত বিরোধ নেই। আর উনাদেরকে আমরা শুধু মাসআলার বিষয়ে ফলো করি আকিদার বিষয়ে নয়।
এখন কেউ আবার প্রশ্ন করবে যদি চার জনেই হক্ব এবং ইসলামের গবেষক হয় তাদের মধ্যে মতবিরোধ কেন? প্রশ্নটা অতি চমৎকার।
দেখুন উত্তরটাও অতি চমৎকার : আসলে মতবিরোধ সাহাবা-ই-কিরামদের মধ্যেও ছিল তারপর তাবেয়ীন তারপর তাবে-তাবেয়ীন তারপর ইমাম। আর এই মতবিরোধ ছিল আল্লাহর রহমত।
একটি হাদীস দেখুন
أخرج الخطيب في الفقيه والمتفقه(1/ 443) والبيهقي في المدخل(1/ 162) ونظام الملك في المجلسين من أماليه(1/ 52) وابن قدامة في المنتخب من علل الخلال(1/ 143) من طريق نعيم بن حماد، حدثنا عبد الرحيم بن زيد العمِّي، عن أبيه، عن سعيد بن المسيب، عن عمر رضي الله عنه قال: قال رسول الله ﷺ:
«سألت ربي عز وجل فيما يختلف فيه أصحابي من بعدي، فأوحى إلي: يا محمد، إن أصحابك عندي بمنزلة النجوم في السماء، بعضها أضوء من بعض، فمن أخذ بشيء مما هم عليه من اختلافهم فهو عندي على هدى».
তরজুমা: রাসুল(দ) বলেন, আমি আমার ইন্তেকাল এর পরে আমার সাহাবাদের মতবিরোধ এর ব্যাপারে আল্লাহ কে প্রশ্ন করি। তখন আল্লাহ ওহী করেন, হে মুহাম্মদ (দ) নিশ্চয়ই আপনার সাহাবি আকাশের তারকার মত। তাদের একজন অন্য জনের উপর মর্যাদাশীল। তবে, কোন বিষয়ে মতবিরোধে সবাই আমার কাছে হক।
ইমাম বায়হাক্কীর আল মাদখাল এবং অন্যান্য কিতাবে আছে।
এখন কেউ বলে উঠবে এই দযীফ(দুর্বল) অথবা ম্ওদু(মিথ্যা)! আমি বলি, মিথ্যা তো কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না। আর এই হাদীস ভিন্ন ভিন্ন শব্দে অনেকগুলো আছে। সবগুলো দুর্বল ধরে নিলেও উসূলে হাদীসে এই হাদীস কমপক্ষে হাসান। এরপরও কেউ এই হাদীসের ব্যাপারে বসতে চাইলে আমরা প্রস্তুত। আপনারা বুঝছেন বলে আমি আশাবাদী।
কিন্তু রাজ্জাক সাহেব যদি বলেন, না আমিতো এই চারটিকে অন্য ধর্ম হিসেবে বুঝাইনি। তাহলে উনার ঐ বক্তব্য অনর্থক হবে। যে, ইমাম আবু হানিফা বলবেন না না না….. কারন একজন মূর্খ লোক জ্ঞানীর কাছে আসবেই। আচ্ছা একজন সাধারণ আহলে হদস কোন মাসআলার জন্য কোথায় যায়? আহলে হদস আলেমের কাছেইতো যাবে নাকি । তখন কি ওই আলেম মাসআলা বলবে? নাকি তাকে বলবে শিরক করছো কেনো কোরআন হাদীস থেকে বের করে নাও। বস্তুত :এমন প্রশ্ন তোলা মূর্খতা ছাড়া কিছুই নয়।
বরং আল্লাহ পাক কোরআন শরীফে উলীল আমর বা নির্দেশ দাতার অনুসরণ করার জন্য তাকিদ দিয়েছেন। এখানে নির্দেশ দাতা শুধু নেয় পরায়ন বাদশাহ নয় কারন, বাদশাহ্ও মাসআলার জন্য আলেমের শরণাপন্ন হয়।
প্রশ্ন : রাজ্জাক সাহেব উলীল আমর এর বিরোধিতা করছেন না তো ?
যদি তাই হয় তাহলে আহলে হাদীছ ভাইদের ব্যপারে আমার বড় চিন্তা! কারন, বিচারের দিন যখন আপনি বলবেন রাজ্জাক সাহেবের ভিডিও দেখে সকল ইমাম ও ইমামদের তাফসীর কে বাদ দিয়ে নিজেই ইউটিউব তরজুমার উপর তাফসীর খুলে বসেছি। এবং সেই অনুযায়ী আমল করেছি। তখন যদি রাজ্জাক সাহেব বলেন না না না না না আমি তো কাউকে আমার ভিডিও দেখতে বলিনি! তখন কি হবে?
আহলে হাদীছের সকল আলেম, না আলেম নয় সকল লোক আলবানীর তাখরিজ দিয়ে দলীল দেয়। তখন আলবানী যদি বলে আমিতো কাউকে বলিনি আমার তাখরিজ ফলো কর! তখন কি হবে?
আসলে তাদের শরম করা উচিত কারণ, তাদের জন্য সব ঠিকঠাক আছে। আর একি কাজ আমরা করলেই ফতোয়াবাজি।