পশ্চিমা মুসলিম তারুণ্যের সবচে বড় ফাঁদ
– গোলাম দস্তগীর লিসানি
আগের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছিলাম, পশ্চিমা মুসলিম তারুণ্য পুরোপুরি ওরিয়েন্টালিস্ট নয়। বরং তারা অন্য কিছু দিয়ে বেশি প্রভাবিত। সেই অন্যকিছুটা হল বেসিক ইন্সটিংকট।
‘নারীবাদ’ তাদের কাছে কখনোই ‘নারীর সাম্য, নারীমুক্তি’ হিসাবে আসে না। বরং তা আসে অন্য কিছু হিসাবে। কী হিসাবে?
যত যা-ই আমরা বলি না কেন, ঘুম যেমন একটা বেসিক নিড, পানি যেমন একটা বেসিক নিড, খাদ্য যেমন একটা বেসিক নিড- ঠিক তেমনি শারীরিকতার সংস্পর্শ বা এট লিস্ট, কোনক্রমে প্রয়োজন মেটানো একটা বেসিক নিড।
পশ্চিমা সমাজের মূল ভিত্তি হল, বিরাট সাফল্য পেয়ে বিয়েশাদি করো। আপাতত যে যার বেসিক নিড পরস্পরের সাথে মিটিয়ে যেতে থাকো। ইটস ওকে।
আমরা মুসলিমরা পড়েছি মহা ফাঁপড়ে। পশ্চিমা সমাজের এই নীতির প্রথম লাইনটা আমরা নিয়েছি, মহাসাফল্য পেয়ে বুড়া হয়ে বিয়ে করো। কিন্তু দ্বিতীয় লাইনটা গ্রহণ করিনি। এখন বুড়া হয়ে বিয়ে করার আগ পর্যন্ত পশ্চিমা সমাজের ছেলেমেয়েগুলো চোখের সামনে বেসিক নিড ফ্রি পেয়েও কতদিন সামলে চলবে?
এখন, ইউরোপ আমেরিকার মুসলিম তরুণ-তরুণীর যখন বেসিক নিডে টান পড়ে, এবং সেটা ফ্রিলি অ্যাভেইলেবল, একেবারে হাতের কাছে থাকার পরও- তাদের কাছে বেসিক নিডের দ্বান্দ্বিকতা তৈরি হয়।
আপনি যখন দুইদিন পানি না খাওয়া অবস্থায় আছেন, তখন সামনে ফ্রিতে কোন দায়বদ্ধতা ছাড়াই পুরো পান করে নেয়ার জন্য পানি থাকলে আপনার যে হাল হবে- সে হাল।
এটা হচ্ছে জৈবিকতা বনাম নিয়মের দ্বন্দ্ব। জৈবিকতা বা হাইওয়ানিয়াত যখন উঠে আসে, এবং সেটার জন্য কোন নিষেধ না থাকে, কোন দোষারোপ না থাকে, সেটা নিতে কেউ মানাও না করে, এবং সেটা নিতে কোন লুটপাটও করতে না হয়, কোন চুরিও করতে না হয়- তখন কী হবে?
তখন ওই টিনএজার ছেলেমেয়েগুলো তো ডাইরেক্ট নিজেকে জেনাকারী ভোগবাদী হিসাবে পরিচয় দিতে পারে না। তাকে একটা মহান পরিচয়ের পর্দার আড়াল নিতে হবে। আর সেই মহান পরিচয়ের পর্দাটা হল ফ্রিডম। আরো মহত্ত্বর পরিচয়ের পর্দাটা হল ফেমিনিজম।
ফেমিনিজম প্রমোট না করলে তো বিবাহিতা-অবিবাহিতা-বিবাহিত-অবিবাহিত মুসলিমরা নিজেরা সংক্ষিপ্ত সময়ে প্রয়োজন মেটাতে রাজি হবে না।
আহা, কী মিষ্টি কথা। নারীমুক্তি। এটা তো একটা যুতসই অ্যাক্টিভিটি হলো। এটা তো একটা মহত কাজ হলো। জংলি মুসলিম-আরবরা এসব বোঝে নাকি! কোন্ চোদ্দশ বছর আগে কুরআন এসেছে, এসেছে ভাল কথা। মানলাম। তাই বলে সব নিয়ম মানতে হবে নাকি! না মানলে কী হয়! এই ইসলাম চেঞ্জ করা দরকার। মুসলমানরা এম্নিতেও কোন ভাল জাতি না। কী যে বিশ্রি! 🙂
বিষয়টাকে আমরা আবার রিক্যাপ করি:
১. শারীরিকতা একটা মৌলিক চাহিদা।
২. পশ্চিমা বিশ্বে বিনামূল্যে এই চাহিদা পূরণের সুযোগ সর্বত্র।
৩. সবাই পূরণ করছে, এই অবস্থায় বিশেষত অবিবাহিত মুসলিমদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়।
৪. তাদের শরীর যা চায়, তাদের পরিবেশ বিনামূল্যে তা দিতে রাজি আছে, বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো কেবল কুরআন ও সুন্নাহ্।
৫. আচ্ছা! এটাতো আমার বেসিক নিড, আয় দেখি, কুরআন সুন্নাহ্ কী বলে!
৬. ও আচ্ছা, কুরআন সুন্নাহ্ একটা আদর্শ। সুতরাং আমাকে আদর্শের বদলে আরেকটা উদ্দীপক মতাদর্শ গ্রহণ করতে হবে।
৭. ওয়াও! ইউরেকা! ফেমিনিজম! ফ্রিডম অভ চয়েস।