ফয়সালায়ে হাফ্তে মাসআলাঃ (فيصله هفت مسئله)

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মূলঃ হযরত হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী (রহঃ)

১ . মওলুদ শরীফ (মিলাদ শরীফ)

এ ব্যাপারে কারাে দ্বিমত নেই যে হজরত ফখরে আদম সরওয়ারে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের বিলাদত শরীফের বর্ণনা দুনিয়া – আখিরাতের জন্য কল্যাণকর ও বরকতময়। বিতর্কটা হলাে বিলাদত শরীফের জন্য তারিখ নির্ধারণ বা এর পদ্ধতি নির্ধারণ তথা এর জন্য বিভিন্ন শর্তারােপ করা নিয়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয় হলাে কিয়াম (নবি আলাইহিস সালাম) এর প্রতি সালাম নিবেদন করার কালে (দাঁড়ানাে)। কতেক ওলামা এসব কিছুকে নিষেধ করেন। তাদের দলিল হলাে- كُلّ بدعة ضلالة (প্রত্যেক বিদআত বিপদগামী)। তবে অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম এসব বিষয়কে বৈধ মনে করেন। তাঁদের অভিমত হচ্ছে – যে কোন অবস্থায় হুজুর রসূলুল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের জিকরে ফজিলত রয়েছে। বস্তুত বিদআত হলাে অর্ধর্মকে ধর্মের অন্তর্ভুক্ত করা। যেমন হুযুর আকরম সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ

( من أحدث في أمرنا هذا ما ليس منه فَهُوَ رَد )

“যে আমার ধর্মে নতুন কোন কিছু প্রবর্তন করলাে , যা ধর্মের অন্তর্ভুক্ত নয়, তা বর্জনীয়।” সুতরাং যদি কেউ মিলাদ শরীফে ওই ধরনের তারিখ নির্ধারণ, কিয়াম ইত্যাদিকে ঐচ্ছিক মনে করে এবং এগুলােকে ইবাদত মনে করে না, তবে বিশেষ অভিপ্রায়ে এ সব পালন করে; তবে যাকে উদ্দেশ্য করে এসব করা হচ্ছে অর্থাৎ হুযুর সরওয়ারে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াল্লামের জিকরের সম্মানকে নিশ্চয়ই ইবাদত মনে করে, তবে এটা বিদআত হবে না। উদাহরণ স্বরূপ যদি কেউ স্বয়ং কিয়ামকে ইবাদত মনে করে না। কিয়ামের মাধ্যমে হুযুর আলাইহিস সালামের প্রতি তাজিম প্রদর্শনই ইবাদত মনে করে; কিন্তু বিশেষ কোন অভিপ্রায়ে এ তাযীমের একটি বিশেষ পদ্ধতি নির্ধারণ করে , তবে এতে কোন ক্ষতি নেই। বা যে কোন সময় রসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের জিকরের তাজিমকে একটি উত্তম কাজ মনে করে। কিন্তু কোন বিশেষ কারণে জিকরে বিলাদতের সময়কে কিয়ামের জন্য নির্ধারণ করে , বা যে কোন সময় বিলাদতের বর্ণনাকে ভাল মনে করে। তবে কোন একটি সময় নির্দিষ্ট থাকাতে আসান মনে করে বা অন্য কোন অভিপ্রায়ে ১২ই রবিউল আওয়ালকে নির্ধারিত করে, এতে কোন ক্ষতি নেই। অভিপ্রায়ের বর্ণনা অনেক ব্যাপক এবং বিভিন্ন অবস্থায় অভিপ্রায়ও আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। যদি কেউ এ সব অভিপ্রায় সম্পর্কে অবহিত নন, তার জন্য আগের যুগ সম্বন্ধে জানাশােনা যে কোন ব্যক্তির অনুসরণ করাই যথেষ্ট।

নির্দিষ্ট রূহানী আশগাল, মুরাকবাত, মাদ্রাসা ও খানকাহ তৈরিও ওই প্রকারের অভিপ্রায়েরই ফল। তবে হ্যা, ওই সব নির্দিষ্ট বিষয়কে নামায রােযা ইত্যাদির ন্যায় যদি কেউ ইবাদত মনে করে , তাহলে নিশ্চয়ই বিদআত হবে । যেমন কারাে আকীদা হচ্ছে নির্দিষ্ট তারিখে মিলাদ শরীফ পড়া না হলে, বা এতে কিয়াম কিংবা খুশবুবা শিরনী বিতরণের ব্যবস্থা না করলে কোন সওয়াব হবে না। এ ধরনের আকিদা অবশ্যই ভ্রান্ত। কেননা এতে শরীয়তের সীমা লঘন প্রকাশ পায়। অনুরূপ মুবাহ বিষয়কে হারাম ও গুমরাহী মনে করাটাও ভুল। তবে মুবাহ বিষয়সমূহকে ওয়াজিব মনে করাটাও ভুল। কারণ উভয় ক্ষেত্রেই শরীয়তের সীমালঙ্নই প্রকাশ পায়। অবশ্য যদি এসব মুবাহ বিষয়কে শরীয়তের দৃষ্টিতে ওয়াজিব মনে করে না। তবে কতেক বরকতের জন্য জরুরী মনে করে , যেমন কতেক আমলের ক্ষেত্রে বিশেষ শর্তাবলি জুড়ে দেয়া হয় , যে গুলাের অনুসরণ না করলে বিশেষ তাছির সৃষ্টি হয় না, তবে এগুলােকে বিদআত আখ্যা দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা থাকতে পারে না । যেমন- কতেক, ওজিফা, দাঁড়িয়ে পাঠ করা হয়। যদি বসে পড়া হয়, তাহলে এতে যে বিশেষ তাছির রয়েছে, তা সৃষ্টি হয় না। তাই বিশেষ তাছির সৃষ্টি করার জন্যই সেই ওজিফা দাড়িয়ে পাঠ করাকে জরুরী মনে করে । আমল উদ্ভাবনকারীর কাশফ বা ইলহামই এর প্রমাণ। অনুরূপ যদি কোন ব্যক্তি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বা কোন নেক বান্দার আমল হতে মীলাদ শরীফের বিশেষ পদ্ধতিকে বরকতময় মনে করে এবং একইভাবে কিয়ামকে জরুরী মনে করে, তাহলে বিদআত হতে পারে না। বিশ্বাস হলাে একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। বিনা জিজ্ঞাসায় এর ধরণ বুঝা যায় না। বাহ্যিক কিছু আলামত দেখে কারাে প্রতি খারাপ ধারণা পােষণ করা আদৌ সমীচীন নয় । আবার কতেক লােক বে – কিয়ামীদের দোষারােপ করে মূলত এটা উচিৎ নয়। কেননা শরীয়তের দৃষ্টিতে কিয়াম ওয়াজিব নয় । ফকীহগণ বলেন – চাপসৃষ্টির দ্বারা পছন্দনীয় কাজ ( মুস্তাহাব ) ও অবৈধ হয়ে যায়। ওয়াজিব কাজসমূহের বেলায় চাপ দেয়া সঙ্গত তবে ঐচ্ছিক কাজের বেলায় নিষেধ। যদি কেউ বে-কিয়ামীকে দোষারােপ করলাে, তবে এর জন্য তার সম্পর্কে এ ধারণা করাটা ভুল হবে যে সে কিয়ামকে শরীয়তের দৃষ্টিতে ওয়াজিব মনে করে। কারণ দোষারােপের অনেক কারণ থাকতে পারে কোন সময় ওয়াজিব মনে করে , কোন সময় অভ্যাস বা প্রচলিত প্রথার বিপরীত হওয়ার কারণে। এ অভ্যাসটা দুনিয়াবী অথবা দীনি ভিত্তির উপর হতে পারে । আবার কোন সময় এ কারণে দোষারােপ করা হয় যে , দোষারােপকারীর অভিমত মােতাবেক (অভিমতটি সঠিক হােক বা ভ্রান্ত) এ ধরণের আচরণ বদ আকিদা সম্প্রদায়ের আলামত। উদাহরণস্বরূপ কোন বুযুর্গ ব্যক্তি কোন মাহফিলে তাশরীফ আনলেন। সবাই তাজিমের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেন তবে একজন বসে রইলাে। তখন ওর নিন্দা ও কারণে করা হয় না যে সে শরীয়তের কোন ওয়াজিব বিষয় বর্জন করেন বরং একারণেই করা হয় যে সে মজলিসের আদবের বিরোধিতা করেছে।

আর একটি উদাহরণ হলাে — এ উপমহাদেশে সাধারণভাবে একটি প্রথা প্রচলিত আছে যে তারাবীহ নামাযে কুরআন খতম উপলক্ষে শিরনী বিতরণ করা হয় এবং যদি কেউ শিরনী বিতরণ না করে, তবে তার সমালােচনা করা হয়। তবে সমালােচনাটা একারণেই করা হয় যে সে একটি উত্তম প্রথাকে বর্জন করলাে। আরও একটি উদাহরণ কোন এক সময় নিজদের ‘ সত্য বলতে শুনে ওর সমালােচনা করে এবং ওকে ওই ফিরকার অন্তর্ভুক্ত মনে করে ওর বিরােধিতা করে।

যা হােক উপরােক্ত আলােচনা হতে পরিষ্কার বুঝা গেল যে কেউ কোন কাজের জন্য কারাে সমালােচনা করার দরুন এটা প্রমাণিত হয় না যে সে ওই কাজটা ওয়াজিব মনে করে। আর সাধারণ লােকদের মধ্যে কেউ যদি সত্যিই কিয়ামকে ওয়াজিব বা ফরজ মনে করে, তবে শুধু ওর বেলায় তা বিদআত হবে। কিন্তু যারা এ ধরনের আকিদা পােষণ করে না , তাদের ক্ষেত্রে কেন বিদআতের অপবাদ দেয়া হবে? যেমন কতেক কট্টরপন্থী পীর বুযুর্গের দরবার হতে পিছপা হটে আসাকে প্রয়ােজন মনে করে। কিন্তু অন্যরা পিছপা হটে আসাকে পছন্দনীয় আজ মনে করে । তাই বলে কি সবার ক্ষেত্রে বিদআতের অপবাদ দেয়া হবে? কতেক আলেম মূখ ব্যক্তিদের কিছু বাড়াবাড়ি দেখে , যেমন ভ্রান্ত হাদীস বর্ণনা, গান-বাজনা প্রভৃতি , যা সাধারণ লােকদের মজলিসে হয়ে থাকে, সবার ক্ষেত্রে একই রায় দিয়ে দেয়। এটা ন্যায় সঙ্গত আচরণ নয়। কোন কোন ওয়ায়েজীন (বক্তা) মওজু রেওয়ায়েত বর্ণনা করে এবং কোন কোন সময় তাদের ওয়াজ মজলিসে নারী – পুরুষ একসঙ্গে একত্র হওয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই বলে কি সকল ওয়াজ মাহফিল নিষেধ হয়ে যাবে? তা হবে কীটের জন্য কম্বল পুড়ে ফেলার নামান্তর।

এবার আলােচনা করা যাক মাহফিলে মিলাদে হুযুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের হাজির হওয়ার আকিদা প্রসঙ্গে। এ ধরনের আকিদাকে কুফর ও শিরক আখ্যা দেওয়া বাড়াবাড়ি মাত্র। এটা কুরআন-হাদীস ও যুক্তি উভয় মতে সম্ভব। এবং অনেক জায়গায় এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দলিল রয়েছে। যদি কেউ সন্দেহ করে যে হুযু সাল্লাহল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে অবগত হবেন এবং একই সাথে কিভাবে কয়েক স্থানে তাশরীফ নিয়ে যাবেন, তবে এটাকে খুবই দুর্বল সন্দেহ বলে ধরে নিতে হবে। হুযুরের ইলম ও রূহানিয়াতের বিস্তৃতি সম্পর্কে বিশুদ্ধ রেওয়ায়েত ও আহলে কাশফের প্রত্যেক্ষ দর্শন দ্বারা যা প্রমাণিত, এর সামনে এরূপ ধারণা বাতুলতা মাত্র। তাছাড়া আল্লাহর কুদরতীর বেলায় কারাে নাক গলানাের সুযােগ নেই। এটাও হতে পারে যে তিনি (আলাইহিস সালাম) আপন স্থানে অবস্থান করবেন এবং মধ্যবর্তী পর্দাটা অপসারিত হয়ে যাবে। যে কোন অবস্থায় এটা সম্ভব। এর দ্বারা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের ক্ষেত্রে সত্তাগত অদৃশ্য জ্ঞান, যা আল্লাহর জন্য নির্ধারিত , প্রতিভাত হয় না। স্বত্তাগত ইলমে গায়ব বা অদৃশ্য জ্ঞান তাকে বলা হয়, যা অদৃশ্য জ্ঞানীর সত্তার সাথে সম্পৃক্ত।

অর্থাৎ যে সত্তাগতভাবে অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত , যাকে কারাে বলে দেওয়ার দরকার হয় না। এ ধরনের অদৃশ্য জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর জন্য খাস। আর যে জ্ঞান আল্লাহ প্রদত্ত, ওটা সত্তাগত নয়। এ ধরনের জ্ঞান মকলুকের বেলায় শুধু সম্ভব নয় বরং এর অর্জনের ভূরিভূরি প্রমাণ রয়েছে। ইলকা , ইলহাম ও ওহী এ ধরনের জ্ঞানেরই পর্যায়ভুক্ত। তাই সম্ভবপর কোন বিষয়ের আকিদা কিভাবে কুফর কিংবা শিরক হতে পারে? যে জিনিসটা হতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয় , সেটা যে হতে হবে এমন নয়। তবে বাস্তবায়িত হলে এর জন্য দলিলের প্রয়ােজন। যদি কারাে প্রমাণ মিলে যায়, যেমন নিজের কাছে কাশফ হলাে বা কোন কাশফধারী বান্দা বললেন, তবে তার উপর আস্থা রাখা জায়েয। অন্যথায় দলিল বিহীন ভ্রান্ত ধারণার পর্যবসিত হবে। এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা বর্জন করা বাঞ্চনীয়। তবে কোন অবস্থাতেই তা শিরক বা কুফরী হতে পারে না। উপরােক্ত বর্ণনা হলাে এ মাসআলার সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ।

আমার নীতি হলাে ‘ আমি মিলাদ মাহফিলে যােগদান করি এবং একে বরকতের ওসিলা জেনে আমি নিজেই প্রতিবছর এক আয়ােজন করে থাকি এবং কিয়াসে আনন্দ ও তৃপ্তি লাভ করে থাকি। ওটা যেহেতু বিতর্কিত বিষয় এবং প্রত্যেক দলের কাছে শক্তিশালী বা দুর্বল হােক প্রমাণও মওজুদ আছে সেহেতু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উচিত যা তাদের বিচার বিশ্লেষণে সঠিক বিবেচিত হবে, সে মােতাবেক আমল করা। কিন্তু অন্য দলের সাথে যেন কোন হিংসা-বিদ্বেষ না রাখে, ওদের যেন ঘৃণার চোখে না দেখে এবং তাদের যেন ফাসিক গুমরাহ ইত্যাদি না বলে বরং এ মতভেদকে হানাফী – শাফেয়ীর পার্থক্যের মত মনে করে । অবশ্য উভয় দল যেন পরস্পর মুলাকাত, চিঠিপত্র আদান-প্রদান, সালাম-কালাম এবং সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখে, একে অন্যের বক্তব্য খণ্ডন এবং পরস্পর বাক বিতণ্ডা থেকে বিরত থাকে। বিশেষ করে অহেতুক লােকদের ফালতু কথার প্রতি যেন কর্ণপাত না করে, যা জ্ঞানীদের জন্য শােভা পায় না। আর এ ধরণের মাসআলার জন্য যেন ফত্ওয়া না লিখে বা সীল দস্তখত প্রদান না দেয়। কেননা এগুলাে অর্থহীন। বরং পরস্পরের প্রতি সহনশীল মনােভাব পােষণ করা কর্তব্য যেমন বে-কিয়ামীরা যদি কিয়ামকারীদের মাহফিলে উপস্থিত হয়, তখন তাদের উচিত কিয়ামকারীদের সাথে কিয়াম করা। সাধারণ মানুষেরা যেসব কাজ অতিরিক্ত করে, ওইগুলাে যেন শান্তভাবে বারণ করে। আর তা ওই প্রকারের লােক কর্তৃক করা উচিত, যারা মিলাদ – কিয়ামে শরীক হন। কিন্তু যারা মূল মিলাদ শরীফকে নিষেধ করে, তাদের নিচুপ থাকা উচিত। এসব কাজ যেখানে চালু হয়েছে তার বিরােধিতা না করা আর যেখানে চালু হয় নি, সেখানে নতুনভাবে চালু করা অনুচিত। মােট কথা যেন ফিতনা ফ্যাসাদ থেকে বিরত থাকে। হাতিমের ঘটনাই এর জন্য যথার্থ প্রমাণ। জায়েয দাবিদারগণ নিষেধকারীদের নিষেধাজ্ঞার পিছনে একটা সন্তোষজনক ব্যাখ্যা মনে মনে করে নিবেন যেন হয়তাে তাদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে তাদের ধারণাটা সঠিক বিবেচিত মনে হয়েছে কিংবা এ জন্যই নিষেধ করে যে, লােকেরা যেন সীমালঙ্ঘন থেকে বিরত থাকে।

তদ্রুপ নিষেধকারীরা জায়েয দাবিদারদের অভিমতের ব্যাখ্যা এভাবে প্রদান করবেন- হয়তাে ওদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে ওদের আমলটা সঠিক বিবেচিত হয়েছে কিংবা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের প্রতি মুহাব্বতের আধিক্যের কারণে এ আমলটি করেন এবং মুসলমানদের প্রতি সুধারণা পােষণ করে তাদের এটা পালন করার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপরােক্ত নীতির অনুসরণ কর্তব্য। সাধারণ লােকদের উচিত যে তারা যে আলেমকে দীনদার এবং দক্ষ মনে করে, তাঁদের অভিমত অনুযায়ী আমল করা এবং ভিন্নমত পােষণকারী লােকদের সাথে তর্কবিতর্ক না করা। বিশেষ করে ভিন্নমত পােষণকারী ওলামায়ে কিরামের শানে বেআদবী না করা। কারণ ছােট মুখে বড় কথা শােভা পায় না।

স্মরণ রাখবেন, গীবত এবং হিংসার দ্বারা আমল বিনষ্ট হয়। এসব কাজ থেকে বিরত থাকবেন, ঝগড়া বিবাদ থেকে দূরে থাকবেন এবং এ জাতীয় বিষয়বস্তু সংবলিত পুস্তক পুস্তিকা পাঠ করবেন না। কেননা এগুলাে হচ্ছে আলেমদের কাজ। এ সব বিষয় পাঠ করলে সাধারণ লােকের মনে আলেমদের সম্পর্কে খারাপ ধারণা এবং শরীয়তের মাসয়ালা মাসায়েলের প্রতি বিরূপ ভাব সৃষ্টি হয়। এ মাসআলা সম্বন্ধে যে বিশ্লেষণ এবং পথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে , তা শুধু এ মাসআলার জন্য নির্দিষ্ট নয়, অন্যান্য মাসআলার ক্ষেত্রেও প্রযােজ্য এবং শুভ ফলদায়ক। প্রায় বিতর্কিত মাসআলার ক্ষেত্রে উপরােক্ত পথনির্দেশনার অনুসরণ চলবে। কারণ সেটা সেভাবেই করা হয়েছে।

।।।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment