প্রশ্নোত্তর
আল্লামা মুফ্তী সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান
মুহাম্মদ মুনির উদ্দীন
আ’লা হযরত বুক ফাউন্ডেশন, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন:সিহাহ্ সিত্তা গ্রন্থের ইমামগণের ওফাতের হিজরী সন বর্ণনা ও ইমামগণকে কোন গ্রন্থ লিখেছেন যদি তা বর্ণনা দেন তাহলে উপকৃত হব।
উত্তর: অসংখ্য হাদীস গ্রন্থের বিখ্যাত ছয়টি হাদীস-এ রাসূল এর গ্রন্থ রয়েছে যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও জনপ্রিয়। আর এই ছয়টি গ্রন্থকে একত্রে ‘সিহাহ সিত্তা’ বলা হয়। এগুলো যথাক্রমে: ১. সহীহ বুখারী শরীফ কৃত: ইমামদ্দুনিয়া ফিল্ হাদিস ইমাম আবু আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল বিন ইব্রাহীম বিন মুগীরা বিন বরদীজবাহ্ রহমাতুল্লাহি আলায়হি। জন্ম: ১৩ শাওয়াল ১৯৪ হিজরি, জুমার দিন। তিনি ঈদুল ফিতরের চন্দ্ররাতে মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে ইন্তেকাল করেন ২৫৬ হিজরিতে। বুখারাতে তাকে দাফন করা হয়।
২. সহীহ মুসলিম শরীফ কৃত: ইমাম মুসলিম বিন হাজ্জাজ আল্ কোশায়রী রহমাতুল্লাহি আলায়হি। জন্ম: ২০৪ হিজরিতে ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলায়হি এর ইন্তেকালের দিন, তিনি ৫৫ বছর বয়সে ২৫ রজব ২৫৯ হিজরি রবিবার বিকালে ইনতেকাল করেন।
৩. সুনানে নাসায়ী শরীফ কৃত: ইমাম আহমদ বিন আলী বিন শোয়াইব নাসায়ী রহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর জন্ম ২১৫ হিজরিতে খোরাসানের ‘নাসা’ নামক স্থানে। তিনি ১৩ সফর বা শাবান, ৩০৩ হিজরি সনের সোমবার দিন মক্কায় ইন্তেকাল করেন। ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। অনেকের মতে সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে তাকে দাফন করা হয়।
৪. সুনানে আবি দাউদ কৃত: হযরত ইমাম সোলাইমান বিন আশআস সিজিসতানী রহমাতুল্লাহি আলায়হি। তিনি কান্দাহারের নিকটবর্তী ‘সিজিসতান’ নামক স্থানে ২০২ হিজরিতে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৫ শাওয়াল শুক্রবার ২৭৫ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন।
৫. জামে তিরমিজি কৃত: আবু ঈসা মুহাম্মদ বিন ঈসা বিন ছাওরাহ্ আত্ তিরমিযী রহমাতুল্লাহি আলায়হি। তিনি বলখের তিরমিয নামক স্থানে ২০০ হিজরিতে জন্ম গ্রহণ করেন। হিজরি সনের ১৩ রজব, সোমবার তিরমিয শহরে তিনি ইন্তেকাল করেন।
৬. সুনানে ইবনে মাজাহ্ কৃত: আবু আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ বিন ইয়াজিদ বিন আবদুল্লাহ্ বিন মাজাহ্ আল্ কায্বীনি রহমাতুল্লাহি আলায়হি। তিনি ২০৯ হিজরিতে দায়লাস অঞ্চলে কাজবীন নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। এবং ২২ রমজান ২৭৩ হিজরিতে ইন্তেকাল করেন। এটাই প্রসিদ্ধ অভিমত। তবে হাদিস বিশারদগণের মধ্যে কেউ কেউ হাদিসের প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য ছয়টি গ্রন্থ সিহাহ সিত্তার মধ্যে সুনানে ইবনে মাজার স্থলে অন্য কিতাব কে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
[তারিখে ইলমে হাদিস তথা হাদিস শাস্ত্রের ইতিহাস কৃত: আল্লামা মুফতি আমীমুল ইহসান মুজাদ্দেদী বরকাতী রহমাতুল্লাহি আলায়হি ও মুকাদ্দামায়ে মেশকাত কৃত: আবদুল হক মুহাদ্দেসে দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি ইত্যাদি]
মুহাম্মদ রিদওয়ানুল করিম (সোহেল)
বিএমএ গেইট, ভাটিয়ারী, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: একজন সুন্নি ব্যক্তির অজানতে ভ্রান্ত আক্বীদার ইমাম আক্বদ পরিচালনা করেছে। কিন্তু পরে জানতে পারে ঐ ইমাম ভ্রান্ত আক্বীদার অনুসারী। এ আক্বদ শুদ্ধ হবে কিনা? ক্বোরআন ও সুন্নাহ্র আলোকে দলীল সহকারে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: ভ্রান্ত ও বাতিল আক্বীদার অনুসারী ইমাম ও খতিবের মাধ্যমে জেনে শুনে নিকাহ্/ আক্বদের অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে না। নিকাহ্/আক্বদ প্রিয় নবী সরওয়ারে দু’আলম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র মহান ও পবিত্রতম সুন্নাত। ভ্রান্ত ও বাতিল আক্বীদার অনুসারী ইমাম ও খতিবের মাধ্যমে জেনে শুনে নিকাহ্ বা আক্বদ পরিচালনা করলে রহমত ও বরকত নাযিল হবে না। তদুপরি ভ্রান্ত ও বাতিলের মাধ্যমে আক্বদ/ নিকাহ্ পরিচালনা করার অর্থ হলো তাদের সম্মান করা। আর তাদের কে সম্মান করা হারাম এবং তাদের ভ্রান্ত ও কুফরী আক্বীদাকে সমর্থন করার নামান্তর। উল্লেখ্য যে, কুফরী আক্বীদাকে সমর্থন করাও কুফরী। তবে কনের পে উকিল ও স্বাীদের মাধ্যমে ইজাব-কবুল তথা নিকাহ্ অনুষ্ঠিত হলে আক্বদ শুদ্ধ হয়ে যাবে। অবশ্য উত্তম পন্থা হল এ ধরনের আক্বদ হক্কানী-সুন্নি আলেমের পরিচালনায় পুনরায় আয়োজন করা।
মীর মুহাম্মদ আসলাম উদ্দীন
পাহাড়তলী, রাউজান, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: বিভিন্ন মাহফিলে ওলামায়ে কেরামগণ বলে থাকেন পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশী। তবে এটা বলা হয় না যে, সন্তানের প্রতি মা-বাবার কারণীয় কি? এতে করে গ্রামের অধিকাংশ মা-বাবা বুঝে থাকেন ছেলে মেয়ে জন্ম দিয়েছি এতেই আমাদের দায়িত্ব শেষ। এখন ছেলে মেয়েরাই আমাদের জন্য সব কিছু করবে। না হয় আল্লাহর গজব পড়বে ইত্যাদি বদ-দোয়া করেন। এতে অনেক ছেলে মেয়ে সঠিক নির্দেশনার অভাবে নষ্ট হয়ে য়ায়। মানুষ হতে পারে না। আমার প্রশ্ন হল, মা-বাবার প্রতি সন্তানদের এবং সন্তানদের প্রতি মা-বাবার দায়-দায়িত্ব কি? ক্বোরআন হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করলে উপকৃত হবো।
উত্তর: মা-বাবা সন্তানের জন্য বড় নেয়ামত তেমনি ছেলে সন্তান ও পিতা-মাতার জন্য আল্লাহর প থেকে বড় নেয়ামত। তাই ইসলামী শরীয়ত কর্তৃক মা-বাবার প্রতি যেভাবে ছেলে-মেয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। তদ্রƒপ ছেলে-মেয়ের প্রতি মা-বাবারও কর্তব্য ও দায়িত্ব রয়েছে।
যেমন পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ পবিত্র ক্বোরআনে এরশাদ করেন-
وقضى ربك الا تعبدوا الا أياه وبالوالدين احسانا-
অর্থাৎ তোমার প্রতিপালক চূড়ান্ত বিধান ও ফায়সালা দিয়েছেন যে, তোমরা তাকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবেনা এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে। [সূরা বনী ইসরাঈল: আয়াত ২৩]
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো এরশাদ করেন-
اما يبلغن عندك الكبر احدهما او كلاهما فلا تقل لهما افٍّ ولاتنهرهما وقل لهما قولا كريمأ-
অর্থাৎ তাদের (মা-বাবার) মধ্যে কোন একজন অথবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধ্যকে উপনীত হয় তবে তাঁদেরকে উঁহ শব্দ বল না অর্থাৎ (তারা কষ্ট পায় মত কোন শব্দ বলিও না,) তাঁদেরকে ধমক দিও না এবং তাঁদেরকে উদ্দেশ্য করে সম্মান জনক কথা বল।
[সূরা বনী ইসরাঈল: আয়াত ২৩]
সুতরাং মা-বাবার সাথে সদ্ব্যবহার করা, তাদেরকে কষ্ট না দেয়া, সম্মান প্রদর্শন করা, তাঁদের বার্ধক্য অবস্থায় সাধ্যানুযায়ী তাদের খেদমত আনজাম দেয়া, অসহায় অবস্থায় তাঁদের খানা পিনার ব্যবস্থাসহ যাবতীয় খোজ-খবর রাখা, তাদের অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা সেবা দেয়া ইত্যাদি মাতা-পিতার হক তথা কর্তব্য ও দায়িত্ব ছেলে-সন্তানের উপর। হাদীস শরীফে প্রিয় নবী সরকারে দু’আলম রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- আল্লাহ্র সন্তুষ্টি মাতা-পিতার সন্তুষ্টির উপর আর আল্লাহ্ তা‘আলার নারাজী মাতা-পিতার অসন্তুষ্টির উপর নির্ভরশীল। [সুনানে ইবনে মাজা ইত্যাদি]
সুতরাং মাতা-পিতার সন্তুষ্টি অর্জনে সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং নারাজী ও অসন্তুষ্টি হতে বেচে থাকা ও ছেলে-সন্তানের একান্ত দায় দায়িত্ব।
অপর দিকে ছেলে-সন্তানের জন্য মা-বাবার দায় দায়িত্ব ও কর্তব্যও কম নয়, ছেলে-মেয়ে ভূমিষ্ট হওয়ার পর তাদের কে যথাযথ যতœ করা সুন্দরভাবে লালন পালন করা, সময় হলে আদব-কায়দা, লেখা-পড়া, দ্বীনি জরুরী বিষয়াদি যেমন ঈমান-আক্বিদা, নামায-রোযা, হজ্ব-যাকাত, অযু-গোসল, ক্বোরআন তেলাওয়াত, আল্লাহ্ রাসূলের মহব্বত, নবীজির আওলাদে পাক, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তবে তাবেয়ীন ও আল্লাহর প্রিয় হক্কানী আওলিয়ায়ে কেরামের চরিত্র আদর্শ এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শন ইত্যাদি শিা দেয়া মাতা-পিতার উপর একান্ত দায়িত্ব। দায়িত্বে অবহেলা করলে যেভাবে ছেলে-সন্তানকে জবাব দিহী করতে হবে তদ্রƒপ ছেলে-মেয়ের প্রতি দায়িত্বে অবহেলা করলে এবং মা-বাবার কারণে ছেলে-মেয়ে নষ্ট হয়ে গেলে মা-বাবাকেও আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে জবাব দিহী করতে হবে।
[মুসনাদে আহমদ ও মেরকাত শরহে মেশকাত ইত্যাদি]
মুহাম্মদ মুনির উদ্দীন
শিক- হাইলধর উচ্চ বিদ্যালয়, আনোয়ারা।
প্রশ্ন: জনৈক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পূর্বে স্বীয় ওয়ারিসগণকে বলে যান যে, তার (মরহুমের) পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে ৪ গন্ডা জমি তার মহল্লার মসজিদের জন্য দান করবে। উক্ত ব্যক্তি অনেক সম্পত্তির মালিক। আমার প্রশ্ন হলো মরহুমের ঐ চার গন্ডা জমি সাব-রেজিষ্ট্রারের মাধ্যমে কমিটি পরিচালিত অন্য কোন মসজিদে দান করলে আদায় হবে কিনা? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: মহল্লার মসজিদ বা যে মসজিদের জন্য দান করার কথা জায়গার মালিক মৃত্যুর পূর্বে বলে গেছেন উক্ত মসজিদের জন্যই দান করতে হবে। তা অন্য মসজিদে বা কোন মাদ্রাসা অথবা এতিম খানায় দান করা যাবে না, যেহেতু জায়গার মালিক বা দানকারী অথবা নির্দিষ্ট মসজিদের জন্য ওয়াক্ফকারীর বিবরণ ও বর্ণনাই চূড়ান্ত, এটাই ইসলামী শরীয়তের ফায়সালা।
[ফতোয়ায়ে ফয়জুর রসূল: কৃত মুফতি জালাল উদ্দীন আমজাদী রহ. ইত্যাদি]
মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম
বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি
প্রশ্ন: কয়েকটি বই পুস্তকে দেখেছি মসজিদে প্রবেশ করার পর نَوَيْتُ سُنَّتَ الْاِعْتِكَافُ দোয়াটি পড়ে নিলে অনেক সাওয়াব অর্জিত হয়। আর এতে সুন্নাতে মুবারাকার সাওয়াব রয়েছে। আসলে তা কতটুকু সঠিক? আর মসজিদে ইতিকাফ করার জন্য শর্ত সমূহ কি কি? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
উত্তর: হুযূর পাক রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ই’তিকাফকারী গুনাহ্ থেকে বিরত থাকে এবং নেক আমল দ্বারা এত অধিক পরিমাণ সাওয়াব লাভ করে যেন সে সকল নেক আমল সম্পন্ন করল।
[সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ]
ই’তিকাফ একটি উত্তম ইবাদত। ই’তিকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা এবং নিজকে আবদ্ধ করে রাখা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মসজিদে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে নিয়্যত সহকারে অবস্থান করাকে ই’তিকাফ বলা হয়। ই’তিকাফ তিন প্রকার। প্রত্যেক প্রকারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শর্ত ও নিয়ম-কানুন রয়েছে। যথা: ক. ওয়াজিব তথা মান্নতের ই’তিকাফ। মান্নত পূর্ণ হলে যা আদায় করা ওয়াজিব। এর জন্য রোযা শর্ত এবং রোযাসহকারে মান্নতি ই’তিকাফ যে সব মসজিদে নিয়মিত জমাআত সহকারে পঞ্জেগানা নামায আদায় করা হয় উক্ত মসজিদে আদায় করা ওয়াজিব। খ. সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্। মাহে রমযানের শেষ দশ দিন মসজিদে যে ই’তিকাফ আদায় করা হয়। এ প্রকারের ই’তিকাফেও রোযা শর্ত। রোযা বিহীন তা শুদ্ধ হবে না। গ. মুস্তাহাব। এ প্রকারের ই’তিকাফের জন্য রোযা কিংবা নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা শর্ত নয়, বরং কেউ মসজিদে প্রবেশকালে نَوَيْتُ سُنَّتَ الْاِعْتِكَافُ (নাওয়াতু সুন্নাতাল ই’তিকাফ) নিয়্যত করলেই মসজিদে অবস্থানকালীন সময় ই’তিকাফ হিসেবে গণ্য হবে এবং ই’তিকাফকারী যতণ মসজিদে অবস্থান করবেন ই’তিকাফের সওয়াব পাবেন। আর মসজিদ হতে বের হওয়ার সাথে সাথে ই’তিকাফ শেষ হয়ে যাবে। অবশ্য এমন ই’তিকাফকারীর জন্যও অসংখ্য সাওয়াব ও ফজিলত রয়েছে। সুতরাং উল্লিখিত মাসয়ালা ছহি ও শুদ্ধ আছে। বিধায় আমল করা যাবে। [দুররে মুখতার ও ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ইত্যাদি]
আবদিল মোস্তফা
পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম
প্রশ্ন: আমাদের এলাকায় চাঁদা তুলে প্রতি বছর ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন করা হয়। উক্ত সংগৃহীত টাকা ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদ্যাপনের পর কিছু টাকা অবশিষ্ট থেকে যায়। ঐ টাকা কোন গরীব মুসলমান নর-নারীর লেখা-পড়ার উপকরণ ক্রয়ের জন্য অথবা ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুম উদ্যাপনের কাজে খরচ করা যাবে কি না? ক্বোরআন-হাদীসের আলোকে জানানোর অনুরোধ রইল।
উত্তর: উপরোক্ত বিষয়ে উত্তম পন্থা হল ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদ্যাপন উপলে সংগৃহীত চাঁদা/ টাকা ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাহফিলের চূড়ান্ত হিসাব করে যাবতীয় আনুষঙ্গিক ব্যয় বাদ দিয়ে অবশিষ্ট টাকা চাঁদাদাতা বা মালিকদের হাতে ফেরত দেয়া, যদি সম্ভব হয়। আর যদি তা সম্ভব না হয় আগামী বৎসরের ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উদ্যাপনে ব্যয় করবে অথবা ফাতেহায়ে ইয়াজদাহুমেও ব্যয় করতে পারবে। বস্তুতঃ দরূদ-সালাম সম্বলিত মাহফিল সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানে খরচ করা যাবে। তবে যদি আয়-ব্যয়ের চূড়ান্ত হিসাব নিকাশের বিবরণ ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাহফিল শেষে উপস্থিত সকলের সামনে আম-এলান করা হয় এবং অধিকাংশ হাদিয়া/চাঁদা দাতাদের গরীব-অসহায়দের কল্যাণে অবশিষ্ট টাকা ব্যয় করতে আপত্তি না থাকে বরং সম্মতি পাওয়া যায় তবে অবশিষ্ট টাকা গরীব দুঃখী এলাকার মুসলিম নর-নারীর বিবাহ-শাদী ও লেখা পড়ার ও বই-পুস্তক ক্রয়ে তথা জনকল্যাণে ব্যয় করা যাবে। তখন সবাই সাওয়াবের অধিকারী হবে।
মুহাম্মদ ফোরকান
পূর্ব গহিরা, রায়পুর আনোয়ারা।
প্রশ্ন:১. আমাদের গ্রামের মসজিদের মহল্লাবাসী, মসজিদ পরিচালনা কমিটি এবং উপেদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে মসজিদের নামকরন করা হয় ‘‘পূর্ব গহিরা মুহাম্মদিয়া জামে মসজিদ’’। উক্ত মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মরহুম আবদুস সোবহান এবং দাতা হিসেবে মরহুমা বিলকিস জান বিবির নাম সর্বসম্মতিক্রমে প্যাড ও রশিদ বইয়ে উল্লেখ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এমতাবস্থায় উক্ত প্রতিষ্ঠাতা ও দাতার নাম মসজিদের দেওয়ালে স্মৃতিফলকে উল্লেখ করলে শরীয়তের কোন বাধা আছে কী? স্মৃতি ফলকে প্রতিষ্ঠাতার নাম আগে আসবে নাকি দাতার নাম আগে আসবে, বিধি মোতাবেক জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
২. আমাদের গ্রামের মসজিদে এক ব্যক্তি একটি অযু করার ঘাটের আর্থিক অনুদান প্রদান করেন, উক্ত টাকায় মসজিদ কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারী কিংবা অন্য কোন বিশ্বস্থ ব্যক্তির মাধ্যমে যদি উক্ত ঘাট নির্মিত হওয়ার পর অনুদানকৃত ব্যক্তির নাম, সহযোগিতাকারী এবং অনুরোধকারী ব্যক্তিদের নাম স্মৃতি ফলকের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। উক্ত ঘাটে উল্লেখিত স্মৃতি ফলকের কারণে ওযু করতে কোন সমস্যা শরীয়তের দৃষ্টিতে আছে কিনা? জানালে খুশী হব।
উত্তর: ১. প্রতিষ্ঠাতা ও দাতার ইহসান ও বদান্যতা তথা এত বড় অবদানকে স্মরণ রাখার জন্য এবং নূতন প্রজন্মের অবগতির জন্য তাদের নামে মসজিদের প্যাড ও রশিদ বই ছাপালে এবং অধিকাংশ মুসল্লিগণের সম্মতিতে তাদের নাম মসজিদের স্মৃতি ফলকে উল্লেখ করলে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন আপত্তি নাই। প্রতিষ্ঠাতার নাম আগে আসা ভালো।
উত্তর:২. অসুবিধা নাই। তবে এসব বিষয় নিয়ে মুসল্লি ও এলাকাবাসীর মধ্যে যেন দলাদলি ও ঝগড়া-ফ্যাসাদ সৃষ্টি না হয়। সে বিষয়ে অবশ্যই সজাগ দৃষ্টি একান্ত জরুরী।
সৈয়দ আহমদ রেযা
শীতল ঝর্ণা আবাসিক এলাকা, অক্সিজেন, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: চার রাকাত বিশিষ্ট বা তিন রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযে ইমাম সাহেব ভুলবশত প্রথম বৈঠকে না বসে পরিপূর্ণ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর মুসল্লিদের মধ্যে হতে কেউ লোক্মা দিলে বা আল্লাহু আকবর বলে ইমাম সাহেবকে বসে যাওয়ার ইঙ্গিত করলে ঐ অবস্থায় বসে গেলে নামায শুদ্ধ হবে কিনা? বিস্তারিত জানালে কৃতঙ্গ হব।
উত্তর: ইমাম সাহেব চার রাকাত বা তিন রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযে ভুলবশত: প্রথম বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে যদি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে না যায় বরং বসার নিকটবর্তীতে মুক্বতাদিদের মধ্য হতে কেউ লোকমা দিলে এবং ঐ লোকমা আমলে নিয়ে ইমাম সাহেব বসে পড়লে উক্ত নামাযে কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু ইমাম সাহেব পরিপূর্ণ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর মুক্বতাদিদের মধ্য হতে কেউ লোকমা দিলে সাথে সাথে লোকমা দাতার নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। এবং ঐ লোকমা আমলে নিয়ে ইমাম সাহেব বসে পড়লে সকলের নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ সোজা হয়ে দাঁড়ানোর প্রথম বৈঠকে পুনরায় ফিরে যাওয়া হারাম। আর লোকমার স্থান ব্যতীত অনর্থক লোকমা দেওয়া নামায ফাসেদ বা ভঙ্গ হওয়ার অন্যতম কারণ। এ বিষয়ে আল্লামা আবদুছ ছাত্তার হামদানি কতৃক রচিত ‘‘মু’মিন কি নামায’’ নামক কিতাবের ৮৪ পৃষ্ঠায় রয়েছে।
امام پهلا قعده بهول كر اٹهنے كو كهڑا هو رها تها اور ابهى سيدها كهڑا نه هواتها تو مقتدى كے بتانے (لقمه دينے) ميں كوئى حرج نهيں بلكه بتانا هى چاهئے هاں اگر پهلا قعده چهوڑ كر امام پورا كهڑا هوجائے توامام كے پورا يعنى بالكل سيدها كهرا هوجانے كے بعد اسے بتانا (لقمه ديهنا) جائزنهيں اگر تب مقتدى بتائے گا تواس مقتدى كي نماز جاتى رهے گى اور اگرامام اس مقتدى كے بتانے پر عمل كر كے سيدها كهڑا هونے كے بعد قعده اولى ميں لوٹيگا توسب كى نماز جاتى رهے گى كه پورا كهڑا هو جانے كے بعد قعدة اولى كے لئے لوٹنا حرام هے تواب مقتدى كا بتانا محض بيجا بلكه حرام كى طرف بلانا اوربلاضرورت كلام هوا اور وه مفسد نماز هے-
উক্ত মাসআলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা আলা হযরত রহমাতুল্লাহি আলায়হি ফতোয়ায়ে রেজভীয়া ৩য় খণ্ড, ৬৪৫ পৃষ্ঠায় এবং ১২৩ পৃষ্ঠায় আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। উপরুক্ত বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা ইমাম ও মুক্তাদি উভয়ের জন্য একান্ত কর্তব্য ও জরুরী মনে করি।
والله ورسوله اعلم بالصواب-
মুহাম্মদ আবুল হাসেম নঈমী আত্তারী
রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: আমি ফজরের নামাযের ইমামতিতে সূরা ফাতিহা পড়ে সূরা ‘ত্বীন’ শুরু করলাম। গড় গড় করে পড়ে যাচ্ছি। মাঝখানে খেয়াল করলাম কেরাতের যে শব্দগুলো কানে আসতেছে তা সূরা ‘ত্বীনের’ নয় কেরাত শেষ করলাম। ইন্নাহা আলাইহিম মো’সাদাতুন ফি আমাদিম মোমাদ্দাদাহ্ বলে। বুঝতে পরলাম সূরা হুমাযাহ্ পড়লাম। এই নামায কি আদায় হবে? শরীয়তের দৃষ্টিতে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: নামাযের সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা বা ছোট তিন আয়াত বা তার পরিমাণ লম্বা এক আয়াত পড়া ওয়াজিব। কিন্তু কেউ যদি ভুলবশত সূরা ফাতিহার পর এক আয়াত থেকে অন্য আয়াতে এবং এক সূরা হতে অন্য সূরায় চলে যায় এবং এভাবে নামায সম্পন্ন করলে তার নামাযের কোন তি হবে না। এবং তার নামায আদায় হয়ে যাবে। তদ্রƒপ সূরা ফাতিহার পর এক সূরার স্থলে অন্য আর এক সূরা পড়ে নামায আদায় করলে নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে।
[১. ফাতাওয়া ফয়জুর রাসূল কৃত ফকিহে মিল্লাত আল্লামা জালালুদ্দীন আহমদ আমজাদী। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৪২, ২. ফাতাওয়ায়ে রেজভিয়া, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১২৫, কতৃ: ইমাম আ’লা হযরত শাহ আহমদ রেযা রহ. ইত্যাদি]
মুহাম্মদ শওকত হোসাইন
চিকদাইর, রাউজান, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: কোনো অমুসলিম যদি স্বইচ্ছায় কোনো মুসলিম ইমাম, আলেম, মুফতি, খতিব বা ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তির কাছে ইসলাম গ্রহণের প্রস্তাব বা কলেমা পড়িয়ে মুসলমান করানোর অনুরোধ করে তখন উক্ত ইমাম বা মুফতি সাহেব আগামীকাল আস, কিছুণ পর আস, সভা শেষ হওয়ার পর আসিও বা একটু অপো কর ইত্যাদি অপো মূলক কথা বলা কতটুকু ইসলামী শরিয়ত সম্মত? এতদ্বিষয়ে ইসলামী নির্ভযোগ্য ফিক্হ ও ফতোয়া গ্রন্থের ফায়সালা জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।
উত্তর: কোনো অমুসলিম যদি স্বইচ্ছায় কোনো মুসলিম ইমাম, খতিব, মুফতি, মুহাদ্দিস, বক্তা অথবা ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তির কাছে ইসলাম গ্রহণের প্রস্তাব বা আগ্রহ প্রকাশ করে, তখন উক্ত ইমাম, খতিব, মুফতি, বক্তা বা মুসলিম জ্ঞানীর উপর ফরয তাকে কালবিলম্ব না করে সাথে সাথে মুসলিম বানিয়ে নেয়া। অন্যথায় তিনি নিঃসন্দেহে গোনাহগার হবেন। ইসলাম গ্রহণের আগ্রহী বক্তিকে ‘আগামীকাল আসিও, কিছুণ পর আস, একটু অপো কর, অমুকের নিকট যাও, সভা শেষে আসিও ইত্যাদি অপো মূলক কথা বলে বিলম্ব করানো শরিয়তসম্মত নয় বরং তা কুফরীর দিকে ধাবিত করে। ফোকাহায়ে কেরাম এহেন কাজকে জোরালোভাবে নিষেধ করেছেন। এতদ্বিষয়ে ইমাম ইবনে হাজর মক্কী স্বীয় গ্রন্থ ‘‘اعلام الاعلام بقواطع الاسلام’’ -এ বলেন-
لو قال كافر لمسلم اعرض على الاسلام فقال حتى ارى او أصبر ألى الغد او طلب عرض الاسلام من
واعظ فقال اجلس ألى اخر المجلس كفر-
অর্থাৎ যদি কোনো কাফের (অমুসলিম) কোনো মুসলমানকে বলে যে, আমার নিকট ইসলাম পেশ করান, তখন উক্ত মুসলিম ব্যক্তি বলল- ‘‘আমাকে একটু বিবেচনা করতে দাও অথবা আগামীকাল পর্যন্ত অপো কর’’। অথবা কোনো অমুসলিম কোনো বক্তার (ওয়ায়েজ) কাছে মুসলিম হওয়ার প্রস্তাব দিল, তখন উক্ত ওয়াজে বলল, সভা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বসে থাক। তবে সে বক্তা বা মুসিলম কুফরী করল।
[ইলামুল আলাম বিকাওয়াতিয়িল ইসলাম কৃত: ইমাম ইবনে হাজার মক্কী রহমাতুল্লাহি আলায়হি, ফতোয়ায়ে মুফতী মুহাম্মদ হামেদ রেজা খান রেবলভী রহ.]
বিশ্বখ্যাত মুফতি মুহাদ্দিস মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমাতুল্লাহ আলায়হি- شرح الففه الاكبر -এর বলেন,
كافر قال لمسلم اعرض على الاسلام فقال اذهب الى فلان العالم كفر-
অর্থাৎ কোনো কাফের (অমুসলিম) কোনো মুসলমানকে বলল যে, আমার নিটক ইসলাম পেশ করুন- তখন উক্ত মুসলিম ব্যক্তি বলল অমুক আলেমের নিকট যাও- তবে সে কুফরি করল।
[শরহে ফিহহে আকবর: কৃতৃ মোল্লা আলী ক্বারী ও ফতোয়ায়ে হামে দিয়া]
শায়খ মুহাম্মদ আল-মারূফ ইবনে আলী -مجمع الانهر شرح ملتقى الا بحر নামাক গ্রন্থে বলেন,
كافر جاء الى رجل وقال اعرض على الاسلام فقال
اذهب فلان يكفر وقيل لا يكفر-
অর্থাৎ কোনো অমুসলিম কোনো মুসলিম ব্যক্তির নিকট এসে বলল যে, আমাকে ইসলাম ধর্মে দীতি করান তথা আমাকে মুসলমান বানিয়ে নেন, অতপর উক্ত মুসলিম বলল, ‘অমুকের নিকট যাও।’ এটা দ্বারা সে কুফরি করল। কোনো কোনো ফোকাহায়ে কেরাম বলেছেন কুফরি হবে না। তবে অবশ্য মারাত্মক অপরাধ ও গুনাহ্ করল।
[মাজমায়ুল আনহর শহরে মূলতা কালআবহার-কৃত: শায়খ মুহাম্মদ আল মারূফ ইবনে আলী রহমাহুল্লাহু, ফতোয়ায়ে হামেদিয়া]
ইবনে হাজর মক্কী প্রাগুক্ত গ্রন্থে বলেন-
كان يسأله كا فر يريد الاسلام ان يلقّنه كلمة الاسلام
فلم يفعل او يقول له أصبر حتى افرغ من شغلى-
অর্থাৎ কোনো অমুসলিম কোন মুসলমানের নিকট ইসলাম গ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তখন উক্ত মুসলমানের একান্ত কর্তব্য দায়িত্ব হবে তাকে যেন ইসলামের কলেমা পড়িয়ে দেয়, কিন্তু সে তা না করে বলল যে, আমার ব্যস্ততা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপো কর। (এটি কুফরীর অন্তর্ভুক্ত)
[প্রাগুক্ত: ইবনে হাজার মক্কী রহ., প্রাগুক্ত মুফতি মুহাম্মদ হামেদ রেজা রহ.]
ইবনে হাজর মক্কী প্রাগুক্ত কিতাবে আরো বলেন-
قال له كافر اعرض على الاسلام فقال لا ادرى صفة الايمان او قال أذهب الى فلان الفقيه انه متضمن ببقائه على الكفر ولو لخظبة والرضا بالكفر كفر-
অর্থাৎ কোনো অমুসলিম কোনো মুসলিমের নিকট ইসলাম গ্রহণ করানোর প্রস্তাব দিল তখন উক্ত মুসলিম বলল, ‘‘আমি ঈমান সম্পর্কে তেমন জানি না অথবা বলল- অমুক ফকিহের নিকট যান।’’ এমনটি বলা কুফরির অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু এটা সন্তুষ্টি থাকা বুঝায়। আর কুফরির উপর সন্তুষ্টি থাকাটাও কুফর ও বেঈমানী। [প্রাগুক্ত: ইবনে হাজার মক্কী রহ.]
ফোকাহায়ে কেরামের আলোচনা হতে আমাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, ইসলাম গ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তিকে বিলম্ব করানো কুফরি। ফোকাহায়ে কেরাম এহেন কাজকে কুফরি বলার কারণ হচ্ছে উক্ত বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা। অর্থাৎ কোনো অবস্থাতেই বিলম্ব করা যাবে না। কারণ উক্ত অমুসলিম যদি বিলম্ব করতে গিয়ে মারা যায় তাহলে এর দায়ভার উক্ত ইমাম, খতিব, হুজুর বা মুসলিম যাকে ইসলাম গ্রহণ করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাকেই নিতে হবে।
উপরোক্ত বিষয়টি স্পর্শকাতর, বিধায় এ বিষয়ে হক্কানী ওলামায়ে কেরামের জন্য নেহায়ত সজাগ ও সতর্ক থাকা জরুরী।
[শরহুল ফিক্হিল আকবর কৃত: মোল্লা আলী ক্বারী রহ., ফতোয়ায়ে হামিদিয়া কৃত: মুফতি হামেদ রেজা বেরলভী রহ. ও মাজমায়ূল আনহর কৃত: মুহাম্মদ আল মারূফ ইবনে আলী রহ. ইত্যাদি]
মুহাম্মদ আবু সুফিয়ান
নায়েবে ইমাম মসজিদে রহমানিয়া
গাউসিয়া, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম
প্রশ্ন: চোগলখুরি, পরনিন্দা করা, ঝাগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত থাকা, জাম‘আত অবস্থায় শরীর হেলানো-দুলানো, চায়ের দোকানে বসে অশ্লীল-সিনেমা ইত্যাদি দেখা, বিলম্বে মাগরিবের জামা‘আত শুরু করা, অন্যের হক নষ্ট করা এবং জুমার খোতবার মাঝখানে কথা বলা এ ধরনের আচরণ প্রকাশ পেলে এমন ইমামের পিছনে নামাযে ইক্তদা করা শরিয়তের দৃষ্টিতে শুদ্ধ হবে কিনা? তাছাড়া একজন ইমামের চরিত্র কেমন হওয়া উচিত ইসলামী শরিয়তের আলোকে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: ইমামের চরিত্র যদি প্রশ্নে উল্লিখিত চরিত্রের অনুরূপ হয় এমন ইমামের পেছনে জেনে শুনে ইক্বতিদা করা মাকরূহে তাহরীমা। না জেনে কেউ ইক্বতিদা করলে পুনরায় উক্ত নামায আদায় করা ওয়াজিব। এ ধরনের ইমামকে অপসারণ করা অপরিহার্য। আর যদি সম্ভব না হয় তবে জামা‘আত শেষ হওয়ার পর দু’তিন জন মিলে জামা‘আত সহকারে নামায আদায় করবে। অথবা সম্ভব হলে অন্য মসজিদে গিয়ে যোগ্য ও মুত্তাকি ইমামের সাথে জমাতে শরীক হবে। কারণ প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যক্তি ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় ফাসিক-ই মু’লিন্ বা প্রকাশ্য ফাসিক। এমন ব্যক্তির পেছনে ইক্বতিদা করা বা নামায আদায় করা ফক্বিহ্গণ মাকরূহে তাহরীমা বলে ফতোয়া দিয়েছেন। যেমন ‘‘মারাকিউল ফালাহ্’’ ফিক্বহ গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে,
كره امامة الفاسق العالم لعدم اهتمامه بالدين فتجب
اهانته شرعًا فلا يعظم بتقديمه للامامة-
অর্থাৎ ফাসিক ব্যক্তিকে ইমাম বানানো মাকরূহে তাহরীমা। যেহেতু দ্বীনের প্রতি তার নিকট গুরুত্ব নাই। সুতরাং তার প্রতি হেউ প্রদর্শন করা ওয়াজিব। শরিয়তের দৃষ্টিতে তাকে ইমাম বানিয়ে সম্মান প্রদর্শন করা যাবে না। যেমনিভাবে ফতোয়া-ই রেজভিয়্যাহতে উল্লেখ আছে যে-
فان نقديم الفاسق اثم والصلوة خلنه مكروهة تحريما والجامعة واجبة فهما درجة واحدة ودرء المفاسد اهم من جلب المصالح- (فتاؤى رضويه- جلد ৩- صفحه ২৫৩)
অর্থাৎ প্রকাশ্য ফাসিক ব্যক্তিকে ইমাম বানানো বা নিযুক্ত করা গুনাহ। এ ধরনের ফাসিকের পেছেনে নামায পড়া মাকরূহে তাহরিমা। এবং জমা‘আতের সাথে নামায আদায় করা ওয়াজিব (অর্থাৎ ওয়াজিবের কাছাকাছি) ওয়াজিব আর মাকরূহে তাহরিমা একই দরজার অন্তর্ভুক্ত (অর্থাৎ একটার বিপরীত আর একটি) উল্লেখ্য যে, উপকার অর্জনের চেয়ে ফ্যাসাদ দূর করা অবশ্যই জরুরী। সুতরাং জেনে শুনে এমন ফাসিক ব্যক্তিকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দিলে মোতাওয়াল্লী ও মসজিদের কমিটি সকলে গুনাহগার হবে। তাছাড়া চোগলখুরি করা, অন্যের হক নষ্ট করা, অন্যায়ভাবে মু’মিন-মুসলমানের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া গালি-গালাজ করা, মানুষকে কষ্ট দেয়া কবীরাহ গুনাহ। আর মাগরিবের নামায ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সাথে সাথে আদায় করা তথা প্রথম ওয়াক্তে পড়ে নেয়া মুস্তাহাব। বিনা ওজরে দেরি করা মাকরূহ-ই তানযীহি। জুমা ও ঈদের নামাযে উভয় খোতবা আরবীতে পাঠ করা সুন্নাত। আরবীতে খোতবা পাঠকালে ভিন্ন ভাষায় কথা বলা মাকরূহ।
ইমামের যোগ্য ওই ব্যক্তি যে নামায ও পবিত্রতার বিধানাবলী সকলের চেয়ে অধিক জানেন। যদিও অন্য শাস্ত্রে পূর্ণ জ্ঞান না রাখে। তবে শর্ত হল এতটুকু ক্বোরআন পাকের সূরা-কেরাত যেন স্মরণ থাকা যে পরিমাণ পড়া সুন্নাত ও সঠিকভাবে মাখরাজ আদায়ে সম, আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের পরিপন্থী কোন কাজে লিপ্ত হয় না এবং অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাকে। অর্থাৎ এসব গুণাবলীসহ ওই ব্যক্তি ইমামতির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত যিনি তাজভীদসহ ইলমে ক্বিরআত জানেন এবং তদানুযায়ী নামায আদায় করেন। যদি কয়েক ব্যক্তির মধ্যে ওই গুণাবলী সমান হয়, তখন যিনি অধিক মুত্তাকী-পরহেযগার ও খোদাভীরু অর্থাৎ হারামকে যিনি পরিহার করে এমন কি সন্দেহজনক বিষয়কেও এড়িয়ে চলে।
যদি মুত্তাকী হওয়ার গুণে উপস্থিত সকলে সমান হয়, তখন যিনি অধিক বয়স্ক অর্থাৎ যার বেশি জীবন ইসলামী অবস্থায় অতিবাহিত করেছে। এতে সমান হলে তখন যিনি অধিক সৎচরিত্রবান, এতেও যদি সমান হয় যিনি তাহাজ্জুদ গুজার, এভাবে যে অধিক উত্তমগুণাবলীর অধিকারী, যার বংশ সম্ভ্রান্ত, গোত্রের দিক দিয়ে যিনি শ্রেষ্ঠ বা সম্মানিত, তিনিই ইমাম হবেন। তারপরও যদি কয়েক ব্যক্তি সমান মর্যাদার অধিকারী হলে তাদের মধ্যে উপরোক্ত ধারাক্রমে যিনি প্রাধান্য পাবেন, তিনিই ইমামের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। ক্রীতদাস, অন্ধ, জারজসন্তান, খোজা, কুষ্ঠরোগী, নির্বোধ প্রমুখ ব্যক্তিকে ইমাম নিযুক্ত করা মাকরূহ-ই তানযীহি। আর এমন ব্যক্তি যদি হয় যে, বদআক্বীদা ও বদমাজহাব পোষণকারী যার বদআক্বীদা ও আমল কুফরী পর্যন্ত পৌঁছেনি এবং প্রকাশ্যে গুনাহে লিপ্ত (ফাসিক-ই মু’লিন) যেমন মদ্যপায়ী, জুয়াখোর, ব্যভিচারী, সুদখোর, চোগলখোর প্রমুখ যারা প্রকাশ্য কবীরাহ্ গুনাহ করে তাদেরকে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত করা গুনাহ। তাই তাদের পেছনে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমা। না জেনে পড়ে থাকলে জানার পর ওই নামাযের সময় বা ওয়াক্ত থাকলে পুনরায় পড়ে নেবে অন্যথায় কাযা করবে। আর যার বদআক্বীদা ও বদআমল কুফর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে জেনে-শুনে তার পেছনে ইক্বতিদা করা বা ওই ধরনের ব্যক্তিকে ইমাম নিযুক্ত করা নিঃসন্দেহে হারাম। সুতরাং ইমাম নিযুক্ত করার সময় ইমামতির জন্য যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া প্রত্যেক মসজিদ কর্তৃপরে একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
[মারাকিউল ফালাহ্, রদ্দুল মুহতার, নুরুল ইযাহ্, ফতোয়া-ই রজভিয়া, যুগজিজ্ঞাসা ইত্যাদি]
মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন
পাইরোল, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: আমার ভাইপোর জন্য একটি মেয়ে ঠিক হয়েছে। সে মেয়েটি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের পরিপন্থি একটি ছাত্রী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। কথা প্রসঙ্গে আমার ভাইপো শ্বাশুরকে পায়ে ধরে সালাম করা জায়েয বললে, মেয়েটি জবাব দিল শরিয়তের দৃষ্টিতে কাউকে পায়ে ধরে সালাম করা জায়েয নেই। উল্লেখ্য মেয়েটি ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। মেয়েটির কথা সত্য কিনা? যদি মিথ্যা হয় তাহলে শরিয়তের দৃষ্টিতে কাকে কাকে পায়ে ধরে সালাম করা জায়েয। দলিলসহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: ইসলাম সুন্দরতম একটি আদর্শের নাম। ইসলামের শিষ্টাচারিতা অতি চমৎকার। ছোটদের স্নেহ এবং বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শিা। সম্মানীত ব্যক্তিবর্গের প্রতি সম্মান প্রদর্শন বিভিন্নভাবে হতে পারে। যেমন সালাম প্রদান, দেখলে সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যাওয়া, হাত ও কদম বুচি করা। উল্লেখ্য যে, মা-বাবা, দাদা-দাদী, নানা-নানী, খালা-খালু, ফুফা-ফুফু, মামা-মামী, চাচা-চাচী, বড়ভাই-বড়বোন, শ্বাশুড়-শাশুড়ি উস্তাদ ও হক্কানী পীর মুর্শিদ ইত্যাদির কাছ থেকে দোয়া নেওয়ার অন্যতম পন্থা হল সালাম বিনিময়ের পর কদমবুচি করা। কদমবুচি ইসলামী শরিয়তসম্মত। নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক সমর্থিত এবং সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। সুতরাং তা সুন্নাত। এটাকে নাজায়েয ও হারাম বলা হাদীস শরীফের ও সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা প্রমাণিত একটা সুন্নাতকে অস্বীকার করা। যা ইসলামী আহকাম ও বিধি-বিধান সম্পর্কে অজ্ঞদের চরিত্র।
প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ সুনানে আবু দাউদ শরীফ ও মেশকাত শরীফে বর্ণিত আছে-
عن زارع وكان فى وفد عبد القيس قال لما قدمنا المدينة وجعلنا نبادر من رواحلنا فنقبل يد رسول
الله صلى الله عليه وسلم ورجله-
অর্থাৎ হযরত যারেঈ (বিশিষ্ট সাহাবা) রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু যিনি আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি দলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন আমরা যখন মদীনা শরীফে আগমন করলাম আমরা আমাদের বাহন থেকে তাড়াতাড়ি নেমে পড়লাম। এবং রসূলে আকরাম হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নূরানী হাত ও কদম মুবারক চুম্বন করলাম।
শিফা শরীফে ইমমা কাজী আয়াজ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, সাহাবায়ে রসূল হযরত বুরাইদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একজন বেদুঈন নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে মু’জিযা তলব করল। হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বেদুঈনকে এরশাদ করলেন ঐ বৃটাকে বল আল্লাহর রসূল তোমাকে ডাকছেন। সে যখন বলল বৃটা তার ডানে বামে ও সম্মুখে পেছেনে ঝুঁকল তখন ওটার শেকড়গুলো উপড়ে গেল তারপর উক্ত বৃটি শিকড়গুলো সহ বালি উড়িয়ে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে এসে দাঁড়ালো এবং বলল আস্ সালামু আলায়কা এয়া রাসূলাল্লাহ্! বেদুঈন বলল আপনি তাকে আদেশ করুন যেন এটা স্বীয় স্থানে ফিরে যায়। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশে ওটা ফিরে গেল এবং বৃটি সোজা হয়ে দাঁড়ালো। বেদুঈন বলল আপনি আমাকে অনুমতি দিন আমি আপনাকে সাজদা করব। তিনি এরশাদ করলেন যদি কাউকে সাজদা করার হুকুম দিতাম তাহলে নারীকে হুকুম দিতাম সে যেন তার স্বামীকে সাজদা করে। বেদুঈন আরজ করল হুযূর! তাহলে আমাকে আপনার হস্ত ও কদম মুবারক দ্বয় চুম্বন করার অনুমতি দিন। অতঃপর তিনি তাকে অনুমতি প্রদান করলেন, হযরত ইমাম বুখারী তাঁর রচিত আদাবুল মুফরাদে বর্ণনা করেন হযরত ইবনে আমের রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, একদিন আমরা হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর খেদমতে উপস্থিত হলাম অতপর আমরা হুযূরের পবিত্র হাত ও পা দ্বয় ধরে চুম্বন করলাম।
উল্লেখিত বর্ণনা দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, সম্মানিত ব্যক্তিদের হাত ও পা চুম্বন করা কোনো না-জায়েয আমল নয়। বরং রসূল করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক সমর্থিত একটি বরকত মণ্ডিত সাহাবায়ে কেরামের আমল। এটাকে না-জায়েয বলা মানে নবীজির সাহাবায়ে কেরামের নূরানী আমল ও তরিকাকে অস্বীকার করা যা অজ্ঞতা ও মুনাফেকীর নামান্তর। সুতরাং ছেলে-মেয়েদের ঈমান আক্বিদা ও নেক আমল সমূহ সংরণের জন্য তাদেরকে নবী-অলি বিদ্বেষীদের খপ্পর ও বদ-সোহবত থেকে বিরত রাখা মা-বাবা ও প্রকৃত অভিভাবকের উপর একান্ত দায়িত্ব এবং তাদের কে সহি শিা প্রদান করা ফরযে ঈমানী ও নেহায়ত জরুরী। বিশেষত বর্তমান ফিতনা ফ্যাসাদের নাজুক সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মাসিক তরজুমান, গাউসিয়া তারবিয়াতি নেসাব সহ সুন্নী প্রকাশনা পড়ার প্রতি তাকিদ ও উৎসাহিত করা সময়ের দাবী।
[কিাতাবুশ্ শেফা কৃত: ইমাম কাজী আয়াজ রহ., সুনানে আবি দাউদ শরীফ কৃত: ইমাম আবু দাউদ রহ., মেশকাত শরীফ, ও যুগজিজ্ঞাসা ইত্যাদি]