প্রশ্নঃ মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী [ﷺ] এর মধ্যে পার্থক্য কি� কোনটি উদ্যাপন যথাযথ। সঠিক তথ্য জানিয়ে ধন্য করবেন।

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

মুহাম্মদ রবিউল হোসাইন (প্রশ্নকারী)

নায়েবে ইমাম, লালদীঘির পাড় শাহী জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম।

✍🏻 উত্তরঃ মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী হল ব্যাপক আলোচিত শব্দ। শাব্দিক তথা আভিধানিক অর্থে মিলাদুন্নবী [ﷺ] দ্বারা নবী করীম [ﷺ]-এর শুভাগমন এবং সিরাতুন্নবী [ﷺ] দ্বারা নবী করীম [ﷺ]-এর চরিত্র বুঝালেও ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় উভয় শব্দ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত। আল্কিফায়া নামক কিতাবে উল্লেখ আছে সিরাতুন্নবী নবী করীম [ﷺ]-এর যুদ্ধ জীবনের সাথে সম্পৃক্ত।

ইমাম ইবনে হুম্মাম হানাফী [رحمه الله عليه] বলেনঃ

ফোকাহায়ে কেরামের পরিভাষায় কাফেরদের সাথে যুদ্ধ/জিহাদ করার ক্ষেত্রে শরীয়তের আলোকে যে সমস্ত কর্ম পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় তার নামই হল ‘সিরাত’। অনুরূপভাবে ইমাম নাসাফী [رحمه الله عليه] বলেন, জিহাদ তথা যুদ্ধের কর্ম পদ্ধতির নাম হল সিরাত।

পক্ষান্তরে নবী করীম [ﷺ]-এর নূরী জগতের সৃষ্টি হতে শুরু করে নূরানী জগতে লক্ষ লক্ষ বৎসর বিচরণ, তারপর দুনিয়ার বুকে শুভাগমন ও দুধপান করার অবস্থা থেকে তেষট্টি(৬৩) বছর নূরানী জাহেরি হায়াতে তৈয়্যবার প্রতিটি বিষয় আলোচনায় স্থান পায় মিলাদুন্নবীর মাহফিলে বা অনুষ্ঠানে। তাই সিরাতুন্নবী হল শুধু নবীজির যুদ্ধ ও জিহাদী জিন্দেগীর অংশের নাম। আর মিলাদুন্নবী হল নবীজির নূর মোবারকের সৃষ্টি থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত গোটা নূরানী হায়াতের বর্ণনার নাম।

তদুপরি মাহে রবিউল আউয়াল প্রিয়নবীর শুভাগমনের মাস হিসেবে এ মাসের সাথে ঈদে মিলাদুন্নবী [ﷺ]-এর সংশ্লিষ্টতা ও সম্পৃক্ততা বিদ্যমান। কোন কোন কুচক্রী মহল মিলাদুন্নবীর বিশাল আয়োজনকে সহ্য করতে না পেরে ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বরকতময় ঈদে মিলাদুন্নবী [ﷺ]’র নূরানী মাহফিল থেকে মুসলমানদের দূরে সরানোর অপচেষ্টা হিসেবে সিরাতুন্নবী মাহফিলের অবতারণা করেছে। তাদের উদ্দেশ্য হল নবী প্রেমিক মুমিনদের সাথে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর সাথে সংঘর্ষ ও বিরোধিতা করা এবং মিলাদুন্নবী [ﷺ]-এর প্রতি আঘাত ও কটূক্তি করা। যুগ যুগ ধরে বিশ্বের মুসলমানগণ রবিউল আওয়াল মাসে ঈদে মিলাদুন্নবী [ﷺ] নামে নবীজির শুভাগমনকে অতি ভক্তি-শ্রদ্ধার সাথে পালন করে আসছেন। এটাকে ইসলামী শরীয়তের ফকিহ-মুফতিগণ ‘বরকতময়’ ও ‘মুস্তাহাব’ হিসেবে ফতোয়া ও ফায়সালা প্রদান করেছেন। যা প্রকৃত ওলামায়ে কেরাম ও আউলিয়া কেরামের উত্তম তরিকা। তাছাড়া বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশে এ দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা দিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী[ﷺ]’কে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যাপন করছে। আর তার বিপরীত করা মিলাদুন্নবীকে অস্বীকার করার নামান্তর এবং নবী-বিদ্বেষী ও ফিতনাবাজ কুচক্রী মুনাফিকদের চরিত্র হিসেবে প্রতীয়মান।

।।।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান আলকাদেরী

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment