প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাটা এতো গভীর কবে থেকে যে হয়ে গেল, তাও বুঝে ওঠতে পারলাম না। অজান্তেই খুব নিজের করে নিয়েছি।
প্রকৃতি আমাকে বরাবরই বি-মোহিত করে। হৃদয়ের গতি-প্রকৃতিও কেমন যেন কাব্যিক হয়ে ওঠে। “প্রকৃতি-প্রেমী না হলে কবি হওয়া যায় না।” আমার মনে হয়। কতটুকু বাস্তব তা জানা নেই। কি যেন একটা খোঁজে পাই অসাধারণ এই সৃষ্টিতে! একটুখানি ভালোবাসা, অন্যরকম এক প্রশান্তির ছোঁয়া। মন খারাপের দিনে মুহুর্তেই মনটা ভালো হয়ে যায়। বোধহয় চোখের প্রশান্তিটাই, হৃদয়ের প্রশান্তি। প্রকৃতির এক এক রূপ, যেন মনে এক এক কল্পনার জন্ম দেয়। সবুজের সমারোহে কখন যে হারিয়ে যায় মন! সবুজ তো ভালোবাসা, সবুজ তো চোখের আর হৃদয়ের প্রশান্তি। সবুজ গুম্বাদে খাযরা, সবুজ মদীনা।
❝তাদের জন্য নিদর্শন একটি মৃতভূমি। আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি শস্য, তারা তা ভক্ষণ করে। আমি তাতে উৎপন্ন করি খেজুর এবং প্রবাহিত করি ঝরনাধারা, যাতে তারা ফল খায়।❞ [সূরা ইয়াসিন: ৩৩]
সেদিনকার বিকেলেরই কথা। শরতের গোধূলি। কাশফুলের সান্নিধ্যে সময় কাটাচ্ছে প্রকৃতি-প্রেমীরা। আমার সে সুযোগটা হয়ে ওঠে নি। তবে বাইকের পিছনের সিটে বসেও খুব একটা কম উপভোগ করি নি। “আসলে অনুভব করতে হয় ভিতর থেকে। তাহলে ছোট-ছোট বিষয়গুলোও আনন্দ দেয় প্রচুর।”
যেখানটায় ছিলাম। শরতের গোধূলি। সূয্যিমামা কতো-শত রঙের খেলা দেখাচ্ছে আকাশে। মৃদু কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ। সবুজ ঘাসগুলোতে শিশিরের কণাও বোধহয় জমেছে। রেল-লাইনে সুদূর পর্যন্ত চোখ গেল। মূহুর্তেই কতো-শত চিত্র এঁকে নিয়েছি কল্পনার জগতে। শরতের এই গোধূলিতে রেললাইন ধরে হাঁটার স্বপ্ন। অথবা কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে! “কল্পনা; সে-তো আমার এক নিজস্ব অনুপ্রেরণার জগৎ!”
কতো স্বপ্ন, কতো পরিকল্পনা। আল্লাহ যেন নেক মাকসাদ কবুল করেন। কোন বোকা যেন বলে কেনো যে জন্মালাম! অবাক তো; এ কেমন কথা? এ জন্মানোটা বৃথা নয়। রব অনেক দয়া করেছেন। অনেক বেশি দয়া করেছেন। এগুলো তো বান্দার অবসরকে আনন্দঘন করার জন্যই সৃষ্টি।
❝এবং আপন রবের নি’য়ামতের খুব চর্চা করুন।❞ [সূরা আদ-দুহা: ১১]
« প্রকৃতি; এক অদৃশ্য ভালোবাসার বাঁধন »
~স্বাধীন আহমেদ