পীর-মুরীদ কাকে বলে

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

 পীর-মুরীদ কাকে বলে?
পীর শব্দটি ফার্সি। আরবীতে বলা হয় মুরশীদ। মুরশীদ শব্দের অর্থ হল পথপ্রদর্শক। যিনি আল্লাহর আদেশ নিষেধ আল্লাহ তাআলা যেভাবে চান সেভাবে পালন করার প্রশিক্ষণ দেন তার নাম মুরশীদ বা পথপ্রদর্শক। যাকে ফার্সীতে বলে পীর।
“মুরীদ” শব্দটিও আরবী। যার অর্থ হল ইচ্ছাপোষণকারী। যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ নিষেধ আল্লাহ তাআলা যেভাবে চান সেভাবে পালন করার ইচ্ছা পোষণ করে কোন বুযুর্গ ব্যক্তির হাত ধরে শপথ করে সে ব্যক্তির নাম হল “মুরীদ”।
এব্যাখ্যা থেকে একথা স্পষ্ট হল যে, পীর হবেন শরীয়তের আদেশ নিষেধ পালন করার প্রশিক্ষণদাতা। আর যিনি সে প্রশিক্ষণ নিতে চায় সে শিক্ষার্থীর নাম হল “মুরীদ”।
সুতরাং যে ব্যক্তি নিজেই শরীয়তের বিধান মানে না, নামায পড়ে না, পর্দা করে না, সতর ঢেকে রাখে না বা শরীয়তের আবশ্যকীয় কোন বিধান পালন করে না, সে ব্যক্তি কিছুতেই পীর তথা মুর্শীদ হতে পারে না। কারণ তার নিজের মাঝেই যখন শরীয়ত নেই, সে কিভাবে অন্যকে শরীয়তের উপর আমল করা প্রশিক্ষণ দিবে? নিজেইতো প্রশিক্ষিত নয়।
আর পীর মুরীদির এ পদ্ধতি রাসূল (সাঃ) থেকে চলে আসছে। রাসূল (সাঃ) সাহাবাদের আল্লাহমুখী হওয়ার প্রশিক্ষণ দিতেন। সাহাবারা রাসূল (সাঃ) এর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতেন। বলা যায় রাসূল (সাঃ) হলেন সবচেয়ে প্রথম ও বড় পীর, ও সাহাবায়ে কিরাম হলেন প্রথম মুরীদ।
# কুরআন হাদীসে পীর মুরিদীর প্রমাণঃ-
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ
অনুবাদ-হে মুমিনরা! আল্লাহকে ভয় কর, আর সৎকর্মপরায়নশীলদেরসাথে থাক। {সূরা তাওবা-১১৯)
এ আয়াতে কারীমায় সুষ্পষ্টভাবে বুযুর্গদের সাহচর্যে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
অনুবাদ- আমাদের সরল সঠিক পথ [সীরাতে মুস্তাকিম] দেখাও। তোমার নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দাদের পথ। {সূরা ফাতিহা-৬,৭}
সূরায়ে ফাতিহায় মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর নিয়ামাতপ্রাপ্ত বান্দারা যে পথে চলেছেন সেটাকে সাব্যস্ত করেছেন সীরাতে মুস্তাকিম।
আর তার নিয়ামত প্রাপ্ত বান্দা হলেন-
الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ
অনুবাদ-যাদের উপর আল্লাহ তাআলা নিয়ামত দিয়েছেন, তারা হল নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ, ও নেককার বান্দাগণ। {সূরা নিসা-৬৯}
এ দু’আয়াত একথাই প্রমাণ করছে যে, নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দা হলেন নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ, আর নেককারগণ, আর তাদের পথই সরল সঠিক তথা সীরাতে মুস্তাকিম। অর্থাৎ তাদের অনুসরণ করলেই সীরাতে মুস্তাকিমের উপর চলা হয়ে যাবে।
যেহেতু আমরা নবী দেখিনি, দেখিনি সিদ্দীকগণও, দেখিনি শহীদদের। তাই আমাদের সাধারণ মানুষদের কুরআন সুন্নাহ থেকে বের করে সীরাতে মুস্তাকিমের উপর চলার চেয়ে একজন পূর্ণ শরীয়তপন্থী হক্কানী বুযুর্গের অনুসরণ করার দ্বারা সীরাতে মুস্তাকিমের উপর চলাটা হবে সবচেয়ে সহজ। আর একজন শরীয়ত সম্পর্কে প্রাজ্ঞ আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তির সাহচর্য গ্রহণ করার নামই হল পীর মুরিদী।
রাসূলে কারীম (সাঃ) একাধিক স্থানে নেককার ব্যক্তিদের সাহচর্য গ্রহণ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। যেমন-
عن أبي موسى رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( مثل الجليس الصالح والسوء كحامل المسك ونافخ الكير فحامل المسك إما أن يحذيك وإما أن تبتاع منه وإما أن تجد منه ريحا طيبة ونافخ الكير إما أن يحرق ثيابك وإما أن تجد ريحا خبيثة )
অনুবাদ- হযরত আবু মুসা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন-সৎসঙ্গ আর অসৎ সঙ্গের উদাহরণ হচ্ছে মেশক বহনকারী আর আগুনের পাত্রে ফুঁকদানকারীর মত। মেশক বহনকারী হয় তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তুমি নিজে কিছু খরীদ করবে। আর যে ব্যক্তি আগুনের পাত্রে ফুঁক দেয় সে হয়তো তোমার কাপড় জ্বালিয়ে দিবে, অথবা ধোঁয়ার গন্ধ ছাড়া তুমি আর কিছুই পাবে না।
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫২১৪, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬৮৬০, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৩১৯০, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৮৩১, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৬১, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৪২৯৫, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯৬৬০, মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-৭৭০, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-২৬২২, মুসনাদুশ শিহাব, হাদীস নং-১৩৭৭, মুসনাদে তায়ালিসী, হাদীস নং-৫১৫}
এছাড়াও অনেক হাদীস নেককার ও বুযুর্গ ব্যক্তিদের সাহচর্য গ্রহণের প্রতি তাগিদ বহন করে। আর সবচে’ বড় কথা হল-বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই দ্বীন বিমুখ। যারাও দ্বীনমুখী, তাদের অধিকাংশই কুরআন হাদীসের আরবী ইবারতই সঠিকভাবে পড়তে জানে না, এর অর্থ জানবেতো দূরে থাক। আর যারাও বাংলা বা অনুবাদ পড়ে বুঝে, তাদের অধিকাংশই আয়াত বা হাদীসের পূর্বাপর হুকুম, বা এ বিধানের প্রেক্ষাপট, বিধানটি কোন সময়ের জন্য, কাদের জন্য ইত্যাদী বিষয়ে সম্যক অবহিত হতে পারে না। তাই বর্তমান সময়ে একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে কুরআন সুন্নাহ থেকে নিজে বের করে আল্লাহ তাআলার উদ্দিষ্ট সীরাতে মুস্তাকিমে চলা বান্দার জন্য কষ্টসাধ্য। তাই আল্লাহ তাআলা সহজ পথ বাতলে দিলেন একজন বুযুর্গের পথ অনুসরণ করবে, তো সীরাতে মুস্তাকিমেরই অনুসরণ হয়ে যাবে।
কিন্তু কথা হচ্ছে যার অনুসরণ করা হবে সে অবশ্যই সীরাতে মুস্তাকিমের পথিক হতে হবে। অর্থাৎ লোকটি {মুরশীদ বা পীর} এর মাঝে থাকতে হবে শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ। বাহ্যিক গোনাহ থেকে হতে হবে মুক্ত। কুরআন সুন্নাহ সম্পর্কে হতে হবে প্রাজ্ঞ। রাসূল সাঃ এর সুন্নাতের উপর হতে হবে অবিচল। এমন গুনের অধিকারী কোন ব্যক্তি যদি পাওয়া যায়, তাহলে তার কাছে গিয়ে তার কথা মত দ্বীনে শরীয়ত মানার নামই হল পীর মুরিদী। এরই নির্দেশ আল্লাহ তাআলা কুরআনে দিয়েছেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ
অনুবাদ-হে মুমিনরা! আল্লাহকে ভয় কর, আর সৎকর্মপরায়নশীলদেরসাথে থাক। {সূরা তাওবা-১১৯)
# • বাইয়াত: —-
“বাইয়াত” শব্দের উৎপত্তি হয়েছে, “বাইয়ুন” শব্দ থেকে।“বাইয়ুন” শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে “ক্রয়-বিক্রয়”
এখানে এই “ক্রয়-বিক্রয়” মানে হচ্ছে আমার আমিত্বকে আল্লাহর রাহে রাসূলের নিকট গিয়ে কোরবান করে দিলাম,বিলিন করে দিলাম,বিক্রি করে দিলাম। আমার আমিত্ব, আমার যত অহংকার আছে, অহমিকা আছে, আমি আমি যত ভাব আছে সমস্তকিছু আল্লাহর রাসুলের কাছে গিয়ে আল্লাহর রাহে সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গ করে দেয়া, কোরবান করে দেয়া , বিক্রি করে দেয়া এবং পক্ষান্তরে রাসূলের(সঃ) কাছ থেকে কোরআন সুন্না ভিত্তিক জীবন ব্যবস্থা খরিদ করে, সমস্ত উপাসনার মালিক আল্লাহ, সেজদার মালিক আল্লাহ, কুল্লু মুকলুকাতের মালিক আল্লাহ, এই দৃঢ় ঈমানে ঈমানদার হয়ে যাওয়া, এটাকেই বলা হয় বাইয়াত বা “ক্রয়-বিক্রয়” ।
# নিশ্চয় আল্লাহ খরিদ করে নিয়েছেন মুমিনদের থেকে তাদের জ্ঞান ও তাদের মাল এর বিনিময়ে যে, অবশ্যই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর পথে, কখনও হত্যা করে এবং কখনও নিহত হয়। তাওরাত ও কুরআনে এ সম্পর্কে সত্য ওয়াদা রয়েছে। আল্লাহর চাইতে নিজের ওয়াদা অধিক পালনকারী আর কে আছে? সুতরাং তোমরা আনন্দ কর তোমাদের সে সওদার জন্য যা তোমরা তাঁর সাথে করেছ। আর তা হল বিরাট সাফল্য।
# হে রাসূল! যেসব লোক আপনার নিকট বাইয়াত হচ্ছিল, তারা আসলে আল্লাহর নিকটই বাইয়াত হচ্ছিল। তাদের হাতের উপর আল্লাহর কৃদরতের হাত ছিল।
হে রাসূল! আল্লাহ মুমিনদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নীচে আপনার নিকট বাইয়াত হচ্ছিল। (সূরা ফাতহ : ১৮) # আল্লাহর পথে লড়াই করা উচিত তাদের যারা দুনিয়ার জীবনকে বিক্রি করে দেয় আখিরাতের বিনিময়ে। আর যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয় অথবা গাজী হয় উভয়কে আমি সীমাহীন প্রতিবাদ দেবো। (সূরা নিসা : ৭৪)
# যে ব্যক্তি তার ওয়াদা (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ করবে এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করবে, সে আল্লাহ পাকের প্রিয়জন হবে। আর নিশ্চিতভাবে আল্লাহ পাক মুত্তাকীদের ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরান : ৭৬)
o إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ
আল কোরআন, সূরা আল ফাতহ, আয়াত নং ১০।
অর্থাৎঃ হে রাসূল (সঃ), নিশ্চয় যারা আপনার নিকট বাইয়াত হওয়ার জন্য আসে (মুরিদ হওয়ার জন্য আসে),তাঁদেরকে আপনি বাইয়াত দান করুন
** অর্থাৎ যারা কামিল মুর্শিদ-এর নিকট বাইয়াত হয়না তারা পথভ্রষ্ট। কারণ তখন তাদের পথ প্রদর্শক হয় শয়তান। তাই সুলত্বানুল আরিফীন হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহিআলাইহিসহ আরো অনেকেই বলেন যে, যার কোনো পীর বা মুর্শিদ নেই তার মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক হলো শয়তান। (ক্বওলুল জামীল, নূরুন আলা নূর, তাছাউফ তত্ত্ব)
@ @বাইয়াত গ্রহণ না করে মৃত্যুবরণ করার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি::
►হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রদিআল্লাহু তায়া’লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, “যে ব্যক্তি আনুগত্য থেকে হাত সরিয়ে নেয় সে ব্যক্তি ক্বিয়ামতের দিন দলীল বিহীন অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে । আর যে ব্যক্তি বাইয়াত গ্রহণ করা ব্যতীত মৃত্যুবরণ করল, সে ব্যক্তি জাহিলী যুগের ন্যায় মৃত্যুবরণ করল ।“ (মুসলিমঃ হাদীস নং- ৪৮৯৯, ত্বাবরানী শরীফ)
►হযরত ইবনু উমার রদিআল্লাহু তায়া’লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ “যে ব্যক্তি যমানার ইমাম (হক্কানী শায়খ) ব্যতীত ইন্তেকাল করল সে জাহিলিয়াতের ইন্তেকাল করল । আর যে ব্যক্তি শায়খের আনুগত্য থেকে হাত সরিয়ে নিবে সে দলীল বিহীন অবস্থায় ক্বিয়ামতের দিন আগমন করবে ।“ (আবু দাউদ আত্তায়ালিসীঃ হাদীস নং- ১৯১৩, আবু নুয়াইম, জামিউল আহাদীস)
## বাইয়াত এর ব্যাখ্যা ও গুরুত্ব
সুরা তওবার ১১১ নং আয়াতে আল্লাহ পাক ঘোষনা করেছেন যে, মুমিনের জান-মাল বেহেস্তের বিনিময়ে খরিদ করে নিয়েছেন। আর মালের মালিক যদি নিজ ইচ্ছায় মাল বিক্রয় না করে তবে তার মাল কেহ ক্রয় করতে পারে না। অর্থাৎ যে সকল মুমিন নিজ ইচ্ছায় জান-মাল বিক্রয় করতে ইচ্ছুক আল্লাহ তাদের কাছ থেকেই জান-মাল ক্রয় করতে ইচ্ছুক। আর যারাই জান-মাল বিক্রয় করবে তারাই সত্যিকারের মুমিন। যেহুত বেহেশত দুনিয়ার জীবনে পাওয়া সম্ভব নয় তাই বেহেশতের বিনিময়ে ক্রয় করা জান ও মাল আল্লাহ সাথে সাথে নিয়েও নেন না।
উপমা স্বরূপ বলা যায় আপনি হাট বা বাজার হতে মাল ক্রয় করলেন এই শর্তে যে, মাল বাড়ী পর্যন্ত পৌছে দিলেই মালেন মালিক বিনিময় মূল্য বুঝে পাবে।
তদ্রুপ মুমিন যখন তার জান-মাল আল্লাহর নিকট বিক্রয় করার শপথ দেয় তখন আল্লাহ মুমিনের জান-মাল এই শর্তে ক্রয় করে যে, তার বাকী জীবন আল্লাহর মর্জি মতো পথে পরিচালিত করবে। আর যে সকল মুমিন আল্লাহর মর্জি মত জীবন পরিচালনা করতে পারে তারাই মৃত্যুর পরপারে বেহেশত পেতে পারে অন্যথায় নয়।
তাই তো সাহাবায়ে কেরাম রাসূল সাঃ এর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেছেন। আর রাসূল সাঃ দুনিয়া হতে চলে যাওয়ার পর সাহাবয়ে কেরাম মুসলিম জামায়াতের আমীর হযরত আবূবক্কর রাঃ এর নিকট আবার বাইয়াত গ্রহণ করেন। এর ধারা বাহিকতায় সাহাবয়ে কেরাম খলিফাগণের নিকট বাইয়াত গ্রহণ করতেn
পরবর্তীতে সাহাবায়েকেরামদের মধ্যে বিশেষ করে বেলায়তের সম্রাট হযরত আলী (রাঃ) এর হাত মোবারকে বায়াত গ্রহণ করে অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ মুসলমান হিসেবে দাবিদার হয়েছেন। তাঁহাদেরকে তাবেয়ীন বলা হয়। এরকম অসংখ্য তাবেয়ীন এবং হযরত আওলাদে রাসূল (সঃ) হযরত ইমাম হাসান (রাঃ), হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ), হযরত ইমাম জয়নাল আবেদিন (রাঃ), হযরত ইমাম বাকের (রাঃ), হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রাঃ), হযরত ইমাম কাজেম (রাঃ), হযরত ইমাম আলী রেজা (রাঃ) সমেত অসংখ্য তাবেয়ীনদের হাতে বাইয়াত(মুরীদ) হওয়ার মাধ্যমেই সারা বিশ্বজাহানে ইসলাম প্রচার হয়েছে, প্রসার হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা বিশ্বনন্দিত মাজহাবের ইমাম হযরত আবু হানিফা (রাঃ)কে পেয়েছি। আওলাদে রাসূলদের পক্ষ হতে হযরত হাসান বসরী (রাহঃ), হযরত জুনায়েদ বোগদাদী (রাহঃ), হযরত আবু সায়ীদ মাখজুমি(রাহঃ), হযরত জুননুন মিছরি (রাহঃ),পীরানে পীর দস্তগির হযরত গাউসুল আজম আব্দুল কাদের জিলানী (রাহঃ), হযরত গাউসুল আজম খাজা মুইনুদ্দিন চিশতী (রাহঃ), হযরত ফরিদ উদ্দিন আকতার (রাহঃ), হযরত ইমাম গাজ্জালী (রাহঃ), হযরত জালাল উদ্দিন রুমি (রাহঃ),হযরত শামস তাবরীজ (রাহঃ), হযরত ফখরুদ্দিন রাজি (রাহঃ),হযরত ইমাম জালাল উদ্দিন সূয়ুতি (রাহঃ), হযরত শাহ জালাল (রাহঃ), হযরত শাহ পরান (রাহঃ), হযরত শাহ মাগদুম (রাহঃ), হযরত শাহ আলী বোগদাদী (রাহঃ), হযরত আমানত শাহ (রাহঃ), হযরত বদর শাহ (রাহঃ) সমেত অসংখ্য আউলিয়ায়ে কামেলিন (রাহঃ) গণ এবং বেলায়তে শেষ প্রান্তে এসে ইসলামের এবং বেলায়তের ধারক ও বাহক হযরত গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী(রাহঃ), এরা প্রত্যেকেই ইসলাম কোরআন, হাদিস, ইজমা, কিয়াস, শরীয়ত, তরিকত , মারফত ও হাকিকতের মাধ্যমে এপৃথিবীতে ইসলাম প্রচার করেছেন। অতএব আপনারা (যারা অলি আউলিয়া, পীর মুর্শিদ অস্বীকারকারী) কি করে ঢালাও ভাবে পীর মুরিদকে অস্বীকার করে
## কামেল পীরের বৈশিষ্ট্য:————————-
(১) যিনি কামেল মোকাম্মেল পীর হবেন, হাদিস, তফছির, ফিকাহ ইত্যাদিতে তাহার জ্ঞান থাকিবে। কমপক্ষে শরীয়তের বিধান সমূহ ভাল রুপে জানা থাকিবে।
(২ )শরীয়তের আদেশ নিষেধ পালন ও তদনুযায়ী কাজ করিবেন। শরীয়ত বিরুদ্দ কাজ হইতে দূরে থাকিবেন। খোদাকে ভয়কারি লোক ও পরহেজগার হইবেন।
(৩) কামেল বা মোকাম্মেল পীরের ভিতর এই তিনটি গুন থাকা একান্ত অবশ্যক – পীরের নিকট হতে ছবক সমূহ আয়ত্ত করা, ফায়েজ হাছিল করা ও মুরিদ দিগকে ফায়েজ পোঁছানোর ক্ষমতা থাকা।
(৪) যিনি কামের হইবেন তিনি লোভ শুন্য হইবেন। কেননা লোভী ব্যক্তি কখনো ফকির হইতে পারেন না।
(৫) কত্তলুল জামিল কিতাবে আছে, কামেল পীর হলে বার মাস রোজা রাখিতে হইবে, স্ত্রি হইতে দূরে থাকিতে হইবে, খানা খাইবেনা ও জঙ্গলবাসী হইতে হইবে এই সব শর্ত নহে।
(৬) রসুলুল্লাহ (দঃ) এর জামানায় যেমন অজদ, গোলবা, ছকুর ও বেখুদী ইত্যাদি নানা প্রকার জজবা ছিল, কামেল পীরের মুরিদানের মধ্যেও রসুলুল্লাহ (দঃ) এর জামানার ন্যায় মাঝে মাঝে দুই এক জনের ঐ হালাত হইবে। কেন না আওলিয়াগন রসুলুল্লাহ (দঃ) এর গুন পাইয়া থাকেন। কল পীর আউলিয়াদের মর্যাদার উপর “সকল পীর ভণ্ড, পীরের প্রয়োজন নাই”(নাউজুবিল্লা) বলে আঘাত এনেছেন!!!
## এজাজতনামা :
এজাজত এর অর্থ অনুমতি /সন্মতি ইত্যাদি এজাজতনামা অথ: অনুমতিপত্র
নবীজি(দ:) প্রথম সাহাবীদের বাইয়াত করেন যেটি আকাবার শফত নামে আমরা জানি , পরবতীতে এটি খোলফায়ে রাশেদীন ,তবেয়ী (ইমাম হাসান বসরী র ) তাবে তাবেয়ীন (জোনায়েদ বাগদাদী র:) মাধ্যমে আব্দুল কাদের জিলানী (র:) …….. আসতে থাকে ,এটির একটি লিখিত permission আছে ,এটিকে “এজাজত নামা )বলে ,সুতারং যেই কেহ পীর হতে পারে না , যে তার পূর্বসুরী থেকে অনুমতি পাইছে সেই কেবল পীর ,এবং উনি কেবল বায়েত করাইতে পারবেন।
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ), হযরত ওমর ফারুক (রাঃ), হযরত উসমান (রাঃ),হযরত আলী (রাঃ), হযরত সালমান ফারসি (রাঃ), হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ), হযরত আবু জহর গেফারী (রাঃ), হযরত বিল্লাল ফারসি (রাঃ), হযরত মা খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ), হযরত মা আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ),হযরত মা ফাতিমা (রাঃ), সমেত অসংখ্য সাহাবায়েকেরাম বায়াত বা মুরিদের মাধ্যমে রাসূল পাক (সঃ) এর নূরি কদম শরীফে জীবন উৎসর্গ করে সাহাবায়েকেরাম এর মর্যাদা লাভ করেন।
পরবর্তীতে সাহাবায়েকেরামদের মধ্যে বিশেষ করে বেলায়তের সম্রাট হযরত আলী (রাঃ) এর হাত মোবারকে বায়াত গ্রহণ করে অসংখ্য ব্যক্তিবর্গ মুসলমান হিসেবে দাবিদার হয়েছেন। তাঁহাদেরকে তাবেয়ীন বলা হয়।
এরকম অসংখ্য তাবেয়ীন এবং হযরত আওলাদে রাসূল (সঃ) হযরত ইমাম হাসান (রাঃ), হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ), হযরত ইমাম জয়নাল আবেদিন (রাঃ), হযরত ইমাম বাকের (রাঃ), হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রাঃ), হযরত ইমাম কাজেম (রাঃ), হযরত ইমাম আলী রেজা (রাঃ) সমেত অসংখ্য তাবেয়ীনদের হাতে বাইয়াত(মুরীদ) হওয়ার মাধ্যমেই সারা বিশ্বজাহানে ইসলাম প্রচার হয়েছে, প্রসার হয়েছে।
যার ফলশ্রুতিতে আমরা বিশ্বনন্দিত মাজহাবের ইমাম হযরত আবু হানিফা (রাঃ)কে পেয়েছি। আওলাদে রাসূলদের পক্ষ হতে হযরত হাসান বসরী (রাহঃ), হযরত জুনায়েদ বোগদাদী (রাহঃ), হযরত আবু সায়ীদ মাখজুমি(রাহঃ), হযরত জুননুন মিছরি (রাহঃ),পীরানে পীর দস্তগির হযরত গাউসুল আজম আব্দুল কাদের জিলানী (রাহঃ), হযরত গাউসুল আজম খাজা মুইনুদ্দিন চিশতী (রাহঃ), হযরত ফরিদ উদ্দিন আকতার (রাহঃ), হযরত ইমাম গাজ্জালী (রাহঃ), হযরত জালাল উদ্দিন রুমি (রাহঃ),হযরত শামস তাবরীজ (রাহঃ), হযরত ফখরুদ্দিন রাজি (রাহঃ),হযরত ইমাম জালাল উদ্দিন সূয়ুতি (রাহঃ), হযরত শাহ জালাল (রাহঃ), হযরত শাহ পরান (রাহঃ), হযরত শাহ মাগদুম (রাহঃ), হযরত শাহ আলী বোগদাদী (রাহঃ), হযরত আমানত শাহ (রাহঃ), হযরত বদর শাহ (রাহঃ) সমেত অসংখ্য আউলিয়ায়ে কামেলিন (রাহঃ) গণ এবং বেলায়তে শেষ প্রান্তে এসে ইসলামের এবং বেলায়তের ধারক ও বাহক হযরত গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী(রাহঃ), এরা প্রত্যেকেই ইসলাম কোরআন, হাদিস, ইজমা, কিয়াস, শরীয়ত, তরিকত , মারফত ও হাকিকতের মাধ্যমে এপৃথিবীতে ইসলাম প্রচার করেছেন। অতএব আপনারা (যারা অলি আউলিয়া, পীর মুর্শিদ অস্বীকারকারী) কি করে ঢালাও ভাবে পীর মুরিদকে অস্বীকার করে সকল পীর আউলিয়াদের মর্যাদার উপর “সকল পীর ভণ্ড, পীরের প্রয়োজন নাই”(নাউজুবিল্লা) বলে আঘাত এনেছেন!!!
প্রস্নঃ পীর ধরতে হবে এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন শরীফে কোন নির্দেশ আছে কিনা
ঊত্তরঃ হ্যাঁ পীর ধরতে হবে, এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন পাকে বহু নির্দেশ আছে । তবে পীর শব্দটি পবিত্র কোরআন পাকে নেই । কারন পীর শব্দটি ফার্সি ভাষা হতে বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে । যেমনঃ নামাজ, রোজা, ফিরিস্তা, খোদা,
ইত্যাদি শব্দগুলো কোরআন শরীফে-এ নেই । কারন উহা ফার্সি শব্দ , তবে এর প্রতিটি ফার্সি শব্দেরই প্রতিশব্দ কোরআন শরীফ আছে, যেমনঃ নামাজ- সালাত, রোজা- সাওম, ফিরিশ্তা-মালাকুন ইত্যাদি । আবার সালাত আরবি শব্দটি স্থান বিশেষ বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয় । অনুরূপভাবে পীর ফার্সি শব্দের প্রতিশব্দ পবিত্র কোরআন শরীফের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন শব্দে প্রকাশ করেছেন, যথাঃ ‘অলি’ বহুবচনে আউলিয়া, মুর্শিদ, ইমাম, বহুবচনে আইম্মা, হাদি, ছিদ্দিকিন, ইত্যাদি । নিম্নে কিছু আয়াত শরিফের অর্থ পেশ করা হলঃ
১) হে মুমিনগণ!
তোমরা অনুস্মরণ কর, আল্লাহ্ পাক এর, তাঁর রাসুল পাক (সাঃ) এর এবং তোমাদের মধ্যে যারা ধর্মীয় নেতা ।
(সুরাঃ নিসা, আয়াতঃ ৫৯) ।
২) স্মরণ কর! সেই দিনকে যেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাঁদের (ইমাম) নেতা সহ আহ্বান করব ।
(বনি ইসরাইল, আয়াতঃ ৭১ )।
৩) মুমিন পুরুষ ও মুমিনা মেয়েলোকের ভিতর হতে কতেক কতেকের বন্ধু ।
(সুরাঃ তাওবাহ, আয়াতঃ ৭১) ।
৪) তোমাদের মধ্যে এমন একদল লোক যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে ।
(সুরাঃ আল-ইমরান, আয়াতঃ ৭১) ।
৫) অনুস্মরণ কর তাঁদের যারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাহে না, এবং যারা সৎ পথ প্রাপ্ত ।
(সুরাঃ ইমায়িন, আয়াতঃ ২১) ।
৬) যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তাঁর পথ অনুস্মরণ কর
সুরাঃ লোকমান, আয়াতঃ ১৫।
৭) জিকির সম্বন্ধে তোমাদের জানা না থাকলে জিনি জানেন তাঁর নিকট হতে জেনে নাও ।
(সুরাঃ আম্বিয়া, আয়াতঃ ৭)।
৮) হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং (ছাদেকিন) সত্যবাদী গণের সঙ্গী হয়ে যাও ।
(সুরাঃ তাওবাহ, আয়াতঃ ১১৯) ।
৯) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাকের রহমত (মুহসিনিন) আউলিয়া কিরামগনের নিকটবর্তী ।
(সুরাঃ আরাফ, আয়াতঃ ৫৬) ।
১০) আল্লাহ্ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, সে সৎপথ প্রাপ্ত হয় এবং তিনি (আল্লাহ্) যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনো তাঁর জন্য কোন পথপ্রদর্শনকারী (অলি-মুরশিদ) পাবে না ।
(সুরাঃ কাহাফ, আয়াতঃ ১৭) ।
১১) সাবধান! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অলিগণের কোন ভয় নেই, এবং তারা কোন বিষয় এ চিন্তিতও নহে । তাঁদের জন্য আছে সুসংবাদ দুনিয়া ও আখেরাতে, আল্লাহ্র কথার কোন পরিবর্তন হয় না, উহাই মহা সাফল্য ।
(সুরাঃ ইউনুছ, আয়াতঃ ৬২-৬৪) ।
১২) হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর, এবং তাকে পাবার জন্য (নৈকট্য লাভের) অছিলা তালাশ কর । –
(সুরাঃ মায়েদা, আয়াতঃ ৩৫) ।
হে আল্লাহ আমাদের্কে সত্ত ও সঠিক জানা ও বুজার তৌফিক দান করুন এবং কামেল পীরের মুরিদ হয়ার তৌফিক দান করুন। আমাদের মদ্দে যারা পীর মুর্শিদের মান সম্মান বুজে না তাদের্কে হেদায়েত কর তুমার হেদায়েত জদি না মানে তবে তুমার গায়েবি শক্তি ধারা তুমি তাদের্কে ধংস করে দাও। আমীন ইয়া রাব্বুল
শরীয়তের দৃষ্টিতে পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্যই হক্বানী-রব্বানী শায়খ বা মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ফরযে আইন:…..
শরীয়তের দৃষ্টিতে পুরুষ-মহিলা উভয়ের জন্যই হক্বানী-রব্বানী শায়খ বা মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ফরযে আইন
কোনো জাহিল বলে থাকে যে, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ পড়লেই হয়; হক্কানী রব্বানী শায়খ বা মুর্শিদ উনাদের নিকট বাইয়াত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। মূলত তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণরূপেই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ। কেননা, হক্কানী-রব্বানী শায়খ বা মুর্শিদ উনাদের নিকট বাইয়াত হওয়া ফরয। এটা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ দ্বারাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত।
বায়হাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, তালীকুছ ছবীহ, শরহুত ত্বীবী, মোযাহেরে হক্ব, আশয়াতুল লুময়াত’ইত্যাদি কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ করেন, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জরুরত আন্দাজ) ইলম অর্জন করা ফরয।
দারিমী, তারগীব ওয়াত তারহীব, তারীখ, আব্দুল বার, দাইলামী, বায়হাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব ইত্যাদি কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ইলম দু’প্রকার- (১) ক্বলবী ইলম অর্থাৎ ইলমে তাছাউফ। আর এটাই মূলত উপকারী ইলম। (২) যবানী ইলম অর্থাৎ ইলমে ফিক্বাহ, যা আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে বান্দার জন্য দলীল।
এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, ইলমে তাছাউফ অর্জন করার মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ করত হুযূরী ক্বলব হাছিল করা তথা অন্ততপক্ষে বিলায়েতে আম হাছিল করা ফরয। এ ফরয ততোক্ষণ পর্যন্ত আদায় করা সম্ভব হবেনা, যতোক্ষণ পর্যন্ত একজন কামিল মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত না হবে। তাই বাইয়াত গ্রহণ করাও ফরয। এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ আছে যে, যে কাজ বা আমল ব্যতীতফরযসমূহ আদায় করা সম্ভব হয়না, উক্ত ফরযগুলোকে আদায় করার জন্য সে কাজ বা আমল করাও ফরয।”
হানাফী মাযহাবের মশহুর ফিক্বাহর কিতাব দুররুল মুখতারে” উল্লেখ আছে, যে আমল ব্যতীত কোন ফরয পূর্ণ হয়না; উক্ত ফরয পূর্ণ করার জন্য ওই আমল করাটাও ফরয।”
উল্লিখিত উছুলের ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবে এটিই প্রমাণিত হয় যে, ফরয পরিমাণ ইলমে তাছাউফ যেহেতু অর্জন করা ফরয, আর তা যেহেতু কামিল মুর্শিদ বা পীর ছাহেব উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ব্যতীত অর্জন করা সম্ভব নয়, সেহেতু একজন কামিল মুর্শিদ অর্থাৎ যিনি সর্বদা আল্লাহ পাক উনার যিকিরে মশগুল, উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করাও ফরয।
“হক্বানী ওলীআল্লাহগণের ছোহবতে যাওয়া এবং উনাদের কাছে বাইয়াত হয়ে উনাদের ক্বলবের বরকতময় নূর দ্বারা নিজ ক্বলবকে নূরানী করা এবং উনাদের মাধ্যমে ফয়েজে ইত্তেহাদী হাছিল করে আল্লাহ পাক ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনাদের সন্তুষ্টি হাছিল করা ফরযে আইন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেরূপ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment