ওফাতের পর রাসুলাল্লাহ (সা) এর হাত মোবারক প্রকাশ পাওয়া ও ২ জন অলী ওনার হাত মুবারক চুম্বনের সৌভাগ্য অর্জন :
→ হযরত গাউসুল আজম বড়পীর আব্দুল কাদির জীলানী পীরানে পীর দস্তগীর (রহ) [৪৭০-৫৬১] –
একদা হুজুর সাইয়্যিদুনা গাঊসুল আজম (রহমতুল্লাহি আলাইহি) রওজা শরীফে উপস্থিত দুটি কবিতা আবৃত্তি করলেন। তখন নুরে মুজাসসাম রাসুলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বরকতময় হাত মোবারক প্রকাশ পেল। হুজুর গাউসুল আজম (রহ) মুসাফাহ করলেন ও চুম্বন করলেন এবং স্বীয় মাথার উপরে রাখলেন।
রেফারেন্স :
★ আরবুলী (রহ) : তাফরীহুল খাতির ফী মানাকিব ই আশ-শাঈখ আবদিল কাদির পৃ: ৫৬-৫৭
★ আ’লা হয়রত ইমাম আহমদ রেজা খান বেরলভী (রহ) ওনার : গাউসুল আজম ও গাউসিয়াত পৃ: ১৯
→ বিখ্যাত অলী হযরত আহম্মদ কবীর রিফাঈ (রহ) [৫২২-৫৭৮ হি] –
হযরত সায়্যিদ আহমদ কবীর রিফাঈ (রহমতুল্লাহি আলাইহি) রওজা শরীফের সম্মুখে দাঁড়িয়ে এ কবিতা পংতি আবৃত্তি করলেন,
‘ ফি হালাতিল বু’দি রুহী কুন্তু উ’রসিলুহা’
তখন রৌজা মোবারক থেকে হুজুর নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওনার বরকতময় হাত মোবারক বের হলো । তিনি তা চুম্বন করলেন।
রেফারেন্স :
★ হাফিজুল হাদিস জগতবিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতি (রহ) : আল-হায়ী লিল- ফতোয়া : খন্ড ২ পৃ ৪৮
কবিতাটি হল :
“` হে প্রিয় রাসুল (সা)! দুরে অবস্থানকালে তো স্বীয় রুহকে রওজা মোবারকে পাঠিয়ে দিতাম, যেন আপনার কদমে চুম্বন করে যায়। এখন তো আমি সশরীরে আপনার মহান দরবারে উপস্থিত হয়েছি, সুতরাং আপনার বরকতময় হাত বাড়িয়ে দিন,
যেন আমার ওষ্ঠ (ঠোট) তা চুম্বনের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে।
★ ইবনে কাসীর রহ. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে আবিদ দুনিয়ার সূত্রে ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। ইবনে আবিদ দুনিয়া রহ. নিজ সনদে বর্ণনা করেন, রবীয়া ইবনে কুলসুম জনৈক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেছেন, উক্ত ব্যক্তির এক বৃদ্ধা প্রতিবেশী ছিল। তিনি অন্ধ ও কিছুটা বধির ছিলেন। হাটা-চলা করতে পারতেন না। তার একটি মাত্র ছেলে ছিল। ছেলেটি তার দেখা-শোনা করতো। ছেলেটি মৃত্যুবরণ করল। আমরা এসে বৃদ্ধাকে বললাম, মুসীবতে আল্লাহর উপর সবর করুন। তিনি বললেন, কী হয়েছে? আমার ছেলে কি মারা গেছে? হে আমার মাওলা, আমার উপর রহম করো। আমার থেকে আমার ছেলেকে নিও না। আমি অন্ধ, বধির ও অচল। আমার দুনিয়াতে আর কেউ নেই। মাওলা, আমার উপর রহম করুন।
আমি বললাম, বৃদ্ধার স্মৃতিভ্রম হয়েছে। এই বলে আমি বাজারে গেলাম। আমি তার কাফনের কাপড় ক্রয় করে নিয়ে এলাম। ফিরে এসে দেখি সে জীবিত হয়ে বসে আছে।
১. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খ.৬, পৃ.১৫৪।
২.দালাইলুন নুবুওয়া, খ.৬, পৃ.৫০-৫১
হযরত হামজা রা. এর কবর থেকে সালামের উত্তর:
ইমাম ইবনে কাসীর রহ. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে ঘটনাটি লিখেছেন। হযরত আত্তাফ বিন খালিদ তার খালা থেকে বর্ণনা করেন, এক দিন আমি উহুদের শহীদগণের কবরের দিকে যাই। (তিনি প্রায়ই তাদের কবর জিয়ারত করতেন)। তিনি বলেন, আমি হযরত হামরা রা. এর কবরের নিকট বাহন থেকে নামলাম। আল্লাহর তৌফিকে সেখানে কিছু নামায আদায় করলাম। উপত্যকায় আর সাড়া-শব্দ দেয়ার মতো কেউ ছিল না। আমার বাহনের লাগাম ধরে ছিল ছোট্র একটি ছেলে ছিল। আমি কবরের উদ্দেশ্যে আস-সালামু আলাইকুম বললাম। আমি স্পষ্ট মাটির নীচ থেকে সালামের উত্তর পেলাম। ওয়ালাইকুমুস সালাম। আমার কাছে উত্তরটি এতটা স্পষ্ট ও সুনিশ্চিত যেমন, আল্লাহ আমাকে সৃষ্টি করেছেন, এটা সুনিশ্চিত। রাত্র-দিনের পার্থক্য যেমন সুস্পষ্ট, এই সালামের উত্তরও তেমনি সুস্পষ্ট। সালামের উত্তর শুনে আমার প্রত্যেকটি লোমকূপ দাড়িয়ে গেল। আমার শরীর ভয়ে শিহরিত হল।
[আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খ.৪, পৃ.৪৫, দালাইলুন নুবুওয়াহ, ইমাম বাইহাকী রহ. খ.৩, পৃ.৩০৮]
ইবনুল কাইয়্যিম রহ. ‘আর-রুহ’ কিতাবে লিখেছেন,
في كتاب المنامات لابن أبي الدنيا عن
شيخ من قريش قال : رأيت رجلاً بالشام قد أسود نصف وجهه وهو يغطيه ، فسألته عن ذلك فقال : قد جعلت لله على أن لا يسألني أحد عن ذلك إلا أخبرته به ، كنت شديد الوقيعة في علي بن أبي طالب رضي الله عنه ، فبينا أنا ذات ليلة نائم إذ أتاني آت في منامي فقال لي : أنت صاحب الوقيعة فيّ ؟ فضرب شق وجهي ، فأصبحت وشق وجهي أسود كما ترى
অর্থ: ইবনে আবিদ দুনিয়া রহ. এর আল-মানামাত গ্রন্থে রয়েছে, জনৈক কুরাইশি ব্যক্তি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শামে এক ব্যক্তিকে দেখলাম, তার চেহারার অর্ধেক অংশ কালো হয়ে গেছে। সে এই অংশটা ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে। আমি তাকে চেহারা কালো হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। সে বলল, আমি আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে, এ বিষয়ে কেউ আমাকে প্রশ্ন করলে আমি তাকে বিষয়টি বলব। আমি হযরত আলী রা. খুব গালাগালি করতাম। আমি এক রাতে ঘুমিয়েছিলাম। স্বপ্নে এক ব্যক্তি আমার কাছে এল । এসে আমাকে বলল, তুমি কি আমাকে গালাগালি করো? এরপর তিনি আমার মুখে চড় মারলেন। সকালে উঠে দেখি মুখের একাংশ কালো হয়ে আছে।
কিতাবুর রুহ, পৃ.১৮৯
ইবনুল কাইয়্যিম রহ. কিতাবুর রুহে লিখেছেন,
: وذكر ابن أبي الدنيا عن أبي حاتم الرازي ، عن محمد بن علي ، قال : كنا بمكة في المسجد الحرام قعوداً ، فقام رجل نصف وجهه أسود ونصفه أبيض ، فقال : يا أيها الناس اعتبروا بي ، فإني كنت أتناول الشيخين وأشتمهما ، فبينما أنا ذات ليلة نائم إذ أتاني آت ، فرفع يده فلطم وجهي وقال لي : يا عدو الله ، يا فاسق ، ألست تسب أبا بكر وعمر رضي الله عنهما ، فأصبحت وأنا على هذه الحالة .
অর্থ: বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে আবিদ দুনিয়া রহ. আবু হাতিম রাজী রহ. থেকে বর্ণনা করেছে, তিনি মুহাম্মাদ বিন আলী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমরা মক্কায় মসজিদুল হারামে বসা ছিলাম। সেখানে এক ব্যক্তি দাড়াল, যার চেহারার অর্ধেক কালো ও অর্ধেক সাদা ছিল। লোকটি দাড়িয়ে বলল, লোক সকল, আমাকে দেখে শিক্ষা গ্রহণ করো। আমি হযরত আবু বকর ও হযরত উমর রা.কে অসম্মান ও গালাগালি করতাম। আমি এক রাতে ঘুমিয়েছিলাম। আমার কাছে এক ব্যক্তি এল। সে হাত উঠিয়ে আমার মুখে চড় মারল। আমাকে বলল, হে আল্লাহর শত্রু, ফাসিক, তুমি কি আবু বকর রা. ও উমর রা. কে গালাগালি করো না? আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, আমার মুখের এই অবস্থা।
[কিতাবুর রুহ, পৃ.২১৭, মাকতাবাতুস সফা]
ইবনে তাইমিয়্যাহ বলেন, “
বর্ণিত আছে, অনেকেই রাসূল স. এর কবর থেকে সালামের উত্তর শুনেছেন। অথবা অন্যান্য বুজুর্গদের কবর থেকে সালামের উত্তর পেয়েছেন। একইভাবে বর্ণিত আছে, হযরত সাইদ ইবনুল মুসায়্যিব রহ. (বিখ্যাত তাবেয়ী) হাররা এর ফেতনার সময় রাসূল স. এর কবর থেকে আজান শুনতেন। এসবই সত্য। আমাদের আলোচ্য বিষয় এটি নয়। বরং আমাদের আলোচ্য বিষয় এর চেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ।
-ইকতেজাউস সিরাতিল মুস্তাকীম। খ.২, পৃ.২৫৪ (শামেলা)
আল্লামা আবু নুয়াইম নিজ সনদে ইয়াসার ইবনে হুবাইশ থেকে, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন,
عن يسار بن حبيش عن أبيه قال أنا والذي لا إله إلا هو أدخلت ثابت البناني في لحده ومعي حميد ورجل غيره فلما سوينا عليه اللبن سقطت لبنه فإذا به يصلي في قبره فقلت للذي معي ألا تراه قال اسكت فلما سوينا عليه وفرغنا أتينا ابنته فقلنا لها ما كان عمل ثابت قال وما رأيتم فأخبرناها فقالت كان يقوم الليل خمسين سنة فإذا كان السحر قال في دعائه اللهم إن كنت أعطيت أحدا الصلاة في قبره فأعطينها فما كان الله ليرد ذلك الدعاء
অর্থ: একমাত্র ইলাহ আল্লাহ তায়ালার শপথ, আমি, হুমাইদ ও আরেক ব্যক্তি সাবেত আল-বুনানীকে দাফন করার উদ্দেশ্যে তার কবরে অবতরণ করি। আমরা যখন দাফন সমাধা করে কবরে ইট বিছিয়ে দিলাম। উপর থেকে একটি ইট সরে গেল। আমরা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম যে সে কবরে নামায আদায় করছে। আমি আমার সঙ্গীকে বললাম, তুমি তাকে দেখছো? সে বলল, চুপ করো। আমরা সঠিকভাবে দাফন সম্পন্ন করে তার মেয়ের নিকট এলাম। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সাবেতের আমল কী ছিল? আমরা যা দেখেছি, তার কাছে বলা হল। সে বলল, সে পঞ্চাশ বছর যাবৎ রাত জেগে নামায আদায় করতো। ফজর হলে সে দুয়া করতো, হে আল্লাহ, আপনি যদি কবরে কাউকে নামায পড়ার সুযোগ দেন, তাহলে আমাকে সেই সুযোগ দিন। সুতরাং আল্লাহ তার দুয়া প্রত্যাখ্যান করেননি।
-আহওয়ালুল কুবুর, পৃ.৭০
-শরহুস সুদুর, জালালুদ্দীন সুয়ূতী, পৃ.১৮৮ ।
-মুখতাসারু সাফওয়াতিস সাফওয়া, খ.১, পৃ.২৯৬।
-আহকামু তামান্নিল মাউত, পৃ.৪০, আব্দুল ওহাব নজদী।
তিনি আরও লিখেছেন, ইমাম আবু নুয়াইম ও ইমাম ইবনে জারীর নিজ সনদে ইব্রাহীম আল-মুহাল্লাবী থেকে বর্ণনা করেছেন, জাস নামক স্থান দিয়ে ভোরে যাতায়াতকারীরা আমার কাছে বর্ণনা করেছে যে, আমরা যখন ভোরে সাবেত আল-বুনানীর কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করতাম, তার কবর থেকে কুরআন তেলাওয়াতের শব্দ শুনতে পেতাম।
-আহকামু তামান্নিল মাউত, পৃ.৪০, শায়খ আব্দুল ওহাব নজদী।
ইমাম তিরমিজী রহ. ইবনে আব্বাস রা. থেকে নীচের হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং একে হাসান বলেছেন। ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূল স. এর এক সাহাবী একটি কবরের উপর তাবু গাড়ল। তিনি জানতেন না যে সেখানে কবর রয়েছে। হঠাৎ তিনি কবর থেকে শুনতে পেলেন, এক ব্যক্তি সূরা মুলুক তেলাওয়াত করছে। সে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তেলাওয়াত করল। সাহাবী এসে রাসূল স. কে ঘটনাটি বলল। রাসূল স. বললেন, সূরা মুলুক করবের আজাব থেকে মুক্তিদানকারী, করবের আজাব থেকে প্রতিরোধক।
ইমাম তিরমিজী রহ. এর হাদীসটি দুর্বল।
২. ইবনে রজব হাম্বলী রহ. ইমাম খাল্লাল রহ. থেকে বর্ণনা করেছেন। ইমাম খাল্লালের আস-সুন্নাহ কিতাবটি সালাফীদের মৌলিক আকিদার কিতাব। ইমাম সূয়ূতী বর্ণনাটি ইবনে মান্দা রহ. থেকে উল্লেখ করেছেন। ইবনে মান্দা রহ. এর আত-তাউহীদ কিতাবটি সালাফীদের মৌলিক আকিদার কিতাব। ইমাম খাল্লাল নিজ সনদে হাম্মাদ আল-হাফফার থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,
আমি এক জুমুয়ার দিনে কবর স্থানে প্রবেশ করলাম। আমি যতোগুলো কবরের নিকটে গিয়েছি প্রত্যেকটি কবর থেকে কুরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনেছি।
-আহওয়ালুল কুবুর, ইবনে রজব হাম্বলী রহ, পৃ.৭০।
-শরহুস সুদুর, সূয়ূতী রহ, পৃ.১৮৮-১৮৯
৩. ইবনে রজব হাম্বলী রহ. আবুল হাসান ইবনুল বারা এর আর-রওজা কিতাব থেকে নীচের ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। ইবনুল বারা নিজ সনদে ইব্রাহীম আল-হাফফার থেকে বর্ণনা করেন, ” আমি একটি কবর খনন করলাম। সেখানে একটি ইট বেরিয়ে এল। ইট বের হওয়ার সাথে সাথে সেখান থেকে মেশকের সুঘ্রাণ পাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি একজন বৃদ্ধ তার কবরে বসে বসে কুরআন তেলাওয়াত করছে।
-আহওয়ালুল কুবুর, ইবনে রজব হাম্বলী রহ, পৃ.৭১।
-শরহুস সুদুর, সূয়ূতী রহ, পৃ.-১৮৯
৪. ইমাম লালকায়ী রহ. এর শরহুস সুন্নাহ কিতাবটি সালাফীদের মৌলিক আকিদার কিতাব। ইমাম লালকায়ী নিজ সনদে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মাইন থেকে বর্ণনা করেছেন, ইমাম ইবনে মাইন বলেন, আমাকে কবর খননকারী বলেছে, আমি কবরে অনেক আশ্চর্যজনক জিনিস দেখেছি। এর মাঝে সবচেয়ে আশ্চর্যের হল, এক কবর থেকে মৃদু কান্নার আওয়াজ শুনেছি, যেমন অসুস্থ রোগী কেঁদে থাকে। আর এক মুয়াজ্জিনের কবর থেকে আমি আজানের জওয়াব দিতে শুনেছি।
কারামতে আউলিয়া :-
★ ইবনে কাসীর রহ. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে নীচের ঘটনাটি লিখেছেন। ঘটনাটি ইবনে আবিদ দুনিয়া রহ. মান আশা বা’দাল মাউত কিতাবে উল্লেখ করেছেন,
এক দল লোক ইয়ামান থেকে আল্লাহর পথে বের হল। পথিমধ্যে তাদের একজনের গাধা মৃত্যুবরণ করল। তার সহযাত্রীরা তাকে অন্য গাধার উপর আরোহরণের অনুরোধ জানাল। কিন্তু সে অস্বীকার করল। সে উঠে উজু করল। নামায আদায় করে দুয়া করল,
” হে আল্লাহ, আমি দাফিনা শহর থেকে আপনার পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয়েছি। আমি একমাত্র আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে এসেছি। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি মৃতকে জীবিত করেন। আপনি কররবাসীকে পুনরায় জীবন দান করবেন। সুতরাং আমাকে কারও অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী করবেন না। আমি আপনার কাছে দুয়া করছি, আপনি আমার গাধা জীবিত করে দিন। এরপর সে গাধার কাছে গেল। গাধাকে উঠার জন্য একটি আঘাত করল। গাধাটি দাড়িয়ে কান ঝাড়তে শুরু করল। সে পুনরায় গাধায় তার সফরের পাথেয় উঠিয়ে যাত্রা করল। কিছুদূর গিয়ে তার সঙ্গীদের সাথে মিলিত হল। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, এটা কীভাবে হল?
সে বলল, আল্লাহ তায়ালা আমার গাধা জীবিত করে দিয়েছেন। ইমাম শা’বী বলেন, আমি সেই গাধাটি কান্নাসা নামক বাজারে বিক্রি হতে দেখেছি।
সূত্র: আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খ.৬, পৃ.১৫৪
২. মান আশা বা’দাল মাউত, বর্ণনা নং ২৯।
৩. দালাইলুন নুবুওয়াহ, খ.৬, পৃ.৪৯
★ এধরনের একটি ঘটনা ইবনে তাইমিয়া তার মাজমুয়াতুল ফাতাওয়া-তে লিখেছেন। ইবনে তাইমিয়া রহ. লেখেন,
ورجل من النخع كان له حمار فمات في الطريق فقال له أصحابه : هلم نتوزع متاعك على رحالنا، فقال لهم : أمهلوني هنيئة ، ثم توضأ فأحسن الوضوء وصلى ركعتين ودعا الله تعالى فأحيا حماره فحمل عليه متعاه .
অর্থ: নাখ’ এর অধিবাসী এক ব্যক্তির একটি গাধা ছিল। যাত্রাপথে গাধাটি মৃত্যুবরণ করে। তার সহযাত্রীরা বলল, আমরা তোমার মাল-সামানা ও পাথেয় আমাদের গাধাগুলোতে বন্টন করে নেই। সে তাদেরকে বলল। আমাকে কিছুক্ষণ সময় দাও। এরপর সে উত্তমরূপে ওজু করল। দু’রাকাত নামায আদায় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করল। আল্লাহ তায়ালা তার গাধা জীবিত করে দিলেন। এরপর সে গাধার উপর তার পাথেয় উঠালো।
মাজমুউল ফাতাওয়া, খ.১১, ২৮১।
★ একই ধরনের একটি ঘটনা ইমাম শা’বী থেকে ইবনে হাজার আসকালানী রহ. তার আল-ইসাবা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ঘটনাটি হযরত উমর রা. এর সময় সংগঠিত হয়। এক্ষেত্রে শাইবান নামক এক ব্যক্তির গাধা মৃত্যুবরণ করলে পরবর্তীতে সে নামায আদায় করে দুয়া করে। আল্লাহ তায়ালা তার গাধাটি জীবিত করে দেন।
[আল-ইসাবা, খ.৩, পৃ.২২৭, বর্ণনা নং ৩৯৮৮]