পবিত্র শবে বরাতের রাতের ইবাদত ও আমলসমূহ | শবে বরাত নামাজের নিয়ম

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

পবিত্র শবে বরাতের রাতের ইবাদত ও আমলসমূহ | শবে বরাত নামাজের নিয়ম

শা’বান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে তথা বরাত রজনীতে মাগরিবের নামায শেষে ২ রাকাত নফল নামায আদায় করবেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর একবার সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত ও একবার সুরা ইখলাস পড়বেন।

ফযিলত: এই নামায বিগত জীবনের গুনাহসমূহ ক্ষমা পাওয়ার জন্য বেশ উপকারী।

উইকি তথ্যমতে –  সিহাহ সিত্তাহ বা বিশুদ্ধ ছয়টি হাদিসগ্রন্থের অনেক  হাদিসে এই রাতের বিশেষত্ব নিয়ে হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য হাদিস গ্রন্থেও এই রাতের বিশেষত্বের উল্লেখ পাওয়া যায়। হাদিসগুলোর সনদ বিভিন্ন মানের এবং এবিষয়ে মতভেদ বিদ্যমান। হাদিস শাস্ত্রে ‘শবে বরাত’ বলতে যে পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা হলো “নিসফ শাবান” বা “লাইলাতুন নিসফি মিন শা’বান” তথা “শা’বান মাসের মধ্য রজনী”

  • একটি হাদীসে বলা হয়েছে,

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে আত্নপ্রকাশ করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত তাঁর সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করেন।

— (ইবনু মাজাহ, আস- সুনান ১/৪৪৫; বাযযার, আল-মুসনাদ ১/১৫৭, ২০৭, ৭/১৮৬; আহমদ ইবনু হাম্বল, আল-মুসনাদ ২/১৭৬; ইবনু আবি আসিম, আস-সুন্নাহ,পৃ ২২৩-২২৪; ইবনু হিব্বান, আস-সহীহ ১২/৪৮১; তাবরানী, আল-মুজাম আল-কাবীর, ২০/১০৮, ২২/২২৩; আল-মুজাম আল-আওসাত, ৭/৬৮; বায়হাক্বী, শু’আবুল ঈমান, ৩/৩৮১; ইবনু খুযায়মা, কিতাবুত তাওহীদ ১/৩২৫-৩২৬।)[সনদ হাসান]

“এ মাসে রাব্বুল আলামীনের কাছে মানুষের কর্ম উঠানো হয়। আর আমি ভালবাসি যে, আমার রোযা রাখা অবস্থায় আমার আমল উঠানো হোক।”

— (নাসাঈ, আস-সুনান ৪/২০১; আলবানী, সহীহুত তারগীব ১/২৪৭।[সনদ হাসান] 

শবে বরাত রজনীতে এশার নামাযের আগে দুই রাকাত করে মোট আট রাকাত নফল নামায আদায় করবেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর ৫ বার করে সুরা ইখলাস পড়বেন।

  • বরাত রজনীতে এশার নামায শেষে দুই দুই রাকাত করে মোট আট রাকাত নফল নামায আদায় করবেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর একবার সুরা কদর এবং ২৫ বার সুরা ইখলাস পড়বেন।

ফযিলত: গুনাহ মাফের জন্য বেশ উপকারী। এই নামায আদায়কারীকে আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করবেন ইন-শা আল্লাহ।

  • বরাত রজনীতে গভীর রাতে চার রাকাত করে আট রাকাত নফল নামায করবেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর দশবার করে সুরা ইখলাস পড়বেন।

ফযিলত: এই নামায আদায়কারীর জন্য আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতা নিযুক্ত করবেন, যাঁরা তাঁকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের সুসংবাদ প্রদান করবেন।

  • বরাত রজনীতে এশার নামাযের পর দুই রাকাত করে মোট চৌদ্দ রাকাত নফল নামায আদায় করবেন। প্রতি রাকাতে সুরা ফাতেহার পর একবার করে সূরা কাফিরুন, সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়বেন। নামায শেষে ১বার আয়াতুল কুরসি ও ১বার সুরা তাওবা’র শেষ দুই আয়াত পাঠ করবেন।

ফযিলত: এই নামাযের উছিলায় দ্বীন ও দুনিয়াবী সকল নেক এবং জায়েজ উদ্দেশ্য সফল হবে ইন-শা আল্লাহ।

  • শবে বরাত রজনীতে মাগরিবের নামায শেষে ৭টি কুল (বরই) পাতা সেদ্ধ করে ঐ পানি দ্বারা গোসল করলে সারা বছর যাদু-টোনা ইত্যাদি অনিষ্টতা থেকে বেঁচে থাকবেন ইন-শা আল্লাহ।
  • বরাত রজনীতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ২১বার তিলাওয়াত করলে আল্লাহ পাকের রহমতে নিরাপত্তা, শান্তি ও জান-মালের হেফাজত হবে ইন-শা আল্লাহ।

শা’বান মাসের ১৫ তারিখ যোহরের নামায শেষে দুই রাকাত করে মোট চার রাকাত নামায আদায় করবেন। ১ম রাকাতে সুরা ফাতেহার পর ১বার সুরা যিলযাল ও ১০বার সুরা ইখলাস; ২য় রাকাতে সুরা ফতেহার পর ১বার সুরা তাকাছুর ও ১০বার সুরা ইখলাস: ৩য় রাকাতে সুরা ফাতেহার পর ৩বার সুরা কাফিরুন ও ১০বার সুরা ইখলাস এবং ৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহার পর ৩বার আয়াতুল কুরসি ও ২৫বার সুরা ইখলাস পড়বেন।

ফযিলত: এই নামায আদায়কারীরকে আল্লাহ তা’আলা দ্বীন-দুনিয়ার মঙ্গল ও কল্যাণ এবং হাশর দিবসে রহমতের বিশেষ দৃষ্টি দান করবেন ইন-শা আল্লাহ।

শা’বানের ১৫ তারিখ নফল রোযা রাখবেন। এই রোযার ফযিলত অত্যাধিক ও প্রিয় নবীজি (এ)’র নির্দেশও রয়েছে।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment