পথ নির্দেশ : নারীদের হজ ওমরা ও জিয়ারত

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

নারীদের হজ জিহাদ স্বরূপ : উম্মুল ম’মিনীন হযরত আয়শা (রা.) বলেন, আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট জিহাদে শরীক হওয়ার আবেদন করলাম। নবীজী (সা.) ইরশাদ করলেন, “তোমাদের অর্থাৎ নারীদের জিহাদ হলো হজ।” (মিশকাত ১/২২১; বুখারী ১/২৫০; মুসলিম) এর মর্মার্থ হলোঃ জিহাদে অনেক ধরনের কষ্ট সহ্য করতে হয় যা মহিলাদের পক্ষে সম্ভব নয়, পুরুষরাই পারে এ সকল জিহাদী কষ্টক্লেশ বরদাশত করতে। হ্যাঁ, নারীরা যদি সহজেই সে সকল সওয়াবের কাজ হতে আরও অধিক সওয়াবের কাজ করতে চায় তাহলে তারা যেন হজ ও ওমরা করে নেয়। তবে জিহাদ ফরজে আইন হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সকলেরই অংশগ্রহণ করা আবশ্যক।সহীহ ইবনে খুযাইমা-এ বর্ণিত আছে, হযরত মা আয়শা (রা.) আরয করলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ! নারীদের উপরেও কি কোন ধরনের জিহাদ কর্তব্য? ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ। নারীদের ওপর এমন এক জিহাদ আবশ্যক যাতে কোন লড়াই নেই। অর্থাৎ হজ ওমরা।” (আততারগীব ওয়াততারহীব) হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, “বয়োবৃদ্ধ, দুর্বল ও মহিলাদের জিহাদ হলো হজ এবং ওমরা করা।” (নাসাঈ শরীফ ২/৬) নারীদের ইহরাম : মহিলাদের ইহরাম পুরুষের ইহরামের মতোই। অর্থাৎ গোসল করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে হজ বা ওমরার নিয়্যাত করবে এবং তালবিয়া পড়বে। কিন্তু যদি গোসল আর নামাজ পড়ার সুযোগ না পাওয়া যায় তাহলে কেবল নিয়্যাত ও তালবিয়াই পড়ে নিবে। অর্থাৎ হজ বা ওমরার নিয়্যাত করে“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা অন-নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলকা, লা শারীকা লাকা”। এভাবে ইহরামে দাখিল হয়ে যাবে। মাসআলা ঃ যদি কোন মহিলা হায়েজ বা নেফাস অবস্থায় থাকে এবং তাকে মক্কা মুআজ্জমায় যেতে বা হারাম শরীফে প্রবেশ করার জন্য মিকাত অতিক্রম করতে হয় তাহলে ঐ অবস্থায় ইহরাম বেঁধে নিবে। অর্থাৎ হজ বা ওমরার নিয়্যাত করে তালবিয়া পড়বে। এরপর যদি মক্কা মুয়াজ্জমায় পৌঁছা পর্যন্ত পবিত্রতা অর্জন না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে পবিত্রতা লাভ করার অপেক্ষা করতে থাকবে। পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত মসজিদে প্রবেশ করবে না।মাসআলা ঃ মহিলাদের ওপর ইহরাম অবস্থায়ও গায়রে মাহরাম (যাদের সাথে বিবাহ জায়েয এবং পর্দা করা ফরজ) এর সাথে পর্দা করা আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে নিতান্ত একটি ভুল কথার জনশ্রুতি আছে যে, হজ ও ওমরা করার সময় পর্দা করার প্রয়োজন নেই; এটা মূর্খরচিত কথা ছাড়া কিছুই নয়। চেহারার ওপর কাপড় না রাখা এক কথা আর গায়রে মাহরামের সামনে চেহারা খোলা অন্য কথা।মূলতঃ হুকুম হলো, মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় চেহারাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখবে না। কিন্তু এ দ্বারা উদ্দেশ্য এ নয় যে, গায়রে মাহরামের সামনে চেহারা খোলা রাখবে। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাহ ৩/২২৯৫) উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়শা (রা.) বলেন, “আমরা ইহরাম অবস্থায় নবী কারীম (সা:)-এর সাথে ছিলাম, পথচারীরা বাহন জন্তুতে সওয়ার হয়ে আমাদের পার্শ্ব দিয়ে অতিক্রম করছিল তখন আমরা নিজেদের পরিহিত চাদর মাথার ওপর দিয়ে টেনে চেহারার সামনে ঝুলিয়ে দিতাম, অতঃপর তারা যখন আমাদের সামনে দিয়ে চলে যেত তখন আমরা চেহারা থেকে কাপড় সড়িয়ে নিয়ে চেহারা খুলে ফেলতাম। (সুনানে আবি দাউদ ১/২৫৪)

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment