এই পর্বে মাওলানা মিজান হারুনের একটি চরম মিথ্যাচারমূলক পোস্টের পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে লিখছি। এটি যদিও হিন্দুস্তান – পাকিস্তানের দেওবন্দী আলিমরা বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি অপব্যাখ্যা করে না, তবে এদেশের অনেক আলিম বিষয়টি নিয়ে বেশ বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে। গত পর্বে আমরা দেখেছি, মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া সাহেব বিষয়টিকে আহমাদ রিদ্বা খান ব্রেলভীর আকিদার সম্পূর্ণ বিপরীত বক্তব্য তার বা তার দলের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। সেই সাথে মাওলানা মিজান হারুন তো আরও এক ধাপ এগিয়ে বিষয়টিকে হিন্দু-খ্রিষ্টানদের অবতারের আকিদার সাথে মিলিয়ে দিয়েছে। অথচ বিষয়টি আহমদ রিদ্বা খান বেরেলভীর উপর চরম মিথ্যাচার। এটি যে কতো বড় মিথ্যাচার সেটি পরবর্তী পর্যালোচনা দেখলেই আশা করি ইনশা আল্লাহ স্পষ্ট হবে। শুরুতেই মাওলানা মিজান হারুনের বক্তব্যটি দেখে নেয়া যাক। তিনি লিখেছেন,
“ প্রসিদ্ধ মানুষদেরকে ঈশ্বরের অবতার কল্পনা করার ধারণা অনেক প্রাচীন। ভারতে রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ প্রমুখ ব্যক্তিকে নানান ঈশ্বরের অবতার হিসেবে কল্পনা করেছে তারা। পরবর্তীতে এই আকীদা খ্রিস্টানরা গ্রহণ করে ঈসা (আ.) কে আল্লাহর ‘অবতার’ বানায়। ’মানুষ ঈসা’ এর পরিবর্তে ‘খোদার পুত্র’, ‘মানুষরূপী খোদা’ হিসেবে গ্রহণ করে।
এই আকীদা যাতে মুসলমানদের মাঝে প্রবেশ না করে এজন্য কুরআন-সুন্নাহ প্রথম থেকেই এব্যাপারে সুস্পষ্ট থেকেছে। কুরআন শুরু থেকেই ফিরিশতাদেরকে নূরের স্বতন্ত্র সৃষ্টি, জিনদেরকে আগুনের স্বতন্ত্র সৃষ্টি আর নবী-রাসূলদেরকে সুস্পষ্ট শব্দে ’মানুষ’, ’বাজার করেন’, ‘খাওয়া-দাওয়া করেন’, ’অসুস্থ হন’- এমন প্রচুর শব্দে ব্যাখ্যা করেছে। বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর অবতীর্ণ প্রথম ওহীতে তাকে ’রক্তপিণ্ড থেকে সৃষ্ট মানুষ’ আখ্যা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে, শোনো আমি তোমাদের মতোই মানুষ। পার্থক্য কেবল এটুকু যে আমার কাছে ওহী আসে। মুজিযা প্রকাশ পায়। এভাবে বলা হয়েছে, যাতে মুসলমানরা পূর্ববর্তী জাতিগুলোর মতো ভুল না করে।
কিন্তু দুর্বল ও ভ্রষ্ট চিন্তার কিছু মানুষেরা শেষপর্যন্ত ভ্রষ্টতাকেই গ্রহণ করলো। আলী (রা.) কে ‘খোদার অবতার’ কল্পনা করার মধ্য দিয়ে এই বিচ্যুতি শুরু হয়েছিল। ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছ থেকে ধার করা হয়েছিল এই কুসংস্কার। সালাফের আলিমগণের কঠোর প্রতিবাদের মুখে সেটা প্রত্যাখ্যাত হয়। পরবর্তী সময়ে ইবনে মানসূর হাল্লাজসহ কিছু সূফী রাসূলুল্লাহ আদি ও অনন্ত নূরৈর তৈরি এমন আকীদা বানায়। কিন্তু সেটাও প্রত্যাখ্যাত হয়।
অতঃপর ইসলামের হাজার বছর পরে ‘অবতার’ কেন্দ্রিক এই বিভ্রান্তিকে নতুন করে উম্মাহর সামনে নিয়ে আসেন আহমদ রেজা খান। রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সরাসরি ’আল্লাহর অবতার’ না বললেও তাঁর বাশারিয়্যাত তথা মানুষ হওয়াকে (প্রকারান্তরে) অস্বীকার করেন। কুরআন ও সুন্নাহর বক্তব্যকে সুস্পষ্ট অপব্যাখ্যা করে মানুষ রাসূলকে নূরের তৈরি এক এলিয়েন (অপরিচিত সৃষ্টি) বানিয়ে দেন। যা মূলত ‘অবতার’ কেন্দ্রিক কুসংস্কার থেকে উৎসারিত। নবী-রাসূলদেরকে আল্লাহ মানুষের মাঝ থেকে মানুষের জন্য নির্বাচিত করেন। ভিন্নগ্রহ থেকে ভিন্ন কেনো প্রাণীকে রাসূল করে পাঠানো হয়নি। নবী-রাসূলদের বাবা-মায়ের সৃষ্টিগত প্রকৃতি যেমন, নবী-রাসূলরাও তেমন। আব্দুল্লাহ ও আমিনার মাধ্যমে যিনি পৃথিবীতে এসেছেন, তিনি তাদের পুত্র; ঈশ্বরের অবতার নন। এমন হলে পিতা-ছাড়া জন্ম নেয়া ঈসাকে খোদারপুত্র বললে খ্রিস্টানরা ভ্রান্ত গণ্য হবে কেন?
ইসলাম কোনো রহস্য, ভাওতাবাজি, অস্পষ্টতা, অন্ধকার, কুসংস্কার, বাঁকানো-পেঁচানোকে প্রশ্রয় দেয় না। ইসলাম বাস্তববাদী জীবনব্যবস্থা। আকীদার যেখানেই রাখঢাক দেখবেন, কুটিলতা দেখবেন, অস্পষ্টতা ও রহস্যময়তা দেখবেন, পরিহার করবেন। বুঝবেন অন্য ধর্ম কিংবা দর্শনের বীজ রয়েছে এখানে।”
আহমাদ রিদ্বা খান বেরলভীর বিরুদ্ধে তার মূল অভিযোগ হলো,
“রাসূলুল্লাহ (সা.) কে সরাসরি ’আল্লাহর অবতার’ না বললেও তাঁর বাশারিয়্যাত তথা মানুষ হওয়াকে (প্রকারান্তরে) অস্বীকার করেন। কুরআন ও সুন্নাহর বক্তব্যকে সুস্পষ্ট অপব্যাখ্যা করে মানুষ রাসূলকে নূরের তৈরি এক এলিয়েন (অপরিচিত সৃষ্টি) বানিয়ে দেন। যা মূলত ‘অবতার’ কেন্দ্রিক কুসংস্কার থেকে উৎসারিত।”
এখানে আমহদ রিদ্বা খানের বিরুদ্ধে মিজান হারুনের মূল অভিযোগ ছিলো, আহমদ রিদ্বা খান নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাশারিয়্যাত তথা মানুষ হওয়াকে অস্বীকার করেন। প্রথম দিকে সরাসরি এভাবেই তিনি লিখেছিলেন। পরে ব্রাকেটে (প্রকারান্তরে) কথাটি যোগ করেছেন। শুরুতে আমি সরাসরি অস্বীকার করার বিষয়টি দেখি। পরবর্তীতে তিনি যে পোস্ট এডিট করেছেন, সেটিও তার পোস্টের হিস্টোরি থেকে স্পষ্ট। পোস্টের ভুল সংশোধন করে এডিট করাটা কোন অন্যায় নয়। কিন্তু সরাসরি আহমদ রিদ্বা খানের বিরুদ্ধে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাশারিয়াত অস্বীকার করার মতো বিষয়টির অভিযোগ করার আগে বিষয়টি উনার তাহকিক করা প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু উনার বর্ণনা ভঙ্গি এবং এডিট থেকে বোঝা যাচ্ছে পোস্টের আগে ও পরে তিনি বিষয়টি সঠিকভাবে যাচাই করেননি। এখানে মিজান হারুন যেভাবে তার প্রাথমিক বক্তব্য সংশোধন করেছেন, আমরা আশাবাদি তিনি আমাদের পর্যালোচনার বাকী বিষয়ের ভুল থেকেও সংশোধনের উদ্দোগ নিবেন। এডিট হিস্টোরির স্ক্রিনশট:
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মানুষ হওয়া বিষয়ে আহমাদ রিদ্বা খানের আকিদা কী ছিলো?
আরবীতে একটি বিখ্যাত প্রবাদ হলো, আল-ফদলু মা শাহিদাত বিহিল আ’দা। শত্রুর পক্ষ থেকে কোন প্রশংসা বা সাক্ষী পাওয়াটা অনেক বড় বিষয়। অর্থাৎ এই মাসআলায় বেরেলভীর সবচেয়ে প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে পরিচিত দেওবন্দী উলামায়ে কেরাম যদি স্বাক্ষ্য দেন যে, এ বিষয়ে বেরেলভীর আকিদা কি তবে সেটি বেশ শক্তিশালী ও পাকাপোক্ত একটি স্বাক্ষ হিসেবে বিবেচিত হয়।
দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত মুফতী আমীন পালনপুরীর লিখিত ‘মুহাদারায়ে ইলমিয়্যাহ বর মাউজুয়ে রেজাখানিয়্যাত’ বইটি বিশেষভাবে ব্রেলভীদের খন্ডনে লিখিত একটি কিতাব। এটি মূলত: দারুল উলুমের বিভিন্ন ফিরাকে বাতেলার খন্ডনে লিখিত সিরিজ কিতাবের একটি। এই কিতাবের ১২৫ পৃষ্ঠায় মুফতী আমিন পালনপুরী স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন, আহমদ রিদ্বা খান বা তার অনুসারীরা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাশার বা মানুষ মনে করে। এবং কেউ যদি নবীজীর বাশারিয়্যাত তথা মানুষ হওয়াকে অস্বীকার করে তাহলে তারা তাকে কাফের বলে।
মুফতী আমীন পালনপুরী আলোচনার মৌলিক অংশটির অনুবাদ নিচে দেয়া হলো,
“এই মাসআলায় সমস্ত আহলে সুন্নতের আক্বিদা-বিশ্বাস হলো, নবীজী সাল্লাল্লাহু যদিও মানব প্রজাতির অংশ হিসেবে মানুষ তবে তিনি গুণ ও পরিপূর্ণতার বিচারে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোন তুলনা বা দৃষ্টান্ত নেই। হযরত মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানবী তার ‘ইখতিলাফে উম্মত আউর সিরাতে মুস্তাকীম’ কিতাবে লিখেছেন,
“নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে আমার আকিদা হল, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সত্ত্বার দিক থেকে তিনি শুধু মানুষ নন বরং তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি শুধু ইনসান বা মানব নন, তিনি মহামানব। তিনি শুধু আদম আ: এর বংশের নন বরং তিনি আদম আলাইহিস সালাম ও তার সন্তানদের জন্য আপাদমস্তক গর্বের বিষয়। খোদ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন আমি আদম সন্তানের সরদার থাকব। (মেশকাত শরীফ, পৃ: ৫১১)। এজন্য নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মানুষ, মানব বা ইনসান হওয়াটা শুধু নবীজীর জন্য গর্বের বিষয় নয় বরং এটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ হওয়ার কারণে মানবজাতি ফেরেশতাদের ঈর্ষার বিষয় হয়েছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সত্ত্বার দিক থেকে যেমন মানুষ, একইভাবে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিদায়াতের গুণের দিক থেকে সমস্ত মানবজাতির আলোকবর্তিকা। এটি সেই নূর যার আলোয় মানবজাতি আল্লাহর রাস্তা পেতে পারে। এবং যার আলো চিরকাল স্বমহিমায় প্রজ্জ্বলিত থাকবে। এজন্য আমার আক্বিদা হলো, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই সাথে নূর এবং বাশার (মানব)। এবং আমার নিকট নূর ও বাশারকে দু’ভাগে ভাগ করে একটা সাব্যস্ত করা এবং আরেকটা অস্বীকার করা ভুল”
(ইখতিলাফে উম্মত আউর সিরাতে মুস্তাকীম, পৃ: ৩৭)
এবং রেজাখানি আলিমদের আক্বিদাও এটি যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাশার ও ইনসান। এবং যে ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাশার ও ইনসান মনে করবে না সে তাদের নিকট কাফের। মুফতী আহমাদ ইয়ারখান নইমী তার ‘শানে হাবীবুর রহমান’ বইয়ে লিখেছেন,
“প্রত্যেক মুসলমানের আক্বিদা হলো, নবীগণ আল্লাহর বান্দা এবং তার প্রিয়ভাজন। তাদের আগমন ঘটেছে মানবজাতির মাঝে। তবে তাদেরকে হে মানুষ, হে ভাই, হে ইনসান বা এজাতীয় শব্দে ডাকা নিষেধ, যদি অপমানের নিয়তে এসব শব্দে ডাকে, তবে এই ব্যক্তি কাফের হয়ে যাবে”
(শানে হাবীবুর রহমান, পৃ: ১০৩)
রেজাখানীদের শাইখুল ইসলাম সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ মাদানী নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ফজীলতের উপর আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছেন,
“ আমাদের উপর অপবাদ দেয়া হয় যে আমরা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মানব মনে করি না, আমরা নবীজীকে বাশার মনে করি না। আমি পুরো দাবীর সাথে ইতমিনান ও ইয়াকীনের সাথে বলছি যে, আকিদা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বাশার বা মানুষ মনে না করে, ইনসান মনে না করে সে কাফের। এর চেয়ে বেশি আর কী বলা যেতে পারে? প্রশ্ন তো এটা নয় যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ কি না। প্রশ্ন তো তখন ওঠে যখন তোমরা বলো, তিনি আমাদের মতো মানুষ।”
(খুতুবাতে বিরিতানিয়া, পৃ: ১৪৩)
এসব আলোচনা থেকে জানা গেল যে, এই মাসআলায় কোন বিরোধ নেই।
(মুহাদারাতে ইলমিয়া বর মাউদুয়ে রদ্দে রেজাখানিয়াত, পৃ: ১২৫, ১২৬)
(অনুবাদ শেষ হলো)।
এখানে মুফতী আমীন পালনপুরী খুব স্পষ্ট ভাষায় স্বীকার করলেন যে, ব্রেলভীরা আল্লাহর রাসূলের বাশারিয়াত বা মানুষ হওয়ার অস্বীকারকারীকে কাফের মনে করে। এবং আলোচনার শেষে তিনি এও বললেন যে, এই মাসআলায় দেওবন্দীদের সাথে বেরেলভীদের সাথে মৌলিক কোন বিরোধ নেই। তবে কুরআনের কিছু কিছু আয়াতের তাফসীরের ক্ষেত্রে কিছু বিরোধ আছে। তবে সেটি মৌলিক বিরোধ নয়।
এবার চলুন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাশারিয়াত সম্পর্কে খোদ আহমাদ রিদ্বা খানের আকিদা-বিশ্বাস তার কিতাব থেকে জেনে নেই।
১। মাওলানা ফজলে রাসূল বাদায়ূনীর বিখ্যাত কিতাব আল-মু’তাকাদুল মুনতাকাদ এ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য কোনটি আবশ্যকীয়, কোনটি নবীজীর জন্য অসম্ভব এবং কোনটি জায়েজ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য সেসব বিষয় হওয়া জায়েজ যেগুলো মানবীয় বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পর্কিত। যেমন, আল্লাহর পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা, দু:খ-দুর্দশার, অসুস্থ্যতা ইত্যাদির সম্মুখীন হয়েছেন। একইভাবে বকরী চরান, ইয়াতীম হওয়া। সেই সাথে দুনিয়াবী যেসব কাজের সাথে তিনি যুক্ত ছিলেন সেগুলোও মূলত: নবীজীর মর্যাদার বিষয়। যেমন, তার দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি, যুহদ, আহার, বস্ত্র, বাস-স্থান, কষ্ট-ক্লেশ সবই মানবীয় বৈশিষ্ট্য হিসেবে নবীজীর সম্মান ও মর্যাদার বিষয়। এগুলো নবীজীর নবী হওয়ার বিরোধী নয়।
মাওলানা বাদায়ূনীর এ কিতাবের টীকা লিখেছেন, মাওলানা আহমাদ রিদ্বা খান বেরেলভী।
সম্পূর্ণ বক্তব্যের স্ক্রিনশ নিচে দেয়া হলো,
একই কিতাবের ৯৫ পৃষ্ঠায় বিষয়গুলো আরও বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। মাওলানা বাদায়ূনী লিখেছেন,
“জেনে রাখা দরকার যে, আম্বিয়াগণ হলেন আল্লাহ ও বান্দার মাঝে মধ্যস্ততাকারী। এজন্য তাদেরকে ফেরেশতাদের রুহানিয়াত ও মানবীয় উভয় গুণের মধ্যবর্তী স্তর হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। তারা আল্লাহর গুপ্ত রহস্যের অধিকারী, প্রকাশ্য নূরানিয়াতের আধার। সুতরাং তারা দেহ ও প্রকাশ্য শরীরের বিবেচনায় মানুষ, তবে রুহ বা আধ্যাত্মিকতার বিবেচনায় ফেরেশতাদের সদৃশ। এজন্য নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“ আমি তোমাদের আকৃতিতে নই”
অর্থাৎ গুণাগুণ ও মূলের দিক থেকে আমি তোমাদের মত নই। এবং তিনি এও বলেছন, আমি আল্লাহর সান্নিধ্যে রাত কাটায়, তিনি আমাকে খাওয়ান, তিনি পান করান।
সুতরাং তাদের বাহ্যিক অবয়ব, আকার-আকৃতি, দেহ মোবারক মানুষের গুণে গুণান্বিত। মানুষ হিসেবে দেহের উপর বিভিন্ন সময় অসুস্থতা ইত্যাদি দেখা দেয়, সেগুলোও তাদের দেহ মোবারকে হয়। তবে তাদের রুহানিজগৎ ফেরেশতাদের মতো সব ধরণের পঙ্কিলতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। মানবীয় দেহের রুহের উপর যেসব ত্রুটি ও পঙ্কিলতা দেখা দেয়, তাদের অভ্যন্তর এগুলো থেকে মুক্ত ও পবিত্র।”
(আল-মু’তাকাদুল মুনতাকাদ, পৃ: ৯৫)
একই ধরণের কথা আহমদ রিদ্বা খান বেরেলভী নূর ও বাশার সংক্রান্ত তার বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করেছেন। আমি তার কিতাব থেকে কিছু উদ্ধৃতি উল্লেখ করছি। আহমদ রিদ্বা খান বেরেলভীর মাজমুয়ায়ে রাসাইলে নূর নামে নূর ও বাশার সংক্রান্ত সবগুলো পুস্তক সংকলন করে ছাপা হয়েছে। এই কিতাবের ৬৬ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন,
“ তিনি (নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মানুষ ছিলেন তবে উর্ধ্বজগৎ থেকে লক্ষ গুণ মর্যাদাশীল। তাঁর দেহ মোবারক মানবীয় ছিলো তবে তিনি ফেরেশতা ও রুহদের থেকে হাজারগুণ সূক্ষ্ম। এজন্য তিনি নিজেই বলেছেন, আমি তোমাদের মত নই (বোখারী)। অন্য বর্ণনায় আছে, আমি তোমাদের গঠন প্রকৃতির উপর নই। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তোমাদের কে আমার মতো?
তুমি কি আল্লামা খাফ্ফাজীর বক্তব্য দেখোনি যে, তিনি বলেছেন, নবীজীর বাশার বা মানুষ হওয়া তার প্রজ্বলিত ও উজ্জ্বল নূর হওয়ার বিপরীত নয়।”
এরপরে তিনি একটি বিখ্যাত কবিতা এনেছেন,
“নিশ্চয় জেনে রেখো, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষ তবে তিনি অন্যান্য মানুষের মতো নন। যেমন, ইয়াকুত পাথর তবে সেটি অন্য পাথরের মতো নয়।”
আহমদ রিদ্বা খান বেরেলভীর আলোচনার স্ক্রিনশট নিচে দেয়া হলো,
এতো স্পষ্ট বক্তব্য থাকার পরও মাওলানা মিজান হারুন যেভাবে আহমদ রিদ্বা খানের উপর প্রকারান্তরে বাশারিয়াত অস্বীকার বা অবতারের আকিদা জীবিত করার চেষ্টা করেছেন এজাতীয় বক্তব্য চাপিয়ে দেয়া চরম মিথ্যাচার ও ইলমী খিয়ানত। যা কোন প্রকৃত আলিমের শান হতে পারে না।
আহমদ রিদ্বা খান ব্রেলভী কি নবীজীকে আল্লাহর নূরের খন্ডিত অংশ মনে করত?
কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন জায়গায় রুহ, কালিমা, নূর ইত্যাদি শব্দ আল্লাহর দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। যেমন, আদম আ: এর মাঝে আল্লাহ তায়ালা আপন রুহ ফুঁকে দিয়েছেন। আবার ঈসা আ: কে আল্লাহর কালিমা ও রুহ বলা হয়েছে পবিত্র কুরআনে। একইভাবে আসমান ও জমিনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, আল্লাহ হলেন আসমান ও জমিনের নূর। হাদীসে আছে, মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর নূর দিয়ে দেখে। একইভাবে উলামায়ে কেরামের অনেকে বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা নবীজীকে তার নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন। উপরের কোন বক্তব্য থেকেই এই উদ্দেশ্য নেয়া সঠিক হবে না যে, আল্লাহর কোন অংশ আছে বা আল্লাহর কোন গুণ সৃষ্টির মাঝে অনুপ্রবেশ করেছে। সকল ক্ষেত্রে অকাট্যভাবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ তায়ালা অংশ, অঙ্গ ইত্যাদি থেকে মুক্ত। আবার তার কোন গুণ সৃষ্টির মাঝে অনুপ্রবেশ থেকেও মুক্ত। মোটকথা, আল্লাহ বা আল্লাহর কোন কিছু সৃষ্টির মাঝে অনুপ্রবেশ করেছে বা সৃষ্টির সাথে মিশে গিয়েছে এধরণের আকিদা রাখা কুফুর। উপরের আয়াত ও হাদীসের ক্ষেত্রে যেসব জিনিসকে আল্লাহর দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, সব কিছুকেই মাখলুক ও সৃষ্ট মনে করতে হবে। কীভাবে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন বা এগুলোর প্রকৃত মর্ম ও উদ্দেশ্য কী সেটি আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। তবে তিনি খালিক আর উপরের সব কিছু মাখলুক।
উপরের বিষয়গুলি আহমাদ রিদ্বা খান খুব স্পষ্টভাবে তার কিতাবে উল্লেখ করেছেন। অথচ আমি গত পর্বে দেখিয়েছি, মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া সাহেব বেরলভীদের সম্পর্কে বলেছেন, তারা আল্লাহর রাসূলকে আল্লাহর খন্ডিত নূর মনে করে। অথচ এটি খোদ আহমদ রিদ্বা খানের কাছে কুফুরী।
চলুন আহমদ রিদ্বা খানের বক্তব্য দেখে নেয়া যাক,
“ আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্টি হয়েছেন এর অর্থ কখনও এটি নয় যে, নাউজুবিল্লাহ নবীজীর সৃষ্টির মৌল উপাদান হলেন আল্লাহ তায়ালা। যেমন, মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি হয়েছে বললে বোঝা যায়। নাউজুবিল্লাহ এটাও উদ্দেশ্য নয় যে, আল্লাহর সত্ত্বা বা সত্ত্বার খন্ডিত কিছু নবীজীর অংশ হয়ে গিয়েছেন। বরং আল্লাহ তায়ালা তো অংশ বিশিষ্ট হওয়া, কোন কিছুর সাথে মিলিত হওয়া বা কোন কিছুর মাঝে অনুপ্রবেশ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ও পবিত্র। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হোক কিংবা অন্য কোন কিছুকে আল্লাহর সত্ত্বার অংশ মনে করা কিংবা কোন সৃষ্টিকে হুবহু আল্লাহর সত্ত্বা বা সত্ত্বার অংশ মনে করা কুফুর”
(মাজমুয়ায়ে রাসাইল, পৃ: ১৮)
নূর ও বাশার বিষয়ে উলামায়ে দেওবন্দের অবস্থান কী ছিলো?
এদেশের দেওবন্দী উলামায়ে কেরামের মাঝে বিষয়টি প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, তাদের অনেকে মূল দেওবন্দী উলামায়ে কেরামের অবস্থান না জেনেই নিজেদের মতো করে ধারণা করে বিভিন্ন বিষয়ের বিরোধিতা করে। অথচ দেওবন্দী উলামায়ে কেরামের কিতাবে এর ভিন্ন বাস্তবতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে মাওলানা মিজান হারুনের মতো যারা উভয় ঘরানার কারও বক্তব্য সঠিকভাবে না জেনে একপাক্ষিক খন্ডনে নেমে পড়েছে, তাদের জানা উচিৎ ছিলো, নবীজীর নূর ও বাশার হওয়ার বিষয়ে উলামায়ে দেওবন্দের বড় কোন বিরোধ নেই। উলামায়ে দেওবন্দের কেউ কেউ নবীজীর নূরকে তার গুণ ও হিদায়াতের নূর হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তবে মৌলিকভাবে নবীজীর নূর হওয়াকে পুরোপুরি তারা অস্বীকার করেননি।
মাওলানা উবাইদুল্লাহ আসআদি সাহেব দারুল উলুম দেওবন্দের আকিদা ও চিন্তা-চেতনার উপর বড় কলেবরের কিতাব লিখেছেন। ‘দারুল উলুম দেওবন্দ’ কিতাবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এই কিতাবের শুরুতে মুফতী তাকী উসমানী ও মাওলানা সাইদ আহমদ পালনপুরীর প্রশংবাণী ও অভিমত রয়েছে। এখানে তিনি একটি আলোচনার শিরোনাম দিয়েছেন, “নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের মৌলিকত্ব, নবীজীর প্রথম সৃষ্টি হওয়া এবং কিছু দৃষ্টিকোণ থেকে সৃষ্টির প্রথম হওয়া” সংক্রান্ত আলোচনা। এই আলোচনায় তিনি বলেছেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সৃষ্টির মূল হওয়ার বিষয়টি আল্লাহর নবীর সৃষ্টি সংক্রান্ত কিছু হাদীস থেকে বোঝা যায়। বিশেষ করে যেসব হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নূরকে প্রথম সৃষ্টি করা হয়েছে এজাতীয় বক্তব্য রয়েছে। এজাতীয় কিছু কিছু হাদীস সনদের দিক থেকে দুর্বল বা জাল হলেও অর্থের দিক থেকে এর অর্থ ও উদ্দেশ্য সঠিক।
এরপর মাওলানা উবাইদুল্লাহ আসআদী মাওলানা আশরাফ আলী থানবী ও মাওলানা আনোয়ার শাহ কাস্মিরীর বক্তব্যও এনেছেন।
হযরত আবু হুরাইরা রা: থেকে একটি সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়েছে, সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করেছেন, হে আল্লাহর রাসূল, কখন আপনার নবুওয়াত ওয়াজিব (দেয়া) হয়েছে? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালাম দেহ ও আত্মার মধ্যবর্তী অবস্থায় ছিলেন।
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মাওলানা আসআদী মাওলানা আশরাফ আলী থানবীর একটি দীর্ঘ বক্তব্য এনেছেন। মাওলানা থানবী বলেন,
“ স্পষ্টত: তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেহ মোবারক তখন ছিলো না। সুতরাং নবুওয়াতের গুণটি তখন নবীজীর রুহ ও নূরে মুহাম্মাদিকে দেয়া হয়েছিল”।
এরপরে মাওলানা উবাইদুল্লাহ আসআদী নবীজীর নূর সংক্রান্ত হাদীসে জাবের হিসেবে বিখ্যাত হাদীস দিয়েও দলিল দিয়েছেন। এই হাদীসের ব্যাখ্যা হিসেবে মাওলানা থানবীর নিচের বক্তব্যটি উল্লেখ করেছেন,
“হযরত জাবের রা: এর হাদীস থেকে স্পষ্ট যে নূরে মুহাম্মাদী হলো বাস্তবে প্রথম সৃষ্টি।” (নাশরুত তিব্ব, পৃ: ৬)
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নূর আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্ট হওয়ার ব্যাখ্যায় মাওলানা আসআদী সেই সব বক্তব্যই উল্লেখ করেছেন যা আমরা উপরে মাওলানা আহমদ রিদ্বা খানের বক্তব্যে উল্লেখ করেছি। একই ধরণের বক্তব্য ও ব্যাখ্যা। আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্ট হওয়ার ব্যাখ্যায় মাওলানা থানবীর একটি বক্তব্য তিনি উদ্ধৃত করেছেন,
“নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নূর আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্ট হওয়ার অর্থ হলো, আল্লাহর নূরের ফয়েজ থেকে সৃষ্ট হয়েছে। এই অর্থে নয় যে, আল্লাহর নূর নবীজীর নূরের মৌল উপাদান” (নাশরুত তিব, পৃ:৫)
যারা হাদীসে জাবের জাল হওয়ার কথা বলেন, তাদের উত্তর তো মাওলানা উবাইদুল্লাহ আসআদী আলোচনার শুরুতেই দিয়েছেন যে, উলামায়ে দেওবন্দের কাছে এই হাদীসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল বা জাল হলেও অর্থের দিক থেকে এর অর্থ সঠিক।
মাওলানা উবাইদুল্লাহ আসআদীর সম্পূর্ণ আলোচনার স্ক্রিনশট নিচে দেয়া হলো,
একইভাবে মাওলানা রশীদ আহমাদ গাংগুহীকে ‘আমার নূর প্রথম সৃষ্টি করা হয়েছে’ সংক্রান্ত হযরত জাবের রা: এর হাদীস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
“ হাদীসটি সিহাহ সিত্তাতে নেই। তবে শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিসে দেহলবী তার কিতাবে এটি উল্লেখ করে বলেছেন এর ভিত্তি আছে”।
(ফতোয়া রশিদিয়্যাহ, পৃ: ১১০, ১১১)
মোটকথা, নূর ও বাশার হওয়ার বিষয়ে আহমদ রিদ্বা খানের বক্তব্য ও দলিলের সাথে উলামায়ে দেওবন্দের বক্তব্য ও দলিলের বড় কোন বিরোধ নেই। খোদ মুফতী আমীন পালনপুরী বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। উলামায়ে দেওবন্দের কেউ কেউ বেরেলভীদের সাথে বিরোধপূর্ণ মাসআলা হিসেবে নূর ও বাশারের কথা বললেও বাস্তব তাহকীকে এটি স্পষ্ট যে বেরেলভীরা নবীজীর বাশারিয়াতকে অস্বীকার করে না এবং এ বিষয়ে তাদের সাথে উলামায়ে দেওবন্দের বড় কোন বিরোধ নেই। এর বিপরীতে মাওলানা মিজান হারুন বিষয়টি কোন রুপ যাচাই – বাছাই না করে সম্পূর্ণ মনগড়া ও মিথ্যা অপবাদমূলক একটি পোস্ট করেছেন আহমদ রিদ্বা খানের বিরুদ্ধে। সেখানে বাশারিয়াত অস্বীকার থেকে শুরু করে এলিয়েন, অবতার ইত্যাদি টেনে এনেছেন। যা তার হিংসাত্মক অপবাদমূলক মানসিকতার বহি:প্রকাশ। এটি চরম জঘন্য মিথ্যাচারও। বাস্তবতার সাথে মাওলানা মিজান হারুনের অপবাদের দূরতম সম্পর্কও নেই। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এধরণের অপবাদ, মিথ্যাচার ও ইলমী খিয়ানতমূলক কাজ থেকে হেফাজত করুন।