নারীদের বিয়ের কোন বয়স আছে?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

একজন নারী যত কম বয়সি, তার জন্য আগ্রহী পুরুষদের সংখ্যা তত বেশি। ১৯৮৬ সালে ইয়েলের সমাজবিজ্ঞানী নীল বেনেট এবং হার্ভার্ড অর্থনীতিবিদ ডেভিড ব্লুমের একটি গবেষণা খুব বিখ্যাত হয়। গবেষণায় দাবি করা হয় যে, একজন চল্লিশ বছর বয়সি নারীর প্রথমবার বিয়ে করার চেয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বেনেট এবং ব্লুমের মতে, ৩০ বছর বয়সে একজন স্নাতক-ডিগ্রিধারী নারীর বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ, কিন্তু ৪০ বছর বয়সে সেই সম্ভাবনা নেমে হয়ে যায় ১.৩ শতাংশ। গবেষণাটি এমন ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে যে, সারা বিশ্বব্যাপী পত্রিকা এবং টিভির খবরে প্রচারিত হয়—আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার আগেই। বেনেট আমাকে বলেছিলেন যে, অস্ট্রেলিয়া এবং আর্জেন্টিনার মতো দূরবর্তী দেশগুলো থেকেও তার কাছে কয়েক সপ্তাহ ধরে সাংবাদিকদের ফোন এসেছে।

এই তথ্যগুলো একটি বিতর্কের ঝড় বয়ে আনে, এবং বেশ কয়েকটি নতুন গবেষণার জাগান দেয়। যখন ঝড় বন্ধ হয়, তখন দেখানোর চেষ্টা করা হয় যে যদিও শুরুতে যেমন বলা হয়েছিল ব্যাপারটা আসলে অতটা গুরুতর নয়, তবুও বেনেট এবং ব্লুমের মূল অনুমান শতভাগ সঠিক প্রমাণিত হয় : বয়স যত বাড়ে, ততই একজন নারীর পক্ষে স্বামী পাওয়া কঠিন হতে থাকে, তাতে তিনি যতই উচ্চশিক্ষিতা ও উচ্চ উপার্জনকারী হন না কেন।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের ফলাফল সেটাই বলে। আমার জরিপেও দেখেছি, নারীদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিবাহের হার অত্যন্ত দ্রুত গতিতে কমতে থাকে। মাত্র ১০% উচ্চ-উপার্জনকারী নারী ত্রিশ বছর বয়সের পরে প্রথমবার বিয়ে করে, এবং মাত্র ১% করে পঁয়ত্রিশের পরে।

সাম্প্রতিক জাতীয় পরিসংখ্যান দেখলে এর কারণও বোঝা যায়। ২৮ বছর বয়সে প্রতি তিনজন স্নাতক-ডিগ্রিধারী অবিবাহিত নারীর জন্য চারজন যোগ্য পুরুষ রয়েছে, অথচ ৩৮ বছর বয়সে এসে প্রতি তিনজনের জন্য অবশিষ্ট থাকে শুধু একজন যোগ্য পুরুষ।

এগুলো জাতীয় সেন্সাস ব্যুরোর পরিসংখ্যান, এবং এখানে কেবল বয়স অনুযায়ী অবিবাহিতাদের পরিসংখ্যানের সাথে তাদের থেকে একটু বেশি বয়সি এবং একই বা একটু উপরের স্তরের শিক্ষাগত যোগ্যতাপ্রাপ্ত পুরুষদের পরিসংখ্যানকে মেলানো হয়েছে। বাস্তবে স্নাতক-ডিগ্রিধারী বয়স্ক নারীদের স্বামী পাওয়ার সম্ভাবনা এর থেকেও কম; কারণ, উচ্চ শিক্ষিত, উচ্চ-উপার্জনকারী পুরুষেরা স্ত্রী খোঁজার সময় শুধু তাদের নিজেদের কাছাকাছি বয়সি বা উচ্চপদস্থ নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন না। তারা আরও অল্পবয়সি এবং নিজেদের থেকে কম শিক্ষিত বা কম উপার্জনকারী মেয়েদেরও যোগ্য পাত্রী হিসেবে গণ্য করেন। এবং তাই পুরুষদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের যোগ্য পাত্রীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।

অথচ নারীদের ব্যাপারটা ঠিক তার উলটো। স্নাতক-ডিগ্রিধারী নারীরা সাধারণত এমন স্বামীদের খোঁজার প্রবণতা দেখান—যারা তাদের থেকে একটু বেশি বয়সি এবং শিক্ষা ও কৃতিত্বের দিক দিয়ে তাদের উপরে। তাই তাদের যোগ্য পাত্রের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে খুবই সীমিত, এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেটা আরও কমতে থাকে।

অর্থাৎ, সময় যত গড়ায়, তত একজন উচ্চ-উপার্জনকারী নারী উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজতে গিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়েন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শুধু সমবয়সি উচ্চ-উপার্জনকারী নারীরাই নয়, সেই সঙ্গে বিপুল সংখ্যক অল্পবয়সি, কম যোগ্যতাপূর্ণ মেয়েরাও, যারা উচ্চ-আয়কারী পুরুষদের চাহিদা পূরণে তার থেকে বেশি পারদর্শী।

এই পারদর্শিতার শিক্ষাগত যোগ্যতা বা আয়শক্তির সাথে, এমনকি যৌনতা বা সৌন্দর্যের সাথেও কোনো সম্পর্ক নেই। পুরুষরা যা চায়, তা হলো—শ্রদ্ধা এবং মনোযোগ।

একজন কম যোগ্যতাপূর্ণ বিশের ঘরের নারীর জন্য একজন অত্যন্ত যোগ্যতাপূর্ণ ত্রিশের ঘরের নারীর চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় বা সুন্দরী হওয়া আবশ্যক নয়; কিন্তু সে হয়তো একজন উচ্চ-উপার্জনকারী পুরুষকে তার পুরো মনোযোগ দিতে বেশি আগ্রহী হবে, এবং তার সাফল্যের দ্বারা আরও অনেক সহজে মুগ্ধ হবে।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment