নামাজের জন্য ওজু করা ফরজ। অনেকেই জানে না যে, এক ওজুতে একাধিক ওয়াক্ত নামাজ পড়া যাবে কি-না। আবার ওজু থাকা সত্ত্বেও নামাজের জন্য পুনোরায় ওজু করা লাগবে কি-না।
এক ওয়াক্তের জন্য ওজু করার পর যদি ওজু না ভাঙে তবে একাধিক ওয়াক্ত নামাজ পড়া যাবে। আবার ওজু থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য আলাদা-আলাদা ওজু করা যাবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই ওজুতে সব নামাজ আদায় করেছেন। এ ব্যাপারে হাদিসে পাকে রয়েছে সুস্পষ্ট বর্ণনা।
হজরত সুলাইমান ইবনে বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর পিতার (বুরাইদা) সূত্রে বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি ওয়াক্ত নামাজের নতুনভাবে ওজু করতেন। (আবার) তিনি মক্কা বিজয়ের দিন একই ওজু দিয়ে সব ওয়াক্তের নামাজ আদায় করেছেন এবং মোজার ওপর মাসেহ করেছেন।
ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘আপনি (প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন একটি কাজ করলেন যা ইতিপূর্বে কখনও করেননি। তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘আমি ইচ্ছা করেই এটা করলাম। ’ (মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তিনি (প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার ওজু করেছেন।’ আবার তিনি প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য নতুনভাবে ওজু করতেন।
উল্লেখিতো হাদিসের আলোকে ও ওলামায়ে কেরামদের মতে, ওজু নষ্ট না হলে এক ওজুতে একাধিক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা যাবে।
❇তবে কেউ কেউ ফজিলত লাভের আশায় প্রত্যেক নামাজের জন্য নতুনভাবে ওজু করাকে মুস্তাহাব মনে করেছেন।
ফজিলত প্রসঙ্গেও হাদিসের একটি বর্ণনাও রয়েছে। তাতে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য নতুনভাবে ওজু করলে সাওয়াব বৃদ্ধি ঘোষণা রয়েছে।
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ওজু থাকা অবস্থায় (নতুনভাবে) ওজু করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য ১০টি সাওয়াব লেখেন।’ তবে হাদিস বিশারদগণ এ বর্ণনাকে যঈফ সাব্যস্ত করেছেন।
❇আবার প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই ওজুতে জোহর ও আসর নামাজ আদায় করেছেন।’
পরিশেষে…যেহেতু উভয় ভাবে নামাজ আদায়ে হাদিস দ্বারা প্রমাণিতো, তাই এক ওজুতে একাধিক ওয়াক্ত নামাজ যেমন পড়া যাবে তেমনি প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য ওজু থাকলেও নতুনভাবে ওজু করা যাবে। তাতে কোনো বিধি-নিষেধ নেই।
তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের জন্য নতুনভাবে ওজু করতেন। সুতরাং সমস্যা না থাকলে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য নতুনভাবে ওজু করাই উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। (আমিন।)