জিজ্ঞাসা-৭০:নবজাতক সন্তানের জন্মের পর সন্তানের দাদা-দাদি বা নানা-নানি বা মুরুব্বি শ্রেণির কেউ অনেক সময় গলার চেইন বা চুড়ি জাতীয় কোন অলঙ্কার নবজাতককে পরিয়ে দিতে চায়। হতে পারে সেটা স্বর্ণ বা রুপার কোন অলঙ্কার। নবজাতক সন্তানের এ ধরনের অলঙ্কার পরার ব্যাপারে শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কি? নবজাতক ছেলে বা মেয়ে হলে অলঙ্কার পরার ব্যাপারে মাস’আলা কি আলাদা হবে? এব্যাপারে একটু বিস্তারিত বললে উপকৃত হব- ইনশাল্লাহ।–-zamantauhid1@gmail.com
জবাব:মূল প্রশ্নের উত্তরের আগে নবজাতক সন্তানের জন্মের পর ইসলামি আদর্শের অনুশীলন করার ব্যাপারে জোরালো তাগিদ দিচ্ছি। আর তাহল এই যে, ১.আল্লাহর প্রসংশা করুন, তাঁর শুকরিয়া আদায় করুন ও সন্তানের জন্য দোয়া করুন।২.সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডান কানে আজান দিন। ৩. তাহনিক করুন । ৪. সপ্তম দিন মাথা মুণ্ডন করুন ও চুলের ওজন পরিমাণ রুপা বা তৎমূল্য সদকা করুন।৫. আকিকা করুন। ৬. তার জন্য একটি সুন্দর নাম রাখুন।
এবার মূল প্রশ্নের উত্তর—নবজাতক সন্তানের জন্মের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ যেকোনো অনুমোদিত পদ্ধিতে করার অবকাশ আছে। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, আর তার (ইবরাহিমের) স্ত্রী দাঁড়ানো ছিল, সে হেসে উঠল। অতঃপর আমি তাকে সুসংবাদ দিলাম ইসহাকের ও ইসহাকের পরে ইয়াকুবের। (সূরা হুদ : ৭১)এর দ্বারা বোঝা যায় ,সন্তান (ছেলে বা মেয়ে) জন্মের পর অনুমোদিত পদ্ধতিতে আনন্দ প্রকাশ করা ইসলামে নিষেধ নয়। সুতরাং দাদা-দাদি বা নানা-নানি বা অন্য কেউ যদি খুশি হয়ে গলার চেইন বা চুড়ি জাতীয় কোন অলঙ্কার নবজাতককে পরিয়ে দিতে চায় তাহলে নিষেধের কোনো কারণ নেই। তবে যদিও প্রাপ্ত বয়সে উপনীত হওয়ার পর সন্তানের ওপর শরীয়তের হুকুম-আহকাম প্রযোজ্য হবে কিন্তু অভিভাবকদের কর্তব্য হলো ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই তার ইসলামি অনুশাসনের বিষয়গুলোর প্রতি সবিশেষ নজর রাখা। আর ইসলামি অনুশাসনানুযায়ী নারী ও পুরুষের অলঙ্কার ব্যহারের অঙ্গসমূহ এক নয়।পুরুষ শুধু হাতের আঙ্গুলে রূপার আংটি ব্যবহার করতে পারে। নারী হাত, পা, নাক, কান, গলা, বাজু, কব্জি, হাতের আঙ্গুল, পায়ের নলা, পায়ের আঙ্গুল ও কোমরে অলঙ্কার পরিধান করতে পারে। সুতরাং নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রে ইসলামের এই বিধান যদিও এখনি প্রযোজ্য নয়,তবে অভিভাবকদের কর্তব্য হলো এদিকটার প্রতিও লক্ষ্য রাখা।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী