



নজর ও মানত ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ কিনা?
===========================
‘নজর’ আরবী শব্দ। ইহার অর্থ বিনা চাওয়াতে কোন কিছু প্রদান করা এবং আরবী ‘মানত’ শব্দের অর্থ ওয়াদা পূরণ করা। কোন পীর কিংবা মোর্শেদ তথা অলী-আল্লাহ্গণের নিকটে গেলেও তাঁকে নজর দেয়া একান্ত কর্তব্য। কেননা পীর বা মোর্শেদ হলেন হযরত রাসূল (সঃ)-এর উত্তরাধিকারী এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষাগুরু। তাঁর শিক্ষা পদ্ধতি অনুশীলনের মাধ্যমেই আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হয়ে থাকে। তাই মুরীদের পক্ষ থেকে মোর্শেদকে সন্তুষ্টচিত্তে যা প্রদান করা হয়, কুরআনের ভাষায় উহাই ‘নজর’ বলে গণ্য।
‘মানত’ আদায় করার প্রতিও ইসলামে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কোন ব্যক্তি যদি রোজা অথবা হজ্ব পালন এবং পশু কোরবানী করার জন্য মানত করে, তাহলে তার জন্য উক্ত মানত পূর্ণ করা ওয়াজিব হয়। উহা আদায় করা না হলে ওই ব্যক্তি আল্লাহ্র নিকট অপরাধী বলে গণ্য হয়। মানত আদায়ের জন্য পবিত্র কুরআন ও হাদীসে কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ্ এরশাদ ফরমানÑ “স্মরণ কর ইমরানের স্ত্রী যখন বলেছিলোÑ হে প্রভু! আমার উদরে যা আছে তোমার নামে উৎসর্গ করলাম। সুতরাং আমার মানত কবুল কর, তুমি সব কিছুই শোন এবং জ্ঞাত আছ” (৩ পারা, সূরা আল্ ইমরান ৩৫ আয়াত)।
উল্লেখ্য যে, ইমরানের স্ত্রীর গর্ভে হযরত মরীয়ম (আঃ) জন্ম গ্রহণ করেন। যদিও তিনি মেয়ে ছিলেন, তথাপি তাঁর পিতা-মাতা মানত পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে তাঁকে ‘বায়তুল মোকাদ্দাসের’ খেদমতে উৎসর্গ করেছিলেন। কেননা, মানত যেহেতু আল্লাহ্র কাছে অঙ্গীকার, সেহেতু মকসুদ হাসিল শেষে তা পূর্ণ করা অপরিহার্য কর্তব্য। মানত আদায়ের গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে যথেষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায় এবং ফতোয়ার কিতাবে এ সম্পর্কে একটি অধ্যায়ও রয়েছে।
পরিশেষে একথা বলা যায় যে, অলী-আল্লাহ্গণ আল্লাহ্র বন্ধু এবং হযরত রাসূল (সঃ)-এর ওয়ারেছ। তাঁদের দরবারে আল্লাহ্র নামে কিছু মানত করে মানুষ বহু বিপদ থেকে মুক্তি পেয়ে থাকে। সুতরাং আল্লহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অলী-আল্লাহ্গণের দরবারে নজর বা মানত সম্পূর্ণ বৈধ এবং তা আদায় করা কুরআন ও হাদীসের দৃষ্টিতে ওয়াজিব।





Users Today : 228
Users Yesterday : 767
This Month : 14650
This Year : 186521
Total Users : 302384
Views Today : 10169
Total views : 3586914