গ্রহণযোগ্য ৩ সনদে মান সাব্বা নাবিয়্যান ফাক্বতুলুহু:
—AR RAFFEHAAN
কথা বলবো ❝মান সাব্বা নাবিয়্যান ফাক্বতুলুহু❞—নিয়ে।যে মশহুর/প্রসিদ্ধ হাদিসটির অনুবাদের প্রয়োজন পর্যন্ত পড়েনা।
আমরা এখন দেখাবো এই হাদিসের সম্মিলিত রূপ শক্তিশালি এবং মুহাদ্দিসিনে কিরামদের নিকট গ্রহণযোগ্য।
➤➤➤সনদ ১:
বিশ্ববিখ্যাত ইমাম হাফিয সুলাইমান তাবারানি মু’জামুস সগিরে ১/৩৯৩ এ সনদসহ উল্লেখ করেন,
حدثنا عبيد الله بن محمد العمري القاضي بمدينة طبرية سنة سبع وسبعين ومائتين ، حدثنا إسماعيل بن أبي أويس ، حدثنا موسى بن جعفر بن محمد ، عن أبيه ، عن جده علي بن الحسين ، عن الحسين بن علي ، عن علي رضي الله عنهم قال : قال رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم : ” من سب الأنبياء قتل ، ومن سب أصحابي جلد ………….
— উবায়দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল-উমারি…….ইমাম মুসা কাযিম বর্ণনা করেন তার পিতা ইমাম জা’ফর সাদিক্ব হতে,উনি উনার বাবা ‘বাক্বিরুল ইলম’ ইমাম মুহাম্মাদ হতে,উনি উনার বাবা ইমাম সাজ্জাদ যাইনুল আবিদিন হতে,উনি উনার পিতা সাইয়্যিদুশ শুহাদা আলাইহিস সালাম হতে উনি মুমিনদের মাওলা আলি কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু হতে উনি নবি করিম ﷺ হতে বর্ণনা করেন,নবি ﷺ বলেন,❝যে আম্বিয়া عليهم السلام কে গালি দিল তাকে ★হত্যা★ করো।❞
★এখানে ইমাম হায়সামি ইমাম নাসায়ির থেকে রাবি উবায়দুল্লাহর উপর আপত্তি আনেন।তবে আরো বর্ণিত আছে,ইমাম সুয়ুতি বলেন,
الحديث الطبراني في الأوسط بسند ضعيف
—হাদিসটি দূর্বল সূত্রে ইমাম তাবারানি আওসাতে বর্ণনা করেন।
[মানাহিলুস সাফা ফি তাখরিজে আহাদিসিস শিফা,২৪১পৃষ্ঠা]
★’বাহজাতুল মাহাফিল’ গ্রন্থের ২/১৯৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
وهذا الحديث وان كان في اسناده ضعف فقد اعتضد بالاجماع
—এই হাদিসটির এই উল্লিখিত বর্ণাসূত্র দূর্বল।কিন্তু মুহাদ্দিসিনে কিরামের ইজমা এটাকে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছে।
★ইমাম মানাভিও একে দুর্বলই বলেছেন।
[তায়সির বি শরহে জামিউস সাগির,২/৪২২]
★আল্লামা আযিযি ‘সিরাজুম মুনির বি শারহে জামেউস সগির’ গ্রন্থে (৪/৩০০) একে দূর্বল বলেছেন
লক্ষ্য করুন,এই হাদিসকে কোনো ইমাম দ্ব’ইফ জিদ্দান বা অত্যন্ত দূর্বল বলেন নি।কেবল দূর্বল বলেছেন।অতএব,শিয়া পোলারাইজড সিউডো-হানাফি আলিম মিথ্যাচারি প্রমাণিত হলেন।
➤➤➤সনদ ২:
আমিরুল মুমেনিন ফিল হাদিস ইমাম দারাকুতনির সনদ
حَدَّثَنَا الشَّيْخُ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ غَلْبُونَ عَنْ الشَّيْخِ أَبِي ذَرٍّ الْهَرَوِيِّ إِجَازَةً قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الْحَسَنِ الدَّارَقُطْنِيُّ وَأَبُو عُمَرَ بْنُ حَيَّوَيْهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ نُوحٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ بْنِ زَبَالَةَ حدثناعبد الله بن مُوسَى بْنِ جَعْفَرٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُوسَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ عَنْ محمد بن علي بت الْحُسَيْنِ عَنْ أَبِيهِ عَنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ:مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوهُ
—আহলে বায়তের সনদে বর্ণিত,নবি ﷺ বলেন,❝ আম্বিয়া عليهم السلام কে গালি দিল তাকে হত্যা★ করো।❞
[আশ-শিফা,২/২২১,ইমাম কাযি আইয়্যায]
★শাইখুল ইসলাম তক্বিউদ্দিন আস-সুবুকি কুদ্দিসাল্লাহু সিররুহু বলেন,
في هذا الحديث نظر من جهة الراوي عن أهل البيت فيه، وعبد العزيز بن محمد بن الحسن بن زبالة، جرحه ابن حبان وغيره
—এই হাদিসের বর্ণনাসূত্রে আহলে বায়তে আতহার দেখা যায়।তবে আবদুল আযিয বিন মুহাম্মদ বিন হাসান বিন যাবালাহকে ইমাম ইবনে হিব্বান এবং অন্যান্য কেউ কেউ সমালোচিতদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
[সায়ফুল মাসলুল,১৪৯ পৃষ্ঠা,ইমাম সুবুকি]
★শিফা শরিফের ব্যাখ্যায় ইমাম মোল্লা আলি ক্বারি বলেন,
قلت الحديث قد ساقه القاضي بسنده من طريق الدراقطني وهو إمام جليل من أهل السنة
—❝আমি বলছি:ইমাম কাযি আইয়া্য এই হাদিসটিকে ইমাম দারা কুতনির সনদে সংকলন করেছেন।আর ইমাম দারাকুতনি হলেন আহলুস সুন্নাহর অতি মর্যাদাবান ইমাম।❞
➤➤➤সনদ ৩:
‘আর রাওযুল বাসাম বি তারতিবি ওয়াত তাখরিজি ফাওয়ায়িদি তামাম’ ৩/৪১ পৃষ্ঠায় আল্লামা জাসিম বিন সুলাইমান হাফিযাহুল্লাহ উল্লেখ করেন,
حـدثنا أبو الحسن مزاحم بن عبد الوارث البصري : نا الحسين بن حميد بن الربيع اللخمي، قال: حدثني عبد السلام بن صالح الهروي، قال : حدثني علي بن موسى الرضا، قال: حدثني أبي: موسى بن : جعفر عن أبيه : جعفر بن محمد عن أبيه : محمد بن علي عن أبيه : علي بن
الحسين عن أبيه . عن علي عن النبي ﷺ قال: «من سب نبياً من الأنبياء فاقتلوه،
—এই সনদে ইমাম আলি ইবনে মুসা কাযিম আর রিযা ইবনে জাফর আস-সাদিক বিন মুহাম্মদ আল বাকির ইবনে আলি ইবনে হুসাইন ইবনে আলি কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আছেন,যিনি আহলে বায়তের সূত্রে নবি ﷺ হতে বর্ণনা করেন,❝ আম্বিয়া عليهم السلام কে গালি দিল তাকে ★হত্যা★ করো।❞
রাবি আব্দুস সালাম বিন সালিহ আর হারভি কে ইমাম ইবনু হাজার সত্যবাদি বলেছেন।ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে মুইন ও অন্যান্য অনেকেই বিশ্বস্ত আখ্যা দিয়েছেন।
[তাহযিবুত তাহযিব,৬/৩২০ এবং তাক্বরিবুত তাহযিব ৩৫৫পৃষ্ঠা]
এখন তিন-তিনটা সনদের সম্মিলিত সূত্র একত্রিত হলে হাদিসটার মর্যাদা কোথায় উঠে তা বর্ণনা করলে পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে।কারণ ফিতনায়ে সালাফিয়ার কারণে আদনা লেভেলের পড়ুয়াও জানে যে,একাধিক সূত্রে বর্ণিত হাদিস ন্যুনতম হাসান তদুর্ধে সহিহ।
এছাড়া আহলে বায়তে আতহারের সনদের উপর যে ব্যক্তি নির্ভর করতে সন্দেহপ্রবণ হয়,কেবল বাবা খাদিমের জনপ্রিয়তার প্রতি হিংসুক হয়ে,সে যদি সারা দুনিয়ার মানাকিবে আলি কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু গুলো সম্পাদনা করে অনুবাদ করে,য়াতে তা কোনো কাজে আসবেনা বলে আমার ধারণা।
তথাপি,এর সাক্ষ্য মূলক হাদিস অনেক অনেক রয়েছে যার কারণে মান সাব্বান নাবিয়্যান ফাক্বতুলুহি একটি মশহুর হাদিস।
আমাদের কালেকশনে আলহামদুলিল্লাহ আরো হাদিস রয়েছে যেগুলো এই হাদিসের সাথে একেবারেই সমার্থক।তবে যে মানবে তার জন্য এগুলো যথেষ্ঠ হবে।
সর্বশেষ বলি,যে বা যারা নবি ﷺ এর সাব্বো-শিতাম বা বক্রোক্তির বিপরিতে মান সাব্বা নাবিয়ান ফাক্বতুলুহুর উপর সন্দেহ করে,তারা যেন ইমাম নাসায়ির মুজতাবা দেখে নেয়,যেখানে কিতাবু তাহরিমিদ দাম্ম এ ইমাম রহি. স্বতন্ত্র বাব রচনা করেছেন যার নাম —❝হুকমি ফি মান সাব্বা নাবিয়্যান ﷺ❞