ইমাম আ’লা হযরত আহমাদ রেযা খান রাদি. এঁর সর্বশেষ বক্তব্য। যাতে নিহিত উপদেশ। আর উম্মাহ’র ভবিষ্যতের জন্য সুগভীর নির্দেশ। প্রোথিত আবেগ।
—-
আপনারা রাসুল ﷺ এঁর নিরিহ বিহঙ্গ। নিষ্পাপ পাখি। আপনাদের ঘিরে আছে হিংস্র-শ্বাপদ। বহু নেকড়েপাল। যাদের সংকল্প আপনাদের বিপথগামী করা। নিমজ্জিত করা ফিতনায়। তাদের মতই জাহান্নামী বানানো। রক্ষা করুন নিজেকে। দূরে সরে যান। সৃষ্টি করুন যোজন দূরত্ব। তারা দেওবন্দী, রাফেজী (শিয়া), নেচারী, কাদিয়ানী বা চক্রলবী। এবং সর্বশেষ গান্ধী ফিতনা। যা সব কিছুর পূঞ্জিভূত রূপ। এরা সবাই নেকড়ে। তারা অপেক্ষায় আছে। আপনার ইমান ছিনতাই করবে। তাদের আক্রমণ থেকে ইমান রক্ষা করুন। হুযুর-এ-আকদাস ﷺ আল্লাহ’র নূর। আল্লাহ’র জ্যোতি। সাহাবাগণ যা থেকে জ্যোতির্ময় হয়েছেন। তাঁদের থেকে তাবেইগণ আলোকিত। তাঁদের থেকে মুজতাহিদগণ। পালাক্রমে যা আমরা পেয়েছি। অনুরোধ করছি এ জ্যোতি গ্রহণ করুন।
গ্রহণ করুন! আমাদের থেকে গ্রহণ করুন। আমরা চাই : আপনি আলোকিত হন। আমাদের মাধ্যমে (উলামায়ে আহলে সুন্নাতের মাধ্যমে)। এ আলোতেই আল্লাহ ও রাসুল ﷺ এঁর সত্য-ভালোবাসা পাবেন। তাঁদের প্রিয়-দাস (আউলিয়া)-গণের সম্মান জানবেন। এবং তাঁদের শত্রুদের ঘৃণা করতে শিখবেন। আল্লাহ ও রাসুল এঁর সামান্য বিদ্বেষীকেও ছুড়ে ফেলবেন। সে যতই প্রিয় ও ঘনিষ্ঠ হোক না কেন!
আল্লাহ ও রাসুল এঁর আদালতে ধর্মদ্রোহীকে উপড়ে ফেলবেন। দুধ থেকে মাছিকে যেভাবে তাড়ানো হয়। তারা আপনার অতি-সম্মানিত ও আপন হলেও।
প্রায় চোদ্দ বছর বয়স থেকে আজ অবধি এটাই ব্যাখ্যা করেছি। এখন একই কথা বলছি। আল্লাহ অবশ্যই তাঁর দ্বীনের (ধর্মের) জন্যে কাউকে পাঠাবেন। সাহায্যকারী রূপে। আমার পরেও কেউ আসবেন। কিন্তু আমি অবগত নই, তিনি কি ব্যাখ্যা করবেন। ঠিক এ কারণেই আপনাদের মনযোগী হওয়া উচিৎ। আমার বক্তবের বিষয়ে।
আল্লাহ’র দ্বিনের সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রমাণিত হয়েছে। আমি আর কবর থেকে উঠব না। আপনাদের ব্যাখ্যা (শিক্ষা) দিব না। যাঁরা আমার কথা শুনেছেন-মেনেছেন। শেষ বিচারে তাঁরা আলোকিত হবেন। মুক্তি পাবেন। যে গ্রহণ করেনি, সে নিমজ্জিত অন্ধকারে। সে ধ্বংসপ্রাপ্ত।
আমার উপস্থাপিত সব কিছুই, আল্লাহ ও রাসুল এঁর আদালত থেকে নির্দেশিত। উপস্থিত সকলে শুনুন এবং গ্রহণ করুন। এবং অনুপস্থিতদের কাছে পৌঁছে দিন। আমি যা বলেছি। তাঁদের সতর্ক করুন। আপনাদের ওপর এটা ফরয।
(এরপর আ’লা হযরত বললেন) আপনারা কখনোই হতাশ করেন নি আমাকে। আমার অবশিষ্ট কাজ করেছেন। যা আমাকে করতে হয় নি। আল্লাহ আপনাদের সর্বোত্তম প্রতিদান দিক। আমি আস্থা রাখি, আপনারা হতাশ করবেন না আমাকে। এমনকি আমি কবরে গেলেও।
আমি সমস্ত দায় থেকে আহলে সুন্নাত (সুন্নিদের)-কে ক্ষমা করলাম। যদি কিছু থেকে থাকে। এবং বিনীত অনুরোধ। আমার ভুলত্রুটি ক্ষমা করুন। আর উপস্থিত সকলের ওপর দায়িত্ব দিলাম। আমার ক্ষমার দরখাস্ত পৌঁছে দিন। তাঁদের কাছে, যারা উপস্থিত নেই।