আমাদের মধ্যে এমন অনেক পুরুষই আছেন, যাঁরা নিজেদের স্ত্রীদের চালচলনের বিষয়ে পুরোপুরি উদাসীন। স্ত্রী পর্দা করলো কি না, নামায ঠিকভাবে আদায় করলো কি না – আমাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রসংগত পর্দা বা হিজাব নামায রোযার মতোই ফরয।
স্ত্রী ফেসবুকে হাজারো মানুষের সাথে নিজের আকর্ষণীয় ছবি শেয়ার করছে। সেই ছবিতে শ’য়ে শ’য়ে কমেন্ট করছে গায়ের মাহরামরা। স্বামী নির্বিকার; কোন কোন ক্ষেত্রে স্ত্রীর বিষয়ে গর্বিত-ও বটে! না’উযুবিল্লাহ।
.
আমরা পুরুষরা, কি “দাইয়ুস” নামটি সম্পর্কে জানি? ইংরেজীতে অনুবাদ করলে সোজা কথায় “Cuckold” বলা যায়।
“আদ-দাইয়ুস” হলো সেই ব্যক্তি যে তার স্ত্রীকে ও পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে অশ্লীল কাজের সুযোগ করে দেয় বা কোন বাধা প্রদান করে না এবং তাদের সকল শরী’য়াহ বিরোধী কাজকে মেনে নেয়। মহান আল্লাহ তাআলা ক্বিয়ামতের দিন “আদ-দাইয়ুস” দের দিকে তাকাবেনও না এবং জান্নাত তার জন্য হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।
.
সালিম বিন ‘আব্দুল্লাহ তাঁর বাবার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “তিন প্রকার মানুষের দিকে মহান আল্লাহ তা’আলা পুনুরুত্থান দিবসের দিন রহমতের দৃষ্টি দিবেননা-
(১) যে মাতা-পিতার অবাধ্য।
(২) যেই নারী তাঁর সাজ-সজ্জায় পুরুষের অনুকরণ করে এবং
(৩) আদ-দাইয়ুস।
[সুনানে আন-নাসা’ঈঃ অধ্যায় ২৩, হাদীস ২৫৬৩]
.
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “তিন ব্যক্তির জন্য মহান আল্লাহ তা’আলা জান্নাত হারাম করেছেন –
(১) যে মদ তৈরী করে।
(২) যে মাতা-পিতার নাফরমানী করে এবং
(৩) ঐ চরিত্রহীন ব্যক্তি (আদ-দাইয়ুস) যে নিজ স্ত্রীকে অশ্লীলতা ও ব্যভিচার করতে সুযোগ দেয়।
[মুসনাদে আহমাদঃ হাদীস ৫৮৩৯। সহীহুল জামে’ আস সাগীরঃ হাদীস ৩০৪৭]
.
আমাদের মধ্যে যাঁদের স্ত্রীরা হিজাব পালন করে, তাঁদের ছবি-ও বা কেন দিতে হবে ফেইসবুকে? হাতের কব্জি ও মুখমন্ডল দেখানো যায়েজ যদি মেনেও নেই, তারপরেও অযথা কেন সেই হিজাব করা ছবি সবার সাথে শেয়ার করবেন তাঁরা? কাকে দেখাতে চাচ্ছেন তাঁরা বা কাকে দেখাতে চাচ্ছি তাঁদেরকে আমরা?
.
আর যদি পর্দা প্রথা অনুসরণ না-ই করেন তাঁরা, তাহলে এমনিতে দিনে গড়ে একশত মানুষ তাঁদের চেহারা ও শরীরের অন্যান্য অংশ দেখত হয়তো। কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে দিনে নুন্যতম হাজার মানুষকে নিজেদের চেহারা ও শরীরের অন্যান্য অংশ দেখানোর সুযোগ করে দিচ্ছেন তাঁরা। একই সাথে সেই হাজার মানুষের গুনাহের একটি অংশও নিজের “একাউন্টে” জমা করছেন তারা!!
.
আমাদের মা-বোন-স্ত্রীরা শুধু এক ফেইবুকে ছবি আপলোড করেই গুনাহ ২০ গুন, ৩০ গুন থেকে ১০০ গুন, ৫০০ গুন করে ফেলছেন। কোন কারণ ছাড়া, অযথাই। আমাদের পুরুষদের (না কি সরাসরি “আদ-দাইয়ুস”-ই বলবো?) কি কোন খেয়াল আছে সেদিকে?
.
মানুষ নিজের পুণ্য কিভাবে কতগুণ বাড়ানো যায় – সেটি নিয়ে চিন্তিত থাকে বলে জেনে এসেছি। কিন্তু এই শেষ জামানায় পরিবারের ও নিজেদের গুনাহ কতগুণ বাড়ানো যায় – সেই দিকেও অনেক ভাই নজর দেয়া শুরু করেছেন বোধ করি। নাউযুবিল্লাহ। আহ! যদি আমরা বুঝতাম!!





Users Today : 332
Users Yesterday : 759
This Month : 5366
This Year : 177237
Total Users : 293100
Views Today : 4282
Total views : 3459393