তারাবীহের নামায বিশ রাকাত ১ (প্রমাণ)

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

তারাবীহর নামায বিশ রাকাত পড়া সুন্নাত; আট রাকাত পড়া সুন্নাতের বরখেলাপ। আমি কুরআন শরীফের বিন্যাস, বিশুদ্ধ হাদীছ, উলামায়ে কিরামের উক্তি ও আকলী দলীল সমূহ দ্বারা এর প্রমাণ দিচ্ছি।

১) কুরআন শরীফে সুরাও আছে, আয়াতও আছে এবং রূকুও আছে। কুরআন শরীফের যে সব বিষয় বস্তুর নাম রয়েছে, সে গুলোকে সূরা বলা হয় আর যে সব বাক্যের ভিন্ন ভিন্ন নাম নেই, ওগুলোকে আয়াত বলা হয়। কিন্তু রূকুকে রূকু কেন বলা হয়, তা ভেবে দেখা দরকার। কেননা সূরার অর্থ হচ্ছে কোন কিছুকে পরিবেষ্টন করা আর আয়াত অর্থ চিহ্ন, যেহেতু সূরা একটি বিষয় বস্তুকে অন্তর্ভুক্ত করে যেমন- সূরা বলদ আর আয়াত খোদায়ী কুদরতের চিহ্ন হিসেবে বিবেচ্য, সেহেতু এ নামকরণ যথার্থ হয়েছে। কিন্তু কুরআনী রূকুকে রূকু কেন বলা হয়, তা একবার তলিয়ে দেখা দরকার। রূকু মানে নত হওয়া। তাজবীদের কিতাবসমূহ থেকে জানা যায় যে হযরত উমর ও উছমান (রাঃ) তারাবীহর নামাযে যেই পরিমাণ কুরআন পাঠ করে রূকু করতেন, সেই অংশের নাম রূকু রাখা হয়েছে। তারবীহের নামায বিশ রাকাত এবং রমযানের সাতাশ তারিখে কুরআন খতম- এ হিসাবে ধরলে, কুরআনে পাকে মোট ৫৪০ রূকু হওয়ার কথা। কিন্তু যেহেতু খতমের দিন কোন কোন রাকাতে ছোট ছোট দু’তিন সূরা একসাথে পড়ে ফেলা হতো, সেহেতু কুরআন শরীফ ৫৫৭ রূকু সম্বলিত হয়েছে। যদি তারাবীহের নামায আট রাকাতই হতো, তাহলে রূকুর সংখ্যা ১১২ হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত ছিল। অতএব কুরআনের রূকুর সংখ্যাই প্রমাণ করছে যে তারবীহের নামায বিশ রাকাত। কোন ওহাবী আট রাকাত তারাবীহের সমর্থনে কুরআনী রূকুর কোন ব্যাখ্যা দিতে পারবে কি?
২) তারাবীহ تراويح    শব্দটি ترويح  এর বহুবচন, যার অর্থ হলো শরীরকে আরাম দেয়া। তারবীহের নামাযে চার রাকাতের পর কিছুণের জন্য বসে আরাম করা হয়। সেই বসাটার নাম তরবীহা। এ জন্য এই নামাযকে তারাবীহ অর্থাৎ আরামের সমষ্টি বলা হয়। আরবীতে কমপক্ষে তিনটাকে বহুবচন বলা হয়। যদি আট রাকাত তারাবীহ হয়, তাহলেতো এর মধ্যে মাত্র একবার তরবীহা পাওয়া যাচ্ছে এবং এর নাম তারাবীহ (বহুবচন) হতো না। তিন তরবীহার (বিশ্রাম) জন্য কমপক্ষে ষোল রাকাত তারাবীহ হওয়া বাঞ্ছনীয় অর্থাৎ প্রতি চার রাকাত পর এক তরবীহা। বিতরের আগে কোন তরবীহা বা বিশ্রাম নেওয়া হয় না। তাই তারাবীহের নামই আট রাকাত তারাবীহের দাবীকে অপ্রমাণ করে।
৩) প্রতি দিন বিশ রাকাত নামায অত্যাবশ্যক-সতের রাকাত ফরয ও তিন রাকাত বিতর, যথা- ফজরে দু’রাকাত, যুহরে চার রাকাত, আসরে চার রাকাত, মাগরিবে তিন রাকাত এবং ইশায় চার রাকাত ফরয ও তিন রাকাত বিতর। পবিত্র রমযান মাসে আল্লাহ তা’আলা এ বিশ রাকাতের পরিপূর্ণতার জন্য আরও বিশ রাকাত তারাবীহের নামায নির্ধারণ করেছেন। লা মযহাবীরা সম্ভবতঃ পাঁচ ওয়াক্তিয়া নামাযেও আট রাকাত পড়ে থাকেন নতুবা আট রাকাতের সাথে ঐ বিশ রাকাতের কি সামঞ্জস্য থাকতে পারে?
৪) হাদীছ সমূহঃ স্মর্তব্য যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিতভাবে তারাবীহের নামায জামাত সহকারে আদায় করেননি; কেবল দু’এক দিন আদায় করেছেন। অবশ্য তিনি বলে দিয়েছেন যে যদি এটা নিয়মিতভাবে আদায় করা হয়, তাহলে ফরয হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর হবে। তাই তোমরা ঘরের মধ্যেই নামায পড়ে নিও। কেউ কেউ বলেন এ নামায আসলে তাহাজ্জুদের নামাযই ছিল, যা রমযান মাসে গুরুত্ব সহকারে আদায় করানো হয়েছে। এ জন্য সাহাবায়ে কিরাম সাহরীর শেষ সময়ে এ নামায থেকে ফারেগ হতেন। হযরত সিদ্দীক আকবর (রাঃ) এর যুগেও এটা সুষ্ঠ ভাবে আদায়ের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। লোকেরা আলাদা আলাদাভাবে পড়ে নিতেন। হযরত উমর (রাঃ) এ ব্যাপারে যথার্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, বিশ রাকাত তারাবীহের নামায নির্ধারণ করেন এবং বিশ রাকাত নিয়মিত ভাবে জামাত সহকারে আদায়ের ব্যবস্থাও করেন। তাই সঠিক বক্তব্য হচ্ছে তারাবীহের নামায মূলত সুন্নাতে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। কিন্তু একে নিয়মিতভাবে জামাত সহকারে বিশ রাকাত আদায় করাটা হচ্ছে সুন্নাতে ফারুক (রাঃ)। নবী করীম (দঃ) আট রাকাত তারাবীহের নির্দেশও দেননি এবং এ ব্যাপারে বাধ্যবাধকতাও করেননি। এমনকি আট রাকাত তারাবীহ পড়া সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই। তাই বিশ রাকাতের উপর সাহাবায়ে কিরামের ঐক্যমত হওয়াটা সুন্নাতের বিপরীত নয়। আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে-

عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِىْ وَسُنَّتِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ

(তোমাদের জন্য আমার সুন্নাত ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নত পালনীয়) যা হোক আমরা বিশ রাকাতের সমর্থনে সাহাবায়ে কিরামের আমল পেশ করলাম। দেখি, লা মযহাবীরা তাদের আট রাকাত তারাবীহের সমর্থনে এমন কোন সহীহ মরফু হাদীছ পেশ করতে পারে কিনা, যদ্দারা আট রাকাত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। ইনশা আল্লাহ কখনও পারবে না। আমাদের দাবীর সমর্থনে উত্থাপিত হাদীছ সমূহ নিম্নে পেশ করা হলো-
১। হযরত উমর (রাঃ) স্বীয় খিলাফতের যুগে বিশ রাকাত তারাবীহ জামাত সহকারে আদায়ের ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কিরাম একমত ছিলেন। ‘মুয়াত্তা ইমাম মালিক’ কিতাবে হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে-

قَالَ كُنَّا نَقُوْمُ فِىْ عَهْدِ عُمَرَ بِعِشْرِيْنَ رَكْعَةً رواه البيهقى فى الفر قة باسناد صحيح

২। হযরত ইবনে মনি হযরত আবি ইবনে কা’ব থেকে বর্ণনা করেছেন-

فَصَلَّى بِهِمْ عِشْرِيْنَ رَكْعَةٍ

৩। বায়হাকী শরীফে বর্ণিত আছে-

عَنْ اَبِى الْحَسْنَاتِ اِنَّ عَلِىّ ابْنِ اَبِىْ  طَالِبِ اَمَرَ رَجُلًا يُّصَلِّى بِالناسِ خَمْسَ تَرْويحاتٍ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً

৪। ইবনে আবি শিবা, তিবরানী, কবীর, বায়হাকী, আবদ ইবনে হামিদ ও বগবী বর্ণনা করেছেন-

 عَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُصَلِّىْ فِىْ رَمَضَانَ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً سِوِى الْوِتْرِ

এ হাদীছ থেকে বোঝা যায় যে স্বয়ং হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিশ রাকাত তারাবীহের নামায পড়তেন।
৫। বায়হাকী শরীফে বর্ণিত আছে-

وَعَنْ شِبرِمةَ اِبْنِ شَكْلٍ وَّكَانَ مِنْ اصْحَابِ عَلِىِّ اِنَّهَ كَانَ يوُمّهُمْ فِىْ رَمَضَانَ فَيْصَلِّىْ خَمْس تَرْوِيْحَاتٍ عِشْرِيْنَ رَكْعَاةٍ

৬। একই বায়হাকীতে আরও বর্ণিত আছে-

وَعَنْ اَبِىْ عَبْدِ الرَّ حْمَنِ السَّلَمِىِّ اَنَّ عَلِيا دَعَى الْقُرَّاءَ فِىْ رَمَضَانِ فَاَمَرَ رَجُلًا يُّصَلِّىْ بِالنَّاسِ عِشْرِيْنَ رَكْعَةً وَّكَانَ عَلِى

৭। সেই বায়হাকীতে সহীহ সনদ সহকারে আরও বর্ণিত আছে-

عَنِ السَّائِبِ اِبْنِ يَزِيْدَ قَالَ كَانُوْا يَقُوْموْنَ عَلَى عَهْدِ عُمَرَ فِىْ شَهْرِ رَمَضَانَ بِعِشْرِيْنَ رَكْعَةً

(সহীহুল বিহারীর- كَمْيَقْرَانِى التَّرْوِيْحِ শীর্ষক অধ্যায়ে এর বিশ্লেষণ দেখুন) উপরোক্ত রেওয়ায়েত থেকে প্রতিভাত হলো যে স্বয়ং হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তারাবীহর নামায বিশ রাকাত পড়তেন এবং হযরত উমর ফারুকের খিলাফতের সময় এ বিশ রাকাতের উপর যথাযথ আমল করার সূচনা হয়েছিল। হযরত ইবনে আব্বাস, আলি, আবি ইবনে কাব, উমর, সায়েব ইবনে ইয়াযিদ প্রমুখ সাহাবায়ে কিরাম এর উপর আমল করেছিলেন।
উলামায়ে উম্মতের অভিমতঃ
১। তিরমীযী শরীফে সওমের আলোচনায়-   ما جاء فى قيام شهر رمضان শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-
আহলে ইলমের আমল ওটার উপর, যা হযরত আলী, উমর ও অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম থেকে বর্ণিত আছে অর্থাৎ বিশ রাকাত। এটাই হযরত সুফিয়ান ছুরী, ইবনে মুবারক ও ইমাম শাফেঈর অভিমত। ইমাম শাফেঈ স্বীয় শহর পবিত্র মক্কায় এরই অনুশীলন দেখতে পান অর্থাৎ মুসলমানেরা বিশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন।
২। ফত্হুল মুলহিম শরহে মুসলিমের দ্বিতীয় খন্ড ২৯১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে-
এতে বোঝা গেল বিশ রাকাতের উপর মুসলমানদের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
৩। উমদাতুল কারী শরহে বুখারী পঞ্চম খন্ডের ৩০৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে-
এর থেকে জানা গেল যে সাহাবায়ে কিরামের যুগে বিশ রাকাত তারাবীহ ও তিন রাকাত বিতর পড়া হতো।
৪। উমাদাতুল কারীর একই জায়গায় আরও বর্ণিত আছে-
৫। সেই উমদাতুল কারীর পঞ্চম খন্ডের ৩৫৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আছে-
“হযরত ইবনে আবদুল বির বলেছেন যে বিশ রাকাত তারাবীহের নামায হচ্ছে সাধারণ উলামায়ে কিরামের অভিমত। কুফাবাসী, ইমাম শাফেঈ ও অধিকাংশ ফকীহগণ এর সমর্থক এবং হযরত আবি ইবনে কা’ব থেকে বর্ণিত আছে যে এ ব্যাপারে কোন সাহাবীর দ্বিমত নেই”
৬। মোল্লা আলী কারী (রহঃ) শরহে নেকায়ায় বর্ণনা করেছে-

 فَصَارَ اِجْمَاعًا لِمَارَوِىَ لْبَيْهَقِىُّ بِاَسْنَادٍ صَحِيحٍ اَنَّهُمْ كَانُوْا يُصَلُّوْنَ عَلى عَهْدِ عُمَرَ بِعشرِيْن رَكْعَة وَعَلى عَهْدِ عُثْمَانٍ وَعَلىٍّ

সাহাবায়ে কিরাম হযরত উমর, উছমান ও আলী (রাঃ) এর শাসনামলে বিশ রাকাত তারাবীহর নামায পড়তেন। সুতরাং এ বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
৭। মওলবী আবদুল হাই ছাহেব স্বীয় ফতওয়ার কিতাবের প্রথম খন্ডের ১৮২ পৃষ্ঠায় আল্লামা ইবনে হাজর মক্কী হাইতমীর একটি উক্তি উদ্ধৃত করেছেন।

اِجْمَاعُ الصَّحَابَةِ عَلى اَنَّ التَّرَاوِيْحَ عِشْروْنَ رَكْعَةً

অর্থাৎ বিশ রাকাত তারাবীহের উপর সাহাবায়ে কিরামের ঐক্যমত রয়েছে।
৮। উমদাতুলকারী শরহে বুখারী পঞ্চম খন্ডের ৩৫৭ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে।
এ ইবারত থেকে পরিস্কার বোঝা গেল যে বিশ রাকাত তারাবীহ প্রসঙ্গে সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, ফকীহ ও মুহাদ্দিছীনে কিরাম একমত। তাঁদের মধ্যে কেউ আট রাকাত তারাবীহ পড়েননি এবং পড়ার নির্দেশও দেননি।
একটি মর্মকথাঃ লা-মযহাবীরা আসলে আপন প্রবৃত্তির অনুসারী। এ জন্য তাদেরকে আহলে হাওয়া অর্থাৎ সুবিধাবাদী বলা হয়। যেটায় আত্মার আরাম মিলে, সেটাই তাদের মযহাব। আমি তাদের আরাম-দায়ক মযহাবের কয়েকটি মাসায়েল নিম্নে উল্লেখ করলাম, যাতে মুসলমানেরা প্রত্যক্ষ করেন এবং ইবরত হাসিল করেন।
১। দু’মটকা পানি কখনও নাপাক হয় না। সুতরাং কুঁয়ার পানি যতই অপরিস্কার হোক না কেন, পান করতে পারেন।
২। ভ্রমণে কয়েক ওয়াক্তের নামায এক সঙ্গে পড়ে নিন। রাফেজিদের মত, কে বার বার নামবে আর নামাজ পড়বে। তদুপরি রেলে ভীষণ ভীড় হয়।
৩। মেয়েদের অলংকারের কোন যাকাত নেই। কেনইবা থাকবে। এরজন্য যথেষ্ট পয়সা ব্যয় হয়েছে তো।
৪। কেবল আট রাকাত তারাবীহ পড়ে আরাম করুন। কারণ নামাযটা হচ্ছে বোঝা বিশেষ।
৫। কেবল এক রাকাত বিতর পড়ে শুয়ে থাকুন। কারণ নামায থেকে যত তাড়াতাড়ি ফারেগ হতে পারেন, ততই মঙ্গল।
৬। এক সঙ্গে তিন তালাক দিয়ে দিলেও কেবল এক তালাকই প্রযোজ্য হবে। পুনরায় ঘর-সংসার করা যাবে। মোট কথা হলো, যেখানে আরাম, সেখানেই বন্ধুদের দ্বীন ও ঈমান।
আর একটি সুক্ষ বিষয়ঃ মুসলিম শরীফের কিতাবুত তালাকে বর্ণিত আছে যে হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর যুগে এক সঙ্গে তিন তালাক দিলে এক তালাকই ধরা হতো। হযরত উমর ফারুক (রাঃ) বললেন- লোকেরা এতে বেশ তৎপর হলেন। তাই এর দ্বারা তিন তালাক প্রযোজ্য হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আরাম প্রিয় লা-মযহাবীরা এক সঙ্গে তিন তালাক দিলেও এক তালাক প্রযোজ্য হওয়ার কথা বলে বেড়াচ্ছে। এ সব আল্লাহর বান্দারা এটা চিন্তা করলো না যে উমর (রাঃ) কি সুন্নাতের বিপরীত নির্দেশ দিতে পারেন? আরও লক্ষনীয় যে, তিনি এ নতুন বিধান জারী করলেন কিন্তু কোন সাহাবী বিরোধিতা করলেন না। আসল কথা হলো হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুগের কতেক লোক এরকম বলতেন তোমাকে তালাক দিলাম, তালাক তালাক। শেষের তালাক শব্দদ্বয় প্রথম তালাকের প্রতি জোর দেয়ার জন্য বলা হতো। যেমন আমরা বলে থাকি আমি কালকে যাব, কালকে, কালকেই; আমি রুটি খাব, রুটি রুটিই। এখনও যদি কেউ সেই নিয়তে এ রকম বলে, তাহলে এক তালাকই প্রযোজ্য হবে। হযরত উমর ফারুক (রাঃ) এর যুগে লোকেরা যেহেতু তিন তালাকই দেওয়া আরম্ভ করেছিল, সেহেতু আমল পরিবর্তনের সাথে সাথে হুকমও বদলে গেল। তাই তিনি এ নির্দেশ জারী করলেন। এ মাসআলার সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণ আমার রচিত তফসীরে নঈমীর দ্বিতীয় খন্ডে الطلاق مرتان  আয়াতের তফসীরে দেখুন, যেথায় অনেক হাদীছ দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে যে এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই কার্যকরী হয়। – সুত্রঃ জা’আল হক ২য় খন্ড –

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment