তাকওয়া ও আভিজাত্য- ২

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ইসলাম জাহানের খলিফা হওয়ার সুবাদে ফারুকে আজম রাদ্বিআল্লাহু আনহু চাইলেই সম্ভ্রান্ত, বিত্তশালী পরিবার থেকে নিজের পুত্রবধু নির্বাচন করতে পারতেন। কিন্তু আমরা আগের পর্বের ঘটনা থেকে জেনেছি, তিনি সবকিছুকে পিছনে ফেলে তাকওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।

তিনি দেখেননি মেয়ে কতটুকু সুন্দর, কতটুকু আছে তার ধন-দৌলত। বরং তিনি তার তাকওয়াকেই বড় করে দেখেছেন। রাসূলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন— বিয়ের ক্ষেত্রে চারটি বিষয়কে দেখতে। বংশ, ধন-দৌলত, সৌন্দর্য এবং দ্বীনদারিতা। এখন হয়তো সব বিষয় একজন মানুষের মধ্যে পাওয়া নাও যেতে পারে। তাই রাসূলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন— তবে তোমরা দ্বীনদারিতাকে প্রাধান্য দাও।

এখানেও তাকওয়ার গুরুত্বটা স্পষ্টরুপে ফুটে ওঠেছে। আজ আমাদের সমাজে দেখা হয়— পাত্র বা পাত্রীর বংশের কয়জন অস্ট্রেলিয়া থাকে! কয়জন থাকে আমেরিকা! কেউ সিটিজেনশিপ পেয়ে গেল কি না! তাদের ফ্ল্যাট কয়টা আছে, প্লট কতটুকু আছে! এসব দেখতে দেখতে তাকওয়ার বিষয়টাকে পিছে ফেলে দেওয়া হয়। এর ফলাফল, ঘরে হয়তো ধনী পরিবারের মেয়ে এসেছে— তবে পারিবারিক একতা, প্রশান্তি বিদেয় নিয়েছে। না পুত্রবধু মানিয়ে নিতে প্রস্তুত, না শাশুড়ী মেনে নিতে প্রস্তুত। শাশুড়ীর আনুগত্য নেই। সর্বক্ষণ পারিবারিক কলহ যেন লেগেই আছে।

কিন্তু একজন তাকওয়াবান ছেলে বা মেয়ে সব পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে জানে। তারা আল্লাহর ওপর ভরসা করে এবং তাঁর ওপর সন্তুষ্ট থাকে। তাই তারা পাথরের বদলে ফুল পেশ করে। যার কারণে ঝগরুটে পরিবেশও তাদের জন্য প্রশান্তির সবুজ বাগানে পরিণত হয়৷ এসবের একটাই রহস্য। সেটা হলো তাকওয়া।

প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহ’র কাছে এক লোক এসে জানতে চাইল— আমার মেয়ের জন্য অনেক বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। আমি কোন বৈশিষ্ট্যটাকে প্রাধান্য দিব? তিনি বললেন— খোদাভীরুতাকে। কারণ সে যদি তোমার মেয়েকে ভালোবাসে তাহলে সম্মান করবে আর যদি ঘৃণাও করে তবে, তাকে তাকওয়ার কারণে অত্যাচার করবে না।

তো সবকিছু পর্যবেক্ষণ করলে এটাই পরিলক্ষিত হয় যে, তাকওয়াতেই আভিজাত্য।

‘তাকওয়া ও আভিজাত্য- ২’

~স্বাধীন আহমেদ

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment