তাওয়াফ

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

খানা-ই কা’বার চতুর্দিকে সাতবার প্রদক্ষিণ  করার নাম তাওয়াফ। প্রতিটি চক্করকে ‘শাওত’ বলা হয়। ‘তাওয়াফ’ হাজরে আসওয়াদ থেকে আরম্ভ করতে হয়। তাই হাজী তাওয়াফের প্রারম্ভে হাজরে আসওয়াদের সামনে এমনভাবে দাঁড়াবেন যেন তাঁর ডান কাঁধ হাজরে আসওয়াদের বাম পার্শ বরাবর থাকে এবং হাজরে আসওয়াদ তাঁর ডান দিকে থাকে।

-তাওয়াফের কিছু জরুরী মাসাইল-

প্রথমতঃ তাওয়াফ চার প্রকার:-
১. ‘তাওয়াফে ক্বদুম’, বা ‘আগমনী তাওয়াফ’। এটা ওইসব আফাক্বী তথা বাহিরাগত হাজীদের জন্য সুন্নাত, যারা ইফরাদ কিংবা ক্বিরান হজ্বের জন্য মক্কা মুকাররমায় প্রবেশ করবেন। তাওয়াফে কুদুম যথাসময়ে সম্পন্ন করা সুন্নাত।
২. তাওয়াফে যিয়ারত যা হজ্জের একটি রুকন (মৌলিক ফরয)। একে ‘তাওয়াফে ফরয’, ‘তাওয়াফে হজ্জ’, ‘তাওয়াফে ইফা-দ্বাহ’ এবং ‘তাওয়াফে রুকন’ও বলে। এ তাওয়াফ ১০ জিলহজ্ব রামী ও মাথা মুন্ডানোর পর সম্পন্ন করে নেয়া অধিক উত্তম। তবে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত এ তাওয়াফ করা যায়।
৩. ‘তাওয়াফে বিদা’ যাকে ‘তাওয়াফে সদর’ও বলা হয়। বিদায়কালীন সময়ে এ তাওয়াফ আদায় করা আফাক্বীদের জন্য ওয়াজিব।
৪. ‘তাওয়াফে ওমরাহ’। এটা ওমরার জন্য ফরয, যা রামাল ও ইদ্বতিবা’ সহকারে করতে হয় এবং পরে সা’ঈ করতে হয়।
এতদ্ব্যতীত আরো কয়েক প্রকারের তাওয়াফ রয়েছে। যেমন নযর বা মান্নতের তাওয়াফ, বায়তুল্লাহর সম্মানার্থে তাওয়াফ ও নফল তাওয়াফ ইত্যাদি। মান্নতকারীর জন্য ‘তাওয়াফে নযর’ ওয়াজিব। মসজিদুল হারামে প্রবেশের জন্য তাওয়াফে তাহিয়্যাহ মুস্তাহাব আর ‘তাওয়াফে নফল’ এর জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। অতএব এটা সব সময় করা যায়।
তাওয়াফের শর্তাবলী:-
তাওয়াফের নিয়্যত করা, মসজিদুল হারামের ভেতরে তাওয়াফ করা (যা প্রত্যেক প্রকার তাওয়াফের জন্য পূর্বশর্ত।) উল্লেখ্য, হজ্জের তাওয়াফের জন্য নির্ধারিত সময় হওয়া এবং আরাফাতে অবস্থান করা জরুরী।
তাওয়াফের ওয়াজিবসমূহ:-
১.  পবিত্র হওয়া।
২. সতর ঢাকা।
৩. ডান দিক থেকে তাওয়াফ আরম্ভ করা।
৪. ওযর না থাকা অবস্থায় পদব্রজে তাওয়াফ করা।
৫. হাতিমকেও তাওয়াফের অন্তর্ভুক্ত করা।
৬. তাওয়াফকে পরিপূর্ণ করা এবং
৭. তাওয়াফের পর মক্বামে ইব্রাহীমের নিকট দু’রাকাত নামাজ পড়া। এর মধ্যে একটি ওয়াজিব বাদ পড়লেও তাওয়াফ পুনরায় করা ওয়াজিব।
তাওয়াফের মুস্তাহাবসমূহ:-
হাজরে আসওয়াদ থেকে ‘তাওয়াফ’ আরম্ভ করা, হাজরে আসওয়াদে তিনবার চুমু খাওয়া, মুবাহ কথাবার্তা পরিহার করা, ক্বোরআন ও হাদীস থেকে বর্ণিত দোআসমূহ পাঠ করা, পুরুষ বায়তুল্লাহর নিকটে তাওয়াফ করা, অবশ্যই এমনিভাবে, যাতে ভিড়ের চাপে কারো কষ্ট না হয়, মহিলারা রাতে তাওয়াফ করা, বিনয়ে ক্ষতি হয় এমন কাজ কর্ম থেকে বিরত থাকা, মাঝখানে তাওয়াফ ছেড়ে দিয়ে থাকলে কিংবা মকরূহ পন্থায় তাওয়াফ করে থাকলে পুনরায় প্রথম থেকে তাওয়াফ করা, দোআগুলো অনুচ্ছস্বরে পড়া, যেকোন আকর্ষণীয়  দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখা, রুকনে ইয়ামানীকে চুম্বন করা।
তাওয়াফে নিষিদ্ধ কাজসমূহ:-
জানাবত, হায়য ও নিফাস ইত্যাদির অপবিত্র অবস্থায় ‘তাওয়াফ’ করা, বে-ওযূ তাওয়াফ করা, অকারণে কারো কাঁধে চড়ে বা যানবাহনে তাওয়াফ করা, এভাবে বিনা কারণে হাঁটুর উপর ভর করে কিংবা উল্টো দিকে তাওয়াফ করা, তাওয়াফ কালে হাতিমের মধ্য দিয়ে যাওয়া, তাওয়াফের কোন চক্কর বা অংশ বিশেষ বাদ দেয়া, হাজরে আসওয়াদ ছাড়া অন্য কোন স্থান থেকে তাওয়াফ শুরু করা, তাওয়াফের ওয়াজিবসমূহের কোন একটি ছেড়ে দেয়া।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment