জোহর আসর নামাযে কিরাত আস্তে পড়া হয় কেনো?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

✍উত্তর✍
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীরের যে অঙ্গ দিয়ে ময়লা বের হয়, তা পরিস্কার করে নামায আদায় করতে হয়। কিন্তু বাতকর্ম পিছনের রাস্তা দিয়ে করলেও তা পরিস্কার না করে হাত পা, মুখ পা ইত্যাদি ধৌত করে ওজু করতে হয় কেনো? আপনি কি এমন উদ্ভট প্রশ্নের জবাব দিতে পারবেন?

আসলে এর জবাব একটাই। আল্লাহর আদেশ। ব্যস। আমরা মেনে নিয়েছি। তেমনি জোহর ও আসরের নামাযে কিরাত আস্তে পড়া ও মাগরিব, ইশা এবং ফজরের নামাযে কিরাত জোরে পড়া এটাই রাসূল (সাঃ) এর আমল দ্বারা প্রমানিতো। তাই সকল মুসলমানদের জন্য এভাবে আমল করার বিধান। কেনো এই বিধান তা জানার কোনো প্রয়োজ নেই। আর মৌলিকভাবে এর কোনো কারণও নেই। বাকি একটি হিকমত এই ছিলো যে, দিনের বেলা জোরে কিরাত পড়লে আরবের মুশরিকরা কিরাতকে ঠাট্টা করে জোরে জোরে আওয়াজ করে ডিষ্টার্ব করতো। যা রাতের বেলা হতো না। তাই দিনে আস্তে কিরাতের বিধান এসেছে আর রাতে জোরের।

বাকি এটি কেবলি একটি হিকমত। মূলতো আল্লাহর নবী এভাবে নামায পড়েছেন, তাই আমরা এভাবে নামায পড়ি।

আরো একটি হিকমত বলা হয়ে থাকে, দিনের বেলা সূর্যের তীব্র প্রখরতার মাধ্যমে আল্লাহর জালালিয়্যাতের প্রকাশ করে থাকে। আর জালালিয়্যাত প্রকাশিতো হলে মানুষ চুপ হয়ে যায়, তাই ইমামও আস্তে কিরাত পড়ে। আর রাতের বেলা চাঁদের স্নিগ্ধতার মাধ্যমে আল্লাহর জামালিয়্যাত এর জানান দেয়, আর জামালিয়্যাত সত্তার সামনে সবাই কথা বলে উঠে। তেমনি রাতের বেলার মুসল্লি জোরে কিরাত পড়ে থাকে।

আবারো বলছি এসবই মানুষের গবেষণা করা হিকমত। আল্লাহর আদেশ ও রাসুল (সাঃ) এর তরীকার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আল্লাহর নবী যে নামাযে জোরে কিরাত করেছেন, আর যে নামাযে আস্তে কিরাত পড়েছেন, তাই আমাদের জন্য মানা আবশ্যক। হিকমত বা কারণ খোঁজা নিরর্থক।

عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ: سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالعَصْرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْنَا: بِأَيِّ شَيْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ؟ قَالَ: «بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ»

হযরত আবু মামার (রহঃ) হযরত খাব্বাব (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেন, রাসুল (সাঃ) যোহর ও আসরে কিরাত পড়তেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তেন। আবু মামার পুনোরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিভাবে বুঝা যেতো? তিনি উত্তরে বলেন, রাসুল (সাঃ) এর দাড়ি নড়াচড়া দেখে বুঝা যেতো। {বুখারী, হাদীস নং-৭৬০}

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَرَأَ فِي المَغْرِبِ بِالطُّورِ»

হযরত মুহাম্মদ বন যুবায়ের বিন মুতয়িম (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসুল (সাঃ) কে মাগরিব নামাযে সূরা তূর পড়তে শুনেছেন। {বুখারী, হাদীস নং-৭৬৫}

البَرَاءَ: ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِي سَفَرٍ فَقَرَأَ فِي العِشَاءِ فِي إِحْدَى الرَّكْعَتَيْنِ: بِالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ

হযরত বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতো। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) এক সফরে ইশার দুই রাকাতের এক রাকাতে সূরা তীন পড়তেন। {বুখারী, হাদীস নং-৭৬৭}

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment