*জান্নাতী দল তথা সুন্নী জামা’আত কারা?* [পোষ্ট-৩০]

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

লেখক: অধ্যক্ষ মওলানা মুহাম্মদ আবদুল করীম নঈমী

সম্পাদনা: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

পাঠকমণ্ডলী, আরেকটি বিষয়ের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বাতিল ফির্কা ও বদ-মাযহাবী আলেমবর্গের ওয়াজের মজলিসে যোগদান করা এবং তাদের ওয়াজ-নসীহত শোনা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয কি-না, এ ব্যাপারে প্রখ্যাত মুফতী হযরতে মুনাযেরে ইসলাম আল্লামা নিজামউদ্দীন মুলতানী রহমতুল্লাহি আলাইহির একটি মূল্যবান ফতোয়া এখানে পেশ করছি। [والله الموفق وهو المعين – আল্লাহই সাফল্যদাতা এবং তিনি সাহায্যকারী]

*প্রশ্ন*

ওহাবী, মির্জায়ী, শীয়া ও চকড়ালভী (মুনকিরীনে হাদীস)-বর্গের ওয়াজ শোনা জায়েয কি-না? অনুগ্রহ করে কুর’আন মজীদ, হাদীস শরীফ এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর বাণীসমূহের আলোকে উত্তর দেবেন।

*উত্তর*

নিঃসন্দেহে ওহাবী ফির্কা, শীয়া, চকড়ালভী ও প্রবৃত্তিবাদী ইত্যাদি বাতিল মাযহাবের ওয়াজ শোনা এবং তাদেরকে আহলুল্লাহ তথা আল্লাহওয়ালা-বৃন্দের মসনদে বসানো হক-মাযহাব তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের দৃষ্টিতে জায়েয নয়। এ তো দিবালোকের চেয়েও বেশি স্পষ্ট যে, হিদায়াত করা সে ব্যক্তিরই কাজ, যিনি স্বয়ং হিদায়াতপ্রাপ্ত এবং হাদীস পাক কর্তৃক অনুমোদিত। কিন্তু এমন ব্যক্তি হাদী বা হিদায়াতকারী হবার যোগ্য নয়, যে গোমরাহী ও বিভ্রান্তির মধ্যে হাবুডুবু খেয়ে হয়রান/পেরেশান। পবিত্র কালামে মজীদ, হাদীসে পাক ও সাহাবা (রা.)-বৃন্দের বাণী দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, জালেম, ফাসেক, বিদ’আতী ও প্রবৃত্তিপ্রিয়দের সাথে বসা, বন্ধুত্ব রাখা, পানাহার করা নিষিদ্ধ। যেমন – আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন:

فَلاَ تَقْعُدْ بَعْدَ ٱلذِّكْرَىٰ مَعَ ٱلْقَوْمِ ٱلظَّٰلِمِينَ.

অর্থ: অতঃপর (শয়তানের ভোলানো অবস্থা থেকে) স্মরণে আসতেই জালিমদের সাথে বোসো না। [কুর’আন, ৬/৬৮; নূরুল ইরফান]

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে আহমদী পুস্তকে বলা হয়েছে:

إن القوم الظالمين هم المبتدع والفاسق والكافر والقعود مع كلهم.

অর্থ: “জালেম গোষ্ঠী হলো (বদ-মাযহাবধারী) বিদ’আতী ও ফাসিক এবং কাফির, আর তারাও, যারা ওদের সাথে বসে।”

কুর’আনের অন্যত্র ঘোষিত হয়েছে:

وَلاَ تَرْكَنُوۤاْ إِلَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ فَتَمَسَّكُمُ ٱلنَّارُ.

অর্থ: (ওহে মুসলমান) এবং জালেমদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না। পড়লে তোমাদেরকে (জাহান্নামের) আগুন স্পর্শ করবে। [কুর’আন, ১১/১১৩; নূরুল ইরফান]

এছাড়া কুর’আন মজীদের এই আদেশও প্রণিধানযোগ্য যে, কোনো ফাসেক লোক তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে এলে তাতে বিশ্বাস স্থাপন করবে না, যতোক্ষণ পর্যন্ত না তা ভালোভাবে যাচাই/পরীক্ষা করছো। যেমন আল্লাহ ফরমান:

يٰأَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُوۤاْ إِن جَآءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوۤاْ.

অর্থ: হে ঈমানদার সকল, যদি কোনো ফাসিক তোমাদের নিকট কোনো সংবাদ আনে, তবে তা যাচাই করে নাও। [কুর’আন, ৪৮/৬; নূরুল ইরফান]

অর্থাৎ শুধু ফাসেকের কথার উপর আস্থাবান হয়ো না, যতোক্ষণ না ওই সংবাদের সত্যতা যাচাই/পরখ করো। [তাফসীরে খাযেন ও তাফসীরে কবীর]

’ত্ববরানী’ ও ‘গুনিয়াতুত্তালেবীন’ গ্রন্থ দুটোতে সর্ব-হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল ও আনাস বিন মালিক (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা) হতে বর্ণিত হাদীসে প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

وأنه يجيء في آخر الزمان قوم ينقصونهم لا تجالسوهم ولا تشاربوهم ولا تواكلوهم ولا تناكحوهم ولا تصلوا عليهم معهم.

অর্থ: “শেষ জমানায় আগমনকারী প্রবৃত্তিপূজারী বিদ’আতীদের সাথে বসবে না, পানাহার করবে না, বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হবে না, নামায (ও জানাযা) পড়বে না!”

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment