আমাদের ঘাম দুর্গন্ধ। কিন্তু হুযুর পূর নূর ছরকারে দো আলম (ﷺ)’র ঘাম মুবারক হতে সুগন্ধি বের হয়। যেমন- মুহাদ্দেসীনে কেরামগণ তাঁদের কিতাবে বর্ণান করেন-
হযরত উম্মে ছলিম (رضي الله عنه)’র আকিদা:
সারওয়ারে আলম নূরে মুজাস্সাম হুযুর পূর নূর (ﷺ)’র জলিলুল মারতাবাত সাহাবা হযরত আনাস (رضي الله عنه)’র সম্মানিত মাতা হযরত উম্মে ছলিম (رضي الله عنه)’র আকিদা মুহাদ্দিসিনে কেরাম নিন্মোক্ত শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেন। একদা হুযুর পুর নূর ছরকারে কায়েনাত (ﷺ) উম্মে ছলিম (رضي الله عنه)’র ঘরে তাশরীফ এনে কায়লুলা (দ্বিপ্রহরে বিশ্রাম) করেন। হযরত উম্মে ছলিম (رضي الله عنه) চামড়ার একটি বিছানার ব্যবস্থা করেন, হুযুর (ﷺ) তাতে বিশ্রাম নিলে তাতে ঘাম প্রবাহিত হয়।
فَكَانَتْ تَجْمَعُ عَرَقَهُ فَتَجْعَلُهُ فِي الطِّيبِ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا أُمَّ سُلَيْمٍ مَا هَذَا؟ قَالَتْ: عَرَقُكَ نَجْعَلُهُ فِي طِيبِنَا وَهُوَ مِنْ أَطْيَبِ الطِّيبِ
-‘‘হযরত উম্মে ছলিম (رضي الله عنه) ঘাম মুবারকগুলো একত্রিত করে সুগন্ধিময় বস্তুর সাথে মিশ্রিত করেন। রাসূল (ﷺ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন হে উম্মে ছলিম! এটা কী! তিনি বললেন, এগুলো আপনার ঘাম মুবারক, এগুলোকে একটি সুগন্ধিযুক্ত বস্তুর সাথে মিশ্রিত করছি, কে আপনার ঘাম মুবারক প্রত্যেক বস্তু হতে অধিক সুগন্ধিময়।’’ ➥67
- ৬৭.
ক. ইমাম ইবনে খুজায়মা, আস-সহীহ, ৩/৪৩৩ পৃ. হা/১৬৯৯
খ. ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/১৮১৫ পৃ. হা/২৩৩১
গ. ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১৩/২৩৩ পৃ. হা/৩৬৬১
ঘ. ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ৩/১৬১১ পৃ. হা/৫৭৮৮, পরিচ্ছেদ: بَابِ أَسْمَاءِ النَّبِيِّ ﷺ وَصِفَاته
ঙ. ইমাম ইবনে আসাকীর, তারিখে দামেস্ক, ৯/৩৫৯ পৃ. হা/৬৪২৬
কবি বলেন-
ايسى خو شبو نهيں كسى پهول ميں
جيسى خو شبو نبى كى پيسنے يں ہے
‘‘এটুকু ছড়ায়নি পুষ্প সুরভিম্লান
যেটুকু ছেড়েছে নবির মোবারক ঘাম।’’
শায়খুল মুহাদ্দেসীন হযরত শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী (رحمة الله) তাঁর মাদারেজুন নবুওয়াত গ্রন্থে (এছাড়াও আরও অন্যান্য ইমামগণ সংকলন করেন) একটি ঘটনা বর্ণনা করেন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي زُوَّجْتُ ابْنَتِي، وَإِنِّي أُحِبُّ أَنْ تُعِينَنِي بِشَيْءٍ فَقَالَ: مَا عِنْدِي مِنْ شَيْءٍ، وَلَكِنْ إِذَا كَانَ غَدًا فَتَعَالَ فَجِئْنِي بِقَارُورَةٍ وَاسِعَةِ الرَّأْسِ وَعُودِ شَجَرٍ، وَآيَةٌ بَيْنِي وَبَيْنَكَ أَنْ أَجِيفَ نَاحِيَةَ الْبَابِ قَالَ: فَأَتَاهُ بِقَارُورَةٍ وَاسِعَةِ الرَّأْسِ وَعَودِ شَجَرٍ، فَجَعَلَ يَسْلُتُ الْعِرْقَ مِنْ ذِرَاعَيْهِ حَتَّى امْتَلَأَتِ الْقَارُورَةُ، فَقَالَ: خُذْ، وَأْمُرْ بِنْتَكَ إِذَا أَرَادَتْ أَنْ تَطَيَّبَ أَنْ تَغْمِسَ هَذَا الْعُودَ فِي الْقَارُورَةِ وَتطَيَّبَ بِهِ قَالَ: فَكَانَتْ إِذَا تَطَيَّبَتْ شَمَّ أَهْلُ الْمَدِينَةِ رَائِحَةَ ذَلِكَ الطِّيبِ، فَسُمُّوا بَيْتَ الْمُطَيَّبِينَ
-‘‘হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (ﷺ)-এর দরবারে হাযির হয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার কন্যার বিবাহ ঠিক করেছি। আপনি আমাকে সাহায্য করুন। তিনি বললেন, আমার কাছে তো কিছু নেই। এক কাজ কর। একটি চওড়া মুখের শিশি ও একটি কাঠি নিয়ে আমার কাছে এসো। লোকটি এগুলো নিয়ে এলো। রাসূল (ﷺ) আপন বাহু থেকে ঘাম মুছে শিশিতে ভরতে লাগলেন। শিশি ভরে গেলে তিনি তা লোকটিকে দিয়ে বললেন, তোমার কন্যাকে বলবে, সে যেন এ কাঠিটি শিশিতে ভিজিয়ে নেয় এবং সুগন্ধিরূপে ব্যবহার করে। কথিত আছে- সে এ সুগন্ধি ব্যবহার করলে পুরো মদিনা শরীফের লোকজন তার সুগন্ধির ঘ্রাণ নেয়। তারা এই ঘরকে “সুগন্ধি ঘর” হিসেবে অভিহিত করে।’’ ➥68
- ৬৮. ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল আওসাত, ৩/১৯০ পৃ. হা/২৮৯৫, ইমাম আবু ই‘য়ালা, আল-মু‘জাম, ১১৭ পৃ. হা/১১৮, ইমাম ইবনে আসাকীর, তারিখে দামেস্ক, ৪/৪৮ পৃ., ইবনে হাজার মক্কী, আশরাফুল ওয়সায়েল, ১/২৯৫ পৃ., আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, জামেউল ওসায়েল, ২/২ পৃ., ইমাম কাস্তাল্লানী, আল-মাওয়াহিবুল্লাদুন্নিয়া, ২/৮৮ পৃ., ইমাম সুয়ূতি, খাসায়েসুল কোবরা, ১/১১৬ পৃ., ইমাম জুরকানী, শারহুল মাওয়াহেব, ৫/৫৩৪ পৃ., শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, মাদারেজুন নবুয়াত, ফার্সী, প্রথম খণ্ড, ২৯ পৃষ্ঠা, শায়খ ইউসুফ বিন ইসমাঈল নাহানী, হুজ্জাতুল্লাহে আলাল আলামীন, ৬৮৫ পৃষ্ঠা