“গদির ডিক্লেয়ারেশন দিবস” মাওলা আলির অভিষেক দিবস

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী

“গদির ডিক্লেয়ারেশন দিবস”। মাওলা আলির বেলায়াতের অভিষেক দিবস।
বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার পথে শত শত সাহাবায়ে কেরামের সামনে “গদিরে খুম” নামক পানির উৎসের কাছে আল্লাহর হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাওলা আলি (রাঃ)র হাত উপরে তুলে ধরে ঘোষণা করেন,
“من كنت مولاه فعلي مولاه “
“মান কুনতু মাওলাহু ফা আলিয়্যুন মাওলাহ।”
“আমি যার মাওলা আলিও তার মাওলা।” -তিরমিজি, হাদিস নং-৩৭১৩, ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-১২১

অপর রেওয়ায়াতে এসেছে, আলিয়্যুন মাওলা কুল্লি মুমিনিন মিন বা’দি। – আলি আমার পর সকল মুমিনের ওলি।

এই হাদিসখানা অসংখ্য অগুনিত সনদ ও রেওয়ায়াতে বর্নিত হয়েছে। অনেকে মুতাওয়াতির পর্যায়ের হাদিসও বলেছেন।

সেজন্য আলবানি সাহেবের মত কট্টরপন্থী লোকও এই হাদিসখানা সহিহ বলতে বাধ্য হয়েছে, তার সিলসিলাতু আহাদিসি সাহিহাতে। হাদিস নং ১৭৫০ দেখুন।

হজরত জায়েদ বিন আরকাম রাঃ থেকে বর্নিত হয়েছে সহিহ মুসলিম শরিফে এসেছে, এই “গাদিরে খুম” নামক জায়গায়ই প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আহলে বায়ত (ইমাম আলি, হাসান হোসাইন ও মা ফাতেমাতুজ যাহরা রাদিয়াল্লাহু আনহুম) সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেছেন, আহলে বায়তকে অনুসরণ করতে তাকিদ দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৪০৮, তিরমিজি, হাদিস নং- ৩৭৮৮)

কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের মূলধারার সুন্নী উলামায়ে কেরাম এই বিষয়ে বেশিরভাগই নিরব। আহলে বায়তে আতহারের আলোচনাকে নিচে ফেলার জন্য এখন বেশিরভাগ উলামা গদিরে খুম ও আহলে বায়ত পাক পাঞ্জাতনের আলোচনা করেন না। আর তাদের ভয় এই যে, এটা নিয়ে আলোচনা করলে খেলাফাতের বিষয়ে ঝামেলা চলে আসবে। আসলে সুন্নী অনেক আলিম নিজেরাই ক্লিয়ার না বিষয়টিতে। মাওলা আলির মাওলাইয়াত, ইমামাত ও বেলায়াতকে খেলাফাতের সাথে মেশানোর কোন সুযোগ নেই। খেলাফাত ভিন্ন বিষয়, এটা প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাগনের ওপরে ছেড়েছেন। “ওয়া শাবিরহুম ফিল আমর”, “ওয়া আমরুহুম শুরা বাইনাহুম।” – আল কুরআন।  সেই পরামর্শ বা শুরার ভিত্তিতেই পরবর্তী চার খলিফা পর্যায়ক্রমে নির্বাচিত হয়েছেন। মাওলা আলির মাওলাইয়াত, ইমামাত ও বেলায়াত সম্পূর্ণ আধ্যাত্মিক বিষয় যা উনার সন্তান ইমাম মাহদি আলাইহিস সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে কেয়ামতের আগে। যুগের ইমাম উনার বংশ থেকেই হবেন। আর খেলাফাত মুসলমান মেজরিটির মতামতের ভিত্তিতে।

আজ নাসিবি নাজদি সৌদি টাকা খরচ করে মোল্লাদের মাথা নষ্ট করেছে যে, আহলে বায়তের আলোচনা করা যাবে না। কারণ তাদের মনের হিংসা। আহলে বায়তের আলোচনা হলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হয়। আরো বহু ভৌগোলিক কারণও আছে।

এজন্য আমাদের অজ্ঞানতাও দায়ী।

অপরদিকে শিয়াদের কুসংস্কার, বিদয়াতি মনগড়া কথা ও কাজ, বাড়াবাড়ি ও উগ্রতাও বহুলাংশে দায়ী। প্রথম তিন খলিফা ও উম্মাহাতুল মুমিনিনগনকে শিয়ারা যা ইচ্ছা তা বলে। এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেক সুন্নি মৌলানারাও আহলে বায়ত সম্পর্কে উদাসীন হয়ে যাচ্ছেন।

আমাদেরকে কৌশলে বুঝানো হয়েছে যে, আহলে বায়ত পাক পাঞ্জাতন হচ্ছে শিয়াদের আলোচনার বিষয়।

আল্লাহ পাক আমাদেরকে আহলে বায়তের খাদিম হিসেবে কবুল করুন।

পরিশেষে মজার বিষয়, গদিরে খুমের এই ডিক্লেয়ারেশনের পর হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ প্রথম সাহাবি যিনি হজরত আলি রাঃ কে অভিনন্দন জানান এই বলে, হে আলি! তুমি সকল মুমিন মুমিনার মাওলা হয়ে গেলে।- মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হাদিস নং 18502।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment