গউছুল আজম বলা কি শিরিক?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

প্রশ্নঃ-গাউছুল আজম হচ্ছেন আল্লাহ রাব্বুল
আলামিন। সুতারাং অন্য কাওকে গাওছুল আজম
বলা কি শিরিক/শিরক? আমরা অনেক সময়
অলিকুল শিরোমনি হযরত বড়পীর হযরত
আব্দুল কাদের
জীলানি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে গাউছুল আজম বলি তা কতটুকু সত্য?
বিস্তারিত জানালে ধন্য হব।

উত্তরঃ- আওলিয়া কেরামের স্তরসমূহের
মধ্যে একটি স্তরের নাম হল গাউছুল আজম।
যার অর্থ মহান সাহায্যকারী। এটা আল্লাহর
গুণবাচক নামসমূহের অর্ন্তভুক্ত নয়। পবিত্র
কোরআনউল করিম ও হাদিস শরীফের
কোথাও এটা যে আল্লাহর জন্য র্নিদিষ্ট আর
কারো জন্য ব্যবহৃত হবে না তার কোন
প্রমাণ নেই, বরং এটা আল্লাহর ওলীর
গুণবাচক নাম। হুজুর গাউছে পাকের
উপাধী হল গাউছে আজম, স্বয়ং আল্লাহ
রাব্বুল আলামীন ইলহামের মাধ্যমে এ
নামে হুজুর গাউছেপাক কে আহবান
করেছেন। যেমন হুজুর গাউসে পাকের
রচিত কিতাব রেসালতে গাউছুল আজম তার
প্রমাণ। উক্ত কিতাবে দেখা যায় যখনই
আল্লাহ তায়ালা তাকে কোন
বিষয়ে ইলহামের মাধ্যমে আহবান
করেছেন তখনই আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ
করেছেন ইয়া গাউছুল আজম।
কোরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ
করেন- “ওয়াল্লাহুল আসমাউল হুসনা ফাদয়ুহু বিহা”
অর্থাত্, আল্লাহর বহু সুন্দর গুণবাচক নাম
আছে সেই নাম
গুলো দিয়ে তাকে আহবান কর। উক্ত
আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদিস শরীফে উল্লেখ
আছে হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু থেকে বর্ণীত, নবী করিম
সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ
করেছেন আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি গুণবাচক নাম
রয়েছে তোমরা ঐ নামগুলো শিখে নাও।
যে ব্যক্তি ঐ ৯৯ নাম শিখে নিবে অবশ্য
সে বেহেশতে প্রবেশ করবে। এ
গুণবাচক ৯৯ নামগুলোর মধ্যে গাউছুল আজম
নামটির উল্লেখ নেই। সুতারাং এটা আল্লাহর
জন্য র্নিদিষ্ট আর কারো জন্য ব্যবহৃত
হতে পারে না বলা মূর্খতা ও অজ্ঞতা।
হুজুর গাউছে পাককে গাউছুল আজম বলা বা তার
বরকতমন্ড়িত নামের সাথে উক্ত
উপাধি ব্যবহার করা কখনো শিরক নয়।
এবং এটাকে শিরক বলা শিরকের অর্থ
সম্পর্কে অজ্ঞ হওয়ার প্রমাণ। গাউছুল আজম
আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে বিশেষ নিদিষ্ট
বান্দার উপাধি। তবে যে কেউ গাউছে আজম
দাবী করতে পারে না। গাউছে আজম
পদবীর জন্য যে যোগ্যতা আবশ্যকীয়
তা ছাড়া গাউছে আজম উপাধি প্রয়োগ
করা মূলত দ্বীনের ও জাতির
সাথে ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। আর গাউছুল
আজম এর অর্থ হল-আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ
ক্ষমতা বলে আল্লাহর পক্ষ হতে তার
সৃষ্টিজগত ও মাখলোকের প্রতি দয়া ও সাহায্য
প্রদানকারী বিশেষ নির্ধারিত ব্যক্তি।
[সূত্রঃ মাজহারে জামালে মোস্তাফায়ী,
কৃতজ্ঞতায় সৈয়দ নাসির উদ্দীন (রহঃ), ও
তাফরিহুল খাতিরীল ফাতিল ফি মানাকিবে শাইখ
আব্দুল কাদির, হযরত
মোল্লা আলী কারী হানাফী (রহঃ) ইত্যাদি]

“গাউসে আ’যম” শিরিকী শব্দ।(নাউযুবিল্লাহ)। ওহাবীদের
পত্রিকা ‘আহলে হাদীস’ অম্রিতস্বর এ লিখা হয়েছে:-
“গাউসে আ’যম” শিরিকী শব্দ,(নাউযুবিল্লাহ)।
“আহলে হাদীস” অম্রিতস্বর,পাতা-১৩, ১৭ সেপ্টম্বর, ১৯৩৭
ইরেজী সংখ্যা। সম্মানিত পাঠকগন, হাস্যকর বিষয় এই যে,
ওহাবীদের এ উক্তি দ্বারা ইসমাঈল দেহলভী, আশরাফ
আলী থানভী, রশীদ আহমদ গাংগুহী, হাজী এমদাদুল্লাহ
মুহাজিরে মক্কী, মৌলভী সানাউল্লাহ
অম্রিতস্বরী এবং মিয়া নযীর হোসাঈন দেহলভী ও শিরিক
থেকে রক্ষা পায়নি। কেননা, তারা তাদের
কিতাবে “গাউসে আ’যম” শব্দটি হযরত শায়খ আবদুল ক্বাদের
জীলানী ক্বদ্দিসা সিররুহুন নুরানী সম্বন্ধে ও লিখেছে।
নিশ্চিত হবার জন্য দেখুন- সেরাতে মুস্তাক্বীম
(ফার্সী),পাতা- ৫৬, ১৩২, ১৪১, ফোতোয়া-এ-আশরাফিয়াহ্, ১ম
খন্ড, পাতা-৯, দাওয়াতে আবদিয়াত, ৫ম খন্ড, পাতা-১৭,
ফোতোয়া-এ-নযীরিয়াহ্, ১ম খন্ঠ, পাতা-২৩ ইত্যাদি।
“ভন্ডরা দেখেনে তোদের শামসুল ওলামাদের ভন্ডামী কত
প্রকারের হয়”।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment