কোনো এক ঈদের কথা। ফারুকে আজম রাদ্বিআল্লাহু আনহু’র ঘরে ছোট্ট সন্তান বায়না ধরেছে নতুন পোশাক চাই। স্ত্রী বললেন– আমাদের তো না-হয় চলে গেল। কিন্তু এই ছোট্ট বাচ্চার জন্য তো অন্তত একটা পোশাক থাকা উচিত।
ফারুকে আজম রাদ্বিআল্লাহু আনহু জবাব দিলেন– পোশাক কেনার মতো যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ তো নেই! খেয়াল করুন, পুনরায় পড়ুন আর ভাবুন। কে বলছে এই কথা? ‘আমার কাছে ছেলের পোশাক কেনার মতো সামর্থ্য নেই’ এটা বলছেন ইসলামী সালতানাতের ২য় খলিফা সায়্যিদুনা ওমর ফারুক রাদ্বিআল্লাহু আনহু! এখানেই হয়তো আমরা বাকরুদ্ধ।
যাই হোক, চিঠি লিখলেন ফাইনান্স ডিপার্টমেন্টে। এক মাসের স্যালারিটা যদি অগ্রীম নেওয়া যায়। এই বিভাগের দায়িত্বে তখন আবু উবায়দা রাদ্বিআল্লাহু আনহু। খলিফার চিঠি পেয়ে চোখ থেকে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে পরছে। কিন্তু আবেগকে উপেক্ষা করলেন। বললেন নিতে হলে আপনাকে দু’টি শর্তের ওপর ফয়সালা দিতে হবে। প্রথমত, আপনি কি নিশ্চিত যে আপনি আগামী মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন? দ্বিতীয়ত, যদিও বেঁচে থাকেন প্রজারা কি খেলাফতের দায়িত্বে বহাল রাখবে?
নিজের নিয়োগকৃত মন্ত্রী থেকে এমন জবাব পেয়ে– খলিফার অন্তর নাড়া দিয়ে উঠল। অশ্রুতে ভিজতে লাগল দাঁড়ি-গুলো। বলতে লাগলেন– উমর একজন সঠিক ব্যক্তিকে বাছাই করতে পেরেছে এই বিভাগের দায়িত্ব প্রদানের জন্য। দোয়া করলেন– হে রব! আবু উবায়দার ওপর দয়া করো। ছেলেকে বললেন: তোমার বাবা অর্ধ-জাহানের শাসক হলেও, অগ্রীম টাকা নেওয়ার অধিকার সে রাখে না!
‘খলিফাতুল মুসলিমীন এর ঈদ’
__স্বাধীন আহমেদ আত্তারী