ক্বাসিদায়ে নু’মানঃ বঙ্গানুবাদ ও কাব্যানুবাদ (সম্পূর্ণ)

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

কিতাবঃ কাসীদায়ে নু’মান [ইমাম আবু হানীফা]

লেখকঃ ইমামে আজম ইমাম নু’মান বিন সাবিত (রহঃ)

বিষয়ঃ শানে মোস্তফা (ﷺ)

মোট পংক্তিঃ ৫৩ টি।

অনুবাদঃ সংকলিত।

সম্পাদনাঃ মাসুম বিল্লাহ সানি।

কাব্যানুবাদঃ মুহাম্মদ সৈয়দ আলী সোহেল।

❗১❗

ﻳﺎﺳﻴﺪ ﺍﻟﺴﺎﺩﺍﺕ ﺝﺀﺗﻚ ﻗﺼﺪﺍ

ﺍﺭﺟﻮ ﺭﺿﺎﻙ ﻭﺍﺣﺘﻤﻲ ﺑﺤﻤﺎﻙ

অর্থ: হে মহান সাইয়্যিদ (সরদার)! আপনার মহান সন্তুষ্টি ও আশ্রয় লাভের উদ্দেশ্যে আমি আপনার নিকটে এসেছি।”

“হে মনিব! এসেছি তব দ্বারে লয়ে বড় আশা,

লভিব তব তুষ্টি তব আশ্রয়ে বাঁধিব বাসা”

❗২❗

ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺧﻴﺮﺍ ﺍﺧﻼﺀﻕ ﺍﻥ ﻟﻲ

ﻗﻠﺒﺎ ﻣﺸﻮﻗﺎ ﻻ ﻳﺮﻭﻡ ﺳﻮﺍﻙ

অর্থ: হে সৃষ্টির সর্বোত্তম ! আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমার এই আগ্রহী হৃদয় শুধু আপনাকেই চায়, আর কাউকে নয়।”

“হে সৃষ্টির সেরাজন! শপথ মহান আল্লাহর!

তৃষিত হৃদয়ের কামণা, শুধু তুমি! নহে কেহ আর”

❗৩❗

ﻭﺑﺤﻖ ﺟﺎﻫﻚ ﺍﻧﺒﻲ ﺑﻚ ﻣﻐﺮﻡ

ﻭﺍﺍﻟﻠﻪ ﻳﻌﻠﻢ ﺍﻧﻨﻲ ﺍﻫﻮﺍﻙ

অর্থ: আপনার মহিমার শপথ! আমি শুধু আপনারই অনুরাগী। আল্লাহ পাক জানেন, আমি কেবল আপনাকেই চাই।”

“শপথ! মহান আল্লাহর মহত্ত্বের,

আমি শুধু তব অনুরাগী!

আল্লাহ পাকই ভাল জানেন!

আমি তব প্রেম-শরাব পানেতে ব্যাকুল হে সাক্বী!”

❗৪❗

ﺍﻧﺖ ﺍﻟﺬﻱ ﻟﻮﻻﻙ ﻣﺎ ﺧﻠﻖ ﺍﻣﺮﺀ

ﻛﻼﻭ ﻻ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻮﺭﻱ ﻟﻮﻻﻙ

অর্থ : আপনি না হলে, না কোন মানুষ সৃষ্টি করা হত, না নিখিল বিশ্বের কোন কিছু সৃষ্টি হত।”

“যদি না হতো তব সৃজন,

হতোনা সৃষ্টির এত আয়োজন!

হতো না কভূ কায়েনাতের প্রকাশ,

যদি না  হতো তব রচন!”

❗৫❗

ﺍﻧﺖ ﺍﻟﺬﻱ ﻣﻦ ﻧﻮﺭﻙ ﺍﻟﺒﺪﺭ ﺍﻛﺘﺴﻲ

ﻭﺍﻟﺸﻤﺲ ﻣﺸﺮﻗﺔ ﺑﻨﻮﺭ ﺑﻬﺎﻙ

অর্থ : আপনার নূর মুবারকের পোশাক পরে চন্দ্র আলোকিত হয়েছে। আপনারই নূর মুবারকের আভায় সূর্য জ্যোতির্ময় হয়েছে।

“তব পূত-জ্যোতির মোতিবস্ত্র পরে চন্দ্র বিলায় আলো!

তব পূত-আলোক প্রভায় প্রদীপ্ত রবির উদয় হলো!”

❗৬❗

انت الذي لما رفعت الي السماء

بك قد سمت وتزينت لسراك

অর্থ: আপনাকে উর্ধাকাশে ভ্রমন করানোর ফলেই আসমান সুউচ্চ এবং সুশোভিত হয়েছে।”

“আপনি এমন রাজন! যার অভ্যর্থনায় আকাশ সুউচ্চ!

যার ভ্রমণকল্পে ঊর্ধ্বজগত সুশোভিত পুষ্পগুচ্ছ!”

❗৭❗

انت الذي ناداك ربك مرحبا

ولقد دعاك لقربه وحباك

অর্থ: আপনাকে আপনার মহান রব (মি’রাজের) সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছেন। তিনি আপনাকে একান্ত নিজের কাছে ডেকে নিয়ে নৈকট্য দান করেছেন।

“তব মহান প্রভু আপনাকে (মীরাজ শরীফে) জানিয়েছেন সাদর সম্ভাষণ!

একান্তে ডেকে, অতি কাছেতে টেনে, দিয়েছেন সর্বোচ্চ আসন!”

❗৮❗

انت الذي فينا سالت شفاعة

لباك ربك لم تكن لسواك

অর্থ: আপনি যখন আমাদের জন্য শাফায়াত চাইলেন, আপনার রব সেটা মঞ্জুর করলেন। এ মর্যাদা (সর্বপ্রথম) আপনি ছাড়া আর কেউ অর্জন করতে পারে নি।

“তব আকুতি মহান রবের প্রতি যাচিলে ‘শাফাআত’ আবদার,

কবুল করিয়া প্রভূ,

মান দানিলেন না ছিল কারো না হবে কাহার!”

❗৯❗

انت الذي لما توسل ادم

من زلة بك فاز وهو اباك

অর্থ: আপনার সুমহান উসীলায় হযরত আদম আলাইহিস সালাম দোয়া কবুল হল, অথচ তিনি আপনার আদি পিতা।

“তব উছিলায় নাজাত পায় বাবা আদম (আঃ)

আসিলে পুত্রমত- মূলেতে পিতা, পুত্র আদম (আঃ)”

[আদম (আঃ) হলেন সমগ্র মানবের আদি পিতা, আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হল সকলে রূহানী ইমানী পিতা]

❗১০❗

وبك الخليل دعا فصارت نره

بردا وقد خمدت بنور سناك

অর্থ: আপনারই সুমহান উসীলা দিয়ে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম দোয়া করলেন, ততক্ষনাৎ সে আগুন ঠান্ড হয়ে গেল।”

“তব সুমহান উছিলায় যবে হাত তুলেন খলীল(আঃ)

হুকুমে জলীল অগ্নিকুন্ড কুসুম-কানন সাবলীল!”

❗১১❗

ﻭﺩﻋﺎﻙ ﺍﻳﻮﺏ ﻟﻀﺮ ﻣﺴﻪ

ﻓﺎﺯﻳﻞ ﻋﻨﻪ ﺍﻟﻀﺮ ﺣﻴﻦ ﺩﻋﺎﻙ

অর্থ: হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম তাঁর বিশেষ প্রয়োজনের সময় (রোগে আক্রান্ত অবস্থায়) আপনাকে ডাকলেন। তৎক্ষণাৎ উনার সে প্রয়োজন পুরা হয়ে গেল (তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন)।

“যবে ডাকিলেন রোগে কাতুর আইয়ুব(আঃ) মনে প্রাণে সহসাই হল হাজত পুরা,

ফিরেন সুস্বাস্থ্য বদনে!”

❗১২❗

ﻭﺑﻚ ﺍﻟﻤﺴﻴﺢ ﺍﺗﻲ ﺑﺸﻴﺮﺍ ﻧﺤﺒﺮﺍ

ﺑﺼﻔﺎﺕ ﺣﺴﻨﻚ ﻣﺎﺩﺣﺎ ﺑﻌﻼﻙ

অর্থ: হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আপনার সুমহান আগমনের সুসংবাদ নিয়ে এসেছিলেন। তিনি আপনার সৌন্দর্য এবং সুউচ্চ মর্যাদার প্রসংসা করেছেন।

“তব শুভাগমনের বাসন্তী বার্তা এনেছিলেন মরিয়ম তনয়!

তব জৌলুস, তব জুলুস কীর্তি বর্ণনার করেছেন সমন্বয়!”

❗১৩❗

ﻭﻛﺬﺍﻙ ﻣﻮﺳﻲ ﻟﻢ ﻳﺰﻝ ﻣﺘﻮﺳﻼ

ﺑﻚ ﻓﻲ ﺍﺍﻗﻴﺎﻣﺔ ﻳﺤﺘﻤﻲ ﺑﺤﻤﺎﻙ

অর্থ: হযরত মুসা আলাইহিস সালাম এই দুনিয়াতে আপনারই উসীলা নিয়েছেন। আবার হাশরের দিনও আপনার আশ্রয় চাইবেন।

তব উছিলাই ছিল ছিলাহ (হাতিয়ার) কলীমের দুনিয়াভরে।

রোজ হাশরেও উতরে যাবে কলীমুল্লাহ তব উছীলা ভরে।”

❗১৪❗

ﻭﺍﻻﻧﺒﻴﺎﺀ ﻭﻛﻞ ﺧﻠﻖ ﻓﻲ ﺍﻟﻮﺭﻱ

ﻭﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﻭ ﻻﻣﻼﻙ ﺗﺤﺖ ﻟﻮﺍﻙ

অর্থ: সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, রাজা বাদশা এবং সমস্ত সৃষ্টি জগৎ আপনারই ঝান্ডাতলে আশ্রয় চাইবে।

“তব ঝান্ডাতলে আশ্রয় মাগিবে!নবীবর সকল!

রাজা-বাদশা,সৃষ্টির সবে,এ ধরা মহীতল!”

❗১৫❗

لك معجزات اعجزت كل الوري

وفضاءل جلت فليس تحاك

অর্থ: আপনার অগণিত অসংখ্য বিস্ময়কর মুজিজা রয়েছে। আরো আছে অগনিত সুমহান গুনাবলি, যা বর্ননা করে শেষ করা যাবে না।”

“তব  মূগ্ধ-মুজিজা(মিরাকলস) আছে অগণিত!

তব সুমহান গূণাধার! যার বর্ণন অসমাপীত”

❗১৬❗

نطق الذراع بسمه لك معلنا

والضب قد لباك حين اتاك

অর্থ: বিষধর প্রানী নত মস্তকে আপনার সাথে কথা বলেছে। গুইসাপও আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছে।

“বিষধর প্রাণীকূল নত মস্তকে করেছে আর্জি!

তব নবুয়ত প্রমাণে গুইসাপ গেল সাক্ষী সাজি।”

❗১৭❗

والذءب جاءك و الغزالة قد اتت

بك تستجير و تحتمي بحماك

অর্থ: জঙ্গলের নেকড়ে বাঘ এবং হরিনী আপনার নিকট আশ্রয় এবং নিরাপত্তা লাভের জন্য এসেছে।

“তব দ্বারে আশ্রয়, নিরাপত্তা যাচিছে বনের হরিণী,

বনের নেকড়েও তব দ্বারে চিরই ঋণী!”

❗১৮❗

وكذ الو حوش اتت اليك وسلمت

وشكا البعير اليك حين راك

অর্থ: বন্যপশুরা আপনার কাছে এসে সালাম দিয়েছে। আর উট আপনাকে দেখে নিজের কষ্টের কথা ব্যক্ত করেছে।

“বন্যপশুরা সালাম-সিজদায় লুটিছে বারে-বারে!

উটের দূঃখ আপনি বিনা বলিছে কাহারে!”

❗১৯❗

ودعوت اشجارا اتتك مطيعة

وسعت اليك مجيبة لنداك

অর্থ: আপনি গাছকে ডাক দিয়েছেন, আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে গাছ অনুগত হয়ে আপনার পানে ছুটে এসেছে।

“তব ডাকের সাড়ায় অনড় সে বৃক্ষটি

অনুগত দাস হাযির যেন! শেকড় উপড়ি!”

❗২০❗

والماء فاض براحتيك وسبحت

صم الحصي بالفضل في يمناك

অর্থ: আপনার পুতঃপবিত্র হাত মুবারক থেকে পানির স্রোতধারা প্রবাহিত হয়েছে, আর আপনার ডান হাতের ইশারায় নির্বাক পাথরও তাসবীহ পাঠ করেছে।

“তব পূত-হস্তে প্রবাহিত পঞ্চ-নদের বান!

তব ডান হস্তে জড়-পাথর ফিরে পেল জান!”

❗২১❗

وعليك ظللت الغمامة في الوري

والجذع حن الي كريم لقاك

অর্থ: মেঘ আপনার মাথা মুবারকের উপর ছায়া দিয়েছে। আপনার সাক্ষাৎ লাভের আশায় শুষ্ক খেজুর গাছের কান্ড ঢুকরে কেঁদেছিলো।

“তব নুরানী মস্তক পরে ছিল বিরাজীত মেঘমালার ছায়া।

ঢুকরে কেদেছিলো খেজুর কাষ্ঠ তব বিরহে জ্বলেছিল হিয়া!”

❗২২❗

وكذاك لا اثرلمشيك في الثري

والصخر قد غاصت به قدمك

অর্থ: নরম মাটিতে আপনার বরকত মন্ডিত পদচিহৃ পরে নাই, আবার কঠিন পাথরে আপনার কদম মুবারকের ছাপ অঙ্কিত হয়ে গেছে।

“কাঁদামাটি লাগায়নিকো কাঁদা তব পাক কদমে!

কঠিন পাথর গলে মোম হায়, তব কদম চুমে”

❗২৩❗

وشفيت ذالعاهات من امراضه

وملات كل الارض من جدواك

অর্থ: আপনি রোগীকে রোগ ব্যাধি হতে আরোগ্য দান করেছেন, এবং সমগ্র পৃথিবী তথা ক্বায়িনাতকে আপনার অনুগ্রহ দ্বারা পরিপূর্ণ করেছেন।

“তব দয়ায় হে মুনীব! রোগীর মরণ-ব্যাধিও সারে,

তব অনুগ্রহ-অনুকম্পায় গিয়াছে জগত ভরে!”

❗২৪❗

ورددت عين قتادة بعد العمي

وابن الحصين شفيته بشفااك

অর্থ: অন্ধ হয়ে যাওয়া হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন, আর অসুস্থ হযরত ইবনে হাসীন রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে সুস্থ করে দিয়েছেন।

“অন্ধ ক্বাতাদা(রাঃ) তব দয়ায় পেয়েছেন চোখের দৃষ্টি,

অসুস্হ ইবনে হাসীনে(রাঃ)সুস্হ করিতে ঝরেছে দয়াবৃষ্টি!”

❗২৫❗

وكذا خبيبا وابن عفرا بعدما

جر حا شفيتهما بلمس يداك

অর্থ: হযরত খুবাইব এবং হযরত ইবনে আফরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনারা আপনার দুই হাত মুবারকের স্পর্শে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন।

“খুবাইব এবং ইবনে আফরা(রাঃ) তাঁদের উভয়জন,

সুস্হ হল পরশ পেয়ে তব দু হস্ত আলিঙ্গণ!”

❗২৬❗

وعلي من رمد اذ داويته

في خيبر فشفي بطيب لماكا

অর্থ: খায়বারে আপনার ঠোঁট মুবারকের সুগন্ধি দ্বারা হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র চোখ মুবারকের অসুস্থতা সারিয়ে দিয়েছেন।

“খায়বর গিরিতে তব পূত-ঠোঁট সুগন্ধির ছড়িয়েছিল বাহার!

সে সুঘ্রাণে চক্ষু সমেত তখনি পূর্ণ সুস্হ হায়দার(রাঃ)”

❗২৭❗

وسالت ربك في ابن جابر بعد ما

ان مات فاحياه و قد ارضاك

অর্থ: আপনার দোয়ায় হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু’র শহীদ হয়ে যাওয়া দুই সন্তানকে আল্লাহ পাক জীবিত করে আপনাকে সন্তুষ্ট করেছিলেন।

“তব দুআ’য় আল্লাহ তোমায় করেছিলেন তুষ্ট!

হযরত জাবির (রাঃ)’র শহীদ দু পুত্রের বদলে অদৃষ্ট!”

❗২৮❗

شاة مست لام معبد التي

نشفت فدرت من شفا رقياك

অর্থ: হযরত উম্মে মা’বাদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা’র বকরীর দুধ শুকিয়ে গেলে আপনারই হাত মুবারকের স্পর্শে আবারো দুগ্ধবতী হয়েছিল।

“তব পাক হাতের ছোয়ায় উম্মে মা’বাদের (রাঃ) দূগ্ধহীন বকরী,

তব মুজেযা তব পাক-হস্ত বরকতে হল দূগ্ধবতী!”

❗২৯❗

ودعوت عام القحط ربك معلنا

فانهل قطر السحب حين دعاك

অর্থ: অনাবৃষ্টি এবং দুর্ভিক্ষের বছর আপনি দোয়া করেছিলেন, সাথে সাথে মুশুলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল।

“অনাবৃষ্টি আর দূর্ভীক্ষের সে কঠিন ক্ষণে,

তব দোয়! “সাথে-সাথে মুষলধারে বৃষ্টি আনে!”

❗৩০❗

ودعوت كل الخلق فانقادوا الي

دعواك طوعا سامعين نداك

অর্থ: সমগ্র সৃষ্টি জগৎকে আপনি সত্যের দাওয়াত দিলেন, সবাই স্বেচ্ছায় আপনার দাওয়াত মুবারকে সাড়া দিয়েছিল।”

“সমগ্র জগতকে করিলে তব সত্য-আহ্বান,

স্বেচ্ছায় আসিল জনস্রোত সমুদ্র বহমান!”

❗৩১❗

وخفضت دين الكفر يا علم الهدي

ورفعت دينك فاستقام هداك

অর্থ: হে সমগ্র ক্বায়িনাতের হেদায়েত ! আপনি কুফরের দ্বীনকে অবনত করে নিজের পবিত্র দ্বীনকে স্বমুন্নত করেছেন। তাই আপনার পথ সুদৃঢ় হয়েছে ।

“হে জগত সুপথের দিশারী! করেছেন তব দ্বীনন উন্নত কুফর বিতাড়ী,

ফলে আপনার পথ হল সুদৃঢ় মজবুত দূরিলে আঁধারী!”

❗৩২❗

اعداك عادوا افي القليب بجهلهم

صر عي وقدحرموا الرضي بجفاك

অর্থ: আপনার প্রতি শত্রুতা পোষণ কারীরা মূর্খতা নিয়ে অন্ধ কুপেই পরে রয়েছে। আপনার সাথে শত্রুতার কারনে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি থেকে চিরবঞ্চিত হয়েছে।

“তব সহিত কৃতঘ্নের দল অজ্ঞতার ভারে ডুবিল অন্ধকূপে,

তব সনে শত্রুতা ফিরিয়া আসিল খোদায়ী গযবরূপে।”

❗৩৩❗

في يوم بدر قد اتتك ملاءك

من عند ربك قاتلت اعداك

অর্থ: বদরের জিহাদে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে ফিরিশতাগণ এসে আপনার শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছেন।

“বদরের প্রান্তরে সংখ্যালঘু মুসলিমের প্রথম জিহাদ,

আল্লাহর আদেশে ফেরেশতা-সৈনিক তব শত্রু হননে আহ্লাদ!”

❗৩৪❗

والفتح جاءك يوم فتحك مكة

والنصر في الاحزاب قد وافاك

অর্থ: পবিত্র মক্কা বিজয়ের দিন আপনার চুড়ান্ত বিজয় প্রকাশ হয়েছিল। আহযাব বা খন্দকের জিহাদে আল্লাহ পাকের সাহায্য আপনার সাথেই ছিল।

“মক্কা বিজয় ছিল ‘ফতহে মুবীন’ তব চূড়ান্ত বিজয়গাঁথা রচেছিল সেদিন!

আহযাব কিবা খন্দক খোদার দয়া তব লাগি সদা ছিল অমলিন!”

❗৩৫❗

هود و يونس من بهاك تجملا

وجمال يوسفا من ضياء سناك

অর্থ: হযরত হুদ আলাইহিস সালাম হুদ আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইউনূছ আলাইহিস সালাম আপনার সৌন্দর্যচ্ছটায় ভূষিত ছিলেন। হযরত ইউসূফ আলাইহিস সালাম এর সৌন্দর্য আপনারই আলোকোজ্জ্বল নূরের ঝলক থেকে উৎসারিত।”

“হযরত হুদ এবং ইউনুছ(আঃ) তব রূপচ্ছটার ভূষণে ভূষিত!

ইউসুফ (আঃ)’র অতূল সৌন্দর্য তব নুরের ঝলক হতে উৎসারীত!

❗৩৬❗

فقد فقت ياطه جميع الانبياء

طرا فسحان الذي اسراك

অর্থ: ইয়া ত্বোয়াহা (ﷺ)! আপনার আসন সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম গণের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উচ্চশিখরে অধিষ্ঠিত।

সকল প্রসংসা সেই আল্লাহর যিনি রাতের কিছু সময় আপনাকে নিজের অত্যন্ত নিকটবর্তী সফর করিয়েছিলেন।

“হে ত্ব-হা (ﷺ)!তব মক্বাম সকল আম্বিয়ার চির ঊর্ধ্বে,

সব প্রশংসা মহান খোদার যিনি রাত্রি কিয়দাংশে সফর করান তোমায়, সর্বোর্ধ্বে!

❗৩৭❗

والله يا يسين مثلك لم يكن

في العالمين و حق من انباك

অর্থ: ইয়া ইয়াসীন (ﷺ) ! আল্লাহর কসম , সমগ্র সৃষ্টিকুলে আপনার মত কেউ নাই (আপনি বেমিশাল)।

“হে ইয়াছীন (ﷺ) মহান আল্লাহর শপথ!

সমগ্র সৃষ্টিকূলে অতূল তুমমি নেই দ্বীমত!

❗৩৮❗

عن وصفك الشعراء يامدثر

عجزوا وكلوا من صفات علاك

অর্থ: ইয়া মুদ্দাসির (ﷺ) ! আপনার সুমহান শান মুবারক কবিগণ বর্ননা করতে অক্ষম। আপনার মর্যাদা তুলে ধরতে তার অপারগ।

“হে মুদ্দাচ্ছির (ﷺ)তব শান বয়ানে থেমে যায় কবির কলম,

তব সুমর্যাদার বর্ণন দিবে নেই তাদদের সে ইলম-হিলম!

❗৩৯❗

انجيل عيسي قد اتي بك مخبرا

ولنا الكتاب اتي بمدح حلاك

অর্থ: হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম পবিত্র ইঞ্জিল শরীফে আপনার সুসংবাদ দিয়েছেন। কুরআন শরীফেও আপনার প্রশংসা বিদ্যমান।

“পবিত্র ইন্জিলে ঈসা (আঃ) দিয়েছেন সুসংবাদ,

পাক-ক্বুরআনের আদ্যোপান্ত তব স্তুতিতে আবাদ!”

❗৪০❗

ماذا يقول الماد حون وما حسي

ان تجمع الكتاب من معناك

অর্থ: প্রশংসাকারীগন আপনার কি প্রসংসা করবে? লেখকগণই বা আপনার ছানা সিফত কতটুকু লিখতে পারবে ?”

“তব নান্দী-গুজারীর দল আর কিইবা! নান্দী করবে!

স্তুতির লিখকের কলম কালি আর কতইবা! চলবে!”

❗৪১❗

والله لو ان البحار مدادهم

والشعب اقلام جعلن لذاك

অর্থ: আল্লাহর কসম! সকল সমুদ্রকে যদি কালিতে পরিনত করা হয়,

আর সকল গাছগুলোর ডাল-পালাকে যদি কলম বানানো হয়।

“খোদার শপথ! সমুদ্র-সকল যদি বনে কালি,

কলম যদি হয় বৃক্ষ-সকল আর তার ডালি।”

❗৪২❗

لم يقدر الثقلان يجمع قدره

ابدا وما استطاعوا له ادراك

অর্থ: তরপরও জ্বিন-ইনসান আপনার শান লিখে শেষ করতে পারবে না। আপনার হাক্বীকী মর্যাদার সঠিক উপলব্ধি করা তাদের কারো পক্ষে সম্ভব নয়।

“তদুপরি,মানব-দানব তব শান লিখিতে হবে হয়রান,

তাদের পক্ষে অসম্ভব! বুঝা দায়! তদীয় প্রকৃত সম্মান!”

❗৪৩❗

بك لي قليب مغرم ياسيدي

وحشاشة محشوة بهواك

অর্থ: হে আমার সাইয়্যিদ ! আমার হৃদয় আপনারই ইশকে আসক্ত। আমার প্রাণ শুধু আপনারই ভালোবাসায় পরিপূর্ণ ।

“হে মালিক! এ হৃদয় তব প্রেমাসক্ত,

এ প্রাণ তব অনুরাগের পূর্ণ-ভক্ত!”

❗৪৪❗

فاذا سكت ففيك صمتي كله

واذا نطقت فماد حا علياك

অর্থ: আমি যখন চুপ থাকি তখন আপনারই চিন্তা করি। আবার যখন কথা বলি তখন আপনারই প্রসংসা করি।

“এ নীরবতা তব কল্পনার বাসস্হান,

এ সরব জবানতো তব স্তুতি বয়ান।”

❗৪৫❗

واذا سمعت فعنك قولا طيبا

واذا نظرت فما اري الاك

অর্থ: যখন কিছু শুনি, তখন আপনারই কোন উত্তম বানী শুনি। যখন কিছু দেখি, তখন শুধু আপনাকেই দেখি ।”

“এ কর্ণ শ্রবণ করেনা তব স্বর্গ-বাণী বিনা,

এ আঁখি বন্ধ রাখি, দেখিনা কিছু তুমি হীনা!”

❗৪৬❗

ﻳﺎ ﻣﺎ ﻟﻜﻲ ﻛﻦ ﺷﺎﻓﻌﻲ ﻓﻲ ﻓﺎﻗﺘﻲ

ﺍﻧﻲ ﻓﻘﻴﺮ ﻓﻲ ﺍﻟﻮﺭﻱ ﻟﻐﻨﺎﻙ

অর্থ: হে আমার মালিক ! আমার প্রয়োজন কালে আপনি আমার জন্য সুপারিশ করুন।

পৃথিবীতে আমি শুধু আপনারই ঐশ্বর্যের মুখাপেক্ষী।

“হে আমার মুনীব! প্রয়োজনকালে তব সুপারিশ মিলে যেন ভালে,

জগতমাঝে তব ভিক্ষার ভিখিরী আমি সর্বকালে!

❗৪৭❗

ﻳﺎﺍﻛﺮﻡ ﺍﻟﺜﻘﻠﻴﻦ ﻳﺎ ﻛﻨﺰ ﺍﻟﻮﺭﻱ

ﺟﺪ ﻟﻲ ﺑﺠﻮﺩﻙ ﻭ ﺍﺭﺿﻨﻲ ﺑﺮ ﺿﺎﻙ

অর্থ: হে জ্বীন-ইনসানের সবচাইতে সম্মানিত। হে সমগ্র মখলুকাতের ধনভান্ডার! আমাকে আপনার দানে ধন্য করুন। আপনার সন্তুষ্টি দিয়ে খুশি করুন।

“হে জ্বীন-ইনসানে সর্বোচ্চ সম্মানীত! হে সৃষ্টির ধনভান্ডার,

তব দানে ধন্য,তব তুষ্টিত পুষ্ট করুন বারংবার!”

❗৪৮❗

ﺍﻧﺎ ﻃﺎﻣﻊ ﺑﺎﻟﺠﻮﺩ ﻣﻨﻚ ﻭ ﺍﻡ ﻳﻜﻦ

ﻻﺑﻲ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻓﻲ ﺍﻻﻧﺎﻡ ﺳﻮﺍﻙ

অর্থ: আমি আপনার করুনার প্রত্যাশী। আপনি ছাড়া সারা জাহানে এই আবু হানীফার  কেউ নেই।

“তব করুণার চির প্রত্যাশী অধম আমি!

তুমি বিনা জগতে আবু হানিফার(রহঃ) কে আছে স্বামী!

❗৪৯❗

ﻓﻌﺴﺎﻙ ﺗﺸﻔﻊ ﻓﻴﻪ ﻋﻨﺪ ﺣﺴﺎﺑﻪ

ﻓﻠﻘﺪ ﻏﺪﺍ ﻣﺘﻤﺴﻚ ﺑﻌﺮﺍﻙ

অর্থ: একটাই আশা, হিসাবের দিনে আপনি আমার জন্য সুপারিশ করবেন। কারণ আমিতো আপনারই রশ্মি আঁকড়ে ধরে আছি।

“একটিই আশা!হিসাব দিবসে চাই! তব সুপারিশ ভরসা!

কারণ! তব রশ্মি আঁকড়ে ধরে, আমি করছি ভরসা”

❗৫০❗

ﻓﻼﻧﺖ ﺍﻛﺮﻡ ﺷﺎﻓﻊ ﻭ ﻣﺸﻔﻊ

ﻭﻣﻦ ﺍﻟﺘﺠﻲ ﺑﺤﻤﺎﻙ ﻧﺎﻝ ﺭﺿﺎﻙ

অর্থ: সবচাইতে মহান সুপারিশকারী সেতো একমাত্র আপনি। যে আপনার আশ্রয়

গ্রহণ করেছে সে আপনার সন্তুষ্টি লাভ করেছে।

“সর্বশ্রেষ্ঠ সুপারীশকারী সেতো একমাত্র তুমি!

যে পেয়েছে আশ্রয়, সে হবে ধন্য স্বর্গ চুমি”

❗৫১❗

ﻓﺎﺟﻌﻞ ﻗﺮﺍﻙ ﺳﻔﺎﻋﺔ ﻟﻲ ﻓﻲ ﻏﺪ

ﻓﻌﺴﻲ ﺍﺭﻱ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﺸﺮ ﺗﺤﺖ ﻟﻮﺍﻙ

অর্থ: আপনার মেহমানদারীকে আমার জন্য কাল সুপারিশে পরিনত করুন। যাতে হাশরের ময়দানে আমি আপনারই ঝন্ডাতলে শামিল হতে পারি।

“তব মেহমানদারীর রীতি মোর লাগি করুন কাল সুপারীশ প্রীতি যেন,

হাশর মাঠে তব ঝান্ডা-তটে শামিল হই আদরে অতি”

❗৫২❗

ﺻﻠﻲ ﻋﻠﻴﻚ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺎﻋﻠﻢ ﺍﻟﻬﺪﻱ

ﻣﺎ ﺣﻦ ﻣﺸﺘﺎﻕ ﺍﻟﻲ ﻣﺸﻮﺍﻙ

অর্থ: হে সমগ্র জগতের হিদায়েতের প্রতিক ! আপনার প্রতি আল্লাহ পাকের বেশুমার সালাত, যতক্ষন কোন আশেক আপনার আশ্রয়ের প্রত্যাশী থাকে।

“হে জগত দিশার প্রতীক! তব পরে খোদার দরুদ অগণন!

সে আশেকের পরেও,যতক্ষণ তব আশ্রয়-ক্বদম করে আলিঙ্গণ!”

❗৫৩❗

ﻭﻋﻠﻲ ﺻﺤﺎﺑﺘﻚ ﺍﻟﻜﺮﺍﻡ ﺟﻤﻴﻌﻬﻢ

ﻭﺍﻟﺘﺎ ﺑﻌﻴﻦ ﻭ ﻛﻞ ﻣﻦ ﻭﺍ ﻻﻙ

অর্থ: আপনার সম্মানিত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, অনুসারী ও যারা আপনাকে মুহব্বত করেছেন সকলের প্রতি বেশুমার ছলাত। “

“তব সাহাবাকূল,তাঁদের পদাঙ্কানুসারী,তব যত আশেক!

দরুদ-সালামে প্রতিক্ষণে নিত্য হোক অভিষেক!”

সুবহানাল্লাহ্ !! সুবহানাল্লাহ্ !!

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment